leadT1ad

পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপ চালু, কোন দেশে কখন নিবন্ধন

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

সংগৃহীত ছবি

প্রবাসীদের পাশাপাশি দেশে নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা সরকারি চাকরিজীবী ও কারাবন্দিদের ভোটদানে চালু হয়েছে ‘পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপ’। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে এক অনুষ্ঠানে অ্যাপটি উদ্বোধন করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন।

অ্যাপটি উদ্বোধনের পর নিবন্ধনের সময় নির্ধারণ করে দেয় ইসি। অঞ্চলভিত্তিক নিবন্ধিত ভোটারদের কাছে প্রবাসে ব্যালট পেপার পাঠানো হবে। পরে ভোটদান শেষে এটি ১৬ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে রিটার্নিং অফিসারের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।

সাত অঞ্চলে নিবন্ধন ১৪০ দেশের, সময় ৩৫ দিন

সাতটি অঞ্চলে ভাগ করে এই নিবন্ধন প্রক্রিয়া চলবে ১৯ নভেম্বর থেকে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই ৩৫ দিনের মধ্যে একেকটি অঞ্চল পাঁচ দিন করে নিবন্ধনের সময় পাবে।

৩৫ দিনের মধ্যে ১৪০টি দেশের প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিবন্ধন করতে হবে। সংগৃহীত ছবি
৩৫ দিনের মধ্যে ১৪০টি দেশের প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিবন্ধন করতে হবে। সংগৃহীত ছবি

নিবন্ধন প্রক্রিয়া পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ আমেরিকা ও আফ্রিকা অঞ্চলে চলবে ১৯ থেকে ২৩ নভেম্বর। উত্তর আমেরিকা এবং ওশেনিয়া অঞ্চলে ২৪ থেকে ২৮ নভেম্বর, ইউরোপে ২৯ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর, মধ্যপ্রাচ্যে ৪ থেকে ৮ ডিসেম্বর, দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় ৯ থেকে ১৩ ডিসেম্বর এবং মধ্যপ্রাচ্য (সৌদি আরব বাদে) ১৪ থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিবন্ধন চলবে। এ ছাড়া বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, নির্বাচনী দায়িত্বের কর্মকর্তা, আইনের আওতাধীন ব্যক্তিরা ১৯ থেকে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিবন্ধন করতে পারবেন।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে আউট অব কান্ট্রি ভোটিং সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ইমপ্লিমেন্টেশন প্রজেক্টের প্রধান বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) সালীম আহমাদ খান ভোটিং প্রক্রিয়া তুলে ধরেন।

তিনি পোস্টাল ভোট বিডির প্রচার, নিবন্ধন, ব্যালট পেপার ও তিন ধরনের খাম মুদ্রণ, নির্বাচন কর্মকর্তার উপস্থিতি, পার্সোনালাইজেশন (ডাক বিভাগ), পোস্টাল ব্যালট পাঠানো শুরু, ব্যালট ট্র্যাকিং, ভোট প্রদান, প্রবাসে কাছাকাছি ডাকবাক্সে খাম রাখা, পোস্টাল ব্যালট ফেরত ও ট্র্যাকিং, ডাক বিভাগ গ্রহণ, রিটার্নিং অফিসারের কাছে পৌঁছানো, রিটার্নিং অফিসারের গ্রহণ, পোস্টাল ব্যালট ব্যালট বাক্সে রাখা, গণনা, শেষ ধাপে ফল ঘোষণাসহ বিভিন্ন বিষয়ের কারিগরি দিক বিশ্লেষণ করেন।

নতুন অধ্যায় শুরু, গণতন্ত্রের জন্য মাইলফলক

সিইসি বলেন, বর্তমানে এক কোটি ৩০ লাখ মানুষ প্রবাসে বসবাস ও কর্মরত। এতদিন প্রবাসীরা ভোট দেওয়া থেকে বঞ্চিত হতেন। এই উদ্যোগ তাদের ভোটাধিকার বঞ্চনার অবসান করল।

তিনি বলেন, প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার মাধ্যমে গণতন্ত্রের ভিত্তি আরও বিস্তৃত, আরও প্রতিনিধিত্বশীল হবে। সবার ভোটাধিকার নিশ্চিতে নির্বাচন কমিশন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এটা কেবল একটি অ্যাপ নয়, এটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা।

অনুষ্ঠানে ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ বলেন, পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপ সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার পথে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। অ্যাপে নিবন্ধন করে ভোটাররা ডাকযোগে ব্যালট পাবেন এবং ভোট দিয়ে ফিরতি ডাকে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কাছে পাঠাবেন। উদ্যোগটি শুধু প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন নয়, এটি বাংলাদেশের সার্বজনীন ও অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্রের জন্য মাইলফলক।

অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, প্রবাসীদের নিবন্ধনে আমাদের বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ আছে। প্রথমটি হলো, নিবন্ধনের হার। বিশ্বে প্রবাসী ভোটারদের গড় নিবন্ধনের হার ২ দশমিক ৭ শতাংশ। দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হলো, ব্যালট ওয়েস্টেজ রেট। গ্লোবাল ওয়েস্টেজে রেট হলো ২৪ শতাংশ। প্রতি চারটিতে একটি ব্যালট নষ্ট হয়।

তিনি বলেন, আরেকটি চ্যালেঞ্জ হলো সাইবার নিরাপত্তা। বিশ্বে দেখা যায়, এ ধরনের ব্যবস্থার ক্ষেত্রে অন্তত পাঁচ বছর ট্রায়াল করা হয়। আমরা ট্রায়াল করেছি এক মাসও হয়নি। তবে আমরা নিশ্চতি করছি, এমন কোনো ত্রুটি যেন না থাকে যা ভোটকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে।

আয়োজকরা জানান, স্মার্টফোন অ্যাপ এবং ডাক ব্যালটের সমন্বয়ে তৈরি এই হাইব্রিড সমাধানের মাধ্যমে যোগ্য প্রবাসী, নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত সরকারি কর্মকর্তা এবং সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।

ইসির মতে, অ্যাপটির লক্ষ্য অনাবাসী বাংলাদেশি ভোটারদের জন্য দ্রুত, নিরাপদ এবং আরও ব্যবহারকারীবান্ধব প্রক্রিয়া নিশ্চিত করে ভোটদান ব্যবস্থার একটি নতুন পথ উন্মোচন করা।

Ad 300x250
সর্বাধিক পঠিত

সম্পর্কিত