আসামের ধুবড়ি জেলায় তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের নামে ২ হাজারেরও বেশি ‘মিয়া’ মুসলমান পরিবারকে উচ্ছেদ করেছে আসাম সরকার। পাঁচ হাজার বিঘা জমিজুড়ে চলছে এ উচ্ছেদ অভিযান। স্থানীয় বাসিন্দা ও বিরোধীদলীয় নেতাদের অভিযোগ, সঠিক পুনর্বাসন ছাড়াই তাঁদের বাস্তুচ্যুত করা হচ্ছে, আর এ প্রকল্পের পেছনে কাজ করেছে করপোরেট স্বার্থ ও সাম্প্রদায়িক রাজনীতি।
রাতুল আল আহমেদ
গত ৮ জুলাই আসামের ধুবড়ি জেলার বিলাসিপাড়ায় উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে সেখানকার প্রশাসন। সরকারি ভাষ্যমতে, আসামে ৩ হাজার ৪ শ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের জন্য এই অভিযান চালানো হয়েছে। এ কার্যক্রমে ২ হাজারেরও বেশি ‘মিয়া’ মুসলমান পরিবারের ভিটেবাড়ি উচ্ছেদ করা হয়।
গত ৪ জুলাই আসাম সরকার এ অধিগ্রহণ সংক্রান্ত একটি সরকারি নির্দেশনা জারি করে। ঠিক তার পরদিন ধুবড়ি জেলার চাপার সার্কেল অফিসের কর্মকর্তারা চারুয়াবাখরা জঙ্গল ব্লক, চিরাকুটা পার্ট-১, পার্ট-২ এবং সন্তোষপুরসহ কয়েকটি গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় উচ্ছেদের নোটিশ টানিয়ে দেয়। ফলে এ পরিবারগুলো বাধ্য হয়ে তাদের ঘরবাড়ি ছাড়তে শুরু করে।
চারটি গ্রামের প্রায় ৫ হাজার বিঘা জমিজুড়ে এ উচ্ছেদ অভিযান চলছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই উচ্ছেদ প্রক্রিয়ায় প্রায় দশ হাজার ভূমিহীন ‘মিয়া’ মুসলমান বাস্তুচ্যুত হবে।
প্রাথমিকভাবে পরিকল্পনা ছিল তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পটি আসামের কোকড়াঝাড় জেলার একটি আদিবাসী-অধ্যুষিত এলাকায় বাস্তবায়ন করা হবে। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের তীব্র প্রতিবাদের মুখে প্রকল্পটি ধুবড়ি জেলার বিলাসিপাড়া এলাকায় স্থানান্তরিত করা হয়। এ এলাকায় মূলত ‘মিয়া’ সম্প্রদায়ের মানুষ বাস করে।
নিজের সদ্য ভাঙা বাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে চিরাকুটা গ্রামের ৫২ বছরের আজিরান নেসা বলেন, ‘হাতে মাত্র পঞ্চাশ হাজার টাকা ধরিয়ে হঠাৎ করে আমাদের বলা হলো ঘরবাড়ি ছেড়ে যেতে। আমরা যাব কোথায়?’
আজিরান নেসার প্রশ্ন, ‘সরকার যেখানে আমাদের পত্তন করাতে চায় সেটা তো নদীর মাঝখান! সেখানে কিভাবে আমরা থাকবো?’
