স্ট্রিম ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার তেল পরিবহনের ওপর নতুন কড়াকড়ি আরোপের নির্দেশ দিয়েছেন। মঙ্গলবার তিনি ভেনেজুয়েলায় যাতায়াতকারী সব নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারের ওপর ‘অবরোধ’ দেওয়ার ঘোষণা দেন।
এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ওয়াশিংটন ভেনেজুয়েলার সরকারকে আরও চাপের মুখে ফেলতে চায়। দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারের প্রধান আয়ের উৎস হলো তেল। এই উৎসকে লক্ষ্য করেই নতুন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এই অবরোধ বাস্তবে কীভাবে কার্যকর করা হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। ট্রাম্প আগেও যুক্তরাষ্ট্রের কোস্ট গার্ড ব্যবহার করে ট্যাংকার আটক করেছিলেন। এবারও একই পদ্ধতি নেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য নেই।
তবে যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে ওই অঞ্চলে বড় ধরনের সামরিক উপস্থিতি জোরদার করেছে। হাজার হাজার সেনা পাঠানো হয়েছে। একটি বিমানবাহী রণতরীসহ প্রায় এক ডজন যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করা হয়েছে।
ট্রাম্পের বক্তব্য ও ভেনেজুয়েলার প্রতিক্রিয়া
ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে বলেন, ভেনেজুয়েলা যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদ চুরি করেছে। তিনি সন্ত্রাসবাদ, মাদক পাচার ও মানবপাচারের অভিযোগও তোলেন।
তিনি জানান, এসব কারণেই ভেনেজুয়েলার সরকারকে ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর পরই তিনি সব নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারে সম্পূর্ণ অবরোধের নির্দেশ দেন।
ভেনেজুয়েলার সরকার এই ঘোষণাকে ‘কুৎসিত ও অগ্রহণযোগ্য হুমকি’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।
তেলের বাজারে প্রভাব
ট্রাম্পের ঘোষণার পর আন্তর্জাতিক তেলের বাজারে দাম বেড়েছে। বুধবার এশিয়ার বাজারে তেলের দাম ১ শতাংশের বেশি বেড়ে যায়। ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি প্রায় ১ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ৫৯ দশমিক ৬২ ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম বাড়ে প্রায় ১ দশমিক ৩ শতাংশ।
এর আগে মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের তেলের দাম নেমে এসেছিল ৫৫ দশমিক ২৭ ডলারে। এটি ছিল ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির পর সর্বনিম্ন।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি কমে যাওয়ার আশঙ্কায় দাম বাড়ছে। তবে অবরোধ কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়েছে। নিষেধাজ্ঞাবিহীন জাহাজগুলোও এর আওতায় পড়বে কি না, তা পরিষ্কার নয়।
আইনি বিতর্ক
আইনগত দিক থেকেও এই সিদ্ধান্ত প্রশ্নের মুখে পড়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্টদের বিদেশে সেনা মোতায়েনের ক্ষমতা থাকলেও এ ধরনের অবরোধ নতুন বিতর্ক তৈরি করেছে।
বার্কলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিশেষজ্ঞ এলেনা চাচকো বলেন, অবরোধ সাধারণত যুদ্ধের একটি কৌশল হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে এর জন্য কঠোর আইনি শর্ত রয়েছে। তিনি জানান, এই সিদ্ধান্ত দেশীয় ও আন্তর্জাতিক, উভয় আইনেই প্রশ্নবিদ্ধ।
মার্কিন কংগ্রেস সদস্য জোয়াকিন কাস্ত্রো বলেন, এই অবরোধ নিঃসন্দেহে যুদ্ধের শামিল। তার দাবি, এই যুদ্ধ কংগ্রেস অনুমোদন দেয়নি। মার্কিন জনগণও যুদ্ধ চায় না।
ভেনেজুয়েলার রপ্তানি ও বর্তমান পরিস্থিতি
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার উপকূলে একটি নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকার জব্দ করে। এর পর কার্যত একটি অবরোধের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
