সম্প্রতি ‘রেজিম চেঞ্জ’ শব্দটি বিশ্বজুড়ে নতুন করে আলোচনায় এসেছে। এমনকি গত রোববার (২২ জুন) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এই শব্দটি ব্যবহার করেছেন। রেজিম চেঞ্জের আদ্যোপান্ত জানা যাক।
তুফায়েল আহমদ
ইরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার এক দিন পর দেশটির ‘রেজিম চেঞ্জের’ (সরকার পরিবর্তন) ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
স্থানীয় সময় রোববার (২২ জুন) সন্ধ্যায় নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ইরানের সরকার পরিবর্তন বিষয়ে একটি পোস্ট দিয়েছেন তিনি।
ট্রাম্প লিখেছেন, ‘রেজিম চেঞ্জ’ শব্দটি ব্যবহার করা রাজনৈতিকভাবে সঠিক নয় বলা হলেও বর্তমান ইরানি সরকার যদি ইরানকে আবার মহান করে তুলতে না পারে (মেক ইরান গ্রেট এগেইন, মিগা) তবে রেজিম চেঞ্জ কেন হবে না?
এমন এক সময়ে এই মন্তব্য এল, যখন ট্রাম্প সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ জোর দিয়ে বলেছিলেন, ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের জড়িয়ে পড়ার লক্ষ্য কোনোভাবেই শাসন পরিবর্তন (রেজিম চেঞ্জ) নয়। রোববার (২২ জুন) সকালে এক বিবৃতিতে হেগসেথ স্পষ্টভাবে জানান, ‘এই অভিযান কখনোই সরকার পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে পরিচালিত হয়নি, এখনো এমন কোনো উদ্দেশ্য নেই।’
একই দিন মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল এবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেন, ‘ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ইতি টানাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা কোনোভাবেই সরকার পরিবর্তন চাই না।’
নিজের পুরোনো বক্তব্য ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্টে বারবার যুদ্ধবিরোধী অবস্থান নেওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরে ইরাক যুদ্ধের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে এসেছেন। একই সঙ্গে তিনি আফগানিস্তানে দীর্ঘমেয়াদি মার্কিন সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধেও অবস্থান নিয়েছেন। মার্কিন অর্থ, মানবসম্পদ ও অস্ত্র খরচ করে বিদেশে সরকার পরিবর্তনের প্রচেষ্টা থেকে সরে এসে বরং চুক্তির মাধ্যমে দেশের স্বার্থ রক্ষাকেই তিনি অগ্রাধিকার দিয়েছেন।
সেই ‘শান্তিপ্রিয়’ ট্রাম্পই ইরানে সামরিক হামলা ও দেশটির সরকার পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেওয়ায় নিজের দল রিপাবলিকান পার্টির মধ্যেই গভীর মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
যুক্তরাষ্ট্রের এমন ‘সরকার পরিবর্তনের’ ইঙ্গিত বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন কিছু নয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই বিভিন্ন দেশে আক্ষরিক অর্থেই সরকার পরিবর্তনে মার্কিন সরকারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভূমিকা দেখা গেছে। সাম্প্রতিক সময়েও বিভিন্ন দেশে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখা গেছে।
রেজিম চেঞ্জ কী
ইংরেজি ‘Regime’ শব্দটি এসেছে ফরাসি ‘régime’ থেকে, যার অর্থ ‘শাসনব্যবস্থা’। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্ব রাজনীতিতে এই শব্দের ব্যবহার ধীরে ধীরে বেড়ে যায়। স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালে যুক্তরাষ্ট্র ও তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন একে অপরের প্রভাববলয়ে থাকা দেশগুলোর সরকার পরিবর্তনের জন্য সরাসরি কিংবা গোপনে হস্তক্ষেপ করতে শুরু করে। সেখান থেকেই বিশ্বরাজনীতিতে ‘রেজিম চেঞ্জ’ বা সরকার পরিবর্তন একটি পরিচিত শব্দযুগলে পরিণত হয়।
রেজিম চেঞ্জ বলতে বোঝায়, একটি সরকারকে জোরপূর্বক অপসারণ করে অন্য একটি রাজনৈতিক শক্তির মাধ্যমে প্রতিস্থাপন করা। এই প্রতিস্থাপন সাধারণত বাইরের হস্তক্ষেপ অথবা অভ্যন্তরীণ বিপ্লবের মাধ্যমে ঘটে। ফলে কেবল নেতৃত্ব নয়, পুরো শাসনব্যবস্থা, প্রতিষ্ঠান ও রাজনৈতিক আদর্শেও বড় ধরনের পরিবর্তন আসে।
সাম্প্রতিক রেজিম চেঞ্জ
