এক দশকে সুন্দরবনে বেড়েছে বাঘের সংখ্যা
আজ আন্তর্জাতিক বাঘ দিবস। বাঘ যেমন আমাদের জীববৈচিত্র্যের প্রতীক, তেমনি একে বনাঞ্চলের রক্ষাকর্তাও বলা হয়। সুন্দরবনে এখন বাঘের সংখ্যা কত? বাঘ দিবসে তথ্য-উপাত্তসহ সে কথা জানাচ্ছেন দেশের শীর্ষ বাঘ-গবেষক।
এম এ আজিজ
আজ থেকে দেড় দশক আগের কথা। এশিয়ার প্রধান ক্যারিশম্যাটিক প্রাণী বুনো বাঘের সংখ্যা আশংকাজনকভাবে কমে গেলে বাঘ থাকা দেশের রাজনীতিবিদেরা রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে প্রথম বিশ্ব বাঘ সম্মেলনে বসলেন। এই সম্মেলনের অনুঘটক হিসেবে ভূমিকা পালন করে বিশ্বব্যাংক ও কিছুসংখ্যক বিজ্ঞানী।
সময়টা ২০১০ সালের নভেম্বর মাস। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নেতৃত্বে ওই সম্মেলনে যোগ দিলেন ১৩টি দেশের উচ্চপর্যায়ের নেতৃবৃন্দ ও বিজ্ঞানীরা। বাঘ সুরক্ষার নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হলো। প্রত্যেক দেশের প্রতিনিধি তাঁদের বাঘের অবস্থা তুলে ধরলেন সম্মেলনে। কী কী কার্যক্রম নেওয়া যায়, কোত্থেকে বাঘ সংরক্ষণের আর্থিক সহযোগিতা জোগান দেওয়া যায়, সে সব বিষয় নিয়ে আলোচনা চলল।
সম্মেলনে ২০২২ সালের মধ্যে বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণ করার একটি উচ্চাবিলাসী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। এতে মোটামুটিভাবে একমত হয় অংশগ্রহণকারী সব দেশ। ওই সম্মেলনে প্রতিবছর জুলাই মাসের ২৯ তারিখে বিশ্ব বাঘ দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সেই থেকে বিশ্ব বাঘ দিবস পালিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশও প্রতিবছর নানা কর্মসূচির মাধ্যমে দিনটি পালন করে থাকে।
সরকারি নথি অনুযায়ী, ২০১০ সালে আমাদের সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিল ৪৪০টি। ২০০৪ সালে বাঘের পায়ের ছাপের মাপজোক নিয়ে বের করা হয়েছিল এই সংখ্যা। পরবর্তী সময়ে এই পদ্ধতিতে বাঘের সংখ্যা নির্ণয়ে নানা গলদ বের হয়। বিজ্ঞানীরা এ পদ্ধতি বাতিল করে দেন। কারণ, এ পদ্ধতিতে বনের মাটির অবস্থার ওপর নির্ভর করে একই বাঘের নানা মাপের ও আকারের পায়ের ছাপ পাওয়া যেতে পারে।
অন্যদিকে অধিকাংশ দেশ বিশেষ ধরনের ক্যামেরা বসিয়ে বাঘের দেহের দুপাশের ছবি তুলে বাঘ গণনা শুরু করে। এ পদ্ধতির প্রথম প্রয়োগ হয় ভারতে, আজ থেকে প্রায় তিন দশক আগে। প্রথম দিকে পদ্ধতিটি নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকলেও পরবর্তী সময়ে বাঘ গণনার ক্ষেত্রে এটি বিজ্ঞানীদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়।
বর্তমানে বাঘসহ অন্যান্য নিশাচর প্রাণী এই ক্যামেরা-ট্র্যাপের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। আমাদের সুন্দরবনে ২০১৫ সালে প্রথম এ পদ্ধতি অনুসরণে বাঘ গণনার উদ্যোগ নেয় বন অধিদপ্তর। ওই জরিপে সুন্দরবনে ১০৬ টি বাঘ পাওয়া যায়।
২০১৮ সালে সুন্দরবনে দ্বিতীয় জরিপ করা হয়। তখন বাঘের সংখ্যা বেড়ে হয় ১১৪টি। সর্বশেষ ২০২৪ সালে বাঘ পাওয়া যায় ১২৫টি। অর্থাৎ প্রায় এক দশকে সুন্দরবনের বাঘ বেড়েছে প্রায় ৮ শতাংশ।
