ফিরে দেখা ২০ জুলাই
২০ জুলাই ২০২৪। দিবাগত রাতে নাহিদ ইসলামকে তুলে নিয়ে গিয়েও অস্বীকার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ‘কমপ্লিট শাটডাউন’কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় সংঘর্ষ, হামলার ঘটনায় প্রাণহানি বেড়েই চলে। যুদ্ধবিধ্বস্তের মতো পরিস্থিতি হয় বাংলাদেশের। আর ঢাকাবাসীসহ যেন তৎকালীন সরকারের বিভিন্ন বাহিনী দ্বারা অবরুদ্ধ হয়ে প্রবল উৎকণ্ঠায় পার করে আরেকটি দিন। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের রুদ্ধশ্বাস দিনগুলোয় ব্যক্তিগত ও সামষ্টিকভাবে জন্ম নিয়েছে কত না সত্য গল্প। সেসব দিন ফিরে দেখা।
স্ট্রিম প্রতিবেদক
তখন কারফিউ চলছিল। ইন্টারনেটও বন্ধ। অনেকেই ভিপিএন প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইন্টারনেট চালাচ্ছিলেন। চারদিকে কেবল মৃত্যু আর মৃত্যু। বনশ্রীর বাসিন্দা শারমীন ইসলাম এ সময় সারা রাত জেগেই থাকতেন। সেসব দিনের কথা মনে হলে ব্যাংক কর্মকর্তা শারমীন এখনো যেন আতংকগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তিনি বললেন, ‘সে সময় আসলে পুরো রাত জেগেই থাকতাম। ইন্টারনেট বন্ধ থাকলেও ভিপিএন দিয়ে বারবার নেটে ঢুকতাম। ঢুকলেই তো শুধু মৃত্যুর খবর।’
কথা বলতে বলতে একটু দম নিলেন ৩৭ বছর বয়সী শারমীন। তারপর বললেন, ‘নাহিদকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, ফেসবুকে এ সংবাদ শুনলাম। কিন্তু পুলিশ স্বীকার করছিল না। নানা রকম গুজব ছড়িয়ে পড়ছিল। রাস্তাঘাটে লোকজন নেই। চারপাশে যেন ভুতুড়ে অবস্থা। আসলে নিজেকে খুব অসহায় লাগছিল এ দিন।’
২০ জুলাই ২০২৪। রাজধানী ঢাকায় অসহায় হয়ে পড়েছিল অনেক মানুষই। এ দিন রাজধানীর অন্তত চারটি জায়গায় সড়ক অবরোধের চেষ্টা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের ঘটনায় রাজধানীতেই শহীদ হন অন্তত ২৫ জন। ঢাকার বাইরে আরও ১২ জনের নিহতের খবর পাওয়া যায়।
আন্দোলনকারীদের টানা দুই দিনের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে এ সব সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। পরে সরকারের পক্ষ থেকে দেশজুড়ে কারফিউ জারি ও সেনাবাহিনীর টহল জোরদার করা হয়।
এছাড়া ২১ ও ২২ জুলাই সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও বিটিএমএ ২১ জুলাই থেকে সারা দেশে কারখানা বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়।
জননিরাপত্তায় জারি করা কারফিউ কেউ অমান্য করলে এক বছরের কারাদণ্ড ও জরিমানা করা হবে বলেও জানানো হয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গণবিজ্ঞপ্তিতে।
ঢাকায় সহিংসতা ঠেকাতে এদিন র্যাবের হেলিকপ্টার টহল অব্যাহত ছিল। বঙ্গভবন, গণভবন, বেতার ভবন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা অধিদপ্তর ও সাব-অফিসে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। পাশাপাশি থানা ভবন, জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বাসভবন, সারা দেশের কারাগারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও ব্যক্তিদের নিরাপত্তাও বৃদ্ধি করা হয়।
এ দিন রাজধানীর চার জায়গায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়। জায়গা চারটি হলো—যাত্রাবাড়ী ও শনির আখড়া এলাকা, উত্তরা, বাড্ডা ও মিরপুর। এই উত্তাল দিনে যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া, কাজলা এলাকার সড়ক নিজেদের দখলে রেখেছিলেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় যাত্রাবাড়ীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে দিনভর। একপর্যায়ে অভিযানের মুখে বিকেলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ছেড়ে যান বিক্ষোভকারীরা।
