leadT1ad

ক্লিনটন বি. সিলির ‘বরিশাল অ্যান্ড বিয়ন্ড’ প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বক্তারা

বাংলা সাহিত্যকে দেখার ভিনদেশি দৃষ্টিভঙ্গি নতুন মাত্রা যোগ করেছে

স্ট্রিম ডেস্ক
স্ট্রিম ডেস্ক
প্রকাশ : ১১ অক্টোবর ২০২৫, ২৩: ৫৬
ক্লিনটন বি. সিলির প্রবন্ধ সংকলন ‘বরিশাল অ্যান্ড বিয়ন্ড: এসেস অন বাংলা লিটারেচার’ বইটির প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বক্তারা। সংগৃহীত ছবি

বাংলা সাহিত্যের গবেষক ও অনুবাদক ক্লিনটন বি. সিলির প্রবন্ধ সংকলন ‘বরিশাল অ্যান্ড বিয়ন্ড: এসেস অন বাংলা লিটারেচার’ বইটির প্রকাশনা অনুষ্ঠান হয়েছে। অনুষ্ঠানে আলোচকেরা বলেন, বাংলা সাহিত্যকে দেখার ক্ষেত্রে ক্লিনটন বি. সিলির ভিনদেশি দৃষ্টিভঙ্গি এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে, যা বাঙালি পাঠকদের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।

আজ শনিবার (১১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেডের (ইউপিএল)-এর প্রধান কার্যালয়ে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে সদ্যপ্রয়াত শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

অনলাইনে যুক্ত হয়ে বইটির লেখক ও ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোর এমেরিটাস অধ্যাপক ক্লিনটন বি. সিলি বলেন, ‘পরিচয়ের রাজনীতির বিষয়টি আলোচনার জন্য এখন উপযুক্ত সময়। কারণ, এখন এমন একসময়, যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমেরিকাকে সাদাদের দেশ, পুরুষদের দেশ হিসেবে দেখা হয়। এর সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের "তাসের দেশ"-এর মিল আছে।’

জীবনানন্দের কবিতায় ‘মালয় সাগর’-এর অবস্থান প্রসঙ্গে ক্লিনটন বি. সিলি বলেন, এটি ভারতের মালাবার উপকূলের কাছে হতে পারে এবং এ নিয়ে আরও আলোচনার অবকাশ রয়েছে।

আলোচনায় লেখক, সাহিত্যতাত্ত্বিক ও নারীবাদী সমালোচক এবং কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক নিউইয়র্ক থেকে সুপ্রভাত জানিয়ে বলেন, আমি আইডেন্টিটি পলিটিক্সের বিরুদ্ধে। আমাদের নিজেদের তথাকথিত যে ভাষা তা থেকেও আমরা বহিরাগত। বাইরে থেকে এসে একটা ভাষা যে শেখে, সে ভাষার কঙ্কাল দেখতে পায়। লেখক ক্লিনটন সিলির বাংলায় এই মিলটা দেখতে পাই। আমি বহু শিক্ষার্থীকে বাংলা শিখিয়েছি। বিদেশি ভাষা থেকে আগত শব্দগুলোকে আর আরবি ফারসি বা তৎসম-তদ্ভব আমরা বলি না, এগুলো বাংলা ভাষা হয়ে গেছে। ক্লিনটন সিলির সৌভাগ্য যে তিনি বরিশালে গিয়ে জীবনানন্দ দাশের সাথে থেকে তার কথা শুনেছেন, দেখেছেন।'

অনলাইনে যুক্ত হন গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক
অনলাইনে যুক্ত হন গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক

পরিচয়ের রাজনীতি প্রসঙ্গে গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক বলেন, ‘আমি যখন বাঙালিদের সাথে, তখন আমি বাংলাভাষী ও বাঙালি, কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একজন ডিপ্রাইভড মাইনরিটি। তাহলে নিজেকে আমি কোন ইতিহাসের অংশ মনে করব? আমি মনে করি, ইতিহাসকে প্রাইভেটাইজ করা উচিত নয়।’

রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য, ভাষাতাত্ত্বিক অধ্যাপক পবিত্র সরকার বলেন, ‘বইটিতে বাংলা সাহিত্য বিষয়ে আলোচনা সবচেয়ে আকর্ষণীয়। অবাঙালি হয়ে সাহিত্যের যে দিকগুলো তিনি তুলে ধরেছেন, তার জন্য তাঁর এই বহিরাগত হওয়াও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। মঙ্গলকাব্যের সঙ্গে "তাসের দেশ"-এর যে মিল রয়েছে, সেটি ক্লিনটন বি. সিলি ধরতে পেরেছেন।’

অনলাইনে কথা বলছেন পবিত্র সরকার
অনলাইনে কথা বলছেন পবিত্র সরকার

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ফিরদৌস আজিম বলেন, ‘‘বরিশাল অ্যান্ড বিয়ন্ড’-এ বাংলা সাহিত্যের অংশটি খুব ভালো লেগেছে। এই দেখা বা দর্শন বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যখন দেখি, এর মধ্যে বহিরাগত বিষয় থাকে। আবার যখন দর্শন করি, তখন অন্তর্গতভাবে আধ্যাত্মিক বিষয়ও থাকে।’

লেখক ও অনুবাদক ফারুক মাইনুদ্দিন স্মৃতিচারণা করে বলেন, ‘"আ পোয়েট অ্যাপার্ট" অনুবাদ করার সময় থেকে অধ্যাপক সিলির সাথে আমার যোগাযোগ হয়।

অধ্যাপক সাঈদ চৌধুরী বইটির ইউপিএল থেকে প্রকাশের প্রেক্ষাপট এবং লেখকের পরিচিতি তুলে ধরেন। তিনি জানান, বইটি ২০২৫ সালের অমর একুশে বইমেলায় ইউপিএল সংস্করণ হিসেবে প্রকাশিত হয়।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নাজিয়া মনজুরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও যুক্ত ছিলেন লেখক ড. শামসুল বারি, অধ্যাপক ফখরুল আলম, অধ্যাপক ফয়জুল লতিফ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ইউপিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহ্‌রুখ মহিউদ্দীন।

বিষয়:

বই
Ad 300x250

সম্পর্কিত