leadT1ad

এনবিআর সংকট: সমঝোতা হয়নি সরকার ও আন্দোলনকারীদের

প্রকাশ : ২৯ জুন ২০২৫, ১৮: ০১
আপডেট : ২৯ জুন ২০২৫, ২০: ০২
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভবনের সামনের রাস্তায় জড়ো হয়েছেন কয়েক শ কর্মকর্তা ও কর্মচারী। চলছে লাগাতার শাটডাউন কর্মসূচি। আগারগাঁও, ২৯ জুন। ছবি: ঢাকা স্ট্রিম

চলমান আন্দোলনের মধ্যে আজ রোববার এনবিআর কর্তাদের সঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের বৈঠকে বসার কথা থাকলেও শেষমেষ হচ্ছে না সেটি। সমঝোতায় যেতে পারছে না সরকার ও কর্মকর্তারা। ফলে এনবিআরে দেখা দিয়েছে গভীর সংকট।

বৈঠকের সিদ্ধান্ত হঠাৎ বাতিল করে দিয়ে আজ অর্থ উপদেষ্টা বলেছেন, কর্মকর্তারা শাটডাউন কর্মসূচি পালন করতে চাইলে করুক। বৈঠক না করার বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এনবিআর কর্মকর্তাদের সঙ্গে আগামী ১ জুলাই সরকারের আরেকটি বৈঠক হওয়ার কথা। সেই বৈঠকটি হবে কি না, সে সিদ্ধান্তও পরে নেওয়া হবে বলে জানান অর্থ উপদেষ্টা।

আজ বিকেল চারটায় অর্থ উপদেষ্টার কার্যালয়ে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। এ জন্য আয়কর, কাস্টমস ও ভ্যাট ক্যাডারের ২০ সদস্যবিশিষ্ট প্রতিনিধি দলের সদস্য চূড়ান্ত করে আন্দোলনকারীরা। তবে বৈঠকের জন্য শাটডাউন কর্মসূচি স্থগিতের শর্ত দেন উপদেষ্টা। এই শর্ত মানতে নারাজ আন্দোলনকারীরা।

এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের যুগ্ম মহাসচিব শফিউল বাসার বাদল বলেন, অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে আমাদের বসার কথা ছিল। এ জন্য আমরা মার্চ টু এনবিআর কর্মসূচি স্থগিত করি। কিন্তু অর্থ উপদেষ্টা বলেছেন, কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি স্থগিত না করলে তিনি আলোচনায় বসবেন না। আমরা কর্মসূচি স্থগিত করে আলোচনায় বসবো না।

অন্যদিকে এনবিআরের বিদ্যমান সংকট নিরসনে বিবৃতি দিয়েছে অর্ন্তবর্তী সরকার। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের বাজেট ব্যবস্থাপনায় উন্নয়নমুখী কার্যক্রম পরিচালনার সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা হলো দুর্বল রাজস্ব সংগ্রহ ব্যবস্থা। রাষ্ট্রের প্রয়োজনের তুলনায় আমাদের রাজস্ব সংগ্রহ অনেক কম। এর মূল কারণ হলো আমাদের রাজস্ব আহরণ ব্যবস্থাপনার নানা দুর্বলতা, অনিয়ম ও দুর্নীতি।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘অর্থ বছরের শেষ ২ মাসে এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাজস্ব আদায় কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত করেছে। এই তথাকথিত আন্দোলন পরিকল্পিত ও দুরভিসন্ধিমূলক যা জাতীয় স্বার্থ এবং নাগরিক অধিকারের চরম পরিপন্থী। এ পরিস্থিতিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আওতাধীন সকল কাস্টমস হাউস, আইসিডি, বন্ড কমিশনারেট এবং শুল্ক স্টেশনসমূহের সকল শ্রেণির চাকরিকে অত্যাবশ্যকীয় সেবা ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা আশা করি, অনতিবিলম্বে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মস্থলে ফিরে যাবেন এবং আইনবিরোধী ও জাতীয় স্বার্থবিধ্বংসী কর্মকাণ্ড থেকে সরে আসবেন। অন্যথায় দেশের জনগণ ও অর্থনীতির সুরক্ষায় সরকার কঠোর হতে বাধ্য হবে।‘

এদিকে, শাটডাউন কর্মসূচিতে দৈনিক প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা ক্ষতির মুখে পড়ছেন বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খান জানান, এনবিআরের অচলাবস্থায় দৈনিক আড়াই হাজার থেকে ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকার দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ক্ষতির মুখে পড়ছে। তুলনামূলক ছোট কারখানা বন্ধ হয়ে পড়ার শঙ্কায় আছে।

উল্লেখ্য, যৌক্তিক সংস্কার ও চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন করছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। গতকাল থেকে পালন করছেন শাটডাউন কর্মসূচি।

বিষয়:

এনবিআর
Ad 300x250

সম্পর্কিত