মিরপুরে সংঘর্ষ চলাকালে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পিকেটার ও পুলিশের সঙ্গে চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এ সময় মেট্রোরেলের কাজীপাড়া স্টেশনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। জননিরাপত্তার স্বার্থে মেট্রোরেল, এক্সপ্রেসওয়ে ও মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার বন্ধ ঘোষণা করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
কারফিউর কারণে রাজধানীর প্রধান বিপণিবিতান ও প্রধান সড়কের পাশের দোকানপাট বন্ধ ছিল। সড়কে মানুষের উপস্থিতি ছিল একেবারেই কম।
২০ জুলাই নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি ভবনে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় আন্দোলকারীরা। এতে ওই ভবনে থাকা হাইওয়ে পুলিশ সদস্যসহ শতাধিক মানুষ আটকা পড়ে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব ও পুলিশ গিয়ে হেলিকপ্টারের সহায়তায় উদ্ধার করে তাদের। হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি ছাড়াও ওই ভবনে থাকা হাসপাতাল, ব্যাংক, চাইনিজ রেস্টুরেন্টসহ অর্ধশতাধিক দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
এ দিন তৃতীয় দিনের মতো সারা দেশে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রাখে সরকার। কারফিউ চলার সময় সারা দেশে বন্ধ থাকে যান চলাচলও।
২০ জুলাই রাত আড়াইটার দিকে রাজধানীর খিলগাঁও থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি অস্বীকার করে।
নাহিদ রাজধানীর খিলগাঁও নন্দীপাড়ায় তাঁর এক বন্ধুর বাসায় ছিলেন। এ দিন রাত আড়াইটার দিকে ৫০-৬০ জন লোক গিয়ে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ওই বাসা থেকে নাহিদকে তুলে নিয়ে যান।
ছেলের সন্ধানে শনিবার দুপুরের দিকে মিন্টো রোডের পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) কার্যালয়ের প্রধান ফটকে যান নাহিদ ইসলামের মা মমতাজ নাহার ও বাবা বদরুল ইসলাম। পরে নাহিদের খোঁজে ডিবি কার্যালয়ের সামনে যান কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ ও সহসমন্বয়ক হাসিব আল ইসলাম। সেখান থেকে নাহিদের মা ও বাবাকে সঙ্গে নিয়ে এই তিনজন নাহিদের খোঁজে যান মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ের সামনে। তাঁদের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে সিআইডি কার্যালয়ের সামনে থেকে ফেরার পথে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা একটি গাড়িতে করে সারজিস, হাসনাত ও হাসিবকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
পরে সিসিটিভি ফুটেজ থেকে জানা যায়, র্যাব-৩ এর একটি গাড়ি, একটি এসইউভি, একটি মাইক্রোবাস এবং দুইটি মোটরসাইকেল রাজধানীর সবুজবাগে যে বাসায় নাহিদ ছিলেন সেখানে উপস্থিত ছিল। প্রায় ২৪ ঘন্টা পর নাহিদকে পূর্বাচলে অজ্ঞান অবস্থায় পাওয়া যায়।
গভীর রাতে মিন্টো রোডের রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ ও সহসমন্বয়ক হাসিব আল ইসলাম সঙ্গে বৈঠক করেন সরকারের মন্ত্রীরা। এ সময় তাঁরা সরকারের কাছে আট দফা দাবি উত্থাপন করেন। এই আট দফা দাবি মানলেই কেবল কোটা সংস্কারের এক দফা দাবি বিষয়ে আলোচনা হতে পারে বলে জানান তাঁরা।
অন্য দিনের মতো ২০ জুলাইও ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্টে সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশ চেকপোস্ট বসায়। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাছ থেকে কারফিউ পাস নিয়ে জরুরি কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের বাইরে বের হতে হয়। সব মিলিয়ে এ সময় ঢাকাবাসী যেন তৎকালীন সরকারের বিভিন্ন বাহিনী দ্বারা অবরুদ্ধ হয়ে প্রবল উৎকণ্ঠায় পার করে আরেকটি দিন।
