.png)
১৯৫৬ সালের ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ অলিম্পিকের ১৬তম আসর বসেছিল অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে। ২২ নভেম্বর থেকে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলা সেই অলিম্পিকের একটি ওয়াটার পোলো ম্যাচ ইতিহাসে জায়গা করে নেয়। এই ম্যাচটি রাজনৈতিকভাবেও বেশ উত্তাপ ছড়ায় এবং অলিম্পিকের ইতিহাসে এই ঘটনাটি ‘ব্লাড ইন দ্য ওয়াটার’ নামে পরিচিত।

নাফিস আনোয়ার শান্ত

১৯৫৬ সালের ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ অলিম্পিকের ১৬তম আসর বসেছিল অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে। ২২ নভেম্বর থেকে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলা সেই অলিম্পিকের একটি ওয়াটার পোলো ম্যাচ ইতিহাসে জায়গা করে নেয়।
সেদিনের খেলায় মুখোমুখি হয়েছিল হাঙ্গেরি আর সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন। হাঙ্গেরি তখন ওয়াটার পোলোর অন্যতম পরাশক্তি। দেশটি ১৯২৮ সালের আমস্টারডাম অলিম্পিক থেকে এই ইভেন্টে নিয়মিত সাফল্য পেতে থাকে এবং ১৯৩২, ১৯৩৬ ও ১৯৫২ সালের অলিম্পিকে স্বর্ণপদক জেতে।
অন্যদিকে, সোভিয়েত ইউনিয়নও তখন ওয়াটার পোলো ইভেন্টে অন্যতম শক্তিশালী দল। এই ম্যাচটি শুধু সেই আসরেই নয়, অলিম্পিকের পুরো ইতিহাসেই সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচগুলোর একটি হিসেবে বিবেচিত হয়।

অলিম্পিক শুরু হওয়ার কয়েক মাস আগে দল দুটো একবার মুখোমুখি হয়েছিল একটি প্রস্তুতি ম্যাচে। মস্কোতে অনুষ্ঠিত সেই ম্যাচে সোভিয়েত ইউনিয়ন জয় পায়। কিন্তু পক্ষপাতমূলক রেফারিংয়ের অভিযোগ ওঠে এবং ম্যাচ শেষে দুই দলের খেলোয়াড়রা মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে।
এর কিছুদিন পর, ১৯৫৬ সালের ২৩ অক্টোবর ‘হাঙ্গেরিয়ান বিপ্লব’ চূড়ান্ত রূপ নেয়। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে জনগণ রাস্তায় নামে। এমন অস্থির সময়েই ২৪ অক্টোবর ইমরে নেগি দেশটির প্রধানমন্ত্রী হন। তিনি একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দেন। ফলে অক্টোবরের শেষ দিকে দেশটির পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
এর কয়েকদিন পর ৩০ অক্টোবর ইমরে নেগি দেশটির অলিম্পিক দলকে শোষণমুক্ত হাঙ্গেরির প্রতিনিধিত্ব করতে মেলবোর্ন অলিম্পিকে প্রেরণের ঘোষণা দেন। এরপর পহেলা নভেম্বর দেশটির অলিম্পিক দল মেলবোর্নের উদ্দেশে যাত্রা করে।
প্রথমে মনে হচ্ছিল, সোভিয়েত ইউনিয়ন হাঙ্গেরি থেকে সামরিক বাহিনী প্রত্যাহার করবে। কিন্তু ৪ নভেম্বর তারা হাঙ্গেরিতে প্রবেশ করে বিপ্লব দমন শুরু করে। ১০ নভেম্বর পর্যন্ত সোভিয়েত বাহিনীর সঙ্গে তাদের লড়াই চলে। প্রায় তিন হাজার মানুষকে হত্যা করা হয় এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন এই বিপ্লব কঠোরভাবে দমন করে।
সোভিয়েত আগ্রাসনের প্রতিবাদে স্পেন, নেদারল্যান্ডস এবং সুইজারল্যান্ড মেলবোর্ন অলিম্পিক বর্জনের ঘোষণা দেয়। কিন্তু হাঙ্গেরির ওয়াটার পোলো দল তখন মেলবোর্নে। তারা দেশ ছাড়ার পর এসব ভয়াবহ ঘটনা ঘটে। দলে থাকা মিকলোস মার্টিন ইংরেজি জানতেন। তিনি পত্রিকা থেকে খবর পড়ে দলের সবাইকে বিষয়টা জানান।
ওদিকে মেলবোর্ন অলিম্পিকে হাঙ্গেরি ওয়াটার পোলো দল দুর্দান্ত নৈপুণ্য প্রদর্শন করে সেমিফাইনালে পৌঁছে। সে সময় দলটি বিপক্ষ দলগুলোর বিপক্ষে ২০টি গোল করে এবং বিপরীতে মাত্র তিনটি গোল হজম করে। অন্যদিকে, সোভিয়েত ইউনিয়নের জন্য সেমিফাইনাল যাত্রা বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল।
হাঙ্গেরি আর সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে ওয়াটার পোলো ইভেন্টের সেমিফাইনাল অনুষ্ঠিত হয় ৬ ডিসেম্বর। এই ম্যাচটি হাঙ্গেরির কাছে শুধু খেলা ছিল না, বরং সোভিয়েত আগ্রাসনের প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ। মেলবোর্নে বসবাসরত হাঙ্গেরিয়ানরা দলকে সমর্থন দিতে স্টেডিয়ামে হাজির হন। খেলা শুরুর আগে হাঙ্গেরির অধিনায়ক ডেজসো জিয়ারমাটি সোভিয়েত অধিনায়ক পেত্রে মাশভেনরাদজের সঙ্গে করমর্দন করতে অস্বীকার করেন।

