জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকল্পের অনিয়ম তদন্তের দাবিতে ২০১৯ সালের আগস্টে আন্দোলনে নামেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। টানা আন্দোলনের মুখে তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম টিকে গেলেও, পদ হারান কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।
ফারুক হোসাইন

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) প্রায় ছয় বছর আগে ‘ঈদ সেলামি’ ঘিরে তুলকালাম হয়। উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দ থেকে ছাত্রলীগ নেতাদের দুই কোটি টাকা চাঁদা দাবির অডিও ফাঁস হয়। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম টিকে যান। তবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদ হারান যথাক্রমে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং গোলাম রাব্বানী।
এ ঘটনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ২০১৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) তদন্ত কমিটি করে। এই কমিটি কাজে অপারগতা জানিয়ে নতুন কমিটি গঠনের পরামর্শ দেয়। কিন্তু দীর্ঘ ছয় বছরেও ইউজিসির সেই তদন্ত আলোর মুখ দেখেনি। তাদের বিরুদ্ধে ঘটনাটি চেপে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও এ ব্যাপারে নির্বিকার।
২০১৯ সালে উন্নয়ন প্রকল্পে অনিয়মের বিরুদ্ধে আন্দোলন হয় ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের এই প্ল্যাটফর্মের সংগঠক ছাত্র ইউনিয়নের জাবি সংসদের নেতা রাকিবুল হক রনি স্ট্রিমকে বলেন, তৎকালীন প্রশাসন সবকিছু চেপে গিয়েছিল। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে আশা করেছিলাম– তদন্ত হবে, দোষীরা শাস্তি পাবে। কিন্তু বর্তমান প্রশাসনও দুর্নীতিকে লায় দিতে একই পথে হাঁটছে।
এ ব্যাপারে উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান স্ট্রিমকে বলেন, সরকার কোনো বিষয়ে তদন্তের উদ্যোগ নিলে, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আবার প্রয়োজন আছে কিনা সেটি একটি বিষয়। তবে ইউজিসি কোনো সহায়তা চাইলে, আমরা করব।
২০১৮ সালের ২৩ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) জাবির অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পে এক হাজার ৪৪৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকা বরাদ্দ অনুমোদন দেয়। ২০১৯ সালের জুনে ছয়টি আবাসিক হলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয়। এরপর তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে প্রকল্প থেকে দুই কোটি টাকা ‘ঈদ সেলামি’ হিসেবে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
তৎকালীন প্রশাসন সবকিছু চেপে গিয়েছিল। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে আশা করেছিলাম– তদন্ত হবে, দোষীরা শাস্তি পাবে। কিন্তু বর্তমান প্রশাসনও দুর্নীতিকে লায় দিতে একই পথে হাঁটছে। রাকিবুল হক রনি, সংগঠক, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর
এ ঘটনায় ২০১৯ সালের আগস্টে আন্দোলনে নামেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। কয়েক মাসব্যাপী ওই আন্দোলন এক পর্যায়ে তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে রূপ নিয়েছিল। শেষমেষ উপাচার্য টিকে গেলেও, ছাত্রলীগের শীর্ষ পদ হারাতে হয় শোভন ও রাব্বানীকে।
উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দ থেকে ছাত্রলীগকে চাঁদা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন উপাচার্য ফারজানা ইসলাম। তবে তিনি জানিয়েছিলেন, ছাত্রলীগের সে সময়ের নেতারা তাঁর কাছে কমিশন চেয়েছিলেন।
আন্দোলনকারীদের লিখিত অভিযোগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ইউজিসি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করে। আহ্বায়ক করা হয় ইউজিসির তৎকালীন জ্যেষ্ঠ সদস্য অধ্যাপক দিল আফরোজ বেগমকে। ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ গোলাম দস্তগীরকে মহাসচিব ও সদস্য করা হয় অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীরকে। পরে কমিটির প্রধান হন অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর। অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর তদন্তে অপারগতা জানিয়ে ইউজিসির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগকে নতুন করে কমিটি করার পরামর্শ দেন।
