আজ মীনা দিবস
আজ বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) মীনা দিবস। ১৯৯৮ সাল থেকে প্রতিবছর ২৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়া, আফ্রিকা ও ইস্ট-এশিয়ার দেশসমূহে এই দিবস পালন করা হয়। মীনা দিবস উপলক্ষে এই চরিত্রটি নিয়ে লিখেছেন বিখ্যাত কার্টুনিস্ট মেহেদী হক। ইউনিসেফের প্রযোজনায় তৈরি ‘মীনা আর ভাইরাস’ নামের একটি বিশেষ পর্বে গল্পকার এবং ক্যারেক্টার ডিজাইনার হিসেবে তিনি কাজ করেছিলেন।
মেহেদী হক

বাংলাদেশে শিশুতোষ অ্যানিমেশনের কথা উঠলেই সবার আগে মনে পড়ে ‘মীনা কার্টুন’-এর নাম। ১৯৯০ এর দশকে ‘ইউনিসেফ বাংলাদেশ’-এর আমন্ত্রণে বিখ্যাত ভারতীয় কার্টুনিস্ট রামমোহন রায় এই সিরিজটি নির্মাণ করেছিলেন।
আমরা যারা নব্বইয়ের দশকে বেড়ে উঠেছি, তাঁরা জানি, সে সময় দক্ষিণ এশিয়ার শিশুদের জন্য কোনো নিয়মিত অ্যানিমেটেড সিরিজ ছিল না। আর বিশেষ করে শিশুদের নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক সমস্যার প্রেক্ষাপটে বানানো কোন সিরিজ তো ছিলই না। মীনা সেই অভাব পূরণ করেছিল। অল্প সময়ের মধ্যেই ছোট্ট এই কিশোরী চরিত্রটি হয়ে উঠেছিল শিশুদের বন্ধু, তাদের সাহস আর স্বপ্নের প্রতীক।
মীনার জনপ্রিয়তা কেবল টেলিভিশনের পর্দায় সীমাবদ্ধ ছিল না। মীনার গল্প, তার সাহসী সিদ্ধান্ত এবং সমস্যার সমাধান খোঁজার কৌশল শিশুদের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জেন্ডার নিয়ে সমতার ভাবনা কিংবা সামাজিক কুসংস্কার—প্রতিটি ক্ষেত্রে মীনা শিশুদের হয়ে প্রশ্ন করেছে, প্রতিবাদ করেছে, আবার সমাধানের পথও দেখিয়েছে। সেই জন্যই আজও মীনা আমাদের কাছে কেবল একটি চরিত্র নয়, বরং সামাজিক পরিবর্তনের প্রতীক।

আমার ব্যক্তিগত জীবনে মীনার সাথে সম্পর্কটা আরও বিশেষ। আমি সৌভাগ্যবান যে ইউনিসেফের প্রযোজনায় তৈরি ‘মীনা আর ভাইরাস’ নামের একটি বিশেষ পর্বে গল্পকার এবং ক্যারেক্টার ডিজাইনার হিসেবে কাজ করেছিলাম। আমার দায়িত্ব ছিল গল্পকে এমনভাবে সাজানো, যাতে এটি একদিকে শিশুদের কাছে আকর্ষণীয় লাগে, অন্যদিকে তাদের জন্য শিক্ষণীয় বার্তাও বহন করে।
নতুন চরিত্রগুলো ডিজাইন করার সময় আমি ভেবেছি, শিশুরা যেন সহজে তাদের সাথে সংযোগ ঘটাতে পারে। গল্পে আমরা দেখিয়েছি, কীভাবে এক অদৃশ্য ভাইরাস মীনা ও তার পরিবারকে সমস্যায় ফেলে দেয়। আর কীভাবে বুদ্ধি, সতর্কতা ও সহযোগিতার মাধ্যমে তারা সেই সংকট মোকাবিলা করে।
পরে জানতে পারলাম, এই গল্পটি শিশুদের কাছে বেশ সাড়া ফেলেছে। এটা ছিল আমার জন্য দারুণ অনুভূতি। আর সবচেয়ে অসাধারণ ব্যাপার ছিল, এই গল্প লেখার সুবাদে মীনা সিরিজের পরিচালক ও ক্রিয়েটর কিংবদন্তিতুল্য রামমোহন রায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ হওয়া। তাঁকে ভারতের অ্যানিমেশনের জনক বলা হয়।
তবে দুঃখের জায়গা হলো, আজকের বাংলাদেশে অ্যানিমেশন তেমনভাবে এগোচ্ছে না। ছোটখাটো উদ্যোগ থাকলেও, সেগুলো ধারাবাহিক কোনো প্রভাব ফেলতে পারছে না। অথচ আমাদের দেশের শিশুদের জন্য নিজস্ব সংস্কৃতি, ইতিহাস আর কল্পনার ভিত্তিতে তৈরি অ্যানিমেশনের অনেক চাহিদা।

