leadT1ad

যুক্তরাজ্যের অভিবাসনবিরোধী আন্দোলন কেন ইসলাম ও মুসলমানের বিরুদ্ধে

রবিনসনের উগ্রপন্থার কুখ্যাতি, অপরাধমূলক অতীত এবং হিংসাত্মক আচরণের পরেও তিনি বিশাল সংখ্যক মানুষকে একত্রিত করতে সক্ষম হন

স্ট্রিম ডেস্ক
স্ট্রিম গ্রাফিক

গত ১৩ সেপ্টেম্বর লন্ডনে অনুষ্ঠিত ‘ইউনাইট দ্য কিংডম’ শিরোনামে অভিবাসনবিরোধী বিক্ষোভে প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার মানুষ অংশ নেন। এটি যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ ডানপন্থী সমাবেশ। বিক্ষোভের আয়োজক ছিলেন, ইসলাম ও মুসলিমবিরোধী মনোভাবের জন্য পরিচিত অ্যাকটিভিস্ট টমি রবিনসন। তাই এতো বিশালসংখ্যক মানুষের অংশগ্রহণ বিশ্বের অনেককেই চমকে দিয়েছে। এতে যুক্তরাজ্যের রাজনীতি ও সমাজের ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

বিক্ষোভকারীরা ইংল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যের পতাকা বহন করেন এবং ‘সেন্ড দেম হোম’, ‘স্টপ দ্য বোটস’ এবং ‘সেভ আওয়ার চিলড্রেন’ এর মতো স্লোগান দেন। কিছু অংশগ্রহণকারী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘ম্যাগা’ হ্যাট এবং ইসরায়েলের পতাকা বহন করেন। প্রচুর শ্রমজীবি ও গ্রামীন মধ্যবিত্তরা এতে অংশগ্রহণ করে।

মার্কিন বিলিয়নিয়ার ইলন মাস্ক ভিডিও বার্তার মাধ্যমে সমাবেশে অংশ নেন। ইলন মাস্ক বলেন, ‘অসংযত ও ব্যাপক অভিবাসন ব্রিটেনকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছে।’ তিনি আরও সতর্ক করেন, ‘সহিংসতা ধেয়ে আসছে। মানুষকে এখন হয় প্রতিরোধ করতে হবে, নয়তো বিলীন হয়ে যেতে হবে।’ ব্রিটিশ সরকার তাঁর মন্তব্যকে ‘বিপজ্জনক ও উসকানিমূলক’ বলে নিন্দা জানিয়েছে।

মঞ্চে ইউরোপীয় ডানপন্থী আন্দোলনের নেতারাও উত্তেজনাপূর্ণ বক্তব্য দেন। ফরাসি রাজনীতিক এরিক জেমুর বলেন, ‘আমাদের ইউরোপীয় জনগণকে দক্ষিণ থেকে আসা মুসলিম সংস্কৃতির মানুষ দিয়ে প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে।’

অভিবাসনবিরোধী বিক্ষোভ। সংগৃহীত ছবি
অভিবাসনবিরোধী বিক্ষোভ। সংগৃহীত ছবি

বিক্ষোভে ইসলাম ও মুসলিম বিরোধী প্রচুর স্লোগান ও বক্তব্য শোনা গেছে। এসবকে যুক্তরাজ্যের অভিবাসন নীতি ও মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষমূলক মনোভাবের প্রতিফলন হিসেবে দেখা হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাজ্যে অভিবাসন ও মুসলিম বিরোধী মনোভাব ব্যাপক বেড়েছে।

উগ্র ডানপন্থী কার্যক্রম, অভিবাসনবিরোধী উন্মাদনা এবং সাংস্কৃতিক পরিচয় নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে উত্তেজনা তৈরি করছে। এর কেন্দ্রে রয়েছেন টমি রবিনসন, যিনি একজন সুপরিচিত উগ্র ডানপন্থী নেতা। তিনি ইসলামের বিরুদ্ধে খোলাখুলিভাবেই বিদ্বেষ দেখান এবং অভিবাসনবিরোধী গোষ্ঠীগুলোকে একত্রিত করেন। এই গোষ্ঠীগুলো মুসলিমদেরকে যুক্তরাজ্যের মূল্যবোধ, অর্থনীতি এবং নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখে।