অনেক তেলবাহী জাহাজ জব্দ হওয়ার আশঙ্কায় ভেনেজুয়েলার জলসীমায় অপেক্ষা করছে। ফলে দেশটির তেল রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।
এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি পিডিভিএসএর প্রশাসনিক ব্যবস্থায় একটি সাইবার হামলা হয়েছে। এতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
যদিও অনেক জাহাজ নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে, তবু কিছু জাহাজ এখনো নিষেধাজ্ঞামুক্ত। ইরান ও রাশিয়া থেকে তেল পরিবহনকারী কিছু জাহাজ এতে অন্তর্ভুক্ত।
এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের শেভরনের মতো কিছু কোম্পানি অনুমোদিত জাহাজে ভেনেজুয়েলার তেল পরিবহন করছে।
চীন ও বৈশ্বিক সরবরাহের প্রভাব
ভেনেজুয়েলার তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা চীন। চীনের মোট তেল আমদানির প্রায় ৪ শতাংশ আসে ভেনেজুয়েলা থেকে। ডিসেম্বরে প্রতিদিন গড়ে ৬ লাখ ব্যারেলের বেশি তেল চীনে পাঠানোর পরিকল্পনা ছিল।
বর্তমানে বিশ্ববাজারে তেলের সরবরাহ মোটামুটি স্বাভাবিক। চীনের উপকূলে বহু ট্যাংকার তেল খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে।
তবে অবরোধ দীর্ঘস্থায়ী হলে প্রতিদিন প্রায় ১০ লাখ ব্যারেল তেল বাজার থেকে হারাতে পারে। এতে তেলের দাম আরও বাড়তে পারে।
সম্ভাব্য অর্থনৈতিক ও মানবিক প্রভাব
দুজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, এই নীতি পুরোপুরি কার্যকর হলে মাদুরো সরকারের ওপর বড় ধরনের প্রভাব পড়বে।
সাবেক মার্কিন জ্বালানি কূটনীতিক ডেভিড গোল্ডউইন বলেন, ওপেক যদি বিকল্প সরবরাহ না বাড়ায়, তাহলে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৫ থেকে ৮ ডলার পর্যন্ত বাড়তে পারে।
তার মতে, ভেনেজুয়েলায় মূল্যস্ফীতি ভয়াবহ আকার নিতে পারে। একই সঙ্গে প্রতিবেশী দেশগুলোতে মানুষের বড় আকারের অভিবাসন শুরু হতে পারে।
ছায়া জাহাজ বহর
২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার ওপর জ্বালানি নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর তেল ব্যবসায়ীরা ভিন্ন পথ বেছে নেয়। তারা ‘শ্যাডো ফ্লিট’ নামে পরিচিত জাহাজ ব্যবহার শুরু করে।
এই জাহাজগুলো নিজেদের অবস্থান গোপন রাখে। অনেক ক্ষেত্রে ইরান বা রাশিয়ার তেল পরিবহনে নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত জাহাজ ব্যবহার করা হয়।
ট্যাংকারট্র্যাকার্স ডটকমের তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহে ভেনেজুয়েলার জলসীমায় থাকা বা দেশটির দিকে আসা ৮০টি জাহাজের মধ্যে ৩০টির বেশি যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় ছিল।
উত্তেজনা আরও বেড়েছে
ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর ওপর চাপ বাড়াতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন সামরিক তৎপরতা জোরদার করেছে। এই চাপের অংশ হিসেবে ভেনেজুয়েলার কাছাকাছি প্রশান্ত মহাসাগর ও ক্যারিবীয় সাগরে দুই ডজনের বেশি সামরিক হামলা চালানো হয়েছে। এই হামলাগুলোতে অন্তত ৯০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
ট্রাম্প আরও বলেছেন, ভেনেজুয়েলার ভেতরে যুক্তরাষ্ট্রের স্থলভিত্তিক হামলাও শিগগিরই শুরু হতে পারে।
মাদুরো অভিযোগ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই সামরিক প্রস্তুতির উদ্দেশ্য তাকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করা। তার মতে, ওপেকভুক্ত এই দেশের বিশাল তেলসম্পদের নিয়ন্ত্রণ নেওয়াই যুক্তরাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য। ভেনেজুয়েলার কাছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অপরিশোধিত তেলের মজুত রয়েছে।
