ফরিদপুরে একই স্থানে বিএনপির দুই গ্রুপের সমাবেশ, ১৪৪ ধারা জারি

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় একই সময় একই এলাকায় বিএনপির দুইটি পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘোষণা কেন্দ্র করে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। আদেশ অনুযায়ী, আলফাডাঙ্গা পৌরসভার, স্কুল মাঠ ও বাজার এলাকায় আজ শনিবার (২৯ নভেম্বর) সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকবে।

গতকাল শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) রাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাসেল ইকবাল এ আদেশ জারি করেন।

এলাকাবাসী ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ শনিবার বিকেল তিনটায় আলফাডাঙ্গা আসাদুজ্জামান বালিকা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা প্রচার ও ধানের শীষের পক্ষে জনসভা আয়োজন করে উপজেলা বিএনপির একটি অংশ। দলের পক্ষে এর আয়োজন করেন ফরিদপুর-১ (মধুখালী, বোয়ালমারী ও আলফাডাঙ্গা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) ও কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম।

অপর দিকে গত ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবসে হামলার প্রতিবাদ ও নবগঠিত বিএনপির কমিটি বাতিলের দাবিতে একই সময়ে ওই স্থানে সমাবেশের ঘোষণা দেয় দলের আরেকটি গ্রুপ। এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন বোয়ালমারী বিএনপির একাংশের নেতা (নবগঠিত কমিটির সহসভাপতি) শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু ও উপজেলা যুবদল নেতা মিজানুর রহমান লিপন মিয়া। তাঁদের মধ্যে শামসুদ্দিন ঝুনু ফরিদপুর-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী।

আলফাডাঙ্গা বিএনপি সভাপতি আব্দুল মান্নান মিয়া আব্বাস বলেন, ‘উপজেলা বিএনপির জনসভা ভন্ডুল করতে প্রতিপক্ষ গ্রুপ হঠাৎ করে পাল্টা কর্মসূচির ঘোষণা করে। আমরা জনসভা সফল করতে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিলাম।’

শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু গ্রুপের নেতৃত্বদানকারী এস এম খোশবুর রহমান খোকন বলেন, ‘গত ৭ নভেম্বর যুবদল নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও বিএনপির কমিটি বাতিলের দাবিতে সমাবেশ আহ্বান করা হয়েছে। কমিটি বাতিল না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’

পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি সম্পর্কে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোদাররেস আলী ইছা বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজখবর নিয়ে বিষয়টি দেখব।’

১৪৪ ধারা জারির বিষয়টি নিশ্চিত করে আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজালাল আলম বলেন, ‘বিএনপির দুইটি পক্ষে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘিরে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। এ বিষয়ে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

আলফাডাঙ্গা ইউএনও রাসেল ইকবাল বলেন, ‘একই স্থানে বিএনপির দুইটি পক্ষের সমাবেশ কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও জনসাধারণের জানমালের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এ আদেশ অমান্য করলে শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য হবে।’

এর আগে গত ৭ নভেম্বর বোয়ালমারীতে বিপ্লব ও সংহতি দিবসে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ২৫ জন আহত হন। এ সময় উপজেলা বিএনপির একাংশের কার্যালয়ে আগুন, ১৩টি মোটরসাইকেলসহ অন্তত ১০টি দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়।