২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বাশার আল-আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর দমন-পীড়ন চালানো, রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে একাধিকবার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র । পরবর্তী সময়ে আমেরিকা সরাসরি সামরিক হস্তক্ষেপ না করলেও বিদ্রোহী গোষ্ঠী এবং কুর্দি মিলিশিয়াদের অর্থ, অস্ত্র এবং গোয়েন্দাসহ নানা রকম সহযোগিতা করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে আহমেদ আল-শারার নেতৃত্বে ‘হায়াত তাহরির আল-শাম’ বিদ্রোহী জোট আসাদকে উৎখাত করে ক্ষমতা গ্রহণ করে । অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, এই সরকার পতনের পেছনে পরোক্ষভাবে হলেও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক ও কৌশলগত মদদ ছিল।
২০২২ সালের এপ্রিলে পাকিস্তান সংসদে ‘অনাস্থা ভোটে’ ক্ষমতাচ্যুত হন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এর পরপরই পতনের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করে ইমরান খান এই ঘটনাকে ‘সরকার পরিবর্তনের’ ষড়যন্ত্র হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি দাবি করেন, মার্চ মাসে ওয়াশিংটনে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দেখা করেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। সেই সাক্ষাতে ইমরানকে উৎখাত করা না হলে পাকিস্তানকে ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হবে—এমন হুমকি দেন লু। অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ইমরান খানকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরানোর পরামর্শও দেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র অবশ্য বারবারই এই অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে ট্রাম্প সরকারের হস্তক্ষেপ অন্য ইঙ্গিত দেয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষত, ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিমন্ত্রণে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরের হোয়াইট হাউস সফর এবং ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য পাকিস্তান সরকারের সুপারিশের ঘটনা ষড়যন্ত্রের সমীকরণকে নতুন করে আলোচনায় এনেছে।
এ ছাড়া ২০২৩ সালের ৩০ আগস্ট পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গ্যাবনে সেনাবাহিনীর হাতে প্রেসিডেন্ট আলি বঙ্গো ওঁদিম্বার নেতৃত্বাধীন ফ্রান্সপন্থী সরকারের পতন ঘটে। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর সামরিক বাহিনী নির্বাচনে কারচুপি ও আস্থাহীনতার অভিযোগ তুলে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে। ফ্রান্সপন্থী সরকারের পতন হওয়ায় জনগণ রাস্তায় নেমে আনন্দ উদযাপন করে।
২০২২ সালে আফ্রিকার আরেক দেশ বুরকিনা ফাসোতে দুই দফা সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে। সেপ্টেম্বরে অভ্যুত্থানের পর দেশটির নেতৃত্বে আসেন ক্যাপ্টেন ইব্রাহিম ট্রাওরে। বুরকিনা ফাসোতে ঘটে যাওয়া সামরিক অভ্যুত্থান দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কে পরিবর্তন নিয়ে আসে। অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত রচ মার্ক ক্রিশ্চিয়ান কাবোরের সরকারের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ সমর্থন ছিল। সামরিক অভ্যুত্থানের পর যুক্তরাষ্ট্র সব সহায়তা স্থগিতের ঘোষণা দেয় এবং সংবিধান অনুযায়ী শাসনব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানায়।
বিশ্ব রাজনীতিতে রেজিম চেঞ্জ বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় হয়। সামরিক অভ্যুত্থান, অভ্যন্তরীণ বিপ্লব, অনাস্থা ভোট, কিংবা বাইরের দেশের প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষ হস্তক্ষেপ—সবকিছুই এই প্রক্রিয়ার অংশ হতে পারে। অতীতেও ইরাক, লিবিয়া, আফগানিস্তান ও মিয়ানমারে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় রেজিম চেঞ্জ হতে দেখা গেছে। ইরানেও কি তেমন কিছু হতে যাচ্ছে?
ইরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার এক দিন পর দেশটির ‘রেজিম চেঞ্জের’ (সরকার পরিবর্তন) ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
স্থানীয় সময় রোববার (২২ জুন) সন্ধ্যায় নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ইরানের সরকার পরিবর্তন বিষয়ে একটি পোস্ট দিয়েছেন তিনি।
ট্রাম্প লিখেছেন, ‘রেজিম চেঞ্জ’ শব্দটি ব্যবহার করা রাজনৈতিকভাবে সঠিক নয় বলা হলেও বর্তমান ইরানি সরকার যদি ইরানকে আবার মহান করে তুলতে না পারে (মেক ইরান গ্রেট এগেইন, মিগা) তবে রেজিম চেঞ্জ কেন হবে না?
