leadT1ad

ছুরিকাঘাত নয়, টিউবলাইট ছুঁড়ে মেরেছেন জালাল, জানালেন আহত শিক্ষার্থী

স্ট্রিম প্রতিবেদকঢাকা
প্রকাশ : ২৭ আগস্ট ২০২৫, ১৩: ০৩
জালাল আহমদ (বাঁয়ে)। ডানে আহত শিক্ষার্থী রবিউল হক। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নির্বাচনে স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী জালাল আহমদ জালালের ছুরিকাঘাতে নয়, ভাঙা ফ্লুরোসেন্ট টিউবলাইটের কাচের আঘাতে আহত হয়েছেন রবিউল হক।

ভুক্তভোগী রবিউল নিজেই এই তথ্য সংশোধন করে জানান, জালালের ছুঁড়ে মারা একটি ভাঙা ফ্লুরোসেন্ট টিউবলাইটের কাচের আঘাতে তিনি আহত হয়েছেন। এর আগে ঘটনার পর প্রাথমিকভাবে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত খবরে জালালের বিরুদ্ধে ছুরিকাঘাতের অভিযোগ তোলা হয়েছিল।

মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার জেরে উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত জালালের কক্ষ ভাঙচুরের চেষ্টা করেন এবং হল প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবি করেন।

রবিউলের ভাষ্যমতে, ঘটনার সূত্রপাত হয় রাত সাড়ে ১২টার দিকে, যখন জালাল কক্ষে ফিরে এসে উচ্চ শব্দে কাজ করছিলেন। এতে তার ঘুম ভেঙে গেলে তিনি জালালকে শব্দ কমাতে অনুরোধ করেন। এই নিয়ে দুজনের মধ্যে তর্ক শুরু হয়।

রবিউল অভিযোগ করেন, ‘তর্কের একপর্যায়ে জালাল প্রথমে একটি কাঠের চেয়ার দিয়ে তাকে মাথায় আঘাতের চেষ্টা করেন, কিন্তু তিনি তা ঠেকিয়ে দেন।’

এরপর জালাল একটি নষ্ট টিউবলাইট দিয়ে আঘাত করতে গেলে তা রবিউলের বুকে লেগে ভেঙে যায় এবং সেই ভাঙা কাচেই তার শরীর কেটে যায়।

অন্যদিকে, জালাল আহমদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের আহত অবস্থার ছবি পোস্ট করে পাল্টা অভিযোগ করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, রবিউলই তাকে প্রথমে আক্রমণ করেন।

ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হল থেকে অবৈধ ও বহিরাগত শিক্ষার্থীদের বের করে দেওয়ার দাবিতে উকিল নোটিস পাঠানোর প্রাক্কালে হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের ৪৬২ নম্বর কক্ষে আজ রাত সাড়ে ১২টার দিকে আমাকে মেরেছে আমার রুমমেট রবিউল। সে গত কয়েক মাস ধরে অবৈধভাবে হলে অবস্থান করছে।’

রবিউল এই দাবি নাকচ করে বলেন, তার শরীর থেকে ঝরা রক্ত হয়তো জালালের গায়ে লেগে থাকতে পারে।

এই ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে জালাল আহমদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হয়েছে। এখন মামলাটি পরবর্তী ধাপে প্রচলিত আইন অনুযায়ী এগিয়ে যাবে।’

এই ঘটনার পর জালালের ভিপি প্রার্থিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে প্রক্টর জানান, ‘এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন। তারা নিজেদের বিধি-বিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

প্রক্টর আরও বলেন, ‘এই বিচ্ছিন্ন ঘটনা ডাকসু নির্বাচনে কোনো প্রভাব ফেলবে না, কারণ এটিকে নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতা বলে মনে হয়নি।’

এই আক্রমণ আকস্মিক কোনো ঘটনা ছিল না দাবি করে রবিউল বলেন, ‘জালালের সঙ্গে তার দীর্ঘদিন ধরেই মতবিরোধ চলছিল। এমনকি পূর্বে একাধিকবার হল প্রাধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগও দিয়েছিলেন।’

জালালের পাশের কক্ষের একজন শিক্ষার্থী জানান, রবিউল ‘মৃত্যু ঝুঁকিতে আছি’ লিখে হল প্রভোস্টের কাছে আবেদন করেছিলেন।

এদিকে, ঘটনার পর আহত রবিউলকে হাসপাতালে নেওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে মুহসীন হলে উত্তেজনা দেখা দেয়। শত শত শিক্ষার্থী জালালের কক্ষের বাইরে জড়ো হয়ে দরজা ভাঙার চেষ্টা করেন। এসময় হল প্রভোস্ট ড. মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম তাঁদের শান্ত করেন এবং জালালকে তাৎক্ষণিকভাবে বহিষ্কারের আশ্বাস দেন। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীরা প্রভোস্টের পদত্যাগের দাবিও তোলে।

এই বিষয়ে প্রক্টর বলেন, ‘তাঁরা যদি বুধবার উপাচার্যের সঙ্গে বসে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের দাবি তুলে ধরে, তাহলে সেই দাবিগুলো নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Ad 300x250

সম্পর্কিত