leadT1ad

নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের মামলায় আপিল শুনানি মুলতবি

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

প্রকাশ : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ১৩: ১৪
হত্যাকাণ্ডে শিকার সাত জন। সংগৃহীত ছবি

প্রায় ১ দশক আগে নারায়ণগঞ্জে সাতজনকে অপহরণ করে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় আপিল শুনানি চার সপ্তাহ পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে। সেইসঙ্গে ওই সময়ের মধ্যে আপিলের সারসংক্ষেপ জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে আপিল বিভাগ। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেয়। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক।

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ সাতজনকে অপহরণের তিনদিন পর তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।

ওই ঘটনায় নিহত হন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের দুই নম্বর ওয়ার্ডের তৎকালীন কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র-২ নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, নজরুলের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহিম।

সাত খুনের ঘটনায় প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও তার চার সহকর্মী হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় একটি এবং আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়ির চালক ইব্রাহিম হত্যার ঘটনায় জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে একই থানায় আরেকটি মামলা করেন।

দুটি মামলার বিচার কার্যক্রম একসঙ্গে শেষ করে ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি নূর হোসেন ও র‌্যাবের বরখাস্ত হওয়া তিন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন নারায়ণগঞ্জের আদালত। ৩৫ আসামির বাকি ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল করেন। পাশাপাশি ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য নথি) হাইকোর্টে পাঠানো হয়।

এরপর হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখা থেকে মামলার সব নথি বিজি প্রেসে পাঠানো হয়। বিজি প্রেস পেপারবুক প্রস্তুত করে একই বছরের ৭ মে হাইকোর্টে পাঠায়। ওই বছরের ২২ মে থেকে হাইকোর্টে আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি হয়।

২০১৭ সালের ২২ আগস্ট হাইকোর্ট রায় দেয়। রায়ে বিচারিক আদালতের মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ২৬ আসামির মধ্যে ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল এবং বাকি ১১ জনের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ মামলার মোট ৩৫ আসামির মধ্যে বাকি ৯ জনের বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ডও বহাল রাখে হাইকোর্ট।

মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা আসামিরা হলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন এবং র‌্যাব-১১’র চাকরিচ্যুত তিন কর্মকর্তা সাবেক অধিনায়ক লে. কর্নেল (অব.) তারেক সাঈদ মুহাম্মদ, মেজর (অব.) আরিফ হোসেন ও লে. কমান্ডার (অব.) মাসুদ রানা। এই তালিকায় আরো আছেন র‌্যাবের চাকরিচ্যুত সাবেক হাবিলদার মো. এমদাদুল হক, ল্যান্সনায়েক হীরা মিয়া, আরওজি-১ এ বি মো. আরিফ হোসেন, ল্যান্সনায়েক বেলাল হোসেন, সিপাহী আবু তৈয়্যব আলী, কনস্টেবল শিহাব উদ্দিন, এসআই পূর্ণেন্দু বালা, সৈনিক আবদুল আলীম, সৈনিক মহিউদ্দিন মুন্সী, সৈনিক আলামিন শরীফ ও সৈনিক তাজুল ইসলাম।

অন্যদিকে সাজা কমে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ১১ আসামি হলেন র‌্যাবের চাকরিচ্যুত সাবেক সিপাহী আসাদুজ্জামান নূর ও সার্জেন্ট এনামুল কবির এবং নূর হোসেনের ৯ সহযোগী মূর্তজা জামান চার্চিল, আলী মোহাম্মদ, মিজানুর রহমান দিপু, আবুল বাশার, রহম আলী, জামাল উদ্দিন সরদার, ভারতে গ্রেপ্তার হওয়া সেলিম, সানাউল্লাহ সানা ও শাহজাহান।

বিচারিক আদালতে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড পাওয়া ৯ জনও র‌্যাবের বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তা ও সদস্য। তাদের মধ্যে কনস্টেবল হাবিবুর রহমানের ১৭ বছর, এএসআই আবুল কালাম আজাদ, এএসআই কামাল হোসেন, কনস্টেবল বাবুল হাসান, করপোরাল মোখলেসুর রহমান, ল্যান্স করপোরাল রুহুল আমিন ও সিপাহী নুরুজ্জামানের ১০ বছর করে এবং এএসআই বজলুর রহমান ও হাবিলদার নাসির উদ্দিন সাত বছর করে কারাদণ্ড বহাল রাখে হাইকোর্ট। পরে আসামিরা আপিল করেন।

Ad 300x250

সম্পর্কিত