leadT1ad

শেয়ারবাজার কারসাজি

সাকিব আল হাসানকে দুদকে তলব

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

সাকিব আল হাসান। ছবি: সংগৃহীত

শেয়ারবাজারে কারসাজি ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে ক্রিকেটার ও সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আগামী বুধবার (২৬ নভেম্বর) সকাল ১০টায় তাঁকে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে কারসাজির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ লেয়ারিং করে বিভিন্ন খাতে স্থানান্তরের অভিযোগে সাকিব আল হাসানসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থেই তাঁকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, সমবায় অধিদপ্তরের উপনিবন্ধক মো. আবুল খায়ের (হিরু) ও তাঁর সহযোগীরা পরস্পর যোগসাজশে শেয়ারবাজারে কারসাজি করেন। তাঁরা সিরিজ ট্রানজেকশন, প্রতারণামূলক অ্যাকটিভ ট্রেডিং ও কৃত্রিমভাবে শেয়ারের দাম বাড়িয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রলুব্ধ করেন। এই প্রক্রিয়ায় ২৫৬ কোটি ৯৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ এবং ক্যাপিটাল গেইনের নামে অর্জিত অপরাধলব্ধ অর্থ বিভিন্ন খাতে স্থানান্তর করার অভিযোগ রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় গত ১৭ জুন মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় একটি মামলা করে দুদক। ওই মামলায় সাকিব আল হাসানকে ২ নম্বর আসামি করা হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও দুদকের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাকিবসহ এজাহারভুক্ত ১৫ আসামিকে ২৫ ও ২৬ নভেম্বর তলব করে চিঠি দিয়েছেন। এর মধ্যে সাকিবকে ২৬ নভেম্বর উপস্থিত হতে বলা হয়েছে।

দুদক আরও জানায়, সাকিবের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের যে আলাদা অনুসন্ধান চলমান আছে, সে বিষয়েও একই দিন (২৬ নভেম্বর) তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

দুদকের নথিপত্র অনুযায়ী, মামলার প্রধান আসামি মো. আবুল খায়ের (হিরু) ও তাঁর স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান অবৈধ আয়ের প্রায় ২৯ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ক্যাপিটাল গেইনের নামে গোপন করার চেষ্টা করেছেন। এছাড়া হিরুর ১৭টি ব্যাংক হিসাবে ৫৪২ কোটি ৩১ লাখ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।

মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন— আবুল কালাম মাদবর, কনিকা আফরোজ, মোহাম্মদ বাশার, সাজেদ মাদবর, আলেয়া বেগম, কাজী ফুয়াদ হাসান, কাজী ফরিদ হাসান, শিরিন আক্তার, জাভেদ এ মতিন, মো. জাহেদ কামাল, মো. হুমায়ুন কবির ও তানভির নিজাম।

উল্লেখ্য, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাগুরা-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। গত আগস্টে সরকার পতনের সময় তিনি বিদেশে অবস্থান করছিলেন এবং এরপর আর দেশে ফেরেননি।

এর আগে চলতি বছরের ১৭ জুন শেয়ারবাজার থেকে ২৫৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাকিবের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ জুয়ার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ততা, স্বর্ণ চোরাচালান, কাঁকড়া ব্যবসায়ীদের অর্থ আত্মসাৎ ও নির্বাচনী হলফনামায় সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগও খতিয়ে দেখছে সংস্থাটি। শুরুতে এসব অভিযোগ অনুসন্ধানের দায়িত্বে ছিলেন দুদকের উপপরিচালক মাহবুবুল আলম। পরে তাঁকে বরখাস্ত করা হলে ২৯ সেপ্টেম্বর সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেনকে নতুন তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, শেয়ার কারসাজির অভিযোগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে সাকিব আল হাসানকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করেছিল পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।

Ad 300x250

সম্পর্কিত