আসাম ল্যান্ড অ্যান্ড রেভিনিউ রেগুলেশন, ১৮৮৬-এর আওতায় এ নোটিশ জারি করা হয়। এতে বলা হয়েছে, প্রতিটি ভূমিহীন পরিবারকে পঞ্চাশ হাজার টাকা দেওয়া হবে। ভিটা থেকে উচ্ছেদ করা এ মানুষদের পুনর্বাসন করা হবে ধুবড়ি জেলার আঠানি রেভিনিউ সার্কেলের অন্তর্গত বয়জের আলগা গ্রামে।
গত ২৪ জুন আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা প্রস্তাবিত এ তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের স্থান পরিদর্শনে যাওয়ার পর উচ্ছেদের গতি আরও বেড়ে যায়।
চিরাকুটা গ্রামের ৪১ বছর বয়সী আব্দুর রশিদ শেখ দাবি করেন, এই প্রকল্পের সঙ্গে আদানি গ্রুপের পরিচালক জিৎ আদানির যুক্ততা রয়েছে। গত ২২ এপ্রিল ওই স্থান পরিদর্শনে এসেছিলেন তিনি।
যেসব পরিবার ‘মিয়াদি পাট্টা’ জমির মালিক, তারা এখনও নিজ বাড়িতে রয়েছে। তবে চারটি গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দা, যারা খাসজমিতে বাস করত মূলত তাদেরই এ উচ্ছেদ নোটিশের পর ঘর ছাড়তে হয়েছে।
পুনর্বাসনের জন্য নির্ধারিত বয়জের আলগা জায়গাটি মূলত একটি নিচু চর, যেখানে নিয়মিত বন্যা হয়। ভাঙনের ঝুঁকিতেও রয়েছে জায়গাটি। উচ্ছেদ হওয়া বাসিন্দাদের মতে এ এলাকায় খাবার পানি, রাস্তাঘাট, স্বাস্থ্যসেবা এবং বিদ্যালয়ের মতো মৌলিক সুযোগ-সুবিধা নেই।
‘এ যেন আমাদের পানিতে ফেলে দেওয়া হলো’। গত ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে চারুয়াবাখরা গ্রামের বাসিন্দা ৭০ বছরের কাসেম আলী এ কথা বলেন।
ষাটোর্ধ্ব আজাহার আলী ১৯৮১ সালে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে ভিটা হারিয়ে সন্তোষপুর গ্রামে বসতি গড়েছিলেন। এখন তিনি আবার উচ্ছেদের মুখে।
‘উন্নয়নের বিষয় নয় এসব’। আজাহার আলীর মতে, ‘এটা হিমন্ত সরকারের মিয়া মুসলমানদের হয়রানির আরেকটা উপায়।’
ধারণা করা হচ্ছে উচ্ছেদ অভিযানের সময় এলাকায় ৩ হাজারেরও বেশি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। একশরও বেশি বুলডোজার ব্যবহার করা হয়েছিল বাড়িঘর ভাঙতে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রশাসন পরিবারগুলোকে দ্রুত এলাকা ছাড়তে বাধ্য করার জন্য হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে।
উচ্ছেদ অভিযানের বিরুদ্ধে মানুষ যখন প্রতিবাদে নেমেছিল তখন তাদের ওপর পুলিশি হামলা চালানো হয়। চারুয়াবাখরা গ্রামে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত তিনজন মহিলা আহত হন। স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের পরিচয় জানিয়েছেন। তাঁরা হলেন ৪০ বছর বয়সী মাসিয়া খাতুন, ৪৫ বছর বয়সী রুমিয়া খাতুন এবং ৩০ বছর বয়সী হাফিজা খাতুন। তাঁরা তিনজনই চারুয়াবাখরা গ্রামের বাসিন্দা।
একজন বাসিন্দা বলেন, ‘পুলিশ গুলি চালানোর সঙ্গে সঙ্গে আমি দৌড়ে পালিয়ে যাই।’
চারুয়াবাখরা গ্রামের ৩৪ বছর বয়সী সোহিফুর রহমান বলেন, ৩৫৭টি ভূমিহীন পরিবার, ১২৯টি ‘মিয়াদি পাট্টাধারী’ পরিবার এবং ৮৩টি বরাদ্দপ্রাপ্ত পরিবার উচ্চ আদালতের কাছে গেছে। তিনি আরও জানান, অনেক ভূমিহীন পরিবার ইতিমধ্যেই প্রশাসনের চাপ ও হুমকির মুখে এলাকা ছেড়ে চলে গিয়েছে। তাদের মামলা যদিও এখনও বিচারাধীন রয়েছে।
সোহিফুর রহমান বলেন, ‘প্রশাসন বাসিন্দাদের উপর অব্যাহতভাবে চাপ সৃষ্টি করছে যাতে তারা পঞ্চাশ হাজার টাকার চেক গ্রহণ করে এলাকা ছেড়ে চলে যায়।’
আসামের গুয়াহাটির এক মানবাধিকার আইনজীবী সংবাদ সংস্থা দ্য ওয়্যারকে জানান, মামলার শুনানি ২২ জুলাই নির্ধারিত হয়েছে। ওই আইনজীবী তার নাম গোপন রাখার অনুরোধ করেছেন।