তদন্ত কমিটির এক সদস্য স্ট্রিমকে বলেন, কমিটি কিছু কাজ করেছিল। ইস্যু ছিল দুটি– প্রকল্পে অনিয়ম ও পরিবেশগত দিক ঠিক না রাখা। আমরা তদন্তের সময় দরপত্রে অসঙ্গতি পেয়েছি। অনেকেই দরপত্র জমা দিতে পারেননি। কিন্তু কোনো এক কারণে ওই তদন্ত আর এগোয়নি।
তদন্ত কমিটির সদস্যসচিব মোহাম্মদ গোলাম দস্তগীর বর্তমানে ইউজিসির জেনারেল সার্ভিসেস অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের উপপরিচালক। তিনি বলেছেন, কমিটির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন করে তদন্তের জন্য বলা হয়েছিল। পরে কী হয়েছে, জানি না।
ইতিমধ্যে ছয়টি আবাসিক হলের নির্মাণকাজ শেষে শিক্ষার্থীরা বসবাস করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচার থিয়েটার হল, গ্রন্থাগার, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোয়ার্টার নির্মাণও প্রায় শেষ। কিন্তু গত ছয় বছর ধরে ইউজিসি অনিয়ম তদন্তে গড়িমসি করে চলেছে। ইউজিসির কর্মকর্তারা জানান, ইউজিসির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগ বিষয়টি তদন্তে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। মাঝে কয়েকবার সরেজমিন পরিদর্শন ও নথিপত্র চাইলেও, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে এসব নেওয়ার বিষয়ে কোনো তৎপরতা নেই।
এ ব্যাপারে ইউজিসির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক শাহ মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম বলেছেন, আমরা নতুন করে তদন্ত কমিটি করিনি। কিন্তু প্রকল্প সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন নথি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে চেয়েছি। কিছু পেয়েছি। বাকিগুলোর জন্য শিগগির তাগাদা দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত হলে ফাটল দেখা দিয়েছে। আমরা হল পরিদর্শনে যাব। তখন উন্নয়ন প্রকল্পের সামগ্রিক বিষয় এবং অনিয়মের অভিযোগ খতিয়ে দেখব।
আমরা নতুন করে তদন্ত কমিটি করিনি। কিন্তু প্রকল্প সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন নথি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে চেয়েছি। কিছু পেয়েছি।... সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত হলে ফাটল দেখা দিয়েছে। আমরা হল পরিদর্শনে যাব। তখন উন্নয়ন প্রকল্পের সামগ্রিক বিষয় এবং অনিয়মের অভিযোগ খতিয়ে দেখব। শাহ মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, অতিরিক্ত পরিচালক, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগ, ইউজিসি
এ ঘটনায় ২০১৯ সালের আগস্টে আন্দোলনে নামেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। কয়েক মাসব্যাপী ওই আন্দোলন এক পর্যায়ে তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে রূপ নিয়েছিল। শেষমেষ উপাচার্য টিকে গেলেও, ছাত্রলীগের শীর্ষ পদ হারাতে হয় শোভন ও রাব্বানীকে।
উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দ থেকে ছাত্রলীগকে চাঁদা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন উপাচার্য ফারজানা ইসলাম। তবে তিনি জানিয়েছিলেন, ছাত্রলীগের সে সময়ের নেতারা তাঁর কাছে কমিশন চেয়েছিলেন।
আন্দোলনকারীদের লিখিত অভিযোগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ইউজিসি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করে। আহ্বায়ক করা হয় ইউজিসির তৎকালীন জ্যেষ্ঠ সদস্য অধ্যাপক দিল আফরোজ বেগমকে। ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ গোলাম দস্তগীরকে মহাসচিব ও সদস্য করা হয় অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীরকে। পরে কমিটির প্রধান হন অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর। অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর তদন্তে অপারগতা জানিয়ে ইউজিসির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগকে নতুন করে কমিটি করার পরামর্শ দেন।
তদন্ত কমিটির এক সদস্য স্ট্রিমকে বলেন, কমিটি কিছু কাজ করেছিল। ইস্যু ছিল দুটি– প্রকল্পে অনিয়ম ও পরিবেশগত দিক ঠিক না রাখা। আমরা তদন্তের সময় দরপত্রে অসঙ্গতি পেয়েছি। অনেকেই দরপত্র জমা দিতে পারেননি। কিন্তু কোনো এক কারণে ওই তদন্ত আর এগোয়নি।
তদন্ত কমিটির সদস্যসচিব মোহাম্মদ গোলাম দস্তগীর বর্তমানে ইউজিসির জেনারেল সার্ভিসেস অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের উপপরিচালক। তিনি বলেছেন, কমিটির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন করে তদন্তের জন্য বলা হয়েছিল। পরে কী হয়েছে, জানি না।
