leadT1ad

সহকারী কমিশনারের নির্দেশে আবু সাঈদের ওপর গুলি: ট্রাইব্যুনালে পুলিশের জবানবন্দি

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৮: ০৭
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল

রংপুরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শিক্ষার্থী আবু সাঈদ নিহতের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দিয়েছেন পুলিশের নায়েক মো. আবু বক্কর সিদ্দিক। তিনি বলেছেন, তৎকালীন সহকারী কমিশনার (এসি) মো. আরিফুজ্জামান ওয়্যারলেস সেটে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করার পরই শটগান ফায়ারের নির্দেশ দেন। সেই গুলিতে আবু সাঈদ বিদ্ধ হন।

আজ বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-২-এ মামলার শুনানিতে ১৬তম সাক্ষী হিসেবে আবু বক্কর সিদ্দিক এই জবানবন্দি দেন।

জবানবন্দিতে নায়েক আবু বক্কর বলেন, গত ১৬ জুলাই ২০২৪ তারিখে তিনি রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইনে কর্মরত ছিলেন। ওই দিন এসআই (সশস্ত্র) মো. আশরাফুল ইসলাম স্যারের সঙ্গে তাঁর নামে ইস্যুকৃত গ্যাস গান নিয়ে সকাল আনুমানিক ৮টা ৪০ মিনিটে পার্কের মোড়ে ডিউটিতে মোতায়েন হন। তিনি জানান, আনুমানিক ৯টা ৪০ মিনিটে তাজহাট থানার অফিসার ইনচার্জ মো. রবিউল ইসলাম এবং পরবর্তী সময় আনুমানিক ১০টা ৪৫ মিনিটে এসি মো. আরিফুজ্জামান, এডিসি ডিবি শাহ নুর আলম পাটোয়ারী ও বেরোবি ক্যাম্প ইনচার্জ এসআই (নিরস্ত্র) বিভূতী ভূষণ রায় পার্কের মোড়ে আসেন এবং সবাইকে একত্রিত করে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে ব্রিফিং দেন।

তিনি জানান, সেদিন বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে তাঁদের বেরোবির ১ নম্বর গেটে মোতায়েন করা হয়। এর কিছুক্ষণ পর ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার জনের একটি মিছিল আসে।

আবু বক্কর আরও বলেন, আন্দোলনকারী ছাত্ররা গেট দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে এসি আরিফুজ্জামানের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে এসির নির্দেশে লাঠিচার্জ ও গ্যাস গান ফায়ার করা হয়। ছাত্ররা ছত্রভঙ্গ হওয়ার পর তাঁরা গেটের ভেতরে প্রবেশ করেন। জবানবন্দিতে তিনি বলেন, পরে এসি আরিফুজ্জামান নিজে তাঁর (আবু বক্করের) কাছ থেকে গ্যাস গান নিয়ে পার্কের মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা ছাত্রদের ওপর আরও গ্যাস সেল নিক্ষেপ করেন।

ঘটনার পরবর্তী বর্ণনা দিতে গিয়ে আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, “ছাত্ররা আবার একত্রিত হয়ে বেরোবি ১ নম্বর গেট খুলে জোর করে ভেতরে প্রবেশ করতে থাকে। তারপর এসি আরিফুজ্জামান স্যার ওয়্যারলেস সেটে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে যাদের শটগান ছিল, তাঁদের ফায়ার করার নির্দেশ দিলে তাঁরা শটগান ফায়ার করতে করতে ১ নম্বর গেটের দিকে যান। একজন ছাত্র দুই হাত প্রসারিত করে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে এবং পরে সে পুলিশের শটগানের গুলিতে আহত হয়।”

আবু সাঈদকে গুলি করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এএসআই (সশস্ত্র) আমির হোসেন ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়ের ছোড়া গুলিতে ওই ছাত্র আহত হন। পরে বিকেলে তিনি জানতে পারেন, আহত ছাত্র আবু সাঈদ মারা গেছেন।

উল্লেখ্য, এই মামলায় জবানবন্দিতে উল্লিখিত এএসআই আমির হোসেন ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়সহ মোট ছয়জন আসামি গ্রেপ্তার আছেন। অন্য চারজন হলেন বেরোবির সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম এবং ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী, রাফিউল হাসান রাসেল ও আনোয়ার পারভেজ। মামলার আসামি সাবেক উপাচার্যসহ মোট ২৪ জন এখনো পলাতক রয়েছেন।

Ad 300x250

সম্পর্কিত