ভ্যানিটি ফেয়ার সাময়িকীকে দেওয়া এক বিস্তৃত সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পের চিফ অব স্টাফ সুজি ওয়াইলস বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মাদুরোর ওপর চাপ অব্যাহত রাখতে চান। তার ভাষায়, মাদুরো পরাজয় স্বীকার না করা পর্যন্ত ট্রাম্প নৌযান ধ্বংসের অভিযান চালিয়ে যেতে চান।
এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে পেন্টাগন ও যুক্তরাষ্ট্রের কোস্ট গার্ড সব প্রশ্ন হোয়াইট হাউসের কাছে পাঠিয়েছে। এরই মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসন ভেনেজুয়েলার ‘কার্টেল দে লোস সোলেস’ নামের সংগঠনকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, এই সংগঠনের সঙ্গে মাদুরো এবং সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা জড়িত।
মঙ্গলবার ট্রাম্পের ঘোষণার আগেই দেওয়া এক বক্তব্যে নিকোলাস মাদুরো বলেন, সাম্রাজ্যবাদ ও চরম ডানপন্থীরা ভেনেজুয়েলাকে উপনিবেশে পরিণত করতে চায়। তার অভিযোগ, তারা দেশের তেল, গ্যাস, সোনা ও অন্যান্য খনিজ সম্পদ দখল করতে চায়।
মাদুরো আরও বলেন, ভেনেজুয়েলার জনগণ দেশ রক্ষার শপথ নিয়েছে। তার মতে, সব প্রতিকূলতার মধ্যেও ভেনেজুয়েলায় শান্তিই বিজয়ী হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার তেল পরিবহনের ওপর নতুন কড়াকড়ি আরোপের নির্দেশ দিয়েছেন। মঙ্গলবার তিনি ভেনেজুয়েলায় যাতায়াতকারী সব নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারের ওপর ‘অবরোধ’ দেওয়ার ঘোষণা দেন।
এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ওয়াশিংটন ভেনেজুয়েলার সরকারকে আরও চাপের মুখে ফেলতে চায়। দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারের প্রধান আয়ের উৎস হলো তেল। এই উৎসকে লক্ষ্য করেই নতুন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এই অবরোধ বাস্তবে কীভাবে কার্যকর করা হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। ট্রাম্প আগেও যুক্তরাষ্ট্রের কোস্ট গার্ড ব্যবহার করে ট্যাংকার আটক করেছিলেন। এবারও একই পদ্ধতি নেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য নেই।
তবে যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে ওই অঞ্চলে বড় ধরনের সামরিক উপস্থিতি জোরদার করেছে। হাজার হাজার সেনা পাঠানো হয়েছে। একটি বিমানবাহী রণতরীসহ প্রায় এক ডজন যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করা হয়েছে।
ট্রাম্পের বক্তব্য ও ভেনেজুয়েলার প্রতিক্রিয়া
ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে বলেন, ভেনেজুয়েলা যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদ চুরি করেছে। তিনি সন্ত্রাসবাদ, মাদক পাচার ও মানবপাচারের অভিযোগও তোলেন।
তিনি জানান, এসব কারণেই ভেনেজুয়েলার সরকারকে ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর পরই তিনি সব নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারে সম্পূর্ণ অবরোধের নির্দেশ দেন।
ভেনেজুয়েলার সরকার এই ঘোষণাকে ‘কুৎসিত ও অগ্রহণযোগ্য হুমকি’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।
তেলের বাজারে প্রভাব
ট্রাম্পের ঘোষণার পর আন্তর্জাতিক তেলের বাজারে দাম বেড়েছে। বুধবার এশিয়ার বাজারে তেলের দাম ১ শতাংশের বেশি বেড়ে যায়। ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি প্রায় ১ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ৫৯ দশমিক ৬২ ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম বাড়ে প্রায় ১ দশমিক ৩ শতাংশ।
এর আগে মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের তেলের দাম নেমে এসেছিল ৫৫ দশমিক ২৭ ডলারে। এটি ছিল ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির পর সর্বনিম্ন।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি কমে যাওয়ার আশঙ্কায় দাম বাড়ছে। তবে অবরোধ কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়েছে। নিষেধাজ্ঞাবিহীন জাহাজগুলোও এর আওতায় পড়বে কি না, তা পরিষ্কার নয়।
