leadT1ad

বিএনপির সংবাদ সম্মেলন

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র’, তদন্ত কমিটি গঠনের ঘোষণা বিএনপির

শুধু মিটফোর্ড নয়, কুমিল্লার মুরাদনগরে ধারাবাহিক তিনটি হত্যাকাণ্ড, কুমিল্লায় এক মসজিদের ইমামকে হত্যা, খুলনায় যুবদল নেতা মাহবুব মোল্লাকে হত্যা ও রগকাটার মতো নৃশংসতার ঘটনার প্রতিও সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।

স্ট্রিম প্রতিবেদকঢাকা
প্রকাশ : ১৪ জুলাই ২০২৫, ১৩: ৪৪
আপডেট : ১৪ জুলাই ২০২৫, ১৪: ০৩
রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ১৪ জুলাই। স্ট্রিম ছবি

রাজধানীর মিটফোর্ডে ঘটে যাওয়া নৃশংস হত্যাকাণ্ড 'রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র' বলে মনে করছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ ঘটনা শুধু একটি বিচ্ছিন্ন অপরাধ নয় বরং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক পরিবেশকে অস্থিতিশীল করার সুপরিকল্পিত চক্রান্তের অংশ। প্রকৃত সত্য উদঘাটনের জন্য ‘তদন্ত ও তথ্যানুসন্ধানী কমিটি’ গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।

সোমবার (১৪ জুলাই) সকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির পক্ষ থেকে এ সব কথা বলা হয়। সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ড রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে কি না, এবং নির্বাচনী পরিবেশকে ব্যাহত করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে একটি মহল ইচ্ছাকৃতভাবে এ ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ করার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রকাশ্য দিবালোকে, অসংখ্য মানুষের সামনে এবং আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার নিকটবর্তী এলাকায় এমন ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়া এবং তা প্রতিরোধে ব্যর্থতা— সবকিছুই জনমনে প্রশ্ন সৃষ্টি করেছে। এটি কোনো নিছক অপরাধ নাকি পরিকল্পিত রাজনৈতিক নাটকের অংশ, সেটি তদন্তেই পরিষ্কার হবে।’

বিএনপি মহাসচিব জানান, কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রত্যক্ষদর্শী, স্থানীয় বাসিন্দা ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলবেন এবং পাওয়া তথ্য জনসম্মুখে প্রকাশ করবেন।

অন্যান্য সহিংস ঘটনার উদাহরণ টেনে প্রশ্ন

সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শুধু মিটফোর্ড নয়, কুমিল্লার মুরাদনগরে ধারাবাহিক তিনটি হত্যাকাণ্ড, কুমিল্লায় এক মসজিদের ইমামকে হত্যা, খুলনায় যুবদল নেতা মাহবুব মোল্লাকে হত্যা ও রগকাটার মতো নৃশংসতার ঘটনার প্রতিও সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এসব ঘটনায় সমানভাবে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর ছিল কি না, এ প্রশ্ন উঠতেই পারে।’

তিনি দাবি করেন, ‘একটি মহল পরিকল্পিতভাবে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে এবং সেই লক্ষ্যে এ ধরনের নৃশংস হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক অস্ত্রে পরিণত করছে।’

সরকারে না থেকেও একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের মিছিল ও তাতে অশ্লীল স্লোগানের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটা কি আবার ফ্যাসিবাদের যুগে ফিরে যাওয়ার ইঙ্গিত? এ প্রশ্ন উঠতে বাধ্য।’ তিনি 'সুপরিকল্পিতভাবে' বিএনপি ও দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে কুরুচিপূর্ণ ভাষায় আক্রমণেরও তীব্র নিন্দা জানান।

অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে রাজনৈতিক নেতাদের চরিত্রহননের অপপ্রয়াস গণতন্ত্রের পথকে রুদ্ধ করে। আমরা কোনো অপরাধীর জন্য অনুকম্পার পক্ষে নই।’

সংঘাত সৃষ্টির যেকোনো ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী জাতীয় ঐক্য যেন কোনোভাবে ভাঙন না ধরে, সে বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।’

তদন্ত প্রতিবেদন জনসমক্ষে প্রকাশের প্রতিশ্রুতি

তথ্যানুসন্ধানী কমিটি গঠনের মাধ্যমে বিএনপি মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত রহস্য উন্মোচন করে জনসমক্ষে প্রকাশ করবে বলেও আশ্বস্ত করেন দলটির মহাসচিব।

তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, দেশের মানুষ জানুক-এই ঘটনা কেন ঘটলো, কারা দায়ী, এবং এর পেছনে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য লুকিয়ে আছে কি না।

Ad 300x250

সম্পর্কিত