রবিনসন ‘উগ্র ইসলামে’র সম্ভাব্য হুমকির বিরুদ্ধে সড়ক বিক্ষোভ আয়োজন করতেন। তবে ২০১৩ সালে সংগঠনটি থেকে তিনি পদত্যাগ করেন। এরপর তিনি ব্যক্তিগতভাবে নিজেকে ইসলাম বিরোধী প্রচারক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। এক্স-এর মতো সামাজিক মাধ্যমে তার ১০ লাখের বেশি অনুসারী আছে।

টমি রবিনসন কে? তিনি কেন ইসলাম ও মুসলিমদের বিরোধিতা করেন?

টমি রবিনসনের আসল নাম স্টিফেন ইয়াক্সলি-লেনন। তার জন্ম ১৯৮২ সালে। তিনি একজন উগ্র ডানপন্থী অ্যাকটিভিস্ট, সাংবাদিক এবং দণ্ডিত অপরাধী। ২০০৯ সালে তিনি ইংলিশ ডিফেন্স লীগ (ইডিএল)-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে আলোচনায় আসেন। ইডিএল গঠন করা হয় যুক্তরাজ্যের ‘ইসলামিকরণ’ ঠেকানোর উদ্দেশ্যে।

রবিনসন ‘উগ্র ইসলামে’র সম্ভাব্য হুমকির বিরুদ্ধে সড়ক বিক্ষোভ আয়োজন করতেন। তবে ২০১৩ সালে সংগঠনটি থেকে তিনি পদত্যাগ করেন। এরপর তিনি ব্যক্তিগতভাবে নিজেকে ইসলাম বিরোধী প্রচারক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। এক্স-এর মতো সামাজিক মাধ্যমে তার ১০ লাখের বেশি অনুসারী আছে।

রবিনসনের ইসলামবিরোধিতা তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, আদর্শগত বিশ্বাস এবং কৌশলগত বক্তব্যের সংমিশ্রণ থেকে এসেছে। তবে সমালোচকরা একে সরাসরি ইসলামোফোবিয়া বা ইসলামভীতি হিসেবে দেখেন। তার ইসলামবিরোধিতার কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে:

অনুমিত নিরাপত্তা হুমকি: রবিনসন প্রায়ই ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাস’ এবং মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলে ‘নো-গো জোন’ এর উল্লেখ করেন। তিনি এগুলোকে সাংস্কৃতিক অসঙ্গতি এবং ব্রিটিশ সমাজের জন্য হুমকি হিসেবে দেখেন। ২০১৫ সালে বার্মিংহামে প্যাগিডা র‌্যালিতে তিনি দাবি করেন, ইসলামপন্থী সন্ত্রাসীরা শরণার্থী ছদ্মবেশে ইউরোপে প্রবেশ করতে পারে। তিনি একে ২০১৫ সালের প্যারিস হামলার সঙ্গে যুক্ত করে দেখান। রবিনসন আশঙ্কা করেন, ‘শরিয়া আইন’ ব্রিটিশ আইনি ব্যবস্থাকে প্রতিস্থাপন করতে পারে।

রবিনসনের উগ্রপন্থার কুখ্যাতি, অপরাধমূলক অতীত এবং হিংসাত্মক আচরণের পরেও তিনি বিশাল সংখ্যক মানুষকে একত্রিত করতে সক্ষম হন।

