গত শনিবার (১৯ জুলাই) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এ সমাবেশ আয়োজন করা হয় সাত দফা দাবিতে। দেড় দশকের বেশি সময় ধরে স্বাভাবিক রাজনৈতিক কার্যক্রমে বাধা পেয়ে আসা দলটি সোহরাওয়ার্দীর সমাবেশে সারা দেশের বিপুল নেতাকর্মীর ঢল নামায়।
স্ট্রিম প্রতিবেদক
গত শনিবার (১৯ জুলাই) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এ সমাবেশ আয়োজন করা হয় সাত দফা দাবিতে। দেড় দশকের বেশি সময় ধরে স্বাভাবিক রাজনৈতিক কার্যক্রমে বাধা পেয়ে আসা দলটি সোহরাওয়ার্দীর সমাবেশে সারা দেশের বিপুল নেতাকর্মীর ঢল নামায়। সমাবেশের আগে দলটির গুরুত্বপূর্ণ নেতারা বলেছিলেন, এটি হবে জামায়াতের রাজনীতির টার্নিং পয়েন্ট।
পর্যবেক্ষকেরা মনে করেছিলেন, সমাবেশে জামায়াত শুধু বিপুল জনবল প্রদর্শন করবে। বিগত সরকারের আমলে নিজেদের প্রথম সারির নেতাদের ফাঁসি ও রাজনৈতিক কার্যক্রমে বাধা যে তাদের সাংগঠনিক শক্তিকে দুর্বল করতে পারেনি, তা প্রমাণ করবে দলটি। পাশাপাশি ইসলামপন্থী দল ও সাত দফার সঙ্গে একমত অন্য সংগঠনকে দিয়ে নতুন মেরুকরণ ঘটিয়ে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে (পিআর) জাতীয় নির্বাচন এবং প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার দাবি আরও জোরালো করবে।
কিন্তু সমাবেশে এই দুটি দাবির চেয়ে বেশি উচ্চারিত হয়েছে ইসলামপন্থী দলগুলোকে নিয়ে ঐক্যের আহ্বান আর আকারে-ইঙ্গিতে বিএনপির নিন্দা। একটি বাক্সে ভোট পড়লে জয় নিশ্চিত, এমন কথাও দৃঢ়তার সঙ্গে উচ্চারণ করেছেন জামায়াত নেতারা।
ধারণা করা হয়েছিল, জামায়াত আমিরের বক্তৃতায় পিআর পদ্ধতি বেশ গুরুত্ব পাবে। এমনও পর্যবেক্ষণ ছিল যে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন না হলে জামায়াত নির্বাচনে অংশ নেবে না, সমাবেশে এমন ঘোষণা দেবেন দলটির আমির। জামায়াতের রাজনীতির খোঁজ রাখেন এমন ব্যক্তিদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে নানা বিশ্লেষণ দেখা গেছে। কিন্তু জামায়াত আমিরের বক্তব্যে পিআর পদ্ধতির কোনো উল্লেখ ছিল না। এমনকি সাত দফারই আলোচনা ছিল না। এক অর্থে তিনি সরাসরি ভোট চেয়েছেন। যদিও বক্তৃতার মধ্যে তাঁর দু দফা ঢলে পড়ার কারণে নিজের পরিকল্পিত বক্তব্যটি তিনি দিতে পেরেছেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
তবে এ সন্দেহ অনেকটা কেটে যায় ১৯ জুলাই দিবাগত রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো জামায়াতে ইসলামীর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানের কয়েকটি বিষয়ে বক্তৃতা দেওয়ার কথা ছিল। বিষয়গুলো উল্লেখ করে তাঁর বক্তৃতাটিও কিছুটা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তুলে ধরা হয়। সেখানে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচনের কোনো কথা নেই। সমাবেশ আয়োজনের আগে সংবাদ সম্মেলনে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছিলেন, পিআর পদ্ধতি নিয়ে তাঁদের আমির বিস্তারিত কথা বলবেন। সেই গোলাম পরওয়ার নিজেও ‘নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ইসলামী ও দেশপ্রেমিক শক্তিকে আমরা ঐক্যবদ্ধ করব’, এ কথা বলেছেন। পিআর পদ্ধতির কথা বলেননি।
তবে পিআর পদ্ধতি নিয়ে জামায়াতের দুই একজন নেতা দু-একটি কথা বলেছেন। দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘নির্বাচনকে কালো টাকা, ফ্যাসিবাদ, মনোনয়ন-বাণিজ্যমুক্ত করতে এবং ভোটাধিকারের নিশ্চয়তা দিতে পিআর পদ্ধতির বিকল্প নেই।’
নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেছেন, ‘প্রত্যেকেই বলেন, সংস্কার মানি। কিন্তু বৈঠকে বসলে কেউ কেউ “মানি না” ভাব দেখাচ্ছেন। সমস্যাটা কোথায়? সংস্কার তো সবার জন্য কল্যাণের। তাহলে যাঁরা চান না, তাঁদের মতলব আছে! পিআর পদ্ধতিতে কেন্দ্র দখল হবে না, তাহলে মতলব পূরণ হবে না। পিআর পদ্ধতিতে টাকা দিয়ে ভোট কেনার কোনো সুযোগ নেই, সে জন্য মতলব পূরণ হবে না।’
সমাবেশে জামায়াত কেন জোর দিয়ে তাদের একসময়ের রাজনৈতিক মিত্র বিএনপির তীব্র সমালোচকের ভূমিকা নিয়েছে, দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের বক্তৃতায় তা স্পষ্ট। তিনি বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি গন কেস, তাদের এদেশে ঢোকার আর কোনো সম্ভাবনা নেই। তারা একেবারে অপ্রাসঙ্গিক।’
সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের বক্তব্যের পরের অংশ বিএনপির উদ্দেশে। তিনি বলেন, ‘এই লড়াই-সংগ্রামের মূল লক্ষ্য হচ্ছে নতুন বাংলাদেশ। গত চুয়ান্ন বছরে বাংলাদেশের যে পরিচালনা নেতৃত্ব ছিল, পাঁচ আগস্ট ছিল সেই নেতৃত্বের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত প্রত্যাখ্যানের বিপ্লব। আমরা নতুন বাংলাদেশ চাই। যারা পুরোনো কায়দার শাসনকে এই দেশে আবার ফিরিয়ে আনতে চায়, জনগণ তাদের সেই সুযোগ দেবে না। অনেকে বলছেন, সংস্কার হচ্ছে, এটার আইনগত ভিত্তি কীভাবে দেব। আগামী পার্লামেন্টে দেওয়া হবে। এই কথার মানে আপনারা মনে করছেন, আগামী পার্লামেন্টে আপনারা জিতবেন? নাকি দখল করবেন? সুতরাং এই সমস্ত কথা সমাজকে বিভ্রান্ত করবে।’
এই সময় তিনি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, ‘সোহরাওয়ার্দীর (উদ্যান) দুইটা মহাসমাবেশ দেখে কি বার্তা পাওয়া যাচ্ছে না, কারা জিতবে?’
বলা দরকার, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত দুই সমাবেশের একটি হলো জামায়াতে ইসলামীর সেদিনের সমাবেশই। আর গত ২৮ জুন এখানে মহাসমাবেশ করেছিল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। এতে জামায়াতের নেতারাও বক্তব্য রেখেছিলেন।
জামায়াতের নায়েবে আমিরের এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে একদিন পর। রোববার (২০ জুলাই) বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ নেই, বিএনপি থাকবে না, তাহলে কি রাজাকারেরা দেশ চালাবে?’ মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার দামলা এলাকায় বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপুর বাড়িতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেছেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘জামায়াত শুধু বাংলাদেশেই নয়, ভারত ও পাকিস্তানেও রয়েছে। সেই কারণে তারা সাধারণের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তারা কখনো মানুষের ভাষা বোঝে না, তারা শুধু নিজের মতলব হাসিল করতে চায়। কেয়ামত পর্যন্ত জামায়াত বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে পারবে না।’
জামায়াতের সাত দফা নিয়ে তিনি বলেন, ‘জামায়াতের যেসব দফা-টফা, এগুলো সবই হলো নির্বাচনকে ভন্ডুল করার জন্য। এবার আওয়ামী লীগ নেই, সে কারণে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে। এটা জামায়াত সহ্য করতে পারছে না।’