আমাদের শিশুরা এখনো বিদেশি চরিত্রের সাথে বড় হচ্ছে। এই শূন্যতাই প্রমাণ করে যে, মীনার মতো আরেকটি শক্তিশালী অ্যানিমেটেড সিরিজ আবার শুরু হওয়া এখন সময়ের দাবি।
মীনা দিবস আমার কাছে তাই কেবল একটি উদযাপন নয়, বরং এক ধরনের দায়বদ্ধতার কথা মনে করিয়ে দেয়। শিশুরা শুধু বিনোদন পেতে চায় না। তারা জানতে চায় কীভাবে সাহসী হতে হয়, কীভাবে সমান অধিকার দাবি করতে হয়, আর কীভাবে সমাজকে বদলে দেওয়া যায়। মীনা সেটাই শিখিয়েছে।
এখন আমাদের প্রয়োজন নতুন উদ্যোগ, নতুন চরিত্র, নতুন গল্প। যেগুলো আজকের শিশুদের বাস্তবতার সাথে মিলে যাবে এবং তাদের স্বপ্ন দেখাবে। আমাদের শিশুদের জন্য তাই এখন সময় এসেছে নতুন করে চিন্তা করার। আবারও একটি মীনা তৈরি হোক, যে শিশুদের সাহস দেবে, আনন্দ দেবে আর সমাজ পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখাবে।
লেখক: কার্টুনিস্ট

বাংলাদেশে শিশুতোষ অ্যানিমেশনের কথা উঠলেই সবার আগে মনে পড়ে ‘মীনা কার্টুন’-এর নাম। ১৯৯০ এর দশকে ‘ইউনিসেফ বাংলাদেশ’-এর আমন্ত্রণে বিখ্যাত ভারতীয় কার্টুনিস্ট রামমোহন রায় এই সিরিজটি নির্মাণ করেছিলেন।
আমরা যারা নব্বইয়ের দশকে বেড়ে উঠেছি, তাঁরা জানি, সে সময় দক্ষিণ এশিয়ার শিশুদের জন্য কোনো নিয়মিত অ্যানিমেটেড সিরিজ ছিল না। আর বিশেষ করে শিশুদের নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক সমস্যার প্রেক্ষাপটে বানানো কোন সিরিজ তো ছিলই না। মীনা সেই অভাব পূরণ করেছিল। অল্প সময়ের মধ্যেই ছোট্ট এই কিশোরী চরিত্রটি হয়ে উঠেছিল শিশুদের বন্ধু, তাদের সাহস আর স্বপ্নের প্রতীক।
মীনার জনপ্রিয়তা কেবল টেলিভিশনের পর্দায় সীমাবদ্ধ ছিল না। মীনার গল্প, তার সাহসী সিদ্ধান্ত এবং সমস্যার সমাধান খোঁজার কৌশল শিশুদের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জেন্ডার নিয়ে সমতার ভাবনা কিংবা সামাজিক কুসংস্কার—প্রতিটি ক্ষেত্রে মীনা শিশুদের হয়ে প্রশ্ন করেছে, প্রতিবাদ করেছে, আবার সমাধানের পথও দেখিয়েছে। সেই জন্যই আজও মীনা আমাদের কাছে কেবল একটি চরিত্র নয়, বরং সামাজিক পরিবর্তনের প্রতীক।

আমার ব্যক্তিগত জীবনে মীনার সাথে সম্পর্কটা আরও বিশেষ। আমি সৌভাগ্যবান যে ইউনিসেফের প্রযোজনায় তৈরি ‘মীনা আর ভাইরাস’ নামের একটি বিশেষ পর্বে গল্পকার এবং ক্যারেক্টার ডিজাইনার হিসেবে কাজ করেছিলাম। আমার দায়িত্ব ছিল গল্পকে এমনভাবে সাজানো, যাতে এটি একদিকে শিশুদের কাছে আকর্ষণীয় লাগে, অন্যদিকে তাদের জন্য শিক্ষণীয় বার্তাও বহন করে।
নতুন চরিত্রগুলো ডিজাইন করার সময় আমি ভেবেছি, শিশুরা যেন সহজে তাদের সাথে সংযোগ ঘটাতে পারে। গল্পে আমরা দেখিয়েছি, কীভাবে এক অদৃশ্য ভাইরাস মীনা ও তার পরিবারকে সমস্যায় ফেলে দেয়। আর কীভাবে বুদ্ধি, সতর্কতা ও সহযোগিতার মাধ্যমে তারা সেই সংকট মোকাবিলা করে।
পরে জানতে পারলাম, এই গল্পটি শিশুদের কাছে বেশ সাড়া ফেলেছে। এটা ছিল আমার জন্য দারুণ অনুভূতি। আর সবচেয়ে অসাধারণ ব্যাপার ছিল, এই গল্প লেখার সুবাদে মীনা সিরিজের পরিচালক ও ক্রিয়েটর কিংবদন্তিতুল্য রামমোহন রায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ হওয়া। তাঁকে ভারতের অ্যানিমেশনের জনক বলা হয়।
তবে দুঃখের জায়গা হলো, আজকের বাংলাদেশে অ্যানিমেশন তেমনভাবে এগোচ্ছে না। ছোটখাটো উদ্যোগ থাকলেও, সেগুলো ধারাবাহিক কোনো প্রভাব ফেলতে পারছে না। অথচ আমাদের দেশের শিশুদের জন্য নিজস্ব সংস্কৃতি, ইতিহাস আর কল্পনার ভিত্তিতে তৈরি অ্যানিমেশনের অনেক চাহিদা।