মুসলিমদের ক্রিমিনাল হিসেবে দেখা: ২০১৮ সালে লিডস কোর্টরুমের বাইরে তিনি লাইভ স্ট্রিমিং করেছিলেন। তখন সিরিয়ান শরণার্থীদের যৌন সহিংসতার অভিযোগে বিচার চলছিল। সেসময় তিনি মিথ্যাভাবে দাবি করেছিলেন যে ওই শরাণার্থীরা বৃহত্তর মুসলিম অপরাধী চক্রের অংশ। এর ফলে ২০২৪ সালে তাকে আদালত অবমাননার দায়ে ১৮ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়, যা ২০২৫ সালে কমানো হয়। রবিনসন যুক্তি দেন যে, এসব ঘটনা মুসলিমদের মধ্যে সহিংসতার একটি সাংস্কৃতিক প্রবণতার প্রতিফলন, যা কোরআনের ব্যাখ্যার ভিত্তিতে তৈরি।

সাংস্কৃতিক ও আত্মপরিচয়ের সংঘাত: রবিনসন দাবি করেন, তার সমালোচনা মুসলিমদের বিরুদ্ধে নয়, রাজনৈতিক ইসলাম বা উগ্র ইসলামপন্থার বিরুদ্ধে। তবে তার বক্তব্য প্রায়ই অতিসরলীকরন হয়ে যায়। ২০১৮ সালে সিবিসির সঙ্গ এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, তিনি ‘ইসলামের প্রতি আপত্তি’ জানাচ্ছেন, কারণ তার মতে, ইসলাম পশ্চিমা স্বাধীনতার সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ। তিনি ইসলামকে সহিংসতা এবং নারীস্বাধীনতার বিরোধী হিসেবে অভিহিত করেন। তার এই বয়ানে ডানপন্থী দর্শকদের উদ্বেগও প্রতিধ্বনিত হয়, যারা অভিবাসনের কারণে যুক্তরাজ্যের জনসংখ্যাগত পরিবর্তন নিয়ে উদ্বিগ্ন।

ব্যক্তিগত ও আর্থিক প্রেরণা: রবিনসনের কার্যক্রম আর্থিকভাবেও লাভজনক হয়েছে। বই, ডকুমেন্টারি এবং ক্রাউডফান্ডিংয়ের মাধ্যমে তিনি কোটি ডলার উপার্জন করেছেন। তবে, তাকে বহুবার কারাদণ্ড ভোগ করতে হয়েছে— আক্রমণ, প্রতারণা এবং কোর্ট অবমাননার অপরাধে। ২০২৫ সালের মে মাসে দুই ব্যক্তিকে হয়রানি করার অভিযোগ তার চলমান আইনি সমস্যা এর একটি উদাহরণ।

রবিনসনের প্রভাব শীর্ষে পৌঁছায় গত ১৩ সেপ্টেম্বর লন্ডনের বিক্ষোভ সমাবেশে। অভিবাসন ও ইসলামবিরোধী স্লোগান সহিংসতায় রূপ নেয় এবং পাল্টা বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটে। এন্টি-ডিফেমেশন লীগের মতো প্রতিষ্ঠান তাকে ‘ব্রিটিশ মুসলিমবিদ্বেষীদের পালের গোদা’ হিসেবে অভিহিত করে। তাদের অভিযোগ, রবিনসন ইউরোপীয় ডানপন্থী নেটওয়ার্কের সঙ্গেও যুক্ত এবং বিদ্বেষ উস্কানোর জন্য ভুল তথ্য ব্যবহার করেন।

অভিবাসবিরোধীদের বিরুদ্ধে উদারপন্থীদের পাল্টা বিক্ষোভ। সংগৃহীত ছবি
অভিবাসবিরোধীদের বিরুদ্ধে উদারপন্থীদের পাল্টা বিক্ষোভ। সংগৃহীত ছবি

কীভাবে রবিনসন এত মানুষকে আকৃষ্ট করতে সক্ষম হলেন?

