বিশ্ব রাজনীতির দিকে তাকালে দেখা যায় নির্বাচনী ডামাডোলের মধ্যে হামলার শিকার হয়েছেন অনেক গুরুত্বপূর্ন নেতারাও। কোথাও জনসমাগমে দাঁড়িয়ে গুলি ছোড়া হয়েছে, কোথাও বিস্ফোরণে থেমে গেছে এক নেতার প্রচারণা, কোথাও আবার র্যালির মাঝেই ভেঙে পড়েছে রাজনৈতিক নিরাপত্তার দেয়াল। যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাকিস্তান, ভারত থেকে জাপান—বিশ্বের বড় বড় রাজনৈতিক ময়দানে ঠিক নির্বাচনের আগমুহূর্তেই রক্ত ঝরেছে আলোচিত মুখদের।
স্ট্রিম ডেস্ক

দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর আলোচনায় আসা হাদি ক্ষমচাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের কঠোর সমালোচক হিসেবে পরিচিত। তিনি দুর্নীতি, স্বৈরশাসন, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যা নিয়ে নিয়মিত বক্তব্য রেখেছেন। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে তিনি গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সংস্কার ও বিচার দাবি নিয়ে সরব আছেন।
বিশ্ব রাজনীতির দিকে তাকালে দেখা যায় নির্বাচনী ডামাডোলের মধ্যে হামলার শিকার হয়েছেন অনেক গুরুত্বপূর্ন নেতারাও। কোথাও জনসমাগমে দাঁড়িয়ে গুলি ছোড়া হয়েছে, কোথাও বিস্ফোরণে থেমে গেছে এক নেতার প্রচারণা, কোথাও আবার র্যালির মাঝেই ভেঙে পড়েছে রাজনৈতিক নিরাপত্তার দেয়াল। যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাকিস্তান, ভারত থেকে জাপান—বিশ্বের বড় বড় রাজনৈতিক ময়দানে ঠিক নির্বাচনের আগমুহূর্তেই রক্ত ঝরেছে আলোচিত মুখদের।
১৯৬৮ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ছিল আমেরিকার ইতিহাসে অন্যতম উত্তপ্ত ও অস্থির সময়গুলোর একটি। ভিয়েতনাম যুদ্ধ থেমে নেই, যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ শহরজুড়ে। আর ঠিক সেই মুহূর্তেই কেনেডি পরিবার আবার জাতীয় রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে উঠেছিল। জন এফ. কেনেডি হত্যার মাত্র পাঁচ বছর পর তাঁর ছোট ভাই রবার্ট দ্রুতই ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থীতে পরিণত হন। তরুণ ভোটার, আফ্রিকান-আমেরিকানরা, শ্রমজীবী শ্রেণি, সবাই তাঁর প্রতি অভূতপূর্ব সমর্থন দেখাচ্ছিল। ‘ক্যালিফোর্নিয়া প্রাইমারি’র মতো গুরুত্বপূর্ণ লড়াই তিনি জিতে নেন। আনন্দের উন্মত্ততা তখন পুরো 'অ্যাম্বাসাড' হোটেলজুড়ে।
ঠিক সেই বিজয়ের মঞ্চ থেকে বেরিয়ে আসতেই, রান্নাঘরের করিডোরে অপেক্ষা করছিল ২৪ বছর বয়সী সিরহান সিরহান। খুব স্বল্প দূরত্ব থেকে পরপর গুলি ছোড়ার সঙ্গে সঙ্গে রবার্ট মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরদিন তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। সিরহান দাবি করেছিল, মধ্যপ্রাচ্য-সংক্রান্ত অবস্থানের প্রতি ক্ষোভ থেকেই সে এই হামলা করে।