প্রথম বাঘ সম্মেলনের প্রতিজ্ঞামতে, আমরা বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণ করতে না পারলেও বাঘ বৃদ্ধির একটি প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, যা আমাদের মধ্যে কিছুটা হলেও আশার সঞ্চার করেছে।
এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। বাঘ সংরক্ষণে অন্যান্য দেশ কেমন করছে কিংবা কী কী পদক্ষেপ নিচ্ছে, সেটিও আমাদের জানা প্রয়োজন। আমাদের পাশ্ববর্তী দেশ ভারত বাঘ সংরক্ষণ, গবেষণা ও বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধিতে অন্য সবার চেয়ে এগিয়ে।
২০২২ সালের জরিপ অনুযায়ী, ভারতে বাঘের সংখ্যা ৩ হাজার ৬৮২ টি। ২০১০ সালে ভারতে বাঘের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৪১১টি। অর্থাৎ গত এক দশকে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণের চেয়েও বেশি বেড়েছে। একইভাবে নেপালও তাদের বাঘের সংখ্যা ১২১ থেকে ৩৫৫টিতে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছে।
এর বিপরীত চিত্রও আছে। গত এক দশকে ভিয়েতনাম, লাউস ও কম্বোডিয়া তাদের সর্বশেষ বাঘটি হারিয়েছে। ওই সব দেশের বনাঞ্চলে আর কোনো বাঘ বেঁচে নেই। এক্ষেত্রে বাঘ ও বাঘের চোরা শিকার ছিল বাঘ বিলুপ্তির প্রধান কারণ। সেই সঙ্গে বনাঞ্চল ধ্বংস হয়েছে দেদারছে। বলার কথা হলো, বন ও বাঘ রক্ষায় সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না।
বাঘ টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে বর্তমানে আমাদের সুন্দরবনে প্রধান সমস্যা বাঘের প্রধান শিকার— চিত্রা হরিণের চোরাশিকার। চোরা-শিকারীরা নানা ধরনের ফাঁদ পেতে এই হরিণ শিকার করে এবং গোপনে স্থানীয় মানুষের কাছে হরিণের মাংস বিক্রি করে।
সুন্দরবনে থাকা বনদস্যুরা এই চোরাশিকারীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়; অনেক সময় নিজেরাও যুক্ত থাকে এই কাজে।
বাঘ রক্ষা করতে হলে সুন্দরবন ডাকাতমুক্ত রাখতে হবে এবং এসব শিকার বন্ধ করতে হবে।
সুন্দরবনের উত্তর-পূর্ব প্রান্তঘেঁষা এলাকার মানুষের প্রধান কাজ সুন্দরবনের মাছ, মধু, গোলপাতা ও কাঁকড়া আহরণ করা। এ এলাকায় অত্যধিক মাত্রায় মাছের ঘের হওয়ায় কৃষিকাজের সুযোগও বেশ কম। ফলে প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের জীবন সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল। তাই সুন্দরবনের ওপর চাপ কমাতে এই স্থানীয় মানুষের জন্য যা করা দরকার তা হলো বিকল্প জীবিকার ব্যবস্থা।
উপকূলীয় এলাকার জন্য সুন্দরবন একটি প্রাকৃতিক বেড়া হিসেবে কাজ করে। ঘূর্ণিঝড়- জলোচ্ছ্বাসের কবল থেকে সুন্দরবন এ অঞ্চলের জন্য একটি প্রাকৃতিক ঢাল হিসেবে ভূমিকা পালন করছে। এ বনে জন্ম নেয় উপকূলের সব মাছ, কাঁকড়া ও অন্যান্য জলজ প্রাণী। তারা সুন্দরবনের পুষ্টিসমৃদ্ধ পানিতে বেড়ে ওঠে, এরপর গমন করে সমুদ্রে। সুন্দরবন তাই মাছের আঁতুরঘর হিসেবে কাজ করছে। এভাবে সুন্দরবন প্রায় ২৭ ধরনের নানা ইকোসিস্টেম সেবা দিয়ে চলেছে আমাদের।