খেলা শুরু হতেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সোভিয়েত শিক্ষাব্যবস্থায় পড়া রুশ ভাষায় দক্ষ হাঙ্গেরিয়ান খেলোয়াড়রা রুশ খেলোয়াড়দের গালাগাল করতে থাকে। দলটি সোভিয়েত খেলোয়াড়দের ধৈর্য ও মনোযোগ নষ্ট করার প্রচেষ্টা চালায় এবং পেনাল্টি আদায়ের কৌশল নেয়। হাঙ্গেরির এই কৌশল কাজে লাগে এবং ম্যাচের শুরু থেকেই দলটি প্রাধান্য বিস্তার করে খেলতে থাকে।
ম্যাচের মধ্যে কয়েকবার দুই দলের খেলোয়াড় লাথি-ঘুষিতে জড়িয়ে পড়ে। রেফারি অন্তত পাঁচজন খেলোয়াড়কে পুলের বাইরে বের করে দেন। হাঙ্গেরির পক্ষে আরউইন জাদোর এই ম্যাচে জোড়া গোল করেন। ম্যাচের চতুর্থ কোয়ার্টারের শেষের দিকে হাঙ্গেরি ৪–০ গোল ব্যবধানে এগিয়ে যায়।
ম্যাচ শেষ হতে তখনও প্রায় দুই মিনিট বাকি। আরউইন জাদোর তখন সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্যতম দক্ষ খেলোয়াড় ভেলেন্টিন প্রোকোপভকে সামলানোর দায়িত্বে ছিলেন এবং যথারীতি উত্ত্যক্ত করছিলেন। রেফারির বাঁশি শুনে জাদোর যখন পুলের দিকে লক্ষ করছিলেন–সেই সময় প্রোকোপভ পানি থেকে উঠে জাদোরের মুখে সজোরে আঘাত করেন এবং মুহূর্তেই চারদিকে রক্ত ছড়িয়ে পড়তে থাকে। দ্রুতই জাদোরকে টেনে নিয়ে পুলের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর রক্তাক্ত মুখের সেই ছবিটি পরবর্তী সময়ে অলিম্পিক ইতিহাসের অন্যতম বিখ্যাত ছবি হয়ে ওঠে।