১৯৭২ সালের যুক্তরাষ্ট্র-ভিয়েতনাম যুদ্ধ শেষ হয়নি, বর্ণবাদী রাজনীতি তখনও উত্তপ্ত। দক্ষিণাঞ্চলে ডেমোক্র্যাট পার্টির অভ্যন্তরীণ টানাপোড়েন তুঙ্গে। এই প্রেক্ষাপটে জর্জ ওয়ালেস ছিলেন পপুলিস্ট নেতা। তাঁর র্যালিগুলোতে মানুষের ঢল নামত; এমনকি ডেমোক্র্যাটিকদের শীর্ষ প্রতিদ্বন্দ্বীদের অন্যতম হয়ে উঠেছিলেন তিনি। কিন্তু ১৯৭২ সালের ১৫ মে ম্যারিল্যান্ডের লরেল শহরে সমাবেশে মানুষের সঙ্গে হাত মেলাতে মঞ্চ থেকে নামতেই সামনে এসে দাঁড়ায় আর্থার ব্রেমার নামের এক যুবক।
কোনো সতর্কতা ছাড়াই সে ওয়ালেসকে চারবার গুলি করে। গুলিগুলো তাঁর মেরুদণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত করে স্থায়ীভাবে পক্ষাঘাতগ্রস্থ করে ফেলে। হাসপাতাল থেকে তিনি পরে প্রচারণা চালালেও শারীরিক ও রাজনৈতিকভাবে আর আগের অবস্থানে ফিরতে পারেননি। ব্রেমার পরে আদালতে স্বীকার করে, রাজনৈতিক মতাদর্শ নয় বরং ‘ইতিহাসে নিজের নাম লিখিয়ে রাখার ইচ্ছে’ থেকে সে এই হামলা করেছিল।
ভারতের ১৯৯১ সালের নির্বাচন ছিল এমন এক সময়, যখন দেশ অর্থনৈতিক টানাপোড়েন, বিচ্ছিন্নতাবাদী সহিংসতা, রাজনৈতিক অস্থিরতা আর হত্যাকাণ্ডের ভয়াবহ ছত্রছায়ায় ছিল। রাজীব গান্ধী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও কংগ্রেস পার্টির প্রধান মুখ, তখন জাতির সবচেয়ে বড় আশা হয়ে উঠেছিলেন। দক্ষিণ ভারতে তাঁর নির্বাচনী প্রচারণা ছিল বিশাল জনসমাগমে ভরা।
১৯৯১ সালের ২১ মে রাতের দিকে শ্রীপেরামবুদুরে আরেকটি সাধারণ সভা। রাজীব নেমে মানুষের সঙ্গে কথা বলছিলেন। সমর্থকদের ভিড় ঘিরে ধরেছিল তাঁকে। ঠিক সেই মুখোমুখি ভিড়ের ভিতর দিয়ে এগিয়ে আসে এক যুবতী, ধানু। মুহূর্তের মধ্যে তাঁর শরীরে বাঁধা বিস্ফোরক ফেটে ভয়াবহ বিস্ফোরণে রাজীবসহ ১৫ জন নিহত হন। পরবর্তী তদন্তে উঠে আসে ধানু ছিলেন লিট্টে আত্মঘাতী সদস্য; শ্রীলঙ্কায় শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর পর থেকে সংগঠনটির সঙ্গে ভারতীয় নীতির দ্বন্দ্ব তীব্র হয়ে ওঠে। রাজীবের মৃত্যুর পর নির্বাচন স্থগিত হয়, দেশ শোক এবং অনিশ্চয়তায় ডুবে যায়।
পাকিস্তানের ২০০৭-এর প্রেক্ষাপট ছিল বিশৃঙ্খলা। সামরিক শাসন, বোমা হামলা আর রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব। নির্বাসন শেষে দেশে ফিরে বেনজির ভুট্টো আবারও জনমতকে বিদ্যুতের মতো নাড়া দিয়েছিলেন। তিনি নির্বাচনের সবচেয়ে আলোচিত মুখ, বিরোধী শক্তির প্রধান প্রতীক, সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে প্রত্যাশার শেষ আশ্রয়।
২৭ ডিসেম্বর রাওয়ালপিন্ডিতে সমাবেশ শেষে গাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে সমর্থকদের দিকে হাত নেড়ে হাসছিলেন তিনি। ঠিক তখনই এক ব্যক্তি প্রথমে তার দিকে গুলি ছোড়ে, তারপর সেই ব্যক্তির শরীরে বাঁধা বিস্ফোরক ভীষণ শক্তিতে ফেটে যায়। ধুলো, ধোঁয়া, রক্ত—সবকিছু একসঙ্গে যেন মিশে যায় পাকিস্তানের রাজনৈতিক বাতাসে। হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান। সরকার বলেছিল তালেবান-সংশ্লিষ্ট জঙ্গিরাই হামলার পেছনে। কিন্তু পাকিস্তানে আজও অনেকে বিশ্বাস করেন, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে আরও বড় রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ছিল। বেনজিরের মৃত্যু পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক লড়াইকে এক অনিশ্চিত অন্ধকারে ঠেলে দেয়।