সূত্র জানায়, ২০২২ সালে এ ঘটনায় আরেকটি তদন্ত কমিটি হয়। যার প্রধান করা হয় ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চন্দকে। আহ্বায়ক ছিলেন পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের কর্মকর্তা আকরাম আলী খান। ওই কোন প্রতিবেদন দেয়নি।
ইতিমধ্যে ছয়টি আবাসিক হলের নির্মাণকাজ শেষে শিক্ষার্থীরা বসবাস করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচার থিয়েটার হল, গ্রন্থাগার, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোয়ার্টার নির্মাণও প্রায় শেষ। কিন্তু গত ছয় বছর ধরে ইউজিসি অনিয়ম তদন্তে গড়িমসি করে চলেছে। ইউজিসির কর্মকর্তারা জানান, ইউজিসির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগ বিষয়টি তদন্তে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। মাঝে কয়েকবার সরেজমিন পরিদর্শন ও নথিপত্র চাইলেও, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে এসব নেওয়ার বিষয়ে কোনো তৎপরতা নেই।
এ ব্যাপারে ইউজিসির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক শাহ মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম বলেছেন, আমরা নতুন করে তদন্ত কমিটি করিনি। কিন্তু প্রকল্প সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন নথি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে চেয়েছি। কিছু পেয়েছি। বাকিগুলোর জন্য শিগগির তাগাদা দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত হলে ফাটল দেখা দিয়েছে। আমরা হল পরিদর্শনে যাব। তখন উন্নয়ন প্রকল্পের সামগ্রিক বিষয় এবং অনিয়মের অভিযোগ খতিয়ে দেখব।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) প্রায় ছয় বছর আগে ‘ঈদ সেলামি’ ঘিরে তুলকালাম হয়। উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দ থেকে ছাত্রলীগ নেতাদের দুই কোটি টাকা চাঁদা দাবির অডিও ফাঁস হয়। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম টিকে যান। তবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদ হারান যথাক্রমে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং গোলাম রাব্বানী।
এ ঘটনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ২০১৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) তদন্ত কমিটি করে। এই কমিটি কাজে অপারগতা জানিয়ে নতুন কমিটি গঠনের পরামর্শ দেয়। কিন্তু দীর্ঘ ছয় বছরেও ইউজিসির সেই তদন্ত আলোর মুখ দেখেনি। তাদের বিরুদ্ধে ঘটনাটি চেপে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও এ ব্যাপারে নির্বিকার।
২০১৯ সালে উন্নয়ন প্রকল্পে অনিয়মের বিরুদ্ধে আন্দোলন হয় ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের এই প্ল্যাটফর্মের সংগঠক ছাত্র ইউনিয়নের জাবি সংসদের নেতা রাকিবুল হক রনি স্ট্রিমকে বলেন, তৎকালীন প্রশাসন সবকিছু চেপে গিয়েছিল। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে আশা করেছিলাম– তদন্ত হবে, দোষীরা শাস্তি পাবে। কিন্তু বর্তমান প্রশাসনও দুর্নীতিকে লায় দিতে একই পথে হাঁটছে।
এ ব্যাপারে উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান স্ট্রিমকে বলেন, সরকার কোনো বিষয়ে তদন্তের উদ্যোগ নিলে, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আবার প্রয়োজন আছে কিনা সেটি একটি বিষয়। তবে ইউজিসি কোনো সহায়তা চাইলে, আমরা করব।
২০১৮ সালের ২৩ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) জাবির অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পে এক হাজার ৪৪৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকা বরাদ্দ অনুমোদন দেয়। ২০১৯ সালের জুনে ছয়টি আবাসিক হলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয়। এরপর তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে প্রকল্প থেকে দুই কোটি টাকা ‘ঈদ সেলামি’ হিসেবে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
তৎকালীন প্রশাসন সবকিছু চেপে গিয়েছিল। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে আশা করেছিলাম– তদন্ত হবে, দোষীরা শাস্তি পাবে। কিন্তু বর্তমান প্রশাসনও দুর্নীতিকে লায় দিতে একই পথে হাঁটছে। রাকিবুল হক রনি, সংগঠক, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর
এ ঘটনায় ২০১৯ সালের আগস্টে আন্দোলনে নামেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। কয়েক মাসব্যাপী ওই আন্দোলন এক পর্যায়ে তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে রূপ নিয়েছিল। শেষমেষ উপাচার্য টিকে গেলেও, ছাত্রলীগের শীর্ষ পদ হারাতে হয় শোভন ও রাব্বানীকে।
উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দ থেকে ছাত্রলীগকে চাঁদা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন উপাচার্য ফারজানা ইসলাম। তবে তিনি জানিয়েছিলেন, ছাত্রলীগের সে সময়ের নেতারা তাঁর কাছে কমিশন চেয়েছিলেন।
আন্দোলনকারীদের লিখিত অভিযোগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ইউজিসি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করে। আহ্বায়ক করা হয় ইউজিসির তৎকালীন জ্যেষ্ঠ সদস্য অধ্যাপক দিল আফরোজ বেগমকে। ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ গোলাম দস্তগীরকে মহাসচিব ও সদস্য করা হয় অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীরকে। পরে কমিটির প্রধান হন অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর। অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর তদন্তে অপারগতা জানিয়ে ইউজিসির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগকে নতুন করে কমিটি করার পরামর্শ দেন।
তদন্ত কমিটির এক সদস্য স্ট্রিমকে বলেন, কমিটি কিছু কাজ করেছিল। ইস্যু ছিল দুটি– প্রকল্পে অনিয়ম ও পরিবেশগত দিক ঠিক না রাখা। আমরা তদন্তের সময় দরপত্রে অসঙ্গতি পেয়েছি। অনেকেই দরপত্র জমা দিতে পারেননি। কিন্তু কোনো এক কারণে ওই তদন্ত আর এগোয়নি।
তদন্ত কমিটির সদস্যসচিব মোহাম্মদ গোলাম দস্তগীর বর্তমানে ইউজিসির জেনারেল সার্ভিসেস অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের উপপরিচালক। তিনি বলেছেন, কমিটির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন করে তদন্তের জন্য বলা হয়েছিল। পরে কী হয়েছে, জানি না।
ইতিমধ্যে ছয়টি আবাসিক হলের নির্মাণকাজ শেষে শিক্ষার্থীরা বসবাস করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচার থিয়েটার হল, গ্রন্থাগার, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোয়ার্টার নির্মাণও প্রায় শেষ। কিন্তু গত ছয় বছর ধরে ইউজিসি অনিয়ম তদন্তে গড়িমসি করে চলেছে। ইউজিসির কর্মকর্তারা জানান, ইউজিসির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগ বিষয়টি তদন্তে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। মাঝে কয়েকবার সরেজমিন পরিদর্শন ও নথিপত্র চাইলেও, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে এসব নেওয়ার বিষয়ে কোনো তৎপরতা নেই।
এ ব্যাপারে ইউজিসির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক শাহ মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম বলেছেন, আমরা নতুন করে তদন্ত কমিটি করিনি। কিন্তু প্রকল্প সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন নথি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে চেয়েছি। কিছু পেয়েছি। বাকিগুলোর জন্য শিগগির তাগাদা দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত হলে ফাটল দেখা দিয়েছে। আমরা হল পরিদর্শনে যাব। তখন উন্নয়ন প্রকল্পের সামগ্রিক বিষয় এবং অনিয়মের অভিযোগ খতিয়ে দেখব।
আমরা নতুন করে তদন্ত কমিটি করিনি। কিন্তু প্রকল্প সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন নথি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে চেয়েছি। কিছু পেয়েছি।... সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত হলে ফাটল দেখা দিয়েছে। আমরা হল পরিদর্শনে যাব। তখন উন্নয়ন প্রকল্পের সামগ্রিক বিষয় এবং অনিয়মের অভিযোগ খতিয়ে দেখব। শাহ মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, অতিরিক্ত পরিচালক, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগ, ইউজিসি
এ ঘটনায় ২০১৯ সালের আগস্টে আন্দোলনে নামেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। কয়েক মাসব্যাপী ওই আন্দোলন এক পর্যায়ে তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে রূপ নিয়েছিল। শেষমেষ উপাচার্য টিকে গেলেও, ছাত্রলীগের শীর্ষ পদ হারাতে হয় শোভন ও রাব্বানীকে।
উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দ থেকে ছাত্রলীগকে চাঁদা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন উপাচার্য ফারজানা ইসলাম। তবে তিনি জানিয়েছিলেন, ছাত্রলীগের সে সময়ের নেতারা তাঁর কাছে কমিশন চেয়েছিলেন।
