leadT1ad

প্রাথমিকের শিক্ষকদের কর্মবিরতি

অভিভাবকরা সামলাচ্ছেন শ্রেণিকক্ষ-পরীক্ষা, অফিসে অলস বসে সহকারী শিক্ষকেরা

স্ট্রিম সংবাদদাতা
স্ট্রিম সংবাদদাতা
সাভার, ঢাকা

প্রকাশ : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৪১
ধামরাইয়ে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ সামলাচ্ছে এক অভিভাবক। স্ট্রিম ছবি

ডেমরান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির কক্ষে হইচই করছিল শিক্ষার্থীরা। তাদের শান্ত করতে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করেন অভিভাবক মরিয়ম খাতুনকে। তাঁর দুই মেয়ে ও এক ছেলে এই বিদ্যালয়ে পড়ে। মরিয়ম খাতুন বলেন, ‘শিক্ষকরা পড়াচ্ছেন না। তাঁরা ক্লাসে যাচ্ছেন না। বাচ্চারা ক্লাসে হৈ-হুল্লোড় করছে। শিক্ষক না থাকায় বাধ্য হয়ে আমাদেরই ক্লাসে যেতে হচ্ছে।’

একইভাবে বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণিতে মৌখিক পরীক্ষা নিচ্ছিলেন মিতু আক্তার নামে আরেক অভিভাবক। তাঁর ছেলে পড়ে এই শ্রেণিতে। তিনি বলেন, ‘পরীক্ষা নেওয়ার কেউ নেই। তাই প্রধান শিক্ষককে জানিয়ে নিজেই পরীক্ষা নিয়ে দিচ্ছি।’ তৃতীয় শ্রেণিতে লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বিতরণ ও পরিদর্শকের কাজ একাই করছিলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আমজাদ হোসেন।

অভিভাবকরা ও প্রধান শিক্ষক যখন শ্রেণিকক্ষের দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন, তখন অফিসকক্ষে বসে অলস সময় পার করছিলেন চার সহকারী শিক্ষক। তিন দাবিতে চলা তাঁদের কর্মবিরতিতে এমন চিত্র দেখা গেছে ঢাকার ধামরাইয়ে অবস্থিত ওই বিদ্যালয়ে।

একইভাবে ধামরাইয়ের কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঘুরে দেখা গেছে, সহকারী শিক্ষকরা পূর্বঘোষিত কর্মবিরতি কর্মসূচির অংশ হিসেবে সব ধরনের পাঠদান ও পরীক্ষা বর্জন করেছেন। কয়েকটি স্কুলে প্রধান শিক্ষকই পরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। কোথাও কোথাও অভিভাবকদেরও পরীক্ষা নিতে দেখা গেছে। আবার শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের দেখভালও করছেন তাঁরা।

ডেমরান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন বলেন, ‘শিক্ষকরা কর্মবিরতিতে, তাই শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রাখতে একাই সব চালিয়ে যাচ্ছি।’

কর্মবিরতিতে থাকা শিক্ষকরা জানান, বেতন স্কেল ১০ম গ্রেডের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ১০ নভেম্বরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। সেই অনুযায়ী আপাতত ১১তম গ্রেডের প্রজ্ঞাপন জারির দাবি করছেন শিক্ষকরা। একই সঙ্গে ১০ বছর ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার ক্ষেত্রে বিদ্যমান জটিলতার অবসান এবং সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি নিশ্চিত করার দাবি তাঁদের। এসব দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া হবে বলে জানান শিক্ষকরা।

সহকারী শিক্ষিকা শামীমা আক্তার বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ দিন ধরে বঞ্চিত। অবিলম্বে আমাদের দাবিগুলো মেনে নেওয়ার দাবি জানাই।’

সুমাইয়া আক্তার নামে আরেক সহকারী শিক্ষিকা বলেন, ‘আমরা সারা বছর বাচ্চাদের পড়াই। কিন্তু আমরা যথাযথ সুবিধা পাচ্ছি না। তাই এই কর্মবিরতি। দ্রুত আমাদের দাবি না মানা হলে এই কর্মসূচি চলমান থাকবে।’

ধামরাই উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুহাম্মদ মোবাখখারুল ইসলাম মিজান বলেন, ‘আমরা শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রাখতে চেষ্টা করছি। কর্মবিরতির বিষয়েও খোঁজখবর রাখা হচ্ছে।’

Ad 300x250

সম্পর্কিত