অনেক মানবাধিকার কর্মী ও রাজনৈতিক নেতা চলমান উচ্ছেদ অভিযানকে বর্বর পদক্ষেপ হিসেবে এর নিন্দা করেছেন। তাঁদের দাবি, বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এ কাজ করছে।
গত ৮ জুলাই মঙ্গলবার সকালে রাইজোর দলের নেতা ও আসাম বিধানসভার সদস্য অখিল গগৈ উচ্ছেদ স্থান পরিদর্শন করেন। এ সময় তাঁকে চারুয়াবাখরায় উচ্ছেদ হওয়া মানুষের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। তবে পুলিশ তাঁকে আটক করে চাপার থানায় নিয়ে যায়। যদিও কয়েক ঘণ্টা পর পুলিশ গাড়িতে করে তাঁকে গোলপাড়া জেলায় নামিয়ে দেয়।
পরবর্তীকালে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি অভিযোগ করেন, ‘কেবল মুসলমান বলেই সাম্প্রদায়িক বিজেপি সরকার এই নির্যাতন চালাচ্ছে। এটা তাদের একটি রাজনৈতিক কৌশল।’
সিপিআই(এম)-এর নেতা সুপ্রকাশ তালুকদার সরকারকে করপোরেট স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নীতিমালা গ্রহণের পাশাপাশি মুসলমান সংখ্যালঘুদের লক্ষ্যবস্তু করার অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ‘এই উচ্ছেদ অভিযান আরও বড় এক পরিকল্পনার অংশ। এর উদ্দেশ্য হলো করপোরেট স্বার্থে জমি ও জনগণের সম্পদ কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়া।’ সুপ্রকাশ তালুকদার আরও বলেন, ‘দেশপ্রেমের নাম করে বিজেপি এ অভিযানের প্রচার করছে “মিয়াদের হাত থেকে আসামকে বাঁচাও”। এসব সাম্প্রদায়িক কথাবার্তা বলে সমাজকে বিভক্ত করে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছে তারা।’
সোহিফুর রহমান বলেন, ‘বলপ্রয়োগ করে উচ্ছেদ করা সম্পূর্ণ মানবাধিকার লঙ্ঘন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এখানে কয়েক পুরুষ ধরে বাস করছি। এখন হঠাৎ করে সরকার আমাদের বলছে চলে যেতে, ঠিকঠাক পুনর্বাসন ছাড়াই! আমরা যাব টা কোথায়?’
গত ৮ জুলাই আসামের ধুবড়ি জেলার বিলাসিপাড়ায় উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে সেখানকার প্রশাসন। সরকারি ভাষ্যমতে, আসামে ৩ হাজার ৪ শ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের জন্য এই অভিযান চালানো হয়েছে। এ কার্যক্রমে ২ হাজারেরও বেশি ‘মিয়া’ মুসলমান পরিবারের ভিটেবাড়ি উচ্ছেদ করা হয়।
গত ৪ জুলাই আসাম সরকার এ অধিগ্রহণ সংক্রান্ত একটি সরকারি নির্দেশনা জারি করে। ঠিক তার পরদিন ধুবড়ি জেলার চাপার সার্কেল অফিসের কর্মকর্তারা চারুয়াবাখরা জঙ্গল ব্লক, চিরাকুটা পার্ট-১, পার্ট-২ এবং সন্তোষপুরসহ কয়েকটি গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় উচ্ছেদের নোটিশ টানিয়ে দেয়। ফলে এ পরিবারগুলো বাধ্য হয়ে তাদের ঘরবাড়ি ছাড়তে শুরু করে।
চারটি গ্রামের প্রায় ৫ হাজার বিঘা জমিজুড়ে এ উচ্ছেদ অভিযান চলছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই উচ্ছেদ প্রক্রিয়ায় প্রায় দশ হাজার ভূমিহীন ‘মিয়া’ মুসলমান বাস্তুচ্যুত হবে।
প্রাথমিকভাবে পরিকল্পনা ছিল তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পটি আসামের কোকড়াঝাড় জেলার একটি আদিবাসী-অধ্যুষিত এলাকায় বাস্তবায়ন করা হবে। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের তীব্র প্রতিবাদের মুখে প্রকল্পটি ধুবড়ি জেলার বিলাসিপাড়া এলাকায় স্থানান্তরিত করা হয়। এ এলাকায় মূলত ‘মিয়া’ সম্প্রদায়ের মানুষ বাস করে।
নিজের সদ্য ভাঙা বাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে চিরাকুটা গ্রামের ৫২ বছরের আজিরান নেসা বলেন, ‘হাতে মাত্র পঞ্চাশ হাজার টাকা ধরিয়ে হঠাৎ করে আমাদের বলা হলো ঘরবাড়ি ছেড়ে যেতে। আমরা যাব কোথায়?’
আজিরান নেসার প্রশ্ন, ‘সরকার যেখানে আমাদের পত্তন করাতে চায় সেটা তো নদীর মাঝখান! সেখানে কিভাবে আমরা থাকবো?’
