leadT1ad

আশুলিয়ায় হত্যার পর লাশ পুড়ানোর মামলা

হাসিনা পালিয়েছে বলার পরও গুলি চালায় পুলিশ

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

প্রকাশ : ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ২১: ৪৪
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলছে। ছবি: সংগৃহীত

শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে বলার পরও গত বছরের ৫ আগস্ট সাভারের আশুলিয়ায় মানুষের ওপর পুলিশ গুলি চালায়। আজ বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ জবানবন্দিতে এ তথ্য দেন ওইদিন পুলিশের গুলিতে আহত সানি মৃধা ওরফে সোহান মৃধা।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান চলাকালে আশুলিয়ায় ছয়জনের লাশ পোড়ানোসহ সাতজন হত্যা মামলায় ২১তম সাক্ষী ছিলেন সোহান। বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ সাক্ষ্য দেন তিনি। ট্রাইব্যুনাল পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ৫ নভেম্বর দিন দিয়েছেন।

জবানবন্দিতে সোহান বলেন, ‘৫ আগস্ট দুপুরে আমি বাইপাইল এলাকায় আন্দোলনে অবস্থান করছিলাম। দুপুর আড়াইটার দিকে জানতে পারি, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন। তখন আমরা সবাই বিজয় মিছিল শুরু করি। এ সময় আশুলিয়া থানার দিক থেকে অনেক গোলাগুলির শব্দ আসছিল। আমরা ছাত্র-জনতা মিলে আশুলিয়া থানার দিকে রওনা হই।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেখতে পাই, পুলিশ আশুলিয়া থানার কাছে একটি গলির মধ্যে অবস্থান নিয়েছে। আমরা তাদের উদ্দেশে বলতে থাকি, হাসিনা পালিয়ে গেছে, আপনারা কেন এখনো গুলি করছেন? এরপরই পুলিশ আমাদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি শুরু করে।’

গুলিবিদ্ধ হওয়ার মুহূর্তের কথা বর্ণনা করে সানি বলেন, ওই কথা বলার পরপরই আমার ডান ঊরুতে চাইনিজ রাইফেলের গুলি লাগে। গুলিটি বাম পা ভেদ করে যায়। এ ছাড়া হাত ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছররা গুলি লাগে।

জবানবন্দি দেওয়ার এক পর্যায়ে ট্রাইব্যুনালে শরীরে গুলির ক্ষত দেখান তিনি।

৫ আগস্ট লাশ পোড়ানো নিয়ে সোহান জানান, ওই দিন যাদের লাশ পোড়ানো হয় তাদের মধ্যে সজল নামে একজন ছিলেন তার পূর্বপরিচিত ও সহযোদ্ধা। আশুলিয়া থানার সামনে একটি পুলিশ ভ্যানে তুলে অন্যদের সঙ্গে সজলকে পুড়িয়ে দেওয়া হয়, যা তিনি পরে ফেসবুকে একটি ভিডিওতে দেখেন।

এ ঘটনায় সাবেক সরকারপ্রধান ও পুলিশকে দায়ী করে সোহান বলেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের হুকুমে স্থানীয় সংসদ সদস্য সাইফুলসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অস্ত্র হাতে স্থানীয় (আশুলিয়া থানা) পুলিশের সঙ্গে থেকে আমাদের ওপর আক্রমণ করে। আমি রনি ভূঁইয়া নামে একজনের হাতে অস্ত্রও দেখেছিলাম।

সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তাঁকে রাষ্ট্রনিযুক্ত আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জেরা করেন।

এজাহার অনুযায়ী, গত বছরের ৫ আগস্ট সাভারের আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে ৫ তরুণ নিহত ও একজন আহত হন। লাশের সঙ্গে ওই তরুণকেও একটি পুলিশ ভ্যানে তুলে আগুন দেওয়া হয়।

নৃশংস ওই ঘটনায় গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা হয়। চলতি বছরের ২ জুলাই অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। এরপর ১৬ আসামির বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয় ২১ আগস্ট।

মামলায় আসামিদের মধ্যে সাবেক এমপি সাইফুল ইসলামসহ আটজন এখনও পলাতক রয়েছেন। আর কারাগারে আছেন– ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আব্দুল্লাহিল কাফী, ঢাকা জেলা পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) শাহিদুল ইসলাম, পরিদর্শক আরাফাত হোসেন, এসআই মালেক, এসআই আরাফাত উদ্দিন, এএসআই কামরুল হাসান, আবজাল ও কনস্টেবল মুকুল।

Ad 300x250
সর্বাধিক পঠিত

সম্পর্কিত