leadT1ad

আবু সাঈদ হত্যা মামলায় এসআই আশরাফুলের জবানবন্দি, দায়ী করা হলো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০২৫, ২১: ০৪
২০১৪ সালের ১৬ জুলাই রংপুরে শহীদ আবু সাঈদের এই ছবি জুলাই আন্দোলনের প্রতীক হয়ে ওঠে। সংগৃহীত ছবি

রংপুরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শিক্ষার্থী আবু সাঈদ নিহতের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দিয়েছেন পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, তৎকালীন সহকারী কমিশনার (এসি-কোতয়ালী) আরিফুজ্জামান ও তাজহাট থানার ওসি রবিউল ইসলামের নির্দেশে পুলিশ সদস্যরা শটগান ফায়ার করলে আবু সাঈদ গুলিবিদ্ধ হন।

বুধবার (১২ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-২ এ মামলার শুনানিতে এসআই আশরাফুল ইসলাম এই জবানবন্দি দেন। প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম জানান, সকালে জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে এবং এখন জেরা চলছে।

জবানবন্দিতে এসআই আশরাফুল ইসলাম (৪৭) বলেন, গত ১৬ জুলাই ২০২৪ ইং তারিখে আমি রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইনসে কর্মরত ছিলাম।

তিনি জানান, সকালে ১৪ জন ফোর্স নিয়ে বেরোবি (বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়) এলাকায় ডিউটিতে যান। আনুমানিক দুপুর ১টার দিকে লালবাগ থেকে ছাত্র-জনতার একটি মিছিল আসে।

তিনি আরও বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এসি-কোতয়ালী জোন মো. আরিফুজ্জামান, এডিসি ডিবি মো. শাহ নুর আলম পাটোয়ারী ও তাজহাট থানার ওসি মো. রবিউল ইসলাম উপস্থিত সকল পুলিশ সদস্যদেরকে বেরোবির ১ নম্বর গেটের সামনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে দেন।

আশরাফুল ইসলাম বলেন, ছাত্ররা গেটে প্রবেশের চেষ্টা করলে এসি আরিফুজ্জামান বাধা দেন এবং বাকবিতণ্ডা হয়। এরপর উপস্থিত ফোর্সকে এসি আরিফুজ্জামান হুইসেল, লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের নির্দেশ দেন।

তিনি আরও বলেন, গ্যাসগান ফায়ার করার পর ছাত্র-জনতা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরক্ষণে এসি আরিফুজ্জামান উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেটের ভিতরে প্রবেশ করেন।

ঘটনার পরবর্তী বর্ণনা দিতে গিয়ে আশরাফুল ইসলাম বলেন, কিছু সময় পর ছাত্র-জনতা গেট ধাক্কাধাক্কি করে খুলে ভিতরে প্রবেশের চেষ্টা করে। পরক্ষণে এসি আরিফুজ্জামান, ওসি তাজহাট থানার রবিউল ইসলাম ও এডিসি ডিবি শাহ নুর আলম পাটোয়ারী পুলিশ সদস্যদের সামনে ডাকেন এবং শটগান ফায়ার করতে বলেন।

জবানবন্দিতে তিনি আরও বলেন, এসি আরিফুজ্জামান স্যার ও ওসি রবিউল ইসলামের নির্দেশে এএসআই সশস্ত্র মো. আমির হোসেন, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় শটগান ফায়ার করলে রাস্তায় দুই হাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে থাকা একজন ছাত্রের গায়ে গুলি লাগে।

গুলিবিদ্ধ ওই ছাত্র (আবু সাঈদ) পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে বিকেল ৪টার দিকে তিনি জানতে পারেন যে ছাত্রটি মারা গেছেন।

উল্লেখ্য, এই মামলায় জবানবন্দিতে উল্লিখিত এএসআই আমির হোসেন ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়সহ মোট ছয়জন আসামি গ্রেপ্তার আছেন। অন্য চারজন হলেন বেরোবির সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম এবং ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী, রাফিউল হাসান রাসেল ও আনোয়ার পারভেজ। মামলার আসামি সাবেক উপাচার্যসহ মোট ২৪ জন এখনো পলাতক।

এদিকে, আজ ট্রাইব্যুনালে ব্রিফিংকালে দেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টির অপচেষ্টাকে সাংবাদিকরা ‘ন্যায়বিচারের প্রতি হুমকি’ হিসেবে দেখছেন কিনা—এমন প্রশ্নে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম বলেন, আমি থ্রেট টু জাস্টিস মনে করি না। তবে তারা এই বিচারকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য এটা করছে, এটুকু বলতে পারি।

Ad 300x250
সর্বাধিক পঠিত

সম্পর্কিত