বাংলাদেশ ও ভারতের সুন্দরবনের আয়তন ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার। এর মধ্যে বাংলাদেশে পড়েছে ৬০১৭ বর্গকিলোমিটার, যা মোট বনের ৬০ শতাংশ। সর্বশেষ ভারত সরকারের ২০২২ সালের জরিপ অনুযায়ী, ভারতের সুন্দরবনে বাঘ পাওয়া যায় ১০১টি। অন্যদিকে, বন বিভাগের ২০২৪ সালের জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশের বাঘ আছে ১২৫টি। অর্থাৎ দুই দেশের মিলিয়ে সুন্দরবনে বাঘ আছে ২২৬টি।
বাঘের এই সংখ্যা বিবেচনায় নিলে পৃথিবীর অন্যান্য বাঘ-থাকা বনাঞ্চলের মধ্যে সুন্দরবন অন্যতম। কেননা, এ বন পৃথিবীর প্রধান পাঁচটি বাঘের আবাসের একটি। ফলে বাঘ টিকিয়ে রাখা কিংবা পুনরুদ্ধারে সুন্দরবনের ভূমিকা যে অসামান্য, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
লেখক : ড. এম এ আজিজ, অধ্যাপক, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; বাঘ গবেষক
আজ থেকে দেড় দশক আগের কথা। এশিয়ার প্রধান ক্যারিশম্যাটিক প্রাণী বুনো বাঘের সংখ্যা আশংকাজনকভাবে কমে গেলে বাঘ থাকা দেশের রাজনীতিবিদেরা রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে প্রথম বিশ্ব বাঘ সম্মেলনে বসলেন। এই সম্মেলনের অনুঘটক হিসেবে ভূমিকা পালন করে বিশ্বব্যাংক ও কিছুসংখ্যক বিজ্ঞানী।
সময়টা ২০১০ সালের নভেম্বর মাস। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নেতৃত্বে ওই সম্মেলনে যোগ দিলেন ১৩টি দেশের উচ্চপর্যায়ের নেতৃবৃন্দ ও বিজ্ঞানীরা। বাঘ সুরক্ষার নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হলো। প্রত্যেক দেশের প্রতিনিধি তাঁদের বাঘের অবস্থা তুলে ধরলেন সম্মেলনে। কী কী কার্যক্রম নেওয়া যায়, কোত্থেকে বাঘ সংরক্ষণের আর্থিক সহযোগিতা জোগান দেওয়া যায়, সে সব বিষয় নিয়ে আলোচনা চলল।
সম্মেলনে ২০২২ সালের মধ্যে বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণ করার একটি উচ্চাবিলাসী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। এতে মোটামুটিভাবে একমত হয় অংশগ্রহণকারী সব দেশ। ওই সম্মেলনে প্রতিবছর জুলাই মাসের ২৯ তারিখে বিশ্ব বাঘ দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সেই থেকে বিশ্ব বাঘ দিবস পালিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশও প্রতিবছর নানা কর্মসূচির মাধ্যমে দিনটি পালন করে থাকে।
সরকারি নথি অনুযায়ী, ২০১০ সালে আমাদের সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিল ৪৪০টি। ২০০৪ সালে বাঘের পায়ের ছাপের মাপজোক নিয়ে বের করা হয়েছিল এই সংখ্যা। পরবর্তী সময়ে এই পদ্ধতিতে বাঘের সংখ্যা নির্ণয়ে নানা গলদ বের হয়। বিজ্ঞানীরা এ পদ্ধতি বাতিল করে দেন। কারণ, এ পদ্ধতিতে বনের মাটির অবস্থার ওপর নির্ভর করে একই বাঘের নানা মাপের ও আকারের পায়ের ছাপ পাওয়া যেতে পারে।