অতীতে নানা সময় ইসলামি দলগুলো বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করেছে। আবার তাদের কোনো কোনো দল আওয়ামী লীগের সঙ্গেও জোট বেঁধেছে। ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর রাজনীতিতে ঘটছে নতুন মেরুকরণ। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের নিবন্ধন সম্প্রতি স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ না থাকায় বিএনপির সঙ্গে আর জোট করার প্রয়োজন মনে করছে না ইসলামি দলগুলো। বরং তারা নিজেরা একসঙ্গে মিলে বিএনপির বিকল্প শক্তি হিসেবে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে।
ধারণা করা হচ্ছে, এই ‘বিকল্প শক্তি’ হয়ে ওঠার মধ্য দিয়ে ক্ষমতার রাজনীতিতে নির্ণায়ক শক্তি হয়ে ওঠার চেষ্টা করছে জামায়াতে ইসলামী।
এর আলামত পাওয়া গেছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশের ২২০ ফিট লম্বা মঞ্চে ইসলামপন্থী নেতাদের উপস্থিতিতে। সমাবেশে বক্তব্য দিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব ইউনুস আহমদ, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আব্দুল কাদের, হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির মহিউদ্দিন রাব্বানি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মুসা বিন এজহার, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমির মাওলানা আবু জাফর প্রমুখ।
বাংলাদেশে কমপক্ষে চার ঘরানার ইসলামপন্থা রয়েছে। সব ঘরানার সঙ্গে কমবেশি জামায়াতের আদর্শিক বিরোধ রয়েছে। অতীতে এসব বিরোধ মিটিয়ে দীর্ঘ ঐক্য তৈরি করতে পারেনি জামায়াতে ইসলামী। চব্বিশের ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতিতে আগে অনুমান করা যায়নি এমন অনেক পরিবর্তনই দেখা যাচ্ছে। তাই জামায়াত যদি ইসলামপন্থীদের নিয়ে একজোট হতে পারে তাহলে তা হবে দলটির আট দশকের যাত্রায় অন্যতম মোড়।
গত শনিবার (১৯ জুলাই) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এ সমাবেশ আয়োজন করা হয় সাত দফা দাবিতে। দেড় দশকের বেশি সময় ধরে স্বাভাবিক রাজনৈতিক কার্যক্রমে বাধা পেয়ে আসা দলটি সোহরাওয়ার্দীর সমাবেশে সারা দেশের বিপুল নেতাকর্মীর ঢল নামায়। সমাবেশের আগে দলটির গুরুত্বপূর্ণ নেতারা বলেছিলেন, এটি হবে জামায়াতের রাজনীতির টার্নিং পয়েন্ট।
পর্যবেক্ষকেরা মনে করেছিলেন, সমাবেশে জামায়াত শুধু বিপুল জনবল প্রদর্শন করবে। বিগত সরকারের আমলে নিজেদের প্রথম সারির নেতাদের ফাঁসি ও রাজনৈতিক কার্যক্রমে বাধা যে তাদের সাংগঠনিক শক্তিকে দুর্বল করতে পারেনি, তা প্রমাণ করবে দলটি। পাশাপাশি ইসলামপন্থী দল ও সাত দফার সঙ্গে একমত অন্য সংগঠনকে দিয়ে নতুন মেরুকরণ ঘটিয়ে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে (পিআর) জাতীয় নির্বাচন এবং প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার দাবি আরও জোরালো করবে।
কিন্তু সমাবেশে এই দুটি দাবির চেয়ে বেশি উচ্চারিত হয়েছে ইসলামপন্থী দলগুলোকে নিয়ে ঐক্যের আহ্বান আর আকারে-ইঙ্গিতে বিএনপির নিন্দা। একটি বাক্সে ভোট পড়লে জয় নিশ্চিত, এমন কথাও দৃঢ়তার সঙ্গে উচ্চারণ করেছেন জামায়াত নেতারা।
