মার্কিন পার্লামেন্ট কংগ্রেস ব্যয় বিল পাস করতে ব্যর্থ হওয়ায় দেশটির সরকারের বেশিরভাগ কার্যক্রম এখন বন্ধ রয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, অর্থনীতিসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সেবায় ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে এই শাটডাউন।
স্ট্রিম ডেস্ক
মার্কিন পার্লামেন্ট কংগ্রেস ব্যয় বিল পাস করতে ব্যর্থ হওয়ায় দেশটির সরকারের বেশিরভাগ কার্যক্রম এখন বন্ধ রয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, অর্থনীতিসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সেবায় ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে এই শাটডাউন। এতে এক দীর্ঘ ও ক্লান্তিকর অচলাবস্থায় পড়ে যেতে পারে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। কয়েক হাজার সরকারি কর্মীকে ছুটিতে পাঠাতে হতে পারে বিনা বেতনে।
এই অচল পরিস্থিতি থেকে বের হওয়ার আপাতত কোনো পথ নেই। সরকারি সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে, এটি দীর্ঘ হলে সেপ্টেম্বরে প্রকাশ হওয়া গুরুত্বপূর্ণ কর্মসংস্থান প্রতিবেদন স্থগিত হয়ে যাবে, বিমান চলাচল ধীর হবে, বৈজ্ঞানিক গবেষণা স্থগিত থাকবে, সেনাদের বেতন দেওয়া বন্ধ হবে এবং প্রায় সাত লাখ ৫০ হাজার ফেডারেল কর্মী বিনা বেতনে ছুটি নিতে বাধ্য হবেন। প্রতিদিন সরকারের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে ৪০ কোটি মার্কিন ডলার।
কেন এই শাটডাউন
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকার সচল রাখতে মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত কোনো আইন পাস করতে পারেনি কংগ্রেস। বুধবার (১ অক্টোবর) নতুন রাজস্ব বছরের আগে সরকারের ৪৩৮টি সংস্থাকে তহবিল বিতরণ করার কথা ছিল।
প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেট— কংগ্রেসের দুই কক্ষই রিপাবলিকানদের নিয়ন্ত্রণে। তবে ব্যয় বিল পাস করতে ১০০ আসনের সিনেটে অন্তত সাত ডেমোক্র্যাটের ভোট দরকার। এতে সংখ্যালঘু দল কিছুটা সুবিধা পেয়েছে। আগামী নভেম্বর পর্যন্ত সরকারি কার্যক্রম সচল রাখতে স্বল্পমেয়াদি ব্যয় বিল প্রত্যাখ্যান করেন তারা।
ডেমোক্র্যাটরা দাবি করে বসেছেন, যেকোনো ব্যয় বিল পাস হওয়ার আগে নিশ্চিত করতে হবে যে সম্প্রসারিত সাশ্রয়ী স্বাস্থ্যসেবাভর্তুকি বছরের শেষ পর্যন্ত বহাল রাখতে হবে।
বিপরীতে রিপাবলিকানরাও বলছেন, তারাও ওই ভর্তুকি বাড়াতে চান। কিন্তু ভিন্নভাবে বিষয়টির সুরাহা হওয়া দরকার।
এরইমধ্যে ডেমোক্র্যাটদের শাস্তি দিতে সরকারি কর্মসূচি ও কেন্দ্রীয় সরকারের বেতন কাঠামো কেটে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং হোয়াইট হাউস কর্মকর্তারা। গত সপ্তাহে শাটডাউনের পরিস্থিতিতে স্থায়ী চাকরিচ্যুতির হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্পের বাজেট পরিচালক রাসেল ভোগট।
এদিকে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প ও কংগ্রেসের অন্য নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সিনেটের সংখ্যালঘু ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শুমার বলেন, তারা আমাদের ওপর বলপ্রয়োগ করতে চাইছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা সফল হতে পারবেন না।
সব মিলিয়ে বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, আগেরগুলোর চেয়েও দীর্ঘ হতে পারে চলমান শাটডাউন।
শাটডাউন কী