এই ঘটনায় উপস্থিত দর্শকেরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। হাঙ্গেরি দলের কর্মকর্তরা সোভিয়েত দলের সদস্যদের দিকে তেড়ে আসতে থাকে। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের প্রচেষ্টায় সোভিয়েত দল নিরাপদে পুল ছাড়ে। এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতির ম্যাচে হাঙ্গেরিকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
ফাইনাল ম্যাচে ইনজুরির কারণে আরউইন জাদোর খেলায় অংশগ্রহণ করতে পারেননি। তবে হাঙ্গেরি সেই ম্যাচে যুগোস্লাভিয়াকে ২–১ গোলে হারিয়ে ১৯৫২ সালের হেলসিংকি অলিম্পিকের পর আবারও স্বর্ণপদক জেতে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর শুরু হওয়া স্নায়ুযুদ্ধের সময় ১৯৫৬ সালে ‘হাঙ্গেরিয়ান বিপ্লব’-এর প্রেক্ষাপটে অনুষ্ঠিত মেলবোর্ন অলিম্পিকের ওয়াটার পোলো ইভেন্টের এই ম্যাচটি বেশ উত্তাপ ছড়ায় এবং অলিম্পিকের ইতিহাসে এই ঘটনাটি ‘ব্লাড ইন দ্য ওয়াটার’ নামে পরিচিত।
এই ঘটনার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে এটিকে উপজীব্য করে ২০০৬ সালে পরিচালক ক্রস্টিনা গোডা ‘চিলড্রেন অব গ্লোরি’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। এছাড়াও একই বছরে একটি প্রামাণ্যচিত্রও নির্মিত হয়েছে কলিন কিথ গ্রে আর মেগান রানে অ্যারোনসের পরিচালনায়।
তথ্যসূত্র: অলম্পিকস ডট কম, হিস্ট্রি ডট কম, দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট, বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ান

১৯৫৬ সালের ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ অলিম্পিকের ১৬তম আসর বসেছিল অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে। ২২ নভেম্বর থেকে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলা সেই অলিম্পিকের একটি ওয়াটার পোলো ম্যাচ ইতিহাসে জায়গা করে নেয়।
সেদিনের খেলায় মুখোমুখি হয়েছিল হাঙ্গেরি আর সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন। হাঙ্গেরি তখন ওয়াটার পোলোর অন্যতম পরাশক্তি। দেশটি ১৯২৮ সালের আমস্টারডাম অলিম্পিক থেকে এই ইভেন্টে নিয়মিত সাফল্য পেতে থাকে এবং ১৯৩২, ১৯৩৬ ও ১৯৫২ সালের অলিম্পিকে স্বর্ণপদক জেতে।
অন্যদিকে, সোভিয়েত ইউনিয়নও তখন ওয়াটার পোলো ইভেন্টে অন্যতম শক্তিশালী দল। এই ম্যাচটি শুধু সেই আসরেই নয়, অলিম্পিকের পুরো ইতিহাসেই সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচগুলোর একটি হিসেবে বিবেচিত হয়।