আন্দোলনকারীদের লিখিত অভিযোগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ইউজিসি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করে। আহ্বায়ক করা হয় ইউজিসির তৎকালীন জ্যেষ্ঠ সদস্য অধ্যাপক দিল আফরোজ বেগমকে। ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ গোলাম দস্তগীরকে মহাসচিব ও সদস্য করা হয় অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীরকে। পরে কমিটির প্রধান হন অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর। অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর তদন্তে অপারগতা জানিয়ে ইউজিসির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগকে নতুন করে কমিটি করার পরামর্শ দেন।
তদন্ত কমিটির এক সদস্য স্ট্রিমকে বলেন, কমিটি কিছু কাজ করেছিল। ইস্যু ছিল দুটি– প্রকল্পে অনিয়ম ও পরিবেশগত দিক ঠিক না রাখা। আমরা তদন্তের সময় দরপত্রে অসঙ্গতি পেয়েছি। অনেকেই দরপত্র জমা দিতে পারেননি। কিন্তু কোনো এক কারণে ওই তদন্ত আর এগোয়নি।
তদন্ত কমিটির সদস্যসচিব মোহাম্মদ গোলাম দস্তগীর বর্তমানে ইউজিসির জেনারেল সার্ভিসেস অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের উপপরিচালক। তিনি বলেছেন, কমিটির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন করে তদন্তের জন্য বলা হয়েছিল। পরে কী হয়েছে, জানি না।
সূত্র জানায়, ২০২২ সালে এ ঘটনায় আরেকটি তদন্ত কমিটি হয়। যার প্রধান করা হয় ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চন্দকে। আহ্বায়ক ছিলেন পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের কর্মকর্তা আকরাম আলী খান। ওই কোন প্রতিবেদন দেয়নি।
ইতিমধ্যে ছয়টি আবাসিক হলের নির্মাণকাজ শেষে শিক্ষার্থীরা বসবাস করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচার থিয়েটার হল, গ্রন্থাগার, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোয়ার্টার নির্মাণও প্রায় শেষ। কিন্তু গত ছয় বছর ধরে ইউজিসি অনিয়ম তদন্তে গড়িমসি করে চলেছে। ইউজিসির কর্মকর্তারা জানান, ইউজিসির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগ বিষয়টি তদন্তে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। মাঝে কয়েকবার সরেজমিন পরিদর্শন ও নথিপত্র চাইলেও, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে এসব নেওয়ার বিষয়ে কোনো তৎপরতা নেই।
এ ব্যাপারে ইউজিসির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক শাহ মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম বলেছেন, আমরা নতুন করে তদন্ত কমিটি করিনি। কিন্তু প্রকল্প সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন নথি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে চেয়েছি। কিছু পেয়েছি। বাকিগুলোর জন্য শিগগির তাগাদা দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত হলে ফাটল দেখা দিয়েছে। আমরা হল পরিদর্শনে যাব। তখন উন্নয়ন প্রকল্পের সামগ্রিক বিষয় এবং অনিয়মের অভিযোগ খতিয়ে দেখব।

ভাঁজে কি, তা বিষয় নয়। মলাটে বঙ্গবন্ধু কিংবা শেখ পরিবারের কারও নাম মানেই গুরুত্বপূর্ণ। লুফে নিয়েছে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের শেষ তিন অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মন্ত্রী-আমলাদের লেখা দ্বিগুণ দামে মানহীন, এমনকি ভারতীয় প্রকাশনীর বই কেনার অভিযোগ উঠেছে।
৮ ঘণ্টা আগে
মিঠা পানিটুকু মাটির নিচে আবদ্ধ (ট্র্যাপড) অবস্থায় রয়েছে। লোনা পানির সঙ্গে এর সরাসরি সংযোগ নেই। ফলে পানি উত্তোলনে তাৎক্ষণিক লোনা পানি ঢুকে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার শঙ্কা কম
২ দিন আগে
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রশিবির কার্যত ভূমিধস জয় পেয়েছে। এর পেছনে সংগঠনটির প্রার্থী নির্ধারণের ‘বৈচিত্র’ সামনে এসেছে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীও একই ‘কৌশল’ নিচ্ছে বলে জানা গেছে। দলটির নেতারা একে ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলোর সমন্বয়ে ‘দেশ গড়ার’ কৌশল বলছেন।
৪ দিন আগে
এক হতে যাচ্ছে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ। বিভক্ত দুই অংশ বিরোধ মিটিয়ে দ্রুতই মিলে যেতে পারে বলে স্ট্রিমকে জানিয়েছেন দলটির শীর্ষ নেতারা।
১৩ দিন আগে