আসাম ল্যান্ড অ্যান্ড রেভিনিউ রেগুলেশন, ১৮৮৬-এর আওতায় এ নোটিশ জারি করা হয়। এতে বলা হয়েছে, প্রতিটি ভূমিহীন পরিবারকে পঞ্চাশ হাজার টাকা দেওয়া হবে। ভিটা থেকে উচ্ছেদ করা এ মানুষদের পুনর্বাসন করা হবে ধুবড়ি জেলার আঠানি রেভিনিউ সার্কেলের অন্তর্গত বয়জের আলগা গ্রামে।
গত ২৪ জুন আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা প্রস্তাবিত এ তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের স্থান পরিদর্শনে যাওয়ার পর উচ্ছেদের গতি আরও বেড়ে যায়।
চিরাকুটা গ্রামের ৪১ বছর বয়সী আব্দুর রশিদ শেখ দাবি করেন, এই প্রকল্পের সঙ্গে আদানি গ্রুপের পরিচালক জিৎ আদানির যুক্ততা রয়েছে। গত ২২ এপ্রিল ওই স্থান পরিদর্শনে এসেছিলেন তিনি।
যেসব পরিবার ‘মিয়াদি পাট্টা’ জমির মালিক, তারা এখনও নিজ বাড়িতে রয়েছে। তবে চারটি গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দা, যারা খাসজমিতে বাস করত মূলত তাদেরই এ উচ্ছেদ নোটিশের পর ঘর ছাড়তে হয়েছে।
পুনর্বাসনের জন্য নির্ধারিত বয়জের আলগা জায়গাটি মূলত একটি নিচু চর, যেখানে নিয়মিত বন্যা হয়। ভাঙনের ঝুঁকিতেও রয়েছে জায়গাটি। উচ্ছেদ হওয়া বাসিন্দাদের মতে এ এলাকায় খাবার পানি, রাস্তাঘাট, স্বাস্থ্যসেবা এবং বিদ্যালয়ের মতো মৌলিক সুযোগ-সুবিধা নেই।
‘এ যেন আমাদের পানিতে ফেলে দেওয়া হলো’। গত ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে চারুয়াবাখরা গ্রামের বাসিন্দা ৭০ বছরের কাসেম আলী এ কথা বলেন।
ষাটোর্ধ্ব আজাহার আলী ১৯৮১ সালে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে ভিটা হারিয়ে সন্তোষপুর গ্রামে বসতি গড়েছিলেন। এখন তিনি আবার উচ্ছেদের মুখে।
‘উন্নয়নের বিষয় নয় এসব’। আজাহার আলীর মতে, ‘এটা হিমন্ত সরকারের মিয়া মুসলমানদের হয়রানির আরেকটা উপায়।’
ধারণা করা হচ্ছে উচ্ছেদ অভিযানের সময় এলাকায় ৩ হাজারেরও বেশি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। একশরও বেশি বুলডোজার ব্যবহার করা হয়েছিল বাড়িঘর ভাঙতে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রশাসন পরিবারগুলোকে দ্রুত এলাকা ছাড়তে বাধ্য করার জন্য হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে।
উচ্ছেদ অভিযানের বিরুদ্ধে মানুষ যখন প্রতিবাদে নেমেছিল তখন তাদের ওপর পুলিশি হামলা চালানো হয়। চারুয়াবাখরা গ্রামে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত তিনজন মহিলা আহত হন। স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের পরিচয় জানিয়েছেন। তাঁরা হলেন ৪০ বছর বয়সী মাসিয়া খাতুন, ৪৫ বছর বয়সী রুমিয়া খাতুন এবং ৩০ বছর বয়সী হাফিজা খাতুন। তাঁরা তিনজনই চারুয়াবাখরা গ্রামের বাসিন্দা।
একজন বাসিন্দা বলেন, ‘পুলিশ গুলি চালানোর সঙ্গে সঙ্গে আমি দৌড়ে পালিয়ে যাই।’
চারুয়াবাখরা গ্রামের ৩৪ বছর বয়সী সোহিফুর রহমান বলেন, ৩৫৭টি ভূমিহীন পরিবার, ১২৯টি ‘মিয়াদি পাট্টাধারী’ পরিবার এবং ৮৩টি বরাদ্দপ্রাপ্ত পরিবার উচ্চ আদালতের কাছে গেছে। তিনি আরও জানান, অনেক ভূমিহীন পরিবার ইতিমধ্যেই প্রশাসনের চাপ ও হুমকির মুখে এলাকা ছেড়ে চলে গিয়েছে। তাদের মামলা যদিও এখনও বিচারাধীন রয়েছে।
সোহিফুর রহমান বলেন, ‘প্রশাসন বাসিন্দাদের উপর অব্যাহতভাবে চাপ সৃষ্টি করছে যাতে তারা পঞ্চাশ হাজার টাকার চেক গ্রহণ করে এলাকা ছেড়