সরকারি খরচ নিয়ে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের মধ্যে সবসময় দ্বন্দ্ব থাকে। যে কারণে সেই দ্বন্দ্ব শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত সরকার সচল রাখতে একটি অস্থায়ী ব্যয় বিল পাস করেন আইনপ্রণেতারা। কিন্তু যদি সেই অস্থায়ী বিলের মেয়াদও শেষ হয়ে যায়, তাহলে ‘অপরিহার্য’ কার্যক্রম ছাড়া সব কাজ বন্ধ রাখতে হয় সরকারি সংস্থাগুলোকে।
সহজ করে বললে, যখন মার্কিন কংগ্রেস বাজেট বা অর্থায়ন সংক্রান্ত আইন পাস করতে ব্যর্থ হয়, তখন আইন অনুযায়ী ফেডারেল সংস্থাগুলো তাদের কার্যক্রম বন্ধ করতে বাধ্য হয়। এ অবস্থায় শাটডাউন শুরু হয়।
শাটডাউনের ইতিহাস ও প্রভাব
কংগ্রেস রিসার্চ সার্ভিস জানায়, ১৯৮১ সাল থেকে এখনকারটিসহ মোট ১৫টি শাটডাউনের ঘটনা ঘটেছে। অনেকগুলো এক-দুদিন স্থায়ী ছিল। সর্বশেষ শাটডাউনের স্থায়িত্ব ছিল ৩৫ দিন— ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত।
সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে কংগ্রেস ও প্রেসিডেন্টের দ্বন্দ্বে ওই শাটডাউনে হাজার হাজার সরকারি কর্মীকে বিনা বেতনে ছুটি নিতে হয়েছিল। আর্থিক তদারকি থেকে শুরু করে জাতীয় উদ্যানগুলোর আবর্জনা অপসারণসহ বিভিন্ন সেবা ব্যাহত হয়েছিল তখন।
শাটডাউনের সময় অপরিহার্য কর্মীরা চাকরিতে থাকলেও বেতন পাননি। কয়েকদিন স্থায়ী শাটডাউনের প্রভাব সামান্য; বিশেষ করে সপ্তাহান্তে হলে। তবে দুই সপ্তাহের বেশি সময় সরকারি কর্মীরা বেতনের চেক না পেলে অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে।
কংগ্রেসনাল বাজেট অফিস জানায়, ২০১৮-১৯ সালের শাটডাউনে মার্কিন অর্থনীতিতে ৩০০ কোটি ডলার ক্ষতি হয়েছিল, যা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ০.০২ শতাংশের সমান।
বর্তমান শাটডাউন দীর্ঘস্থায়ী হলে আরও বড় অস্থিরতা তৈরি হতে পারে, কারণ ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধ ও ফেডারেল রিজার্ভের সঙ্গে দ্বন্দ্ব বৈশ্বিক অর্থনীতিতেও অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।
সরকারি কর্মীদের পরিস্থিতি
প্রতিটি বিভাগ ও সংস্থার জরুরি কর্মপরিকল্পনা থাকে, যাতে নির্ধারণ করা যায় কোন কর্মকর্তা বেতন ছাড়া কাজ চালিয়ে যাবেন। ২০১৮-১৯ সালের শাটডাউনে মোট ২.২ মিলিয়ন ফেডারেল কর্মীর মধ্যে প্রায় ৮ লাখকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছিল। ওই সময় ৬৩টি জাতীয় উদ্যান খোলা রাখা হয়েছিল, তবে পাবলিক রেস্টরুম ও তথ্যকক্ষ বন্ধ এবং আবর্জনা অপসারণ স্থগিত ছিল।
দায়িত্ব নেওয়ার পর ট্রাম্প বেশ কিছু সরকারি সংস্থা ভেঙেছেন। কয়েক হাজার সরকারি কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত হয়েছেন। কংগ্রেস অনুমোদিত কোটি কোটি ডলার খরচ করতেও তিনি অস্বীকার করেছেন। রিপাবলিকানরা তাঁর পদক্ষেপকে প্রশংসা করেছেন, যদিও তা কংগ্রেসের আর্থিক ক্ষমতা হ্রাস করেছে। ডেমোক্র্যাটরা তাকে থামাতে পারেননি।
ট্রাম্পের কেন্দ্রীয় সরকারের কাঠামো সংস্কারের উদ্যোগে আগামী ডিসেম্বর নাগাদ তিন লাখ কর্মী চাকরি হারাতে পারেন বলে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট সদস্যরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, নতুন এই শাটডাউনের কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, যাতে আরও অনেক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়বেন এবং সরকারকে অনেক কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হবে।
এবারের শাটডাউন কেন গুরুতর হবে
