leadT1ad

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি

গত বছরের ১০ জুলাই: ইইউ রাষ্ট্রদূতের হেঁটে গন্তব্যে যাওয়া থেকে আদালতের স্থিতাবস্থার আদেশ

একদিন বিরতির পর আজকের দিনে ফের ব্লকেড শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। ৮ ঘণ্টা অবরোধের পর শাহবাগ মোড় ত্যাগ করেন তাঁরা। অবরোধ শেষে পরদিন বিকেল থেকে ফের বাংলা ব্লকেডের ডাক দেওয়া হয়।

স্ট্রিম প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১০ জুলাই ২০২৫, ১২: ৪২
১০ জুলাই রেলপথ অবরোধ করে শুয়ে আছেন এক আন্দোলনকারী। ছবি: তথ্য অধিদপ্তর

আজ ১০ জুলাই। গত বছর এই দিনে কোটা সংস্কারের দাবিতে ফের চালু হয় বাংলা ব্লকেড। এর মধ্যেই তৎকালীন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাতের কথা ছিল বিদায়ী ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলির। কিন্তু রাস্তায় তখন অবরোধ চলছে। যানজটে বসে থাকতে থাকতে সাক্ষাতের সময় পেরিয়ে যাচ্ছিল। উপায়ান্তর না দেখে গাড়ি থেকে নেমে হাঁটা দেন হোয়াইটলি। সেই ভিডিও পরে এক্সে (সাবেক টুইটার) পোস্ট করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল ভিডিওটি।

ফের শুরু ব্লকেড

একদিন বিরতির পর আজকের দিনে ফের ব্লকেড শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। ৮ ঘণ্টা অবরোধের পর শাহবাগ মোড় ত্যাগ করেন তাঁরা। অবরোধ শেষে পরদিন বিকেল থেকে ফের বাংলা ব্লকেডের ডাক দেওয়া হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে হওয়া এ কর্মসূচি শেষে সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, ‘আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে বাংলাদেশের সর্বত্র সড়ক ও রেলপথে শিক্ষার্থীরা বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি অব্যাহত রাখবেন। বিকাল সাড়ে ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে আমরা কর্মসূচি শুরু করব এবং শিক্ষার্থীরা সারাদেশের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ব্লকেড কর্মসূচি সফলভাবে পালন করবেন।’

শাহবাগ ছাড়াও দেশের অন্যান্য সড়ক-মহাসড়ক শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের দখলে ছিল। ব্লকেডের আওতামুক্ত ছিল না রেলপথও। সেদিন রাজধানীতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে অবরোধ থাকায় মেট্রোরেলে ছিল উপচে পড়া ভিড়।

উল্লেখ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের দাবি ছিল, সরকারি চাকরির সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করতে হবে। সংবিধানে উল্লেখ করা অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য সীমিত পরিসরে কোটার ব্যবস্থা রেখে সংসদে আইন পাস করে পুরো কোটা পদ্ধতির সংস্কার করতে হবে।

আপিল বিভাগের স্থিতাবস্থার আদেশ

এদিন কোটার বিষয়ে স্থিতাবস্থার আদেশ দেন আপিল বিভাগ। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। এর আগে কোটা পুনর্বহালের বিষয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করেন দুই শিক্ষার্থী ও রাষ্ট্রপক্ষ। আবেদনের শুনানি শেষে এই আদেশ দেওয়া হয়।

চার সপ্তাহের জন্য এ স্থিতাবস্থা জারি করা হয়। তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন জানান, আপাতত কোটা থাকছে না।

এ আদেশের পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনায় শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে ফিরে যেতে বলা হয়। এ ছাড়া আদালত আশা করেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানেরা শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নিয়ে শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করবেন।

এই আদেশের প্রতিক্রিয়ায় আন্দোলনকারীরা জানান, তারা আদালত নয়, নির্বাহী বিভাগের কাছে নিজেদের দাবি জানিয়েছিলেন। একই সঙ্গে, সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ কোটা রাখার পক্ষে নিজেদের অবস্থানও তুলে ধরেন তারা।

রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা যা বলেছেন

শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আদালতের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। মানুষের দুর্ভোগ হয় এমন কর্মসূচি পরিহার করে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।’

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন আদালতের ওপর দায় না রেখে কোটা সমস্যার সমাধান করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। এ সময় তিনি অনগ্রসর জনগোষ্ঠী ও অন্যান্য বিষয় বিবেচনায় রেখে কোটার যৌক্তিক সংস্কারের পক্ষে জোর দেন।

জাতীয় পার্টির নেতা কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, আদালতের স্থিতাবস্থার আদেশের ফলে শিক্ষার্থীদের জয় হয়েছে। আন্দোলনে নেমে শিক্ষার্থীরা কখনো খালি হাতে ফেরে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

Ad 300x250

সম্পর্কিত