রবিনসনের উগ্রপন্থার কুখ্যাতি, অপরাধমূলক অতীত এবং হিংসাত্মক আচরণের পরেও তিনি বিশাল সংখ্যক মানুষকে একত্রিত করতে সক্ষম হন। লিভারপুল হোপ ইউনিভার্সিটির ভিজিটিং প্রফেসর এবং ডানপন্থী উগ্রপন্থা বিষয়ক গবেষক ম্যাথিউ ফেল্ডম্যান এএফপি-কে বলেন, ‘আমরা এমন কিছু দেখছিলাম যা একধরনের “পারফেক্ট স্টর্ম”।’

বিক্ষোভ সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করে ছোট ছোট নৌকায় বড় সংখ্যক অভিবাসীর আগমন, আশ্রয়প্রার্থীদের হোটেলে থাকার সমস্যা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে তীব্র বিতর্ক এবং অর্থনৈতিক স্থবিরতার সময়ে।

কমিশন ফর রেসিয়াল ইকুয়ালিটির (সিআরই) প্রাক্তন প্রধান ট্রেভর ফিলিপস দ্য টাইমসে লিখেছেন, ‘আশ্রয় হোটেলের বাইরে ক্রোধপূর্ণ বিক্ষোভ এখন একটি সরল, বিস্তৃত বার্তায় রূপ নিচ্ছে: অভিবাসন বন্ধ কর, মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা কর, খ্রিস্টধর্মকে পুনরুজ্জীবিত কর।’

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা রবিনসনের প্রভাব বাড়িয়েছে, তা হলো এক্স প্ল্যাটফর্মে তার প্রচার। এক্স-এর মালিক ইলন মাস্কও সমাবেশে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন।

অভিবাসনবিরোধীরা কেন ইসলাম ও মুসলিমদের লক্ষ্যবস্তু করছে?

যুক্তরাজ্যের অভিবাসনবিরোধী আন্দোলনে বিভিন্ন গোষ্ঠী যুক্ত। যেমন ইডিএল, ব্রিটেন ফার্স্ট ও রিফর্ম ইউকে পার্টি। এই গোষ্ঠীগুলো প্রধানত সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ এবং সম্পদ রক্ষার উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করলেও তাদের সঙ্গে ইসলামবিরোধী মনোভাবও ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। এ কারণে ২০২৫ সালের জুলাই থেকে বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ ও দাঙ্গা দেখা গেছে। এর পেছনে একাধিক কারণ কাজ করে:

সাংস্কৃতিক উদ্বেগ: তারা মনে করেন যে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ থেকে বড় সংখ্যায় অভিবাসন ব্রিটিশ মূল্যবোধকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এসব মূল্যবোধের মধ্যে রয়েছে ধর্মনিরপেক্ষতা, লিঙ্গ সমতা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা। তারা ব্র্যাডফোর্ড বা টাওয়ার হ্যামলেটসের মতো এলাকায় মুসলিমদের ‘প্যারালাল সমাজ’-কে উদাহরণ হিসেবে দেখান।

এই এলাকায় হালাল প্রথা বা মসজিদকে ‘ইসলামিকরন’ এর চিহ্ন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ডানপন্থীরা ইসলামকে উদারতন্ত্রের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ হিসেবে উপস্থাপন করেন। এক্ষেত্রে ২০১৭ সালের ম্যানচেস্টার বোমা হামলার মতো ঘটনাকে উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসের সংযোগ: ৯/১১ হামলার পরবর্তী এবং ইসলামিক স্টেট (আইএস) অনুপ্রাণিত হামলার সময়কেও আন্দোলনটি মুসলিম অভিবাসীদের উগ্রপন্থার সঙ্গে যুক্ত করে দেখায়। যেমন ২০২৪ সালের সাউথপোর্ট ছুরিকাঘাতের ঘটনা। এক মুসলিম আশ্রয়প্রার্থী ওই হামলা চালায় বলে প্রচার করা হয়। যা পরবর্তীতে মিথ্যা প্রমাণিত হয়। ওই প্রচারণার ফলে মসজিদ ও অভিবাসীদের আশ্রয় দেওয়া হোটেলের ওপর হিংসাত্মক হামলার ঘটনা ঘটে। বিশ্লেষকরা বলেন, সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো ভুল তথ্য মুসলিমদেরকে বৃহত্তর সামাজিক সমস্যার জন্য দায়ী দেখানোর চেষ্টা করে।