জাপানের উচ্চকক্ষের নির্বাচন ছিল তীব্র রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার সময়। যদিও শিনজো আবে তখন প্রার্থী ছিলেন না, তবুও তিনি ছিলেন শাসক দলের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রচারক, একজন জনপ্রিয় বক্তা। তাঁর উপস্থিতি নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে পারত। ৮ জুলাই নারা শহরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে তিনি বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। পরিবেশ ছিল শান্ত, নিরাপত্তা শিথিল, কারণ জাপান এমন দেশ যেখানে রাজনৈতিক সহিংসতা প্রায় অচিন্তনীয়।
কিন্তু ঠিক তখনই টেটসুইয়া ইয়ামাগামি নামের এক ব্যক্তি ঘরে তৈরি বন্দুক তুলে পিছন থেকে গুলি ছোড়ে। গুলির ধাক্কায় আবে পড়ে যান; মানুষ ছুটোছুটি শুরু করে। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি। তদন্তে জানা যায়, হামলাকারীর ক্ষোভ ছিল তার পরিবারের আর্থিক ধ্বংসের জন্য দায়ী একটি ধর্মীয় সংগঠনের বিরুদ্ধে, এবং সে ভুলভাবে মনে করেছিল, আবে সেই সংগঠনের সমর্থক। জাপান, যে দেশ বন্দুক সহিংসতা প্রায় চেনে না, এই হত্যাকাণ্ডে স্তব্ধ হয়ে যায়।
২০২৪ সালের মার্কিন নির্বাচন ছিল যেন এক রাজনৈতিক যুদ্ধক্ষেত্র। গণমাধ্যম, আদালত, জনসভা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—সব জায়গায় উত্তেজনা বিস্ফোরিত। রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প তখন নির্বাচনী প্রচারণার সবচেয়ে আলোচিত, সবচেয়ে বিভাজনমূলক, সবচেয়ে নজরকাড়া মুখ। জুলাই মাসে পেনসিলভানিয়ার বাটলার শহরে তিনি মঞ্চে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। গরম গ্রীষ্মের দুপুর, ভিড় উল্লাসে ব্যস্ত, ঠিক সেই মুহূর্তে দূর থেকে এক স্নাইপার রাইফেল তাক করে গুলি ছোড়ে। গুলি তাঁর ডান কানের পাশ ঘেঁষে চলে যায়। রক্ত ঝরতে থাকে।
সিক্রেট সার্ভিস মুহূর্তের মধ্যে তাঁকে ঢেকে ফেলে, নিচে ফেলে নিরাপদে সরিয়ে নেয়। দর্শকদের মধ্যে একজন নিহত হন, কয়েকজন আহত। হামলাকারী থমাস ক্রুকস পরে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়। ট্রাম্প চিকিৎসা নিয়ে আবার প্রচারণায় ফিরে আসেন, আর এই গুলি তাঁর নির্বাচনী বয়ানকে আরও আগ্রাসী এবং আরও নাটকীয় করে তোলে।

দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর আলোচনায় আসা হাদি ক্ষমচাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের কঠোর সমালোচক হিসেবে পরিচিত। তিনি দুর্নীতি, স্বৈরশাসন, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যা নিয়ে নিয়মিত বক্তব্য রেখেছেন। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে তিনি গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সংস্কার ও বিচার দাবি নিয়ে সরব আছেন।