আইনি বিতর্ক
আইনগত দিক থেকেও এই সিদ্ধান্ত প্রশ্নের মুখে পড়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্টদের বিদেশে সেনা মোতায়েনের ক্ষমতা থাকলেও এ ধরনের অবরোধ নতুন বিতর্ক তৈরি করেছে।
বার্কলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিশেষজ্ঞ এলেনা চাচকো বলেন, অবরোধ সাধারণত যুদ্ধের একটি কৌশল হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে এর জন্য কঠোর আইনি শর্ত রয়েছে। তিনি জানান, এই সিদ্ধান্ত দেশীয় ও আন্তর্জাতিক, উভয় আইনেই প্রশ্নবিদ্ধ।
মার্কিন কংগ্রেস সদস্য জোয়াকিন কাস্ত্রো বলেন, এই অবরোধ নিঃসন্দেহে যুদ্ধের শামিল। তার দাবি, এই যুদ্ধ কংগ্রেস অনুমোদন দেয়নি। মার্কিন জনগণও যুদ্ধ চায় না।
ভেনেজুয়েলার রপ্তানি ও বর্তমান পরিস্থিতি
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার উপকূলে একটি নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকার জব্দ করে। এর পর কার্যত একটি অবরোধের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
অনেক তেলবাহী জাহাজ জব্দ হওয়ার আশঙ্কায় ভেনেজুয়েলার জলসীমায় অপেক্ষা করছে। ফলে দেশটির তেল রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।
এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি পিডিভিএসএর প্রশাসনিক ব্যবস্থায় একটি সাইবার হামলা হয়েছে। এতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
যদিও অনেক জাহাজ নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে, তবু কিছু জাহাজ এখনো নিষেধাজ্ঞামুক্ত। ইরান ও রাশিয়া থেকে তেল পরিবহনকারী কিছু জাহাজ এতে অন্তর্ভুক্ত।
এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের শেভরনের মতো কিছু কোম্পানি অনুমোদিত জাহাজে ভেনেজুয়েলার তেল পরিবহন করছে।
চীন ও বৈশ্বিক সরবরাহের প্রভাব
ভেনেজুয়েলার তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা চীন। চীনের মোট তেল আমদানির প্রায় ৪ শতাংশ আসে ভেনেজুয়েলা থেকে। ডিসেম্বরে প্রতিদিন গড়ে ৬ লাখ ব্যারেলের বেশি তেল চীনে পাঠানোর পরিকল্পনা ছিল।
বর্তমানে বিশ্ববাজারে তেলের সরবরাহ মোটামুটি স্বাভাবিক। চীনের উপকূলে বহু ট্যাংকার তেল খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে।
তবে অবরোধ দীর্ঘস্থায়ী হলে প্রতিদিন প্রায় ১০ লাখ ব্যারেল তেল বাজার থেকে হারাতে পারে। এতে তেলের দাম আরও বাড়তে পারে।
সম্ভাব্য অর্থনৈতিক ও মানবিক প্রভাব
দুজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, এই নীতি পুরোপুরি কার্যকর হলে মাদুরো সরকারের ওপর বড় ধরনের প্রভাব পড়বে।
সাবেক মার্কিন জ্বালানি কূটনীতিক ডেভিড গোল্ডউইন বলেন, ওপেক যদি বিকল্প সরবরাহ না বাড়ায়, তাহলে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৫ থেকে ৮ ডলার পর্যন্ত বাড়তে পারে।
তার মতে, ভেনেজুয়েলায় মূল্যস্ফীতি ভয়াবহ আকার নিতে পারে। একই সঙ্গে প্রতিবেশী দেশগুলোতে মানুষের বড় আকারের অভিবাসন শুরু হতে পারে।
ছায়া জাহাজ বহর
২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার ওপর জ্বালানি নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর তেল ব্যবসায়ীরা ভিন্ন পথ বেছে নেয়। তারা ‘শ্যাডো ফ্লিট’ নামে পরিচিত জাহাজ ব্যবহার শুরু করে।
এই জাহাজগুলো নিজেদের অবস্থান গোপন রাখে। অনেক ক্ষেত্রে ইরান বা রাশিয়ার তেল পরিবহনে নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত জাহাজ ব্যবহার করা হয়।
ট্যাংকারট্র্যাকার্স ডটকমের তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহে ভেনেজুয়েলার জলসীমায় থাকা বা দেশটির দিকে আসা ৮০টি জাহাজের মধ্যে ৩০টির বেশি যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় ছিল।