এবারের শাটডাউনে ফেডারেল কর্মীদের ওপর প্রভাব আরও গুরুতর হতে পারে। গত সপ্তাহে এক মেমোতে হোয়াইট হাউসের ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বাজেট অফিস (ওএমবি) বিভিন্ন সংস্থাকে বলেছে, যদি শাটডাউন হয়, তাহলে শুধু সাময়িক নয়, বরং স্থায়ী ছাঁটাইয়ের জন্যও প্রস্তুত থাকতে হবে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, যেসব ফেডারেল কর্মসূচির অর্থায়ন শাটডাউনের সময় বন্ধ হয়ে যাবে এবং যেগুলো ‘প্রেসিডেন্টের অগ্রাধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়’, সেসব ক্ষেত্রে কর্মী ছাঁটাইয়ের নোটিশ দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।
ওএমবি আগেও ফেডারেল কর্মীবাহিনী ছোট করার উদ্যোগ নিয়েছিল, যা ছিল ইলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি’-এর আওতায় সরকারের দক্ষতা বাড়ানোর বৃহত্তর কর্মসূচির অংশ।
মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেন, ‘শাটডাউন থেকে অনেক ভালো কিছু আসতে পারে।’ তিনি ইঙ্গিত দেন যে, এ সুযোগে তিনি ‘অনেক কিছু বাদ দিতে চান, যা তিনি চান না।’
প্রতিনিধি পরিষদে সংখ্যালঘু দলনেতা হাকিম জেফরিস বলেছেন, ডেমোক্র্যাটরা ট্রাম্প প্রশাসনের এ ধরনের হুমকিতে ভীত হবে না। সরকার বন্ধ হয়ে গেলে আরও ফেডারেল কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হবে, এমন ভয়ে তারা শঙ্কিত নন।
মঙ্গলবার দুটি বড় ফেডারেল কর্মচারী ইউনিয়ন ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, শাটডাউনের সময় অবৈধভাবে গণছাঁটাইয়ের হুমকি দেওয়া হয়েছে।
মার্কিন পার্লামেন্ট কংগ্রেস ব্যয় বিল পাস করতে ব্যর্থ হওয়ায় দেশটির সরকারের বেশিরভাগ কার্যক্রম এখন বন্ধ রয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, অর্থনীতিসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সেবায় ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে এই শাটডাউন। এতে এক দীর্ঘ ও ক্লান্তিকর অচলাবস্থায় পড়ে যেতে পারে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। কয়েক হাজার সরকারি কর্মীকে ছুটিতে পাঠাতে হতে পারে বিনা বেতনে।
এই অচল পরিস্থিতি থেকে বের হওয়ার আপাতত কোনো পথ নেই। সরকারি সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে, এটি দীর্ঘ হলে সেপ্টেম্বরে প্রকাশ হওয়া গুরুত্বপূর্ণ কর্মসংস্থান প্রতিবেদন স্থগিত হয়ে যাবে, বিমান চলাচল ধীর হবে, বৈজ্ঞানিক গবেষণা স্থগিত থাকবে, সেনাদের বেতন দেওয়া বন্ধ হবে এবং প্রায় সাত লাখ ৫০ হাজার ফেডারেল কর্মী বিনা বেতনে ছুটি নিতে বাধ্য হবেন। প্রতিদিন সরকারের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে ৪০ কোটি মার্কিন ডলার।
কেন এই শাটডাউন
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকার সচল রাখতে মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত কোনো আইন পাস করতে পারেনি কংগ্রেস। বুধবার (১ অক্টোবর) নতুন রাজস্ব বছরের আগে সরকারের ৪৩৮টি সংস্থাকে তহবিল বিতরণ করার কথা ছিল।
প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেট— কংগ্রেসের দুই কক্ষই রিপাবলিকানদের নিয়ন্ত্রণে। তবে ব্যয় বিল পাস করতে ১০০ আসনের সিনেটে অন্তত সাত ডেমোক্র্যাটের ভোট দরকার। এতে সংখ্যালঘু দল কিছুটা সুবিধা পেয়েছে। আগামী নভেম্বর পর্যন্ত সরকারি কার্যক্রম সচল রাখতে স্বল্পমেয়াদি ব্যয় বিল প্রত্যাখ্যান করেন তারা।
ডেমোক্র্যাটরা দাবি করে বসেছেন, যেকোনো ব্যয় বিল পাস হওয়ার আগে নিশ্চিত করতে হবে যে সম্প্রসারিত সাশ্রয়ী স্বাস্থ্যসেবাভর্তুকি বছরের শেষ পর্যন্ত বহাল রাখতে হবে।
বিপরীতে রিপাবলিকানরাও বলছেন, তারাও ওই ভর্তুকি বাড়াতে চান। কিন্তু ভিন্নভাবে বিষয়টির সুরাহা হওয়া দরকার।
