leadT1ad

মল চত্বরে রাতে নারী শিক্ষার্থীদের বসতে বাধা, প্রশাসন বলছে ‘ভুল বোঝাবুঝি’

স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশ : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০: ৫২
সংগৃহীত ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মল চত্বর এলাকায় রাতের বেলায় নারী শিক্ষার্থীদের ঢুকতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মীরা বাধা প্রদান করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে প্রশাসন বলছে, ‘এটি ভুল বোঝাবুঝি’।

গত শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী ইশরাত জাহান গয়না সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে এ অভিযোগ করেন। পরে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিবাদে সরব হয়ে ওঠেন নারী শিক্ষার্থীরা। অন্যান্য নারী শিক্ষার্থীরাও নিজেদের অভিজ্ঞতা সামনে এনেছেন।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ সেশনের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মুক্তা আক্তার স্ট্রিমকে জানান, তিনি গতকাল আনুমানিক রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাঁর বোন এবং বন্ধুদের সঙ্গে মল চত্বরে আসেন। ১০টার দিকে কর্মচারীরা তাঁদেরকে বের করতে চেষ্টা করলে তাঁরা জানান, তাঁরা ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থী। কর্মচারীরা তখন বলেন, ‘কোনো নারী শিক্ষার্থী রাত ১০টার পরে এখানে থাকতে পারবে না, প্রক্টরের নির্দেশ আছে, স্যারকে কল দেন।’ তারপর অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রক্টর জাহাঙ্গীর আলমকে কল দেওয়া হলে তিনি জানান, ছেলেরা থাকতে পারলেও মেয়েরা নিরাপত্তাজনিত কারণে রাত ১০টার পর অবস্থান করতে পারবে না।

অন্যদিকে ইশরাত জাহান গয়না ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন, ‘আমি ও আমার বান্ধবী রিকশা থেকে নামি, তখন প্রায় ১০টা ৩৮-এর মতো বাজে। মল চত্বরে আমরা ঢোকার সময় দুইজন গার্ড আমাদের ডেকে বারণ করেন ভিতরে ঢুকতে, আমি বহিরাগত ভেবে উনারা মানা করছেন মনে করে আমি জানাই যে আমরা ঢাবিরই স্টুডেন্ট এবং ক্যাম্পাসেই থাকি। কিন্তু তিনি জানালেন সে জন্য না- নিয়ম হয়েছে ওপরের অর্ডারে যে মেয়েরা মল চত্বরে ১০টার পর ঢুকতে পারবে না।’

ওই পোস্টে ইশরাত জাহান গয়না আরও বলেন, 'এরপর প্রক্টরকে কল দেই। তবে প্রক্টরও ওই নিরাপত্তাকর্মীর মতো প্রায় একই কথা বলেন। তখন তাঁকে প্রশ্ন করি, আমরা তো এই নিয়ম জানতাম না, কবে থেকে হলো এমন নিয়ম? উত্তরে প্রক্টর বলেন, নিরাপত্তা বিষয়ক কারণে যেহেতু কোনো অঘটন ঘটলে তাদের জবাবদিহি করতে হবে তাই এই নিয়ম।'

ফেসবুক পোস্টে ইশরাত আরও লিখেন, প্রক্টর তাঁর কাছে বাবা-মায়ের নম্বর চান ও সেই সঙ্গে নিরাপত্তাকর্মীদের তাঁর আইডির ছবি তুলে রাখতে বলেন।

এদিকে গতকাল বেলা তিনটার দিকে প্রক্টর অফিস থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পেজে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়, একজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। প্রক্টর অফিসের বিবৃতির কমেন্টবক্সে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের বিরূপ প্রতিক্রিয়া।

প্রক্টর অফিসের বিবৃতি
প্রক্টর অফিসের বিবৃতি

ইশরাত জাহানের সঙ্গে যোগাযোগ করে স্ট্রিম জানতে পারে, প্রশাসন বিবৃতিতে একজনের কথা বলেছে, কিন্তু অনেকেই এমন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন।

যদিও বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এমন কোনো নিয়ম নেই। তবে এ প্রসঙ্গে ইশরাত জাহান বলেন, গতকাল রাতেও তিনি নিয়মের দোহাই দিয়েছিলেন। এটা কোনো ভুল বোঝাবুঝি না।

অন্যদিকে, ইমরান নামের আরেকজন শিক্ষার্থী তাঁর অভিজ্ঞতা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করে লিখেছেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের মিথ্যাচারের শেষ কোথায়? গতকাল আমাদেরকে সহকারী প্রক্টর জানিয়েছে, রাত ১০টায় মেয়েদের হল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর আর কোনো মেয়ে ক্যাম্পাসে থাকতে পারবে না, এটাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এটাই সত্যি। আর আজকে বিবৃতি দিচ্ছে, এরকম সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি, যা হয়েছে ভুল বোঝাবুঝি।’

এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল রাত ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মল চত্বর এলাকায় প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করেছে একদল নারী শিক্ষার্থী।

Ad 300x250

সম্পর্কিত