leadT1ad

বায়োবাংলা ইন্টারন্যাশনাল পোস্টার কম্পিটিশন

বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানে সক্ষম তরুণ বিজ্ঞানীরা

স্ট্রিম ডেস্ক
স্ট্রিম ডেস্ক

প্রতিযোগিতায় প্রথম হওয়া চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের দুই শিক্ষার্থী। সংগৃহীত ছবি

সাতটি দেশের প্রায় দুইশ প্রতিযোগীর অংশগ্রহণে শেষ হয়েছে চলতি বছরের বায়োবাংলা ইন্টারন্যাশনাল পোস্টার কম্পিটিশন। প্রায় আশিটি দল নিয়ে অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতাটি ভার্চুয়াল বৈজ্ঞানিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন। এর মধ্যে তরুণ বিজ্ঞানীরা বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষমতা প্রমাণ করেছেন বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।

প্রতিযোগিতায় পর্তুগাল, নেপাল, ভারত, ভুটান, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও সৌদি আরবসহ মোট ৭টি দেশের প্রতিযোগী ও বিচারকেরা অংশগ্রহণ নেন। এর থিম ছিল, ‘রিসার্চ বিয়ন্ড দ্য ল্যাব : ভিজুয়ালাইজিং লাইফ সায়েন্স ইনোভেশনস।’ গত বুধবার (১০ ডিসেম্বর) চূড়ান্তভাবে জয়ী তিন প্রতিযোগীর বৈজ্ঞানিক কাজ প্রদর্শনের মধ্যদিয়ে এই আয়োজন শেষ হয়। অনুষ্ঠানটির মিডিয়া ‍পার্টনার ছিল ঢাকা স্ট্রিম।

এর আগে ৬ ডিসেম্বর জুম প্ল্যাটফর্মে প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী সেশন পরিচালনা করেন মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি অফ মালয়ার ফ্যাকাল্টি অব ফার্মেসির ড. জাসিম উদ্দিন। এতে জমা দেওয়া প্রকল্পগুলো মূল্যায়ন ও চূড়ান্ত প্রতিযোগিতার জন্য এগারোটি দলের সংক্ষিপ্ত তালিকা (শর্টলিস্ট) করেন ১১ জন বিচারক।

প্রতিযোগিতায় প্রথম রানার্স আপ হয়েছে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী। সংগৃহীত ছবি
প্রতিযোগিতায় প্রথম রানার্স আপ হয়েছে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী। সংগৃহীত ছবি

গত মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) এর চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা হয়। এতে নির্বাচিত দলগুলো তাদের গবেষণা উপস্থাপন করেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সামনে। এতে তিনটি দল তাদের উদ্ভাবন-নির্ভর গবেষণার মাধ্যমে শীর্ষস্থান অর্জন করে।
বৈশ্বিক প্রতিভার মূল্যায়নে বিচারক প্যানেলে ছিলেন সৌদি আরবের আল কাসিম ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক ও সায়েন্টিফিক বাংলাদেশ-এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ড. মোনির উদ্দিন আহমেদ, ফ্রান্সের বিপিআই ডিপটেক-এর স্ট্র্যাটেজিক অ্যাডভাইজার ড. নিশা সিঙ্ঘানিয়া এবং পাকিস্তানের ইসলামিয়া কলেজ ইউনিভার্সিটি পেশাওয়ারের সহকারী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইলিয়াস।

প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সায়েদা মুসফিকা জাহান ও মাহীরা চৌধুরীর দল ‘বিবিপিসি ১৩’। তাঁদের প্রস্তাবিত প্রকল্পটি এআই-ভিত্তিক স্ক্রিনিং সিস্টেমে কম খরচে ব্রেস্ট ক্যান্সার শনাক্তকরণকে সহজলভ্য ও নির্ভুল করার সম্ভাবনা দেখিয়েছে। প্রতিযোগিতায় প্রথম রানার্স আপ হয়েছে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ফাতেমাতুজ জোহরা শায়লী ও ফাব্বিহা বুশরা রিয়ানা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইশা রাইয়ান মুমুর দল ‘বিবিপিসি ৩’। তাঁদের গবেষণায় উঠে এসেছে নির্দিষ্ট মাইক্রোবিয়াল স্ট্রেইন ব্যবহার করে বাতাসের কার্বন ডাইঅক্সাইডকে কম ক্ষতিকর বা ব্যবহারযোগ্য যৌগে রূপান্তরের পদ্ধতি।

দ্বিতীয় রানার্সআপ হয়েছে পাকিস্তানের কমস্যাটস ইউনিভার্সিটি ইসলামাবাদ-এর তিন শিক্ষার্থী। সংগৃহীত ছবি
দ্বিতীয় রানার্সআপ হয়েছে পাকিস্তানের কমস্যাটস ইউনিভার্সিটি ইসলামাবাদ-এর তিন শিক্ষার্থী। সংগৃহীত ছবি

এ ছাড়া পাকিস্তানের কমস্যাটস ইউনিভার্সিটি ইসলামাবাদের জুহা আহমাদ, রামিশা ফাতিমা ও আম্মারা ফিদার দল ‘বিবিপিসি ৩০’ তৃতীয় স্থান (সেকেন্ড রানার্স আপ) অর্জন করে। ‘স্মার্ট বি জিনোমিক্স’ প্রকল্পে জিনগত সূচকের মাধ্যমে কলোনি পতনের ঝুঁকি আগেই শনাক্ত করতে সক্ষম এআই-মডেল উপস্থাপন করেন তাঁরা। এটি সংরক্ষণ পরিকল্পনা ও কৃষি উৎপাদনশীলতার জন্য উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে বলে জানা গেছে।

প্রতিযোগিতায় সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সাদিয়া ইয়াসমিন। আয়োজনের পার্টনার হিসেবে যুক্ত ছিল হায়ার স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চ ক্লাব (এইচএসআরসি), বিবিএমবি, কক্সবাজার সিটি কলেজ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ রিসার্চ ক্লাব, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ন্যাচারাল সায়েন্সেস ক্লাব, আরএমএসটিইউ ক্যারিয়ার ক্লাব, অর্গানাইজেশন অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট (ওডিএম), এসবিএমসি রিসার্চ অ্যান্ড জার্নাল ক্লাব, বায়োটেকনোলজি ক্লাব, এমবিএসটিইউ, এনএসটিইউ সায়েন্স ক্লাব, বায়োলজিক্যাল ফ্যাকাল্টি, কো-কারিকুলার সোসাইটি, সিইউ, মিস্ট আইনথোভেন ক্লাব। এর মধ্যে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ন্যাচারাল সায়েন্সেস ক্লাব–কে বছরের সেরা আউটরিচ পার্টনার হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে।

ইভেন্টের সমাপনীতে বায়োবাংলার প্রতিষ্ঠাতা হুসাইন মোহাম্মদ মাসুম বলেন, ‘বায়োবাংলা ইন্টারন্যাশনাল পোস্টার কম্পিটিশন ২০২৫ প্রমাণ করেছে যে গবেষণা, উদ্ভাবন এবং সহযোগিতার সমন্বয়ে তরুণ বিজ্ঞানীরা বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম। আগামী বছর দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশকে যুক্ত করে এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় বৈজ্ঞানিক আয়োজন করার লক্ষ্য আমাদের। আমরা চাই তরুণ গবেষকদের উদ্দীপনা বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়ন এবং মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজে লাগুক।’

Ad 300x250

সম্পর্কিত