অর্থনৈতিক সংকট ও সম্পদের ঘাটতি: ২০২৩ সালে যুক্তরাজ্যে নিট অভিবাসন দাঁড়ায় ৬ লাখ ৮৫ হাজারে। ২০২৫ সালে তা সামান্য কমলেও মুসলমানদের দোষারোপ করা হয়। তারা বলে, অভিবাসীদের কারণে বাসস্থানের সংকট, স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় চাপ এবং চাকরিতে প্রতিযোগিতা বেড়েছে। রিফর্ম ইউকের মতো দলগুলো দাবি করে, হোটেলে থাকা আশ্রয়প্রার্থীরা ব্রিটিশ করদাতাদের অর্থে বসবাস করছে এবং তা শ্রমজীবী মানুষের জন্য অন্যায্য বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

বিদ্বেষ ও বর্ণবাদ: এই আন্দোলনের বক্তব্যে স্পষ্ট বর্ণবাদী পক্ষপাত রয়েছে। ২০২৫ সালের একাধিক বিক্ষোভে মুসলিমবিরোধী কটূক্তি, অভিবাসী কেন্দ্রগুলোতে অগ্নিসংযোগ এবং সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ঘটেছে। গাজা সংঘাতের পর ইসরায়েলি প্রচারণায় ইসলামভীতি আরও বেড়েছে।

রাজনৈতিক প্রভাব: আন্দোলনের সাফল্য রিফর্ম ইউকের জনপ্রিয়তায় প্রতিফলিত হয়েছে। তারা এখন বড় রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে উঠে আসছে। লন্ডনের কিংস কলেজের গবেষক জর্জিওস সামারাস বলেন, ‘চরম ডানপন্থীরা গতি পাচ্ছে। রিফর্ম ইউকের সমর্থন প্রায় ৪০ শতাংশে পৌঁছেছে। কেউ তা থামাতে পারছে না।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘রিফর্ম ইউকে এখন স্থায়ীভাবে রাজনীতিতে জায়গা করে নিয়েছে।’

তবে নাইজেল ফারাজ টমি রবিনসনকে উগ্রপন্থী হিসেবে খারিজ করেছেন। এ কারণে ইলন মাস্ক যথেষ্ট কঠোর না হওয়ার দায়ে তার সমালোচনা করেছেন। ল্যাঙ্কাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্লেষক উইন্টার এএফপিকে বলেন, ‘এই সমাবেশ উগ্র ডানপন্থীদের রাজনীতির মূলধারায় প্রবেশ ও সাহসী হয়ে ওঠার এক উদ্বেগজনক সংকেত। ডানপন্থার মূলধারায় প্রবেশ ইতিমধ্যেই রাজনীতিতে প্রভাব ফেলছে। দুই প্রধান দলই এখন সেই ভোট টানতে অভিবাসন নিয়ে কঠোর বক্তব্য দিচ্ছে।’

তবে স্ট্যান্ড আপ টু রেসিজম-এর মতো পাল্টা আন্দোলনও সক্রিয় হয়েছে। তারা বলছে, অভিবাসনবিরোধী অবস্থান প্রায়ই আসলে বিদ্বেষ লুকানোর আড়াল মাত্র। প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টার্মার এ আন্দোলনকে ‘ডানপন্থী সন্ত্রাসী কার্যকলাপ’ বলে নিন্দা করেছেন।

তথ্যসূত্র: আল-জাজিরা, আল-আরাবিয়া, রয়টার্স, বিবিসি

বিষয়:

Ad 300x250

সম্পর্কিত