বিশ্ব রাজনীতির দিকে তাকালে দেখা যায় নির্বাচনী ডামাডোলের মধ্যে হামলার শিকার হয়েছেন অনেক গুরুত্বপূর্ন নেতারাও। কোথাও জনসমাগমে দাঁড়িয়ে গুলি ছোড়া হয়েছে, কোথাও বিস্ফোরণে থেমে গেছে এক নেতার প্রচারণা, কোথাও আবার র্যালির মাঝেই ভেঙে পড়েছে রাজনৈতিক নিরাপত্তার দেয়াল। যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাকিস্তান, ভারত থেকে জাপান—বিশ্বের বড় বড় রাজনৈতিক ময়দানে ঠিক নির্বাচনের আগমুহূর্তেই রক্ত ঝরেছে আলোচিত মুখদের।
১৯৬৮ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ছিল আমেরিকার ইতিহাসে অন্যতম উত্তপ্ত ও অস্থির সময়গুলোর একটি। ভিয়েতনাম যুদ্ধ থেমে নেই, যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ শহরজুড়ে। আর ঠিক সেই মুহূর্তেই কেনেডি পরিবার আবার জাতীয় রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে উঠেছিল। জন এফ. কেনেডি হত্যার মাত্র পাঁচ বছর পর তাঁর ছোট ভাই রবার্ট দ্রুতই ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থীতে পরিণত হন। তরুণ ভোটার, আফ্রিকান-আমেরিকানরা, শ্রমজীবী শ্রেণি, সবাই তাঁর প্রতি অভূতপূর্ব সমর্থন দেখাচ্ছিল। ‘ক্যালিফোর্নিয়া প্রাইমারি’র মতো গুরুত্বপূর্ণ লড়াই তিনি জিতে নেন। আনন্দের উন্মত্ততা তখন পুরো 'অ্যাম্বাসাড' হোটেলজুড়ে।
ঠিক সেই বিজয়ের মঞ্চ থেকে বেরিয়ে আসতেই, রান্নাঘরের করিডোরে অপেক্ষা করছিল ২৪ বছর বয়সী সিরহান সিরহান। খুব স্বল্প দূরত্ব থেকে পরপর গুলি ছোড়ার সঙ্গে সঙ্গে রবার্ট মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরদিন তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। সিরহান দাবি করেছিল, মধ্যপ্রাচ্য-সংক্রান্ত অবস্থানের প্রতি ক্ষোভ থেকেই সে এই হামলা করে।
১৯৭২ সালের যুক্তরাষ্ট্র-ভিয়েতনাম যুদ্ধ শেষ হয়নি, বর্ণবাদী রাজনীতি তখনও উত্তপ্ত। দক্ষিণাঞ্চলে ডেমোক্র্যাট পার্টির অভ্যন্তরীণ টানাপোড়েন তুঙ্গে। এই প্রেক্ষাপটে জর্জ ওয়ালেস ছিলেন পপুলিস্ট নেতা। তাঁর র্যালিগুলোতে মানুষের ঢল নামত; এমনকি ডেমোক্র্যাটিকদের শীর্ষ প্রতিদ্বন্দ্বীদের অন্যতম হয়ে উঠেছিলেন তিনি। কিন্তু ১৯৭২ সালের ১৫ মে ম্যারিল্যান্ডের লরেল শহরে সমাবেশে মানুষের সঙ্গে হাত মেলাতে মঞ্চ থেকে নামতেই সামনে এসে দাঁড়ায় আর্থার ব্রেমার নামের এক যুবক।
কোনো সতর্কতা ছাড়াই সে ওয়ালেসকে চারবার গুলি করে। গুলিগুলো তাঁর মেরুদণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত করে স্থায়ীভাবে পক্ষাঘাতগ্রস্থ করে ফেলে। হাসপাতাল থেকে তিনি পরে প্রচারণা চালালেও শারীরিক ও রাজনৈতিকভাবে আর আগের অবস্থানে ফিরতে পারেননি। ব্রেমার পরে আদালতে স্বীকার করে, রাজনৈতিক মতাদর্শ নয় বরং ‘ইতিহাসে নিজের নাম লিখিয়ে রাখার ইচ্ছে’ থেকে সে এই হামলা করেছিল।