ধারণা করা হয়েছিল, জামায়াত আমিরের বক্তৃতায় পিআর পদ্ধতি বেশ গুরুত্ব পাবে। এমনও পর্যবেক্ষণ ছিল যে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন না হলে জামায়াত নির্বাচনে অংশ নেবে না, সমাবেশে এমন ঘোষণা দেবেন দলটির আমির। জামায়াতের রাজনীতির খোঁজ রাখেন এমন ব্যক্তিদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে নানা বিশ্লেষণ দেখা গেছে। কিন্তু জামায়াত আমিরের বক্তব্যে পিআর পদ্ধতির কোনো উল্লেখ ছিল না। এমনকি সাত দফারই আলোচনা ছিল না। এক অর্থে তিনি সরাসরি ভোট চেয়েছেন। যদিও বক্তৃতার মধ্যে তাঁর দু দফা ঢলে পড়ার কারণে নিজের পরিকল্পিত বক্তব্যটি তিনি দিতে পেরেছেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
তবে এ সন্দেহ অনেকটা কেটে যায় ১৯ জুলাই দিবাগত রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো জামায়াতে ইসলামীর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানের কয়েকটি বিষয়ে বক্তৃতা দেওয়ার কথা ছিল। বিষয়গুলো উল্লেখ করে তাঁর বক্তৃতাটিও কিছুটা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তুলে ধরা হয়। সেখানে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচনের কোনো কথা নেই। সমাবেশ আয়োজনের আগে সংবাদ সম্মেলনে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছিলেন, পিআর পদ্ধতি নিয়ে তাঁদের আমির বিস্তারিত কথা বলবেন। সেই গোলাম পরওয়ার নিজেও ‘নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ইসলামী ও দেশপ্রেমিক শক্তিকে আমরা ঐক্যবদ্ধ করব’, এ কথা বলেছেন। পিআর পদ্ধতির কথা বলেননি।
তবে পিআর পদ্ধতি নিয়ে জামায়াতের দুই একজন নেতা দু-একটি কথা বলেছেন। দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘নির্বাচনকে কালো টাকা, ফ্যাসিবাদ, মনোনয়ন-বাণিজ্যমুক্ত করতে এবং ভোটাধিকারের নিশ্চয়তা দিতে পিআর পদ্ধতির বিকল্প নেই।’
নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেছেন, ‘প্রত্যেকেই বলেন, সংস্কার মানি। কিন্তু বৈঠকে বসলে কেউ কেউ “মানি না” ভাব দেখাচ্ছেন। সমস্যাটা কোথায়? সংস্কার তো সবার জন্য কল্যাণের। তাহলে যাঁরা চান না, তাঁদের মতলব আছে! পিআর পদ্ধতিতে কেন্দ্র দখল হবে না, তাহলে মতলব পূরণ হবে না। পিআর পদ্ধতিতে টাকা দিয়ে ভোট কেনার কোনো সুযোগ নেই, সে জন্য মতলব পূরণ হবে না।’
সমাবেশে জামায়াত কেন জোর দিয়ে তাদের একসময়ের রাজনৈতিক মিত্র বিএনপির তীব্র সমালোচকের ভূমিকা নিয়েছে, দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের বক্তৃতায় তা স্পষ্ট। তিনি বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি গন কেস, তাদের এদেশে ঢোকার আর কোনো সম্ভাবনা নেই। তারা একেবারে অপ্রাসঙ্গিক।’
সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের বক্তব্যের পরের অংশ বিএনপির উদ্দেশে। তিনি বলেন, ‘এই লড়াই-সংগ্রামের মূল লক্ষ্য হচ্ছে নতুন বাংলাদেশ। গত চুয়ান্ন বছরে বাংলাদেশের যে পরিচালনা নেতৃত্ব ছিল, পাঁচ আগস্ট ছিল সেই নেতৃত্বের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত প্রত্যাখ্যানের বিপ্লব। আমরা নতুন বাংলাদেশ চাই। যারা পুরোনো কায়দার শাসনকে এই দেশে আবার ফিরিয়ে আনতে চায়, জনগণ তাদের সেই সুযোগ দেবে না। অনেকে বলছেন, সংস্কার হচ্ছে, এটার আইনগত ভিত্তি কীভাবে দেব। আগামী পার্লামেন্টে দেওয়া হবে। এই কথার মানে আপনারা মনে করছেন, আগামী পার্লামেন্টে আপনারা জিতবেন? নাকি দখল করবেন? সুতরাং এই সমস্ত কথা সমাজকে বিভ্রান্ত করবে।’
এই সময় তিনি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, ‘সোহরাওয়ার্দীর (উদ্যান) দুইটা মহাসমাবেশ দেখে কি বার্তা পাওয়া যাচ্ছে না, কারা জিতবে?’