অন্যদিকে অধিকাংশ দেশ বিশেষ ধরনের ক্যামেরা বসিয়ে বাঘের দেহের দুপাশের ছবি তুলে বাঘ গণনা শুরু করে। এ পদ্ধতির প্রথম প্রয়োগ হয় ভারতে, আজ থেকে প্রায় তিন দশক আগে। প্রথম দিকে পদ্ধতিটি নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকলেও পরবর্তী সময়ে বাঘ গণনার ক্ষেত্রে এটি বিজ্ঞানীদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়।
বর্তমানে বাঘসহ অন্যান্য নিশাচর প্রাণী এই ক্যামেরা-ট্র্যাপের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। আমাদের সুন্দরবনে ২০১৫ সালে প্রথম এ পদ্ধতি অনুসরণে বাঘ গণনার উদ্যোগ নেয় বন অধিদপ্তর। ওই জরিপে সুন্দরবনে ১০৬ টি বাঘ পাওয়া যায়।
২০১৮ সালে সুন্দরবনে দ্বিতীয় জরিপ করা হয়। তখন বাঘের সংখ্যা বেড়ে হয় ১১৪টি। সর্বশেষ ২০২৪ সালে বাঘ পাওয়া যায় ১২৫টি। অর্থাৎ প্রায় এক দশকে সুন্দরবনের বাঘ বেড়েছে প্রায় ৮ শতাংশ।
প্রথম বাঘ সম্মেলনের প্রতিজ্ঞামতে, আমরা বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণ করতে না পারলেও বাঘ বৃদ্ধির একটি প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, যা আমাদের মধ্যে কিছুটা হলেও আশার সঞ্চার করেছে।
এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। বাঘ সংরক্ষণে অন্যান্য দেশ কেমন করছে কিংবা কী কী পদক্ষেপ নিচ্ছে, সেটিও আমাদের জানা প্রয়োজন। আমাদের পাশ্ববর্তী দেশ ভারত বাঘ সংরক্ষণ, গবেষণা ও বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধিতে অন্য সবার চেয়ে এগিয়ে।
২০২২ সালের জরিপ অনুযায়ী, ভারতে বাঘের সংখ্যা ৩ হাজার ৬৮২ টি। ২০১০ সালে ভারতে বাঘের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৪১১টি। অর্থাৎ গত এক দশকে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণের চেয়েও বেশি বেড়েছে। একইভাবে নেপালও তাদের বাঘের সংখ্যা ১২১ থেকে ৩৫৫টিতে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছে।
এর বিপরীত চিত্রও আছে। গত এক দশকে ভিয়েতনাম, লাউস ও কম্বোডিয়া তাদের সর্বশেষ বাঘটি হারিয়েছে। ওই সব দেশের বনাঞ্চলে আর কোনো বাঘ বেঁচে নেই। এক্ষেত্রে বাঘ ও বাঘের চোরা শিকার ছিল বাঘ বিলুপ্তির প্রধান কারণ। সেই সঙ্গে বনাঞ্চল ধ্বংস হয়েছে দেদারছে। বলার কথা হলো, বন ও বাঘ রক্ষায় সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না।
বাঘ টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে বর্তমানে আমাদের সুন্দরবনে প্রধান সমস্যা বাঘের প্রধান শিকার— চিত্রা হরিণের চোরাশিকার। চোরা-শিকারীরা নানা ধরনের ফাঁদ পেতে এই হরিণ শিকার করে এবং গোপনে স্থানীয় মানুষের কাছে হরিণের মাংস বিক্রি করে।
সুন্দরবনে থাকা বনদস্যুরা এই চোরাশিকারীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়; অনেক সময় নিজেরাও যুক্ত থাকে এই কাজে।
বাঘ রক্ষা করতে হলে সুন্দরবন ডাকাতমুক্ত রাখতে হবে এবং এসব শিকার বন্ধ করতে হবে।
সুন্দরবনের উত্তর-পূর্ব প্রান্তঘেঁষা এলাকার মানুষের প্রধান কাজ সুন্দরবনের মাছ, মধু, গোলপাতা ও কাঁকড়া আহরণ করা। এ এলাকায় অত্যধিক মাত্রায় মাছের ঘের হওয়ায় কৃষিকাজের সুযোগও বেশ কম। ফলে প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের জীবন সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল। তাই সুন্দরবনের ওপর চাপ কমাতে এই স্থানীয় মানুষের জন্য যা করা দরকার তা হলো বিকল্প জীবিকার ব্যবস্থা।