উত্তেজনা আরও বেড়েছে
ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর ওপর চাপ বাড়াতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন সামরিক তৎপরতা জোরদার করেছে। এই চাপের অংশ হিসেবে ভেনেজুয়েলার কাছাকাছি প্রশান্ত মহাসাগর ও ক্যারিবীয় সাগরে দুই ডজনের বেশি সামরিক হামলা চালানো হয়েছে। এই হামলাগুলোতে অন্তত ৯০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
ট্রাম্প আরও বলেছেন, ভেনেজুয়েলার ভেতরে যুক্তরাষ্ট্রের স্থলভিত্তিক হামলাও শিগগিরই শুরু হতে পারে।
মাদুরো অভিযোগ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই সামরিক প্রস্তুতির উদ্দেশ্য তাকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করা। তার মতে, ওপেকভুক্ত এই দেশের বিশাল তেলসম্পদের নিয়ন্ত্রণ নেওয়াই যুক্তরাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য। ভেনেজুয়েলার কাছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অপরিশোধিত তেলের মজুত রয়েছে।
ভ্যানিটি ফেয়ার সাময়িকীকে দেওয়া এক বিস্তৃত সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পের চিফ অব স্টাফ সুজি ওয়াইলস বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মাদুরোর ওপর চাপ অব্যাহত রাখতে চান। তার ভাষায়, মাদুরো পরাজয় স্বীকার না করা পর্যন্ত ট্রাম্প নৌযান ধ্বংসের অভিযান চালিয়ে যেতে চান।
এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে পেন্টাগন ও যুক্তরাষ্ট্রের কোস্ট গার্ড সব প্রশ্ন হোয়াইট হাউসের কাছে পাঠিয়েছে। এরই মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসন ভেনেজুয়েলার ‘কার্টেল দে লোস সোলেস’ নামের সংগঠনকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, এই সংগঠনের সঙ্গে মাদুরো এবং সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা জড়িত।
মঙ্গলবার ট্রাম্পের ঘোষণার আগেই দেওয়া এক বক্তব্যে নিকোলাস মাদুরো বলেন, সাম্রাজ্যবাদ ও চরম ডানপন্থীরা ভেনেজুয়েলাকে উপনিবেশে পরিণত করতে চায়। তার অভিযোগ, তারা দেশের তেল, গ্যাস, সোনা ও অন্যান্য খনিজ সম্পদ দখল করতে চায়।
মাদুরো আরও বলেন, ভেনেজুয়েলার জনগণ দেশ রক্ষার শপথ নিয়েছে। তার মতে, সব প্রতিকূলতার মধ্যেও ভেনেজুয়েলায় শান্তিই বিজয়ী হবে।

গাজা পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পরিকল্পনার কারণে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির এখন আন্তর্জাতিক আলোচনার কেন্দ্রে। বিশ্লেষকদের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে অর্জিত বিশাল ক্ষমতার পর এটি তার জন্য সবচেয়ে বড় পরীক্ষা হতে যাচ্ছে।
৩ ঘণ্টা আগে
গাজা উপত্যকায় তীব্র শীতের কারণে এক ফিলিস্তিনি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শিশুটি ঠান্ডায় জমে মারা যায়। ইসরায়েল গাজায় আশ্রয়সামগ্রী ও মানবিক সহায়তা প্রবেশে কড়াকড়ি অব্যাহত রেখেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
৫ ঘণ্টা আগে
অবশেষে ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের (বিবিসি) বিরুদ্ধে মামলা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মামলায় ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ লাখ ২২ হাজার ১৭৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা) ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন ট্রাম্প।
১ দিন আগে
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফেন্টানিলকে ‘গণবিধ্বংসী অস্ত্র’ হিসেবে চিহ্নিত করতে একটি নির্বাহী আদেশে সই করার ঘোষণা দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি ফেন্টানিল তৈরির মূল উপাদানগুলোকেও এই শ্রেণিভুক্ত করার কথা বলেছেন।
১ দিন আগে