বাঙালির প্রাণের উৎসব ও গৌরবের বিজয়ের মাস ডিসেম্বরকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে শুরু হতে যাচ্ছে মাসব্যাপী জমজমাট যাত্রাপালা উৎসব। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই উৎসব গ্রামীণ লোকসংস্কৃতির এক অনন্য মিলনমেলায় পরিণত হবে।
আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে এই উৎসব চলবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। পুরো মাসজুড়ে প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টায় পরিবেশিত হবে যাত্রাপালা। তবে উৎসবের আমেজ শুরু হবে তারও আগে। প্রতিদিন বিকেল ৫টায় উন্মুক্ত প্রান্তরে অনুষ্ঠিত হবে দেশাত্মবোধক যাত্রাগানের বিশেষ কনসার্ট, যা দর্শকদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত করবে।
বাংলার ঐতিহ্যবাহী এই যাত্রাশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা এবং তৃণমূলের শিল্পীদের উৎসাহিত করাই এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য। দর্শকদের জন্য নামমাত্র ১০০ টাকা মূল্যে টিকেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আয়োজকরা জানিয়েছেন, টিকেট বিক্রি থেকে প্রাপ্ত সম্পূর্ণ অর্থ সংশ্লিষ্ট যাত্রাদলকে প্রদান করা হবে। এতে করে সারাদেশ থেকে আগত যাত্রাশিল্পীরা অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হবেন। নিজেদের শিল্পচর্চায় আরও অনুপ্রাণিত হবেন।
অংশগ্রহণকারী দল
৩১ দিনের এই মহাযজ্ঞে সারা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ৩১টি নির্বাচিত যাত্রাদল তাদের অভিনয়শৈলী প্রদর্শন করবে। অংশগ্রহণকারী দলগুলো হলো: সূর্যতরুণ নাট্য সংস্থা, নিউ জহুরা অপেরা, বাংলার নায়ক অপেরা, দেবহাটা নাট্য সংস্থা, রনি নাট্য সংস্থা, নিহা যাত্রা ইউনিট, নিউ সুমি অপেরা, প্রত্যয় বাংলাদেশ যাত্রাদল, নিউ স্টার অপেরা, বনফুল অপেরা, বিপ্লব নাট্য সংস্থা, রাধাকৃষ্ণ নাট্য সংস্থা, নিউ বঙ্গশ্রী নাট্য সংস্থা, রৌমারী নাট্য সংস্থা, উর্মি অপেরা, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি রেপার্টরি যাত্রা ইউনিট, রূপসা অপেরা, মুক্তাঙ্গন অপেরা, বঙ্গশ্রী অপেরা, পূরবী যাত্রা ইউনিট, বেলাবো নাট্য সংস্থা, দি রাজবাড়ী যাত্রা ইউনিট, কাজল অপেরা, দি নিউ ছোবহান অপেরা, বৈশাখী অপেরা, নিউ ঈশা খাঁ অপেরা, উত্তরবঙ্গ অপেরা, বীণাপাণি যাত্রাপার্টি, ভৈরব অপেরা, গীতাঞ্জলি অপেরা এবং তিষা অপেরা।
আয়োজকদের প্রত্যাশা
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের পরিচালক দীপক কুমার গোস্বামী মনে করছেন, আধুনিক বিনোদনের ভিড়ে হারিয়ে যেতে বসা যাত্রাশিল্পকে পুনরুদ্ধারে এই আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিজয়ের মাসে এই উৎসবে সাধারণ দর্শকদের উপস্থিতি যাত্রাশিল্পীদের উৎসাহিত করার পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলার হাজার বছরের ঐতিহ্যকে তুলে ধরবে।
মাসজুড়ে এই উৎসবে সপরিবারে উপস্থিত থাকার জন্য সংস্কৃতিপ্রেমীদের আহ্বান জানানো হয়েছে।