ভারতের ১৯৯১ সালের নির্বাচন ছিল এমন এক সময়, যখন দেশ অর্থনৈতিক টানাপোড়েন, বিচ্ছিন্নতাবাদী সহিংসতা, রাজনৈতিক অস্থিরতা আর হত্যাকাণ্ডের ভয়াবহ ছত্রছায়ায় ছিল। রাজীব গান্ধী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও কংগ্রেস পার্টির প্রধান মুখ, তখন জাতির সবচেয়ে বড় আশা হয়ে উঠেছিলেন। দক্ষিণ ভারতে তাঁর নির্বাচনী প্রচারণা ছিল বিশাল জনসমাগমে ভরা।
১৯৯১ সালের ২১ মে রাতের দিকে শ্রীপেরামবুদুরে আরেকটি সাধারণ সভা। রাজীব নেমে মানুষের সঙ্গে কথা বলছিলেন। সমর্থকদের ভিড় ঘিরে ধরেছিল তাঁকে। ঠিক সেই মুখোমুখি ভিড়ের ভিতর দিয়ে এগিয়ে আসে এক যুবতী, ধানু। মুহূর্তের মধ্যে তাঁর শরীরে বাঁধা বিস্ফোরক ফেটে ভয়াবহ বিস্ফোরণে রাজীবসহ ১৫ জন নিহত হন। পরবর্তী তদন্তে উঠে আসে ধানু ছিলেন লিট্টে আত্মঘাতী সদস্য; শ্রীলঙ্কায় শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর পর থেকে সংগঠনটির সঙ্গে ভারতীয় নীতির দ্বন্দ্ব তীব্র হয়ে ওঠে। রাজীবের মৃত্যুর পর নির্বাচন স্থগিত হয়, দেশ শোক এবং অনিশ্চয়তায় ডুবে যায়।
পাকিস্তানের ২০০৭-এর প্রেক্ষাপট ছিল বিশৃঙ্খলা। সামরিক শাসন, বোমা হামলা আর রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব। নির্বাসন শেষে দেশে ফিরে বেনজির ভুট্টো আবারও জনমতকে বিদ্যুতের মতো নাড়া দিয়েছিলেন। তিনি নির্বাচনের সবচেয়ে আলোচিত মুখ, বিরোধী শক্তির প্রধান প্রতীক, সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে প্রত্যাশার শেষ আশ্রয়।
২৭ ডিসেম্বর রাওয়ালপিন্ডিতে সমাবেশ শেষে গাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে সমর্থকদের দিকে হাত নেড়ে হাসছিলেন তিনি। ঠিক তখনই এক ব্যক্তি প্রথমে তার দিকে গুলি ছোড়ে, তারপর সেই ব্যক্তির শরীরে বাঁধা বিস্ফোরক ভীষণ শক্তিতে ফেটে যায়। ধুলো, ধোঁয়া, রক্ত—সবকিছু একসঙ্গে যেন মিশে যায় পাকিস্তানের রাজনৈতিক বাতাসে। হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান। সরকার বলেছিল তালেবান-সংশ্লিষ্ট জঙ্গিরাই হামলার পেছনে। কিন্তু পাকিস্তানে আজও অনেকে বিশ্বাস করেন, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে আরও বড় রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ছিল। বেনজিরের মৃত্যু পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক লড়াইকে এক অনিশ্চিত অন্ধকারে ঠেলে দেয়।
জাপানের উচ্চকক্ষের নির্বাচন ছিল তীব্র রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার সময়। যদিও শিনজো আবে তখন প্রার্থী ছিলেন না, তবুও তিনি ছিলেন শাসক দলের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রচারক, একজন জনপ্রিয় বক্তা। তাঁর উপস্থিতি নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে পারত। ৮ জুলাই নারা শহরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে তিনি বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। পরিবেশ ছিল শান্ত, নিরাপত্তা শিথিল, কারণ জাপান এমন দেশ যেখানে রাজনৈতিক সহিংসতা প্রায় অচিন্তনীয়।