উপকূলীয় এলাকার জন্য সুন্দরবন একটি প্রাকৃতিক বেড়া হিসেবে কাজ করে। ঘূর্ণিঝড়- জলোচ্ছ্বাসের কবল থেকে সুন্দরবন এ অঞ্চলের জন্য একটি প্রাকৃতিক ঢাল হিসেবে ভূমিকা পালন করছে। এ বনে জন্ম নেয় উপকূলের সব মাছ, কাঁকড়া ও অন্যান্য জলজ প্রাণী। তারা সুন্দরবনের পুষ্টিসমৃদ্ধ পানিতে বেড়ে ওঠে, এরপর গমন করে সমুদ্রে। সুন্দরবন তাই মাছের আঁতুরঘর হিসেবে কাজ করছে। এভাবে সুন্দরবন প্রায় ২৭ ধরনের নানা ইকোসিস্টেম সেবা দিয়ে চলেছে আমাদের।
বাংলাদেশ ও ভারতের সুন্দরবনের আয়তন ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার। এর মধ্যে বাংলাদেশে পড়েছে ৬০১৭ বর্গকিলোমিটার, যা মোট বনের ৬০ শতাংশ। সর্বশেষ ভারত সরকারের ২০২২ সালের জরিপ অনুযায়ী, ভারতের সুন্দরবনে বাঘ পাওয়া যায় ১০১টি। অন্যদিকে, বন বিভাগের ২০২৪ সালের জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশের বাঘ আছে ১২৫টি। অর্থাৎ দুই দেশের মিলিয়ে সুন্দরবনে বাঘ আছে ২২৬টি।
বাঘের এই সংখ্যা বিবেচনায় নিলে পৃথিবীর অন্যান্য বাঘ-থাকা বনাঞ্চলের মধ্যে সুন্দরবন অন্যতম। কেননা, এ বন পৃথিবীর প্রধান পাঁচটি বাঘের আবাসের একটি। ফলে বাঘ টিকিয়ে রাখা কিংবা পুনরুদ্ধারে সুন্দরবনের ভূমিকা যে অসামান্য, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
লেখক : ড. এম এ আজিজ, অধ্যাপক, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; বাঘ গবেষক
অভিযোগকারীর দাবি, মৃতদের অধিকাংশই ছিল নারী ও শিশু। তাদের শরীরে তিনি যৌন নির্যাতন ও আঘাতের চিহ্ন দেখেছেন।
২ দিন আগেবিশ্লেষকেরা বলছেন, থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়ার এই সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি ভালো হওয়ার আগে বেশ খারাপের দিকে যাবে। আল-জাজিরা বলছে, উভয় দেশের বর্তমান নেতাদের পিতা তথা কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন এবং প্রাক্তন থাই প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার বিরোধ এই যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার রাজনৈতিক খায়েশকে ইন্ধন জোগাবে
৩ দিন আগেবিমান দুর্ঘটনার সময় বা আশঙ্কা থাকলে জেট ফুয়েল পরিচালনা বা ব্যবস্থাপনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কীভাবে বিমানে জেট ফুয়েল ভরা হয়, দুর্ঘটনার সময় ফুয়েল কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয় এবং জেট ফুয়েলের আগুন নেভানোর পদ্ধতি নিয়েই এই লেখা।
৪ দিন আগেগত শনিবার (১৯ জুলাই) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এ সমাবেশ আয়োজন করা হয় সাত দফা দাবিতে। দেড় দশকের বেশি সময় ধরে স্বাভাবিক রাজনৈতিক কার্যক্রমে বাধা পেয়ে আসা দলটি সোহরাওয়ার্দীর সমাবেশে সারা দেশের বিপুল নেতাকর্মীর ঢল নামায়।
৫ দিন আগে