leadT1ad

বৃষ্টিতে কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধি: বেড়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন

কয়েক দিনের টানা ভারী বর্ষণে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে পানি বেড়েছে। এতে প্রায় চার গুণ বাড়ানো হয়েছে হ্রদে স্থাপিত কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন। গত সপ্তাহেও কেন্দ্রের একটি ইউনিট থেকে মাত্র ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। এখন তা বেড়ে হয়েছে ১৫০ মেগাওয়াটের বেশি।

প্রকাশ : ০৩ জুন ২০২৫, ১৮: ১৮
আপডেট : ০৩ জুন ২০২৫, ১৮: ৫৫
কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্র (ফাইল ছবি)

কয়েক দিনের টানা ভারী বর্ষণে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে পানি বেড়েছে। এতে প্রায় চার গুণ বাড়ানো হয়েছে হ্রদে স্থাপিত কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন। গত সপ্তাহেও কেন্দ্রের একটি ইউনিট থেকে মাত্র ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। এখন তা বেড়ে হয়েছে ১৫০ মেগাওয়াটের বেশি।

সোমবার (২ জুন) সকাল থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৪টি ইউনিট দিয়ে ১৫০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। এ জন্য কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটের মধ্যে বর্তমানে সচল রয়েছে চারটিই। মঙ্গলবারও একই অবস্থা দেখে গেছে।

সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে সারা দেশে বৃষ্টিপাত হয়। এর মধ্যে দেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে ভারী বর্ষণ শুরু হয় বৃহস্পতিবার (২৯ মে) থেকে। এতে কাপ্তাই হ্রদেও পানি বৃদ্ধি পায়, যার সরাসরি প্রভাব পড়ে কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদনের ওপর।

কাপ্তাই পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্র
কাপ্তাই পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্র

কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের (কন্ট্রোল রুম) তথ্য অনুযায়ী, কাপ্তাই হ্রদে পানি আছে ৮৬ ফুটের বেশি মিনস-সি-লেভেল (এমএসএল)। তবে বিদ্যুৎকেন্দ্রের রুলকার্ভ অনুযায়ী (সময়সূচি-ভিত্তিক পানি ওঠানামার মাপ) পানি থাকার কথা ৭৬ দশমিক ২৬ ফুট এমএসএল। কাপ্তাই হ্রদে মোট পানির ধারণ ক্ষমতা ১০৯ এমএসএল। মঙ্গলবার পাহাড়ে বৃষ্টি হয়নি। তবে স্বল্প সময়ের মধ্যে আবার বর্ষণ হলে বিদ্যুৎ উৎপাদন আরও বাড়ানো হতে পারে জানিয়েছে নিয়ন্ত্রণকক্ষ।

বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপকের কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে উৎপাদনে থাকা চারটি ইউনিটের মধ্যে ১, ২ ও ৪ নম্বর ইউনিট থেকে ৪০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। এ ছাড়া ৫ নম্বর ইউনিট থেকে উৎপাদন হচ্ছে প্রায় ৩৫ মেগাওয়াট। এতে কেন্দ্রের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ১৫০ মেগাওয়াটের বেশি। তবে ৩ নম্বর ইউনিট থেকে এখনো উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।

কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক (তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী) মাহমুদ হাসান। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কাপ্তাই হ্রদে পানিস্বল্পতার কারণে এত দিন বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৫টি ইউনিটের মধ্যে শুধু একটি সচল ছিল। কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির কারণে শনিবার দুটি ইউনিট, রবিবার আরও একটিসহ মোট চারটি ইউনিট সচল করা হয়েছে। হ্রদে পানি বাড়লে পাঁচটি ইউনিটই সচল করা যেতে পারে, তাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন আরও বাড়বে।’

কর্ণফুলী বিদ্যুৎকেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, গত শতকের ষাটের দশকের তৎকালীন পার্বত্য চট্টগ্রামের (বর্তমানের রাঙামাটি জেলার) কাপ্তাই উপজেলায় খরস্রোতা কর্ণফুলী নদীতে বাঁধ দিয়ে নির্মাণ করা হয় দেশের একমাত্র পানি বিদ্যুৎকেন্দ্র। শুরুতে এখানে ৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যেত। পরে এর সক্ষমতা বাড়ানো হয়। বর্তমানে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ২৪২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম। জ্বালানি খরচের দিক দিয়ে কয়লা ও গ্যাসভিত্তিকের চেয়ে পানিবিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ কম।

বিষয়:

Ad 300x250

সম্পর্কিত