তখন কারফিউ চলছিল। ইন্টারনেটও বন্ধ। অনেকেই ভিপিএন প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইন্টারনেট চালাচ্ছিলেন। চারদিকে কেবল মৃত্যু আর মৃত্যু। বনশ্রীর বাসিন্দা শারমীন ইসলাম এ সময় সারা রাত জেগেই থাকতেন। সেসব দিনের কথা মনে হলে ব্যাংক কর্মকর্তা শারমীন এখনো যেন আতংকগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তিনি বললেন, ‘সে সময় আসলে পুরো রাত জেগেই থাকতাম। ইন্টারনেট বন্ধ থাকলেও ভিপিএন দিয়ে বারবার নেটে ঢুকতাম। ঢুকলেই তো শুধু মৃত্যুর খবর।’
কথা বলতে বলতে একটু দম নিলেন ৩৭ বছর বয়সী শারমীন। তারপর বললেন, ‘নাহিদকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, ফেসবুকে এ সংবাদ শুনলাম। কিন্তু পুলিশ স্বীকার করছিল না। নানা রকম গুজব ছড়িয়ে পড়ছিল। রাস্তাঘাটে লোকজন নেই। চারপাশে যেন ভুতুড়ে অবস্থা। আসলে নিজেকে খুব অসহায় লাগছিল এ দিন।’
২০ জুলাই ২০২৪। রাজধানী ঢাকায় অসহায় হয়ে পড়েছিল অনেক মানুষই। এ দিন রাজধানীর অন্তত চারটি জায়গায় সড়ক অবরোধের চেষ্টা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের ঘটনায় রাজধানীতেই শহীদ হন অন্তত ২৫ জন। ঢাকার বাইরে আরও ১২ জনের নিহতের খবর পাওয়া যায়।
আন্দোলনকারীদের টানা দুই দিনের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে এ সব সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। পরে সরকারের পক্ষ থেকে দেশজুড়ে কারফিউ জারি ও সেনাবাহিনীর টহল জোরদার করা হয়।
এছাড়া ২১ ও ২২ জুলাই সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও বিটিএমএ ২১ জুলাই থেকে সারা দেশে কারখানা বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়।
জননিরাপত্তায় জারি করা কারফিউ কেউ অমান্য করলে এক বছরের কারাদণ্ড ও জরিমানা করা হবে বলেও জানানো হয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গণবিজ্ঞপ্তিতে।
ঢাকায় সহিংসতা ঠেকাতে এদিন র্যাবের হেলিকপ্টার টহল অব্যাহত ছিল। বঙ্গভবন, গণভবন, বেতার ভবন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা অধিদপ্তর ও সাব-অফিসে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। পাশাপাশি থানা ভবন, জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বাসভবন, সারা দেশের কারাগারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও ব্যক্তিদের নিরাপত্তাও বৃদ্ধি করা হয়।
এ দিন রাজধানীর চার জায়গায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়। জায়গা চারটি হলো—যাত্রাবাড়ী ও শনির আখড়া এলাকা, উত্তরা, বাড্ডা ও মিরপুর। এই উত্তাল দিনে যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া, কাজলা এলাকার সড়ক নিজেদের দখলে রেখেছিলেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় যাত্রাবাড়ীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে দিনভর। একপর্যায়ে অভিযানের মুখে বিকেলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ছেড়ে যান বিক্ষোভকারীরা।
মিরপুরে সংঘর্ষ চলাকালে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পিকেটার ও পুলিশের সঙ্গে চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এ সময় মেট্রোরেলের কাজীপাড়া স্টেশনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। জননিরাপত্তার স্বার্থে মেট্রোরেল, এক্সপ্রেসওয়ে ও মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার বন্ধ ঘোষণা করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
কারফিউর কারণে রাজধানীর প্রধান বিপণিবিতান ও প্রধান সড়কের পাশের দোকানপাট বন্ধ ছিল। সড়কে মানুষের উপস্থিতি ছিল একেবারেই কম।
২০ জুলাই নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি ভবনে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় আন্দোলকারীরা। এতে ওই ভবনে থাকা হাইওয়ে পুলিশ সদস্যসহ শতাধিক মানুষ আটকা পড়ে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব ও পুলিশ গিয়ে হেলিকপ্টারের সহায়তায় উদ্ধার করে তাদের। হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি ছাড়াও ওই ভবনে থাকা হাসপাতাল, ব্যাংক, চাইনিজ রেস্টুরেন্টসহ অর্ধশতাধিক দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