বলা দরকার, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত দুই সমাবেশের একটি হলো জামায়াতে ইসলামীর সেদিনের সমাবেশই। আর গত ২৮ জুন এখানে মহাসমাবেশ করেছিল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। এতে জামায়াতের নেতারাও বক্তব্য রেখেছিলেন।
জামায়াতের নায়েবে আমিরের এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে একদিন পর। রোববার (২০ জুলাই) বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ নেই, বিএনপি থাকবে না, তাহলে কি রাজাকারেরা দেশ চালাবে?’ মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার দামলা এলাকায় বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপুর বাড়িতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেছেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘জামায়াত শুধু বাংলাদেশেই নয়, ভারত ও পাকিস্তানেও রয়েছে। সেই কারণে তারা সাধারণের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তারা কখনো মানুষের ভাষা বোঝে না, তারা শুধু নিজের মতলব হাসিল করতে চায়। কেয়ামত পর্যন্ত জামায়াত বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে পারবে না।’
জামায়াতের সাত দফা নিয়ে তিনি বলেন, ‘জামায়াতের যেসব দফা-টফা, এগুলো সবই হলো নির্বাচনকে ভন্ডুল করার জন্য। এবার আওয়ামী লীগ নেই, সে কারণে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে। এটা জামায়াত সহ্য করতে পারছে না।’
অতীতে নানা সময় ইসলামি দলগুলো বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করেছে। আবার তাদের কোনো কোনো দল আওয়ামী লীগের সঙ্গেও জোট বেঁধেছে। ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর রাজনীতিতে ঘটছে নতুন মেরুকরণ। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের নিবন্ধন সম্প্রতি স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ না থাকায় বিএনপির সঙ্গে আর জোট করার প্রয়োজন মনে করছে না ইসলামি দলগুলো। বরং তারা নিজেরা একসঙ্গে মিলে বিএনপির বিকল্প শক্তি হিসেবে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে।
ধারণা করা হচ্ছে, এই ‘বিকল্প শক্তি’ হয়ে ওঠার মধ্য দিয়ে ক্ষমতার রাজনীতিতে নির্ণায়ক শক্তি হয়ে ওঠার চেষ্টা করছে জামায়াতে ইসলামী।
এর আলামত পাওয়া গেছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশের ২২০ ফিট লম্বা মঞ্চে ইসলামপন্থী নেতাদের উপস্থিতিতে। সমাবেশে বক্তব্য দিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব ইউনুস আহমদ, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আব্দুল কাদের, হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির মহিউদ্দিন রাব্বানি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মুসা বিন এজহার, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমির মাওলানা আবু জাফর প্রমুখ।
বাংলাদেশে কমপক্ষে চার ঘরানার ইসলামপন্থা রয়েছে। সব ঘরানার সঙ্গে কমবেশি জামায়াতের আদর্শিক বিরোধ রয়েছে। অতীতে এসব বিরোধ মিটিয়ে দীর্ঘ ঐক্য তৈরি করতে পারেনি জামায়াতে ইসলামী। চব্বিশের ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতিতে আগে অনুমান করা যায়নি এমন অনেক পরিবর্তনই দেখা যাচ্ছে। তাই জামায়াত যদি ইসলামপন্থীদের নিয়ে একজোট হতে পারে তাহলে তা হবে দলটির আট দশকের যাত্রায় অন্যতম মোড়।
বিমান দুর্ঘটনার সময় বা আশঙ্কা থাকলে জেট ফুয়েল পরিচালনা বা ব্যবস্থাপনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কীভাবে বিমানে জেট ফুয়েল ভরা হয়, দুর্ঘটনার সময় ফুয়েল কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয় এবং জেট ফুয়েলের আগুন নেভানোর পদ্ধতি নিয়েই এই লেখা।
১৩ ঘণ্টা আগেসাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের বিরুদ্ধে বারবার দেশের বিচার বিভাগ ও গণতন্ত্র ধ্বংসের অভিযোগ ওঠেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলে খায়রুল হক ছিলেন মূল কারিগর।
২ দিন আগেঢাকা শহরে এখন পর্যন্ত ছয়বার লোকালয়ে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ ২১ জুলাই ঢাকার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এই ঘটনা বাদ দিলে আগের ৫টি বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫৮ জন।
৩ দিন আগেরাজধানীর উত্তরায় বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান (ফাইটার জেট) বিধ্বস্ত হয়েছে। আজ (সোমবার) দুপুর ১টা ৩০মিনিটের দিকে উত্তরায় মাইলস্টোন কলেজ এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় ফ্লাইট ল্যাফটেন্যান্ট তৌকিরসহ অনেকের হতাহতের খবর পাওয়া গেছে।
৫ দিন আগে