এমন এক সময়ে এই মন্তব্য এল, যখন ট্রাম্প সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ জোর দিয়ে বলেছিলেন, ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের জড়িয়ে পড়ার লক্ষ্য কোনোভাবেই শাসন পরিবর্তন (রেজিম চেঞ্জ) নয়। রোববার (২২ জুন) সকালে এক বিবৃতিতে হেগসেথ স্পষ্টভাবে জানান, ‘এই অভিযান কখনোই সরকার পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে পরিচালিত হয়নি, এখনো এমন কোনো উদ্দেশ্য নেই।’
একই দিন মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল এবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেন, ‘ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ইতি টানাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা কোনোভাবেই সরকার পরিবর্তন চাই না।’
নিজের পুরোনো বক্তব্য ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্টে বারবার যুদ্ধবিরোধী অবস্থান নেওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরে ইরাক যুদ্ধের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে এসেছেন। একই সঙ্গে তিনি আফগানিস্তানে দীর্ঘমেয়াদি মার্কিন সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধেও অবস্থান নিয়েছেন। মার্কিন অর্থ, মানবসম্পদ ও অস্ত্র খরচ করে বিদেশে সরকার পরিবর্তনের প্রচেষ্টা থেকে সরে এসে বরং চুক্তির মাধ্যমে দেশের স্বার্থ রক্ষাকেই তিনি অগ্রাধিকার দিয়েছেন।
সেই ‘শান্তিপ্রিয়’ ট্রাম্পই ইরানে সামরিক হামলা ও দেশটির সরকার পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেওয়ায় নিজের দল রিপাবলিকান পার্টির মধ্যেই গভীর মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
যুক্তরাষ্ট্রের এমন ‘সরকার পরিবর্তনের’ ইঙ্গিত বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন কিছু নয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই বিভিন্ন দেশে আক্ষরিক অর্থেই সরকার পরিবর্তনে মার্কিন সরকারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভূমিকা দেখা গেছে। সাম্প্রতিক সময়েও বিভিন্ন দেশে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখা গেছে।
রেজিম চেঞ্জ কী
ইংরেজি ‘Regime’ শব্দটি এসেছে ফরাসি ‘régime’ থেকে, যার অর্থ ‘শাসনব্যবস্থা’। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্ব রাজনীতিতে এই শব্দের ব্যবহার ধীরে ধীরে বেড়ে যায়। স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালে যুক্তরাষ্ট্র ও তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন একে অপরের প্রভাববলয়ে থাকা দেশগুলোর সরকার পরিবর্তনের জন্য সরাসরি কিংবা গোপনে হস্তক্ষেপ করতে শুরু করে। সেখান থেকেই বিশ্বরাজনীতিতে ‘রেজিম চেঞ্জ’ বা সরকার পরিবর্তন একটি পরিচিত শব্দযুগলে পরিণত হয়।
রেজিম চেঞ্জ বলতে বোঝায়, একটি সরকারকে জোরপূর্বক অপসারণ করে অন্য একটি রাজনৈতিক শক্তির মাধ্যমে প্রতিস্থাপন করা। এই প্রতিস্থাপন সাধারণত বাইরের হস্তক্ষেপ অথবা অভ্যন্তরীণ বিপ্লবের মাধ্যমে ঘটে। ফলে কেবল নেতৃত্ব নয়, পুরো শাসনব্যবস্থা, প্রতিষ্ঠান ও রাজনৈতিক আদর্শেও বড় ধরনের পরিবর্তন আসে।
সাম্প্রতিক রেজিম চেঞ্জ
২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বাশার আল-আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর দমন-পীড়ন চালানো, রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে একাধিকবার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র । পরবর্তী সময়ে আমেরিকা সরাসরি সামরিক হস্তক্ষেপ না করলেও বিদ্রোহী গোষ্ঠী এবং কুর্দি মিলিশিয়াদের অর্থ, অস্ত্র এবং গোয়েন্দাসহ নানা রকম সহযোগিতা করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে আহমেদ আল-শারার নেতৃত্বে ‘হায়াত তাহরির আল-শাম’ বিদ্রোহী জোট আসাদকে উৎখাত করে ক্ষমতা গ্রহণ করে । অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, এই সরকার পতনের পেছনে পরোক্ষভাবে হলেও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক ও কৌশলগত মদদ ছিল।