এরইমধ্যে ডেমোক্র্যাটদের শাস্তি দিতে সরকারি কর্মসূচি ও কেন্দ্রীয় সরকারের বেতন কাঠামো কেটে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং হোয়াইট হাউস কর্মকর্তারা। গত সপ্তাহে শাটডাউনের পরিস্থিতিতে স্থায়ী চাকরিচ্যুতির হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্পের বাজেট পরিচালক রাসেল ভোগট।
এদিকে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প ও কংগ্রেসের অন্য নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সিনেটের সংখ্যালঘু ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শুমার বলেন, তারা আমাদের ওপর বলপ্রয়োগ করতে চাইছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা সফল হতে পারবেন না।
সব মিলিয়ে বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, আগেরগুলোর চেয়েও দীর্ঘ হতে পারে চলমান শাটডাউন।
শাটডাউন কী
সরকারি খরচ নিয়ে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের মধ্যে সবসময় দ্বন্দ্ব থাকে। যে কারণে সেই দ্বন্দ্ব শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত সরকার সচল রাখতে একটি অস্থায়ী ব্যয় বিল পাস করেন আইনপ্রণেতারা। কিন্তু যদি সেই অস্থায়ী বিলের মেয়াদও শেষ হয়ে যায়, তাহলে ‘অপরিহার্য’ কার্যক্রম ছাড়া সব কাজ বন্ধ রাখতে হয় সরকারি সংস্থাগুলোকে।
সহজ করে বললে, যখন মার্কিন কংগ্রেস বাজেট বা অর্থায়ন সংক্রান্ত আইন পাস করতে ব্যর্থ হয়, তখন আইন অনুযায়ী ফেডারেল সংস্থাগুলো তাদের কার্যক্রম বন্ধ করতে বাধ্য হয়। এ অবস্থায় শাটডাউন শুরু হয়।
শাটডাউনের ইতিহাস ও প্রভাব
কংগ্রেস রিসার্চ সার্ভিস জানায়, ১৯৮১ সাল থেকে এখনকারটিসহ মোট ১৫টি শাটডাউনের ঘটনা ঘটেছে। অনেকগুলো এক-দুদিন স্থায়ী ছিল। সর্বশেষ শাটডাউনের স্থায়িত্ব ছিল ৩৫ দিন— ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত।
সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে কংগ্রেস ও প্রেসিডেন্টের দ্বন্দ্বে ওই শাটডাউনে হাজার হাজার সরকারি কর্মীকে বিনা বেতনে ছুটি নিতে হয়েছিল। আর্থিক তদারকি থেকে শুরু করে জাতীয় উদ্যানগুলোর আবর্জনা অপসারণসহ বিভিন্ন সেবা ব্যাহত হয়েছিল তখন।
শাটডাউনের সময় অপরিহার্য কর্মীরা চাকরিতে থাকলেও বেতন পাননি। কয়েকদিন স্থায়ী শাটডাউনের প্রভাব সামান্য; বিশেষ করে সপ্তাহান্তে হলে। তবে দুই সপ্তাহের বেশি সময় সরকারি কর্মীরা বেতনের চেক না পেলে অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে।
কংগ্রেসনাল বাজেট অফিস জানায়, ২০১৮-১৯ সালের শাটডাউনে মার্কিন অর্থনীতিতে ৩০০ কোটি ডলার ক্ষতি হয়েছিল, যা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ০.০২ শতাংশের সমান।
বর্তমান শাটডাউন দীর্ঘস্থায়ী হলে আরও বড় অস্থিরতা তৈরি হতে পারে, কারণ ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধ ও ফেডারেল রিজার্ভের সঙ্গে দ্বন্দ্ব বৈশ্বিক অর্থনীতিতেও অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।
সরকারি কর্মীদের পরিস্থিতি
প্রতিটি বিভাগ ও সংস্থার জরুরি কর্মপরিকল্পনা থাকে, যাতে নির্ধারণ করা যায় কোন কর্মকর্তা বেতন ছাড়া কাজ চালিয়ে যাবেন। ২০১৮-১৯ সালের শাটডাউনে মোট ২.২ মিলিয়ন ফেডারেল কর্মীর মধ্যে প্রায় ৮ লাখকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছিল। ওই সময় ৬৩টি জাতীয় উদ্যান খোলা রাখা হয়েছিল, তবে পাবলিক রেস্টরুম ও তথ্যকক্ষ বন্ধ এবং আবর্জনা অপসারণ স্থগিত ছিল।
দায়িত্ব নেওয়ার পর ট্রাম্প বেশ কিছু সরকারি সংস্থা ভেঙেছেন। কয়েক হাজার সরকারি কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত হয়েছেন। কংগ্রেস অনুমোদিত কোটি কোটি ডলার খরচ করতেও তিনি অস্বীকার করেছেন। রিপাবলিকানরা তাঁর পদক্ষেপকে প্রশংসা করেছেন, যদিও তা কংগ্রেসের আর্থিক ক্ষমতা হ্রাস করেছে। ডেমোক্র্যাটরা তাকে থামাতে পারেননি।