আমাদের শিশুরা এখনো বিদেশি চরিত্রের সাথে বড় হচ্ছে। এই শূন্যতাই প্রমাণ করে যে, মীনার মতো আরেকটি শক্তিশালী অ্যানিমেটেড সিরিজ আবার শুরু হওয়া এখন সময়ের দাবি।
মীনা দিবস আমার কাছে তাই কেবল একটি উদযাপন নয়, বরং এক ধরনের দায়বদ্ধতার কথা মনে করিয়ে দেয়। শিশুরা শুধু বিনোদন পেতে চায় না। তারা জানতে চায় কীভাবে সাহসী হতে হয়, কীভাবে সমান অধিকার দাবি করতে হয়, আর কীভাবে সমাজকে বদলে দেওয়া যায়। মীনা সেটাই শিখিয়েছে।
এখন আমাদের প্রয়োজন নতুন উদ্যোগ, নতুন চরিত্র, নতুন গল্প। যেগুলো আজকের শিশুদের বাস্তবতার সাথে মিলে যাবে এবং তাদের স্বপ্ন দেখাবে। আমাদের শিশুদের জন্য তাই এখন সময় এসেছে নতুন করে চিন্তা করার। আবারও একটি মীনা তৈরি হোক, যে শিশুদের সাহস দেবে, আনন্দ দেবে আর সমাজ পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখাবে।
লেখক: কার্টুনিস্ট

আজ ৮ ডিসেম্বর জন লেননের মৃত্যুদিন। দুনিয়া কাঁপানো ব্যান্ড বিটলস-এর প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য লেনন ছিলেন একাধারে গায়ক, গীতিকার, সুরকার, চিত্রশিল্পী, লেখক ও শান্তিকর্মী। ‘ইমাজিন’ তাঁর বিখ্যাত গান। এই গানে তিনি কোন পৃথিবীর স্বপ্ন দেখিয়েছেন? কেন গানটি আজও এত প্রাসঙ্গিক?
৭ ঘণ্টা আগে
বর্তমান বিশ্বে সাহসী বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে যাঁর নাম সবার আগে আসে, তিনি নোম চমস্কি। ৭ ডিসেম্বর তাঁর জন্মদিন। একদিকে তিনি আধুনিক ভাষাবিজ্ঞানের স্থপতি, অন্যদিকে শোষিতের পক্ষে দাঁড়ানো এক অকুতোভয় যোদ্ধা। খুঁজে দেখা যাক আধুনিক সময়ের অন্যতম প্রধান চিন্তক ও জনবুদ্ধিজীবী নোম চমস্কির বর্ণাঢ্য জীবন ও কর্ম।
৯ ঘণ্টা আগে
শুনতে অবাক লাগলেও এমন ঘটনাই ঘটেছে মুক্তিযুদ্ধের সময়। যদিও ইতিহাসের পাতায় কচুরিপানা নিয়ে খুব কমই লেখা হয়েছে, কিন্তু কচুরিপানার অবদান অস্বীকার কোনো উপায় নেই। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস কেবল বারুদ আর রক্তের ইতিহাস নয়। এটি ছিল বাংলার মাটি, জল ও প্রকৃতির এক সম্মিলিত সংগ্রাম।
৯ ঘণ্টা আগে
‘আমরা বর্ষার অপেক্ষায় আছি… তাঁরা পানিকে ভয় পায়, আর আমরা হচ্ছি জলের রাজা। প্রকৃতি হবে আমাদের দ্বিতীয় বাহিনী।’ নিউইয়র্ক টাইমসের খ্যাতিমান সাংবাদিক সিডনি শনবার্গের ‘ডেটলাইন বাংলাদেশ’ প্রতিবেদনে এসব কথা বলেছিলেন এক বাঙালি অফিসার।
৯ ঘণ্টা আগে