কিন্তু ঠিক তখনই টেটসুইয়া ইয়ামাগামি নামের এক ব্যক্তি ঘরে তৈরি বন্দুক তুলে পিছন থেকে গুলি ছোড়ে। গুলির ধাক্কায় আবে পড়ে যান; মানুষ ছুটোছুটি শুরু করে। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি। তদন্তে জানা যায়, হামলাকারীর ক্ষোভ ছিল তার পরিবারের আর্থিক ধ্বংসের জন্য দায়ী একটি ধর্মীয় সংগঠনের বিরুদ্ধে, এবং সে ভুলভাবে মনে করেছিল, আবে সেই সংগঠনের সমর্থক। জাপান, যে দেশ বন্দুক সহিংসতা প্রায় চেনে না, এই হত্যাকাণ্ডে স্তব্ধ হয়ে যায়।
২০২৪ সালের মার্কিন নির্বাচন ছিল যেন এক রাজনৈতিক যুদ্ধক্ষেত্র। গণমাধ্যম, আদালত, জনসভা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—সব জায়গায় উত্তেজনা বিস্ফোরিত। রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প তখন নির্বাচনী প্রচারণার সবচেয়ে আলোচিত, সবচেয়ে বিভাজনমূলক, সবচেয়ে নজরকাড়া মুখ। জুলাই মাসে পেনসিলভানিয়ার বাটলার শহরে তিনি মঞ্চে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। গরম গ্রীষ্মের দুপুর, ভিড় উল্লাসে ব্যস্ত, ঠিক সেই মুহূর্তে দূর থেকে এক স্নাইপার রাইফেল তাক করে গুলি ছোড়ে। গুলি তাঁর ডান কানের পাশ ঘেঁষে চলে যায়। রক্ত ঝরতে থাকে।
সিক্রেট সার্ভিস মুহূর্তের মধ্যে তাঁকে ঢেকে ফেলে, নিচে ফেলে নিরাপদে সরিয়ে নেয়। দর্শকদের মধ্যে একজন নিহত হন, কয়েকজন আহত। হামলাকারী থমাস ক্রুকস পরে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়। ট্রাম্প চিকিৎসা নিয়ে আবার প্রচারণায় ফিরে আসেন, আর এই গুলি তাঁর নির্বাচনী বয়ানকে আরও আগ্রাসী এবং আরও নাটকীয় করে তোলে।

আজ মওলানা ভাসানীর জন্মদিন। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পরপরই ১৯৭১ সালের ২১ এপ্রিল মওলানা ভাসানী চীনের কমিউনিস্ট পার্টির চেয়ারম্যান মাও সেতুং, প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের কাছে অত্যন্ত আবেগময় ও যুক্তিপূর্ণ বার্তা পাঠান। এই বার্তাগুলোর উদ্দেশ্য ছিল বিশ্বনেতাদের কাছে পাকিস্তান
১০ ঘণ্টা আগে
জেনে অবাক হবেন যে রাজশাহীর জঙ্গলে শেষ বাঘটি দেখা যায় ১২৫ বছর আগে। আর কোন কোন বন্যপ্রাণী সেখানে ছিল? নদী, জলাভূমি ও পুকুরে কী কী মাছ পাওয়া যেত? কী কী পাখি দেখা যেত? ১৯১৬ সালে প্রকাশিত এল এস এস ওম্যালি-এর বেঙ্গল ডিস্ট্রিক্ট গেজেটিয়ার (রাজশাহী) থেকে অনুবাদ করেছেন ভূ-পর্যটক তারেক অণু।
১৪ ঘণ্টা আগে
আজ এক ‘অগ্নিপুরুষ’-এর জন্মদিন। ইতিহাসের পাতায় যার নাম লেখা আছে ‘মজলুম জননেতা’ হিসেবে, কিন্তু শোষকের কলিজা কাঁপাতে তিনি ছিলেন সাক্ষাৎ দাবানল। তিনি মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী।
১৮ ঘণ্টা আগে
সকালে ঘুম থেকে উঠে এক কাপ ধোঁয়া ওঠা চায়ে চুমুক না দিলে দিনটা শুরুই হতে চায় না? খালি পেটে চা পান করা ‘স্বাস্থ্যকর’, এই ধারণা অনেকেরই আছে। কিন্তু বিষয়টি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এটা মোটেও এত সরল নয়।
২০ ঘণ্টা আগে