২০২২ সালের এপ্রিলে পাকিস্তান সংসদে ‘অনাস্থা ভোটে’ ক্ষমতাচ্যুত হন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এর পরপরই পতনের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করে ইমরান খান এই ঘটনাকে ‘সরকার পরিবর্তনের’ ষড়যন্ত্র হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি দাবি করেন, মার্চ মাসে ওয়াশিংটনে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দেখা করেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। সেই সাক্ষাতে ইমরানকে উৎখাত করা না হলে পাকিস্তানকে ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হবে—এমন হুমকি দেন লু। অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ইমরান খানকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরানোর পরামর্শও দেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র অবশ্য বারবারই এই অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে ট্রাম্প সরকারের হস্তক্ষেপ অন্য ইঙ্গিত দেয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষত, ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিমন্ত্রণে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরের হোয়াইট হাউস সফর এবং ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য পাকিস্তান সরকারের সুপারিশের ঘটনা ষড়যন্ত্রের সমীকরণকে নতুন করে আলোচনায় এনেছে।
এ ছাড়া ২০২৩ সালের ৩০ আগস্ট পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গ্যাবনে সেনাবাহিনীর হাতে প্রেসিডেন্ট আলি বঙ্গো ওঁদিম্বার নেতৃত্বাধীন ফ্রান্সপন্থী সরকারের পতন ঘটে। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর সামরিক বাহিনী নির্বাচনে কারচুপি ও আস্থাহীনতার অভিযোগ তুলে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে। ফ্রান্সপন্থী সরকারের পতন হওয়ায় জনগণ রাস্তায় নেমে আনন্দ উদযাপন করে।
২০২২ সালে আফ্রিকার আরেক দেশ বুরকিনা ফাসোতে দুই দফা সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে। সেপ্টেম্বরে অভ্যুত্থানের পর দেশটির নেতৃত্বে আসেন ক্যাপ্টেন ইব্রাহিম ট্রাওরে। বুরকিনা ফাসোতে ঘটে যাওয়া সামরিক অভ্যুত্থান দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কে পরিবর্তন নিয়ে আসে। অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত রচ মার্ক ক্রিশ্চিয়ান কাবোরের সরকারের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ সমর্থন ছিল। সামরিক অভ্যুত্থানের পর যুক্তরাষ্ট্র সব সহায়তা স্থগিতের ঘোষণা দেয় এবং সংবিধান অনুযায়ী শাসনব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানায়।
বিশ্ব রাজনীতিতে রেজিম চেঞ্জ বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় হয়। সামরিক অভ্যুত্থান, অভ্যন্তরীণ বিপ্লব, অনাস্থা ভোট, কিংবা বাইরের দেশের প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষ হস্তক্ষেপ—সবকিছুই এই প্রক্রিয়ার অংশ হতে পারে। অতীতেও ইরাক, লিবিয়া, আফগানিস্তান ও মিয়ানমারে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় রেজিম চেঞ্জ হতে দেখা গেছে। ইরানেও কি তেমন কিছু হতে যাচ্ছে?
ইরাকে ‘অস্ত্র’ ছিল না। তবে বোমা ঠিকই পড়েছিল। এবারও সেই পুরোনো স্ক্রিপ্টে নতুন শুটিং চলছে। লোকেশন পাশের দেশ ইরান। ইসরায়েল বলে এটা আগাম হুমকি মোকাবিলার আক্রমণ। আর ট্রাম্প কী করবে কেউ নিশ্চিত নয়। গণবিধ্বংসী অস্ত্রের অজুহাতে নাটক জমাতে চাইছে ইসরায়েল, দৃশ্যপট এবার ইরান।
৩ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে যেন চলছে নতুন এক রিয়েলিটি শো। নাম ‘বন্ধু তুমি শত্রু তুমি’। গত ৬ জুন ইলন মাস্ক নতুন রাজনৈতিক দল গড়ার ঘোষণা দিলে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘ইলন মাস্কের মাথা খারাপ হয়ে গেছে।’ এর সপ্তাহখানেক পর ইলন মাস্ক ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে স্যোশাল মিডিয়াতে করা মন্তব্যের জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন।
৪ দিন আগেআলোচনার এই কূটকৌশলের মধ্যেই পশ্চিম পাকিস্তান থেকে অস্ত্র ও সৈন্য পূর্ব পাকিস্তানে নিয়ে আসা হচ্ছিল। ২৩ মার্চ আওয়ামী লীগ জানায় তাদের অবস্থান স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে। এখন সিদ্ধান্তের পালা প্রেসিডেন্টের। কিন্তু সিদ্ধান্ত আসেনি।
১০ দিন আগেপহেলা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রায় এবার বাঘ, ইলিশ, তরমুজসহ বেশ কিছু নতুন প্রতীকের সমাবেশ ঘটেছে। এই প্রতীকগুলো আসলে কী বলছে? এর মধ্যে কি কোনো রাজনীতি আছে?
১৫ দিন আগে