leadT1ad

গত বছরের ৫ জুলাই যা যা ঘটেছিল

স্ট্রিম ডেস্ক
প্রকাশ : ০৫ জুলাই ২০২৫, ১০: ৩৫
সংগৃহীত ছবি

আজ ৫ জুলাই। গত বছর এ সময় কোটা সংস্কার আন্দোলন ধীরে ধীরে তীব্র হচ্ছিল। ৪ জুলাই কোটা নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের শুনানি হয়। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বেঞ্চ সেদিন এই শুনানি মুলতবি রাখেন। ফলে ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে ছাত্র-জনতা। সেদিন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা ধরে শাহবাগ অবরোধ করে। সমাবেশ শেষে ঘোষণা আসে, ৫ জুলাই সারা দেশে অনলাইন-অফলাইন প্রচারণা চালানো হবে।

এদিনও প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা
এদিন চট্টগ্রাম নগরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অবরোধ করেন খুলনা জিরো পয়েন্ট। অন্যদিকে গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গোপালগঞ্জ-টুঙ্গিপাড়া সড়ক অবরোধ করেন।

এছাড়া এদিন অনলাইনে শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ বিভাগ ও ব্যাচের পক্ষ থেকে কোটা সংস্কারের পক্ষে বিবৃতি দেয়।

আন্দোলনকারীদের দাবি

দেশব্যাপী এ আন্দোলনে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের দাবিগুলো ছিল ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহাল করা; এই পরিপত্র বহাল রেখে একটি কমিশন গঠন করা, যেখানে সরকারি চাকরির সব গ্রেডে দ্রুত সময়ের মধ্যে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া হবে (সুবিধাবঞ্চিত ও প্রতিবন্ধী ব্যতীত); কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করতে না পারা এবং কোটা থেকে প্রার্থী না পাওয়া গেলে মেধাভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া।

সারজিস আলমকে হলছাড়া করার চেষ্টা
৫ জুলাই প্রথম প্রহরে, অর্থাৎ ৪ জুলাই দিবাগত রাতে একটি খবর ছড়িয়ে পড়ে যে সারজিস আলমকে ছাত্রলীগ অমর একুশে হল থেকে বের করে দিচ্ছে। এই খবর চাউর হতেই বিভিন্ন হল থেকে দলে দলে শিক্ষার্থীরা এসে অমর একুশে হলের সামনে জড়ো হন। তাঁদের দাবি, সারজিস আলমকে হল থেকে বের করা যাবে না। শিক্ষার্থীদের অবস্থানের কারণে এ রাতে হল ছাড়তে হয়নি সারজিসকে।

সারজিস আলম এখন জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক। সে ঘটনার স্মৃতিচারণ করে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক প্রোফাইলে একটি পোস্ট দিয়েছেন তিনি। সেখানে লিখছেন, ‘এই দিনটা আমার সারা জীবন মনে থাকবে। এই রাত আমার সাহস শতগুণে বাড়িয়ে দিয়েছিল। সেদিন প্রথম আমার মনে হয়েছিল–আমাকে কেউ আঘাত করলে, আমার অন্তত কয়েক হাজার ভাই আছে যারা তাকে পাল্টা আঘাত করবে।’

সেদিন রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবার ছাত্রলীগের পরাজয় ঘটে উল্লেখ করে তিনি লেখেন, ‘আমার হলে আটজন ছাত্রলীগের ক্যান্ডিডেট ছিল। তাঁদের চাওয়া মতো হল চলত। বাকি হাজারখানেক সাধারণ স্টুডেন্ট চলত। সেই সাধারণ স্টুডেন্টরা যখন প্রতিবাদ করে অভেদ্য দুর্গের মত ঘুরে দাঁড়ালো, তখন কীভাবে ছাত্রলীগের হল ক্যান্ডিডেটরা হল ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিল সেটা ইতিহাস হয়ে থাকবে। সেদিনই প্রথমবারের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের সাম্রাজ্যের পরাজয় ঘটেছিল।’

সমর্থন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দলের

৫ জুলাই বিকেলে গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি পাঠায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। বিবৃতিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানায় সংগঠনটি।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালে জারিকৃত সরকারি পরিপত্রের অংশবিশেষ অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ে আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। একই সঙ্গে কোটাব্যবস্থা পুনর্বহালের প্রতিবাদে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের চলমান আন্দোলনের প্রতি আমরা সমর্থন জানাচ্ছি।’

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা উদ্বেগের সঙ্গে আরও লক্ষ করছি যে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকার সমর্থক ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা নানাভাবে নির্যাতন ও হুমকি দিয়ে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং শিক্ষার্থীদের নির্যাতন এবং হুমকি প্রদানকারী সন্ত্রাসীদের শাস্তি দাবি করছি।’


Ad 300x250

সম্পর্কিত