এ দিন তৃতীয় দিনের মতো সারা দেশে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রাখে সরকার। কারফিউ চলার সময় সারা দেশে বন্ধ থাকে যান চলাচলও।
২০ জুলাই রাত আড়াইটার দিকে রাজধানীর খিলগাঁও থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি অস্বীকার করে।
নাহিদ রাজধানীর খিলগাঁও নন্দীপাড়ায় তাঁর এক বন্ধুর বাসায় ছিলেন। এ দিন রাত আড়াইটার দিকে ৫০-৬০ জন লোক গিয়ে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ওই বাসা থেকে নাহিদকে তুলে নিয়ে যান।
ছেলের সন্ধানে শনিবার দুপুরের দিকে মিন্টো রোডের পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) কার্যালয়ের প্রধান ফটকে যান নাহিদ ইসলামের মা মমতাজ নাহার ও বাবা বদরুল ইসলাম। পরে নাহিদের খোঁজে ডিবি কার্যালয়ের সামনে যান কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ ও সহসমন্বয়ক হাসিব আল ইসলাম। সেখান থেকে নাহিদের মা ও বাবাকে সঙ্গে নিয়ে এই তিনজন নাহিদের খোঁজে যান মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ের সামনে। তাঁদের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে সিআইডি কার্যালয়ের সামনে থেকে ফেরার পথে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা একটি গাড়িতে করে সারজিস, হাসনাত ও হাসিবকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
পরে সিসিটিভি ফুটেজ থেকে জানা যায়, র্যাব-৩ এর একটি গাড়ি, একটি এসইউভি, একটি মাইক্রোবাস এবং দুইটি মোটরসাইকেল রাজধানীর সবুজবাগে যে বাসায় নাহিদ ছিলেন সেখানে উপস্থিত ছিল। প্রায় ২৪ ঘন্টা পর নাহিদকে পূর্বাচলে অজ্ঞান অবস্থায় পাওয়া যায়।
গভীর রাতে মিন্টো রোডের রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ ও সহসমন্বয়ক হাসিব আল ইসলাম সঙ্গে বৈঠক করেন সরকারের মন্ত্রীরা। এ সময় তাঁরা সরকারের কাছে আট দফা দাবি উত্থাপন করেন। এই আট দফা দাবি মানলেই কেবল কোটা সংস্কারের এক দফা দাবি বিষয়ে আলোচনা হতে পারে বলে জানান তাঁরা।
অন্য দিনের মতো ২০ জুলাইও ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্টে সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশ চেকপোস্ট বসায়। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাছ থেকে কারফিউ পাস নিয়ে জরুরি কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের বাইরে বের হতে হয়। সব মিলিয়ে এ সময় ঢাকাবাসী যেন তৎকালীন সরকারের বিভিন্ন বাহিনী দ্বারা অবরুদ্ধ হয়ে প্রবল উৎকণ্ঠায় পার করে আরেকটি দিন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ড ও বর্বরতার জন্য ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা কখনো ক্ষমা পাবেন না। তাকে ‘মানবতার এবং সব মায়েদের প্রতি লজ্জা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন তিনি।
২৯ মিনিট আগেদুর্ঘটনার পর বাসটি জব্দ করে থানার দেড়শ গজের মধ্যে মহাসড়কের পাশে রাখা ছিল। শনিবার রাতে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা বাসটিতে কে বা কারা আগুন ধরিয়ে দেয়।
২ ঘণ্টা আগেরাস্তা আটকে পথসভা করায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়েছেন উচ্চ মাধ্যমিকের (এইচএসসি) পারীক্ষার্থীরা৷ এ সময় তারা 'ভুয়া ভুয়া' স্লোগান দেন৷ সমাবেশ শেষে পরীক্ষার্থীদের পক্ষে মিছিল করেন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা।
২ ঘণ্টা আগেহামিদুজ্জামান খান বাংলাদেশের বহিরাঙ্গণ ভাস্কর্যের পথিকৃৎ। এ দেশের বহিরাঙ্গণ আলোকিত করে রয়েছে তাঁর তিন শতাধিক ভাস্কর্য।
২ ঘণ্টা আগে