ট্রাম্পের কেন্দ্রীয় সরকারের কাঠামো সংস্কারের উদ্যোগে আগামী ডিসেম্বর নাগাদ তিন লাখ কর্মী চাকরি হারাতে পারেন বলে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট সদস্যরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, নতুন এই শাটডাউনের কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, যাতে আরও অনেক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়বেন এবং সরকারকে অনেক কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হবে।
এবারের শাটডাউন কেন গুরুতর হবে
এবারের শাটডাউনে ফেডারেল কর্মীদের ওপর প্রভাব আরও গুরুতর হতে পারে। গত সপ্তাহে এক মেমোতে হোয়াইট হাউসের ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বাজেট অফিস (ওএমবি) বিভিন্ন সংস্থাকে বলেছে, যদি শাটডাউন হয়, তাহলে শুধু সাময়িক নয়, বরং স্থায়ী ছাঁটাইয়ের জন্যও প্রস্তুত থাকতে হবে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, যেসব ফেডারেল কর্মসূচির অর্থায়ন শাটডাউনের সময় বন্ধ হয়ে যাবে এবং যেগুলো ‘প্রেসিডেন্টের অগ্রাধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়’, সেসব ক্ষেত্রে কর্মী ছাঁটাইয়ের নোটিশ দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।
ওএমবি আগেও ফেডারেল কর্মীবাহিনী ছোট করার উদ্যোগ নিয়েছিল, যা ছিল ইলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি’-এর আওতায় সরকারের দক্ষতা বাড়ানোর বৃহত্তর কর্মসূচির অংশ।
মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেন, ‘শাটডাউন থেকে অনেক ভালো কিছু আসতে পারে।’ তিনি ইঙ্গিত দেন যে, এ সুযোগে তিনি ‘অনেক কিছু বাদ দিতে চান, যা তিনি চান না।’
প্রতিনিধি পরিষদে সংখ্যালঘু দলনেতা হাকিম জেফরিস বলেছেন, ডেমোক্র্যাটরা ট্রাম্প প্রশাসনের এ ধরনের হুমকিতে ভীত হবে না। সরকার বন্ধ হয়ে গেলে আরও ফেডারেল কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হবে, এমন ভয়ে তারা শঙ্কিত নন।
মঙ্গলবার দুটি বড় ফেডারেল কর্মচারী ইউনিয়ন ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, শাটডাউনের সময় অবৈধভাবে গণছাঁটাইয়ের হুমকি দেওয়া হয়েছে।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ভাষণে গত ২৩ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেন, তিনি ‘সাতটি অন্তহীন যুদ্ধ’ বন্ধ করেছেন। তিনি নিজেকে জাতিসংঘের চেয়ে বড় শান্তির দূত হিসেবেও তুলে ধরেন। এমনকি নিজেকে একাধিকবার নোবেল শান্তি পুরস্কারের যোগ্য বলেও দাবি করেন।
৯ ঘণ্টা আগেসাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বজুড়ে চরম ডানপন্থী মতাদর্শ বেড়েছে। এর বৈশিষ্ট্য হলো উগ্র জাতীয়তাবাদ, অভিবাসনবিরোধিতা, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের প্রতি অবিশ্বাস এবং নানা ষড়যন্ত্রমূলক ধারণা। আগে এসব মতাদর্শ মূলত ইন্টারনেটের প্রান্তিক প্ল্যাটফর্ম বা সংগঠিত গোষ্ঠীতে সীমাবদ্ধ ছিল। এখন এগুলো মূলধারার সামাজিক যোগায
২০ ঘণ্টা আগে২৯ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজা যুদ্ধের অবসানের জন্য ২০ দফার প্রস্তাব ঘোষণা করেন। প্রস্তাবটি হোয়াইট হাউস থেকে প্রকাশ করা হয়।
১ দিন আগেএই পদক্ষেপে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে ইরানের অচলাবস্থাও আরও তীব্র হয়েছে। যদিও ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে শেষ মুহূর্তে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন, তবুও নিষেধাজ্ঞা এড়ানো যায়নি।
১ দিন আগে