leadT1ad

সুপার টাইফোন রাগাসার আঘাতে তাইওয়ানে নিহত ১৪, বিপর্যস্ত হংকং

স্ট্রিম ডেস্ক
প্রকাশ : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১: ১৯
হংকংয়ে রাগাসার ঝড়ো হাওয়ায় নিজের ভারসাম্য রক্ষায় ট্রাফিক সিগন্যালের খুঁটি আকড়ে আছেন এক নারী। ছবি: সংগৃহীত

চলতি বছরের সবচেয়ে শক্তিশালী উপকূলীয় ঘূর্ণিঝড় সুপার টাইফোন রাগাসা হংকং ও তাইওয়ানে আঘাত হেনেছে। ঘূর্ণিঝড়টির তাণ্ডবে এবং প্রবল বৃষ্টিপাতে তাইওয়ানে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৪ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে ভারী বৃষ্টি ও প্রবল বাতাসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে হংকং।

আজ বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, তাইওয়ানের ফায়ার বিভাগ জানিয়েছে—আজ রাগাসার প্রভাবে প্রবল বৃষ্টিপাতে তাইওয়ানের পূর্বাঞ্চলীয় হুয়ালিয়েন কাউন্টির এক ব্যারিয়ার হ্রদ উপচে পড়ে একটি শহর প্লাবিত হয়েছে। সোমবার থেকেই রাগাসার অগ্রভাগ তাইওয়ান দ্বীপে আঘাত হানতে শুরু করেছিল। এর ফলে সেখানে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল।

অন্যদিকে, রাগাসার প্রভাবে হংকংয়ের এশিয়ান ফিন্যান্সিয়াল হাবের পূর্ব ও দক্ষিণ উপকূলের কিছু অংশে বিশাল ঢেউ আছড়ে পড়ে। এতে সেখানকার বেশ কয়েকটি সড়কের পাশাপাশি আবাসিক সম্পত্তিও পানিতে ডুবে যায়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, হংকংয়ের দক্ষিণ অংশে অবস্থিত ফুলারটন হোটেলের কাচের দরজা সমুদ্রের ঢেউয়ে ভেঙে মেঝে প্লাবিত হয়েছে। বুধবার হোটেলটিতে ফোন দিয়েও কাউকে পাওয়া যায়নি।

এছাড়া, রাগাসার প্রভাবে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থাকা ল্যানটাউসহ পার্শ্ববর্তী দ্বীপগুলিতে বন্যা দেখা গেছে। জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে সৈকত ও গাছপালা।

হংকংয়ের আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টির বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার (১২৪ মাইল) পর্যন্ত ছুঁয়েছে। শহর থেকে মাত্র ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করা রাগাসা আগামী কয়েক ঘণ্টায় আরও এগিয়ে আসবে।

এদিকে, রাগাসা সুপার টাইফুনের তীব্রতা নিয়েই ঘূর্ণিঝড়টি চীনের গুয়াংডং প্রদেশের উপকূলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। গুয়াংডংতে সাড়ে ১২ কোটি মানুষের বসবাস। আজ দুপুরের দিকে এটি প্রদেশটির উপকূলের স্থলভাগে আঘাত হানবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এর আগে এটি সোমবার উত্তর ফিলিপাইন এবং মঙ্গলবার তাইওয়ানজুড়ে বয়ে যায়। অন্যদিকে, এই টাইফুনের ফলে হংকংয়ের বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সুপারমার্কেটগুলোতে মানুষের দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। তাঁরা নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য দ্রব্যের মজুদ করেছেন। কারণ, অনেকের ধারণা রাগাসার তাণ্ডবের কারণে সুপারমার্কেটগুলো অন্তত দুইদিন বন্ধ থাকবে।

এমন পরিস্থিতিতে হংকং কর্তৃপক্ষ বুধবার ভোরে সর্বোচ্চ সতর্ক সংকেত ১০ জারি করেছে। সতর্ক সংকেতের নির্দেশনা অনুযায়ী, ব্যবসা-বাণিজ্য ও পরিবহন বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। অনেকে কাচ ভেঙে গেলে আঘাত কমানোর জন্য জানালায় টেপ লাগিয়েছেন। সরকার জানিয়েছে, ৪৯টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে, যেখানে এখন পর্যন্ত ৭২৭ জন আশ্রয় নিয়েছেন।

এদিকে, সুপার টাইফুনটি আঘাত হানতে পারে এমন শঙ্কা থেকে চীন পদক্ষেপ নিয়েছে। চীনের সামুদ্রিক কর্তৃপক্ষ এ বছরের প্রথম ‘লাল সতর্কতা’ জারি করেছে, যেখানে ঢেউয়ের উচ্চতা ২.৮ মিটার পর্যন্ত হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে।

Ad 300x250

সম্পর্কিত