অলিম্পিক শুরু হওয়ার কয়েক মাস আগে দল দুটো একবার মুখোমুখি হয়েছিল একটি প্রস্তুতি ম্যাচে। মস্কোতে অনুষ্ঠিত সেই ম্যাচে সোভিয়েত ইউনিয়ন জয় পায়। কিন্তু পক্ষপাতমূলক রেফারিংয়ের অভিযোগ ওঠে এবং ম্যাচ শেষে দুই দলের খেলোয়াড়রা মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে।
এর কিছুদিন পর, ১৯৫৬ সালের ২৩ অক্টোবর ‘হাঙ্গেরিয়ান বিপ্লব’ চূড়ান্ত রূপ নেয়। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে জনগণ রাস্তায় নামে। এমন অস্থির সময়েই ২৪ অক্টোবর ইমরে নেগি দেশটির প্রধানমন্ত্রী হন। তিনি একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দেন। ফলে অক্টোবরের শেষ দিকে দেশটির পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
এর কয়েকদিন পর ৩০ অক্টোবর ইমরে নেগি দেশটির অলিম্পিক দলকে শোষণমুক্ত হাঙ্গেরির প্রতিনিধিত্ব করতে মেলবোর্ন অলিম্পিকে প্রেরণের ঘোষণা দেন। এরপর পহেলা নভেম্বর দেশটির অলিম্পিক দল মেলবোর্নের উদ্দেশে যাত্রা করে।
প্রথমে মনে হচ্ছিল, সোভিয়েত ইউনিয়ন হাঙ্গেরি থেকে সামরিক বাহিনী প্রত্যাহার করবে। কিন্তু ৪ নভেম্বর তারা হাঙ্গেরিতে প্রবেশ করে বিপ্লব দমন শুরু করে। ১০ নভেম্বর পর্যন্ত সোভিয়েত বাহিনীর সঙ্গে তাদের লড়াই চলে। প্রায় তিন হাজার মানুষকে হত্যা করা হয় এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন এই বিপ্লব কঠোরভাবে দমন করে।
সোভিয়েত আগ্রাসনের প্রতিবাদে স্পেন, নেদারল্যান্ডস এবং সুইজারল্যান্ড মেলবোর্ন অলিম্পিক বর্জনের ঘোষণা দেয়। কিন্তু হাঙ্গেরির ওয়াটার পোলো দল তখন মেলবোর্নে। তারা দেশ ছাড়ার পর এসব ভয়াবহ ঘটনা ঘটে। দলে থাকা মিকলোস মার্টিন ইংরেজি জানতেন। তিনি পত্রিকা থেকে খবর পড়ে দলের সবাইকে বিষয়টা জানান।
ওদিকে মেলবোর্ন অলিম্পিকে হাঙ্গেরি ওয়াটার পোলো দল দুর্দান্ত নৈপুণ্য প্রদর্শন করে সেমিফাইনালে পৌঁছে। সে সময় দলটি বিপক্ষ দলগুলোর বিপক্ষে ২০টি গোল করে এবং বিপরীতে মাত্র তিনটি গোল হজম করে। অন্যদিকে, সোভিয়েত ইউনিয়নের জন্য সেমিফাইনাল যাত্রা বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল।
হাঙ্গেরি আর সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে ওয়াটার পোলো ইভেন্টের সেমিফাইনাল অনুষ্ঠিত হয় ৬ ডিসেম্বর। এই ম্যাচটি হাঙ্গেরির কাছে শুধু খেলা ছিল না, বরং সোভিয়েত আগ্রাসনের প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ। মেলবোর্নে বসবাসরত হাঙ্গেরিয়ানরা দলকে সমর্থন দিতে স্টেডিয়ামে হাজির হন। খেলা শুরুর আগে হাঙ্গেরির অধিনায়ক ডেজসো জিয়ারমাটি সোভিয়েত অধিনায়ক পেত্রে মাশভেনরাদজের সঙ্গে করমর্দন করতে অস্বীকার করেন।

খেলা শুরু হতেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সোভিয়েত শিক্ষাব্যবস্থায় পড়া রুশ ভাষায় দক্ষ হাঙ্গেরিয়ান খেলোয়াড়রা রুশ খেলোয়াড়দের গালাগাল করতে থাকে। দলটি সোভিয়েত খেলোয়াড়দের ধৈর্য ও মনোযোগ নষ্ট করার প্রচেষ্টা চালায় এবং পেনাল্টি আদায়ের কৌশল নেয়। হাঙ্গেরির এই কৌশল কাজে লাগে এবং ম্যাচের শুরু থেকেই দলটি প্রাধান্য বিস্তার করে খেলতে থাকে।
ম্যাচের মধ্যে কয়েকবার দুই দলের খেলোয়াড় লাথি-ঘুষিতে জড়িয়ে পড়ে। রেফারি অন্তত পাঁচজন খেলোয়াড়কে পুলের বাইরে বের করে দেন। হাঙ্গেরির পক্ষে আরউইন জাদোর এই ম্যাচে জোড়া গোল করেন। ম্যাচের চতুর্থ কোয়ার্টারের শেষের দিকে হাঙ্গেরি ৪–০ গোল ব্যবধানে এগিয়ে যায়।
ম্যাচ শেষ হতে তখনও প্রায় দুই মিনিট বাকি। আরউইন জাদোর তখন সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্যতম দক্ষ খেলোয়াড় ভেলেন্টিন প্রোকোপভকে সামলানোর দায়িত্বে ছিলেন এবং যথারীতি উত্ত্যক্ত করছিলেন। রেফারির বাঁশি শুনে জাদোর যখন পুলের দিকে লক্ষ করছিলেন–সেই সময় প্রোকোপভ পানি থেকে উঠে জাদোরের মুখে সজোরে আঘাত করেন এবং মুহূর্তেই চারদিকে রক্ত ছড়িয়ে পড়তে থাকে। দ্রুতই জাদোরকে টেনে নিয়ে পুলের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর রক্তাক্ত মুখের সেই ছবিটি পরবর্তী সময়ে অলিম্পিক ইতিহাসের অন্যতম বিখ্যাত ছবি হয়ে ওঠে।

