leadT1ad

বাউল নির্যাতনে চুপ কেন, চার জবাব উপদেষ্টা ফারুকীর

স্ট্রিম ডেস্ক
স্ট্রিম ডেস্ক

প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ১৮: ৫৩
সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। সংগৃহীত ছবি

মানিকগঞ্জের ঘিওরে বাউল আবুল সরকারকে গ্রেপ্তার ও এ ঘটনায় তাঁর ভক্তদের ওপর হামলা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। ‘মব’ রুখতে কেউ কেউ সরকারের দুর্বলতাকে দায়ী করছেন। আবার অনেকে সরাসরি সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর সমালোচনা করেছেন।

এমন পরিস্থিতিতে আজ সোমবার (২৪ নভেম্বর) ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজের পোস্টে নিজের অবস্থান তুলে ধরেছেন ফারুকী। তিনি স্বীকার করেছেন, সরকারে যোগ দেওয়ার পর গত চারটা দিন ছিল আমার জন্য সবচেয়ে অস্বস্তির। অনেকেই আমাকে বলেছেন, আমি চুপ করে আছি কেন? আমি বলেছি, আমাদের কাজ তো কাজটা করা। সরকারে বসে বিবৃতি দেওয়া না। এরপরই ফারুকী চারটি প্রসঙ্গ তুলে সমালোচনার জবাব দেন।

সরকারের পদক্ষেপ

ফারুকী লিখেছেন, বাউলশিল্পী গ্রেপ্তারের খবর পাওয়া মাত্রই তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁকে পাঠানো হয় একটি ভিডিও ক্লিপ এবং ঘটনাটির সংবেদনশীলতা ও ঝুঁকি সম্পর্কে জানানো হয়। তিনি বলেন, ফৌজদারি অপরাধে পদক্ষেপ নেওয়ার পূর্ণ এখতিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের নয়। তবে ঘটনা নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন উল্লেখ করে নাগরিক হিসেবে ফারুকী সবাইকে ধৈর্য ও সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানান।

সমালোচনার লক্ষ্য কেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়

ফারুকী লিখেছেন, কিছু মানুষ ইচ্ছাকৃত তাঁকে লক্ষ্য করে সমালোচনা করছেন। তাঁর অভিযোগ, ইতিহাস অনুসন্ধান ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতিকে সামনে আনার কাজ সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় শুরুর পর থেকেই কিছু মহলে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে।

ফারুকী লিখেছেন, শহীদদের জন্য কাজ করার জন্য যদি কেউ অস্বস্তি পান, দুঃখিত– এটি আমাকে করতেই হবে। ইতিহাস আঁড়াল করে রাখার প্রবণতা ঠেকাতে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় গবেষণা করছে বলেও পোস্টে উল্লেখ করেন তিনি।

নতুন বাংলাদেশ বহুত্ববাদের

ফারুকী লিখেছেন, ফকির-বাউলদের ওপর হামলার ইতিহাস বহু পুরোনো। এসব ঘটনার অধিকাংশ পূর্ববর্তী সরকারগুলোর আমলে ঘটেছে। তিনি লেখেন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সর্বোচ্চ সহযোগিতার মানসিকতা থেকেই লালনকে জাতীয়ভাবে উদ্যাপন, সারাদেশে সাধুসঙ্গ আয়োজন, ঈদ, দুর্গাপূজা, বৌদ্ধ পূর্ণিমা, নববর্ষসহ সব জনগোষ্ঠীর উৎসব উদ্যাপনে পদক্ষেপ নিয়েছে। এটিকে ফারুকী ‘নতুন বাংলাদেশের বহুত্ববাদী অবস্থান’ অভিহিত করেন।

ড্রোন শো নিয়ে সমালোচনা ‘তামাশা’

ড্রোন শো নিয়ে সমালোচনাকে ‘তামাশাময়’ উল্লেখ করে ফারুকী লিখেছেন, এটি নতুন কিছু নয়, বিশ্বে বড় বড় অনুষ্ঠান, উৎসব, উদ্বোধনী আয়োজনে ড্রোন শো এখন স্বাভাবিক বিষয়। উদাহরণ দিয়েছেন, গ্র্যান্ড ইজিপশিয়ান মিউজিয়াম উদ্বোধন, ফিফা বিশ্বকাপ প্রচারণা, নতুন বছর ও বিভিন্ন জাতীয় দিবসে নানা দেশে ড্রোন শো হয়।

ড্রোন শোকে ‘অজানা ভয়’ বর্ণনা করে ফারুকী জানান, মিডিয়া প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল এবং বাংলাদেশও এই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগোচ্ছে।

সংস্কৃতি উপদেষ্টার এই ব্যাখ্যাও সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তবে ফারুকী জানিয়েছেন, বহুত্ববাদ, সংস্কৃতি ও ইতিহাস রক্ষার কাজ তিনি অব্যাহত রাখবেন।

Ad 300x250
সর্বাধিক পঠিত

সম্পর্কিত