এই ঘটনায় উপস্থিত দর্শকেরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। হাঙ্গেরি দলের কর্মকর্তরা সোভিয়েত দলের সদস্যদের দিকে তেড়ে আসতে থাকে। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের প্রচেষ্টায় সোভিয়েত দল নিরাপদে পুল ছাড়ে। এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতির ম্যাচে হাঙ্গেরিকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
ফাইনাল ম্যাচে ইনজুরির কারণে আরউইন জাদোর খেলায় অংশগ্রহণ করতে পারেননি। তবে হাঙ্গেরি সেই ম্যাচে যুগোস্লাভিয়াকে ২–১ গোলে হারিয়ে ১৯৫২ সালের হেলসিংকি অলিম্পিকের পর আবারও স্বর্ণপদক জেতে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর শুরু হওয়া স্নায়ুযুদ্ধের সময় ১৯৫৬ সালে ‘হাঙ্গেরিয়ান বিপ্লব’-এর প্রেক্ষাপটে অনুষ্ঠিত মেলবোর্ন অলিম্পিকের ওয়াটার পোলো ইভেন্টের এই ম্যাচটি বেশ উত্তাপ ছড়ায় এবং অলিম্পিকের ইতিহাসে এই ঘটনাটি ‘ব্লাড ইন দ্য ওয়াটার’ নামে পরিচিত।
এই ঘটনার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে এটিকে উপজীব্য করে ২০০৬ সালে পরিচালক ক্রস্টিনা গোডা ‘চিলড্রেন অব গ্লোরি’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। এছাড়াও একই বছরে একটি প্রামাণ্যচিত্রও নির্মিত হয়েছে কলিন কিথ গ্রে আর মেগান রানে অ্যারোনসের পরিচালনায়।
তথ্যসূত্র: অলম্পিকস ডট কম, হিস্ট্রি ডট কম, দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট, বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ান
.png)

আজ ১১ নভেম্বর। চীনে এই দিনটি ‘সিঙ্গেলস ডে’ হিসেবে পালিত হয়। আবার এখন এই দিন মানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অনলাইন কেনাকাটার উৎসব। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কীভাবে এই দিনটি ‘সিঙ্গেলস ডে’ হয়ে উঠল? আর তারপর কীভাবে সেটি স্রেফ রসিকতা করে বানানো একটি দিবস থেকে ‘গ্লোবাল শপিং ফেস্টিভ্যাল’-এ পরিণত হলো?
১৯ ঘণ্টা আগে
হাঙ্গেরীয়-ব্রিটিশ লেখক ডেভিড সা–লাই তাঁর উপন্যাস ‘ফ্লেশ’–এর জন্য লন্ডনে মর্যাদাপূর্ণ বুকার পুরস্কার জিতেছেন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় লন্ডনের ওল্ড বিলিংসগেটে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সাজালেকে তাঁকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানিয়েছে।
১ দিন আগে
‘আই অ্যাম দ্য কিং অব দ্য ওয়ার্ল্ড!’ টাইটানিক সিনেমার সেই সংলাপ আজও প্রতিধ্বনিত হয় সিনেমাপ্রেমীদের হৃদয়ে। কিন্তু সেই সিনেমার নায়ক লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিওর যাত্রা থেমে থাকেনি জাহাজের ডেকে। প্রায় তিন দশক পরে আজও ডিক্যাপ্রিও আছেন নিজের আসনেই। আজ এই অভিনেতার জন্মদিন।
১ দিন আগে
কিছু মানুষ দাবি করছেন যখনই কোনো নতুন প্রজন্মের নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি আসে, তার কাছাকাছি সময়েই মানবসভ্যতা কোনো না কোনো সংক্রামক রোগ বা মহামারির মুখোমুখি হয়। সত্যিই কি প্রযুক্তি আর মহামারি বা বৈশ্বিক সংক্রমণ কোনো অদ্ভুত চক্রের অংশ? বিজ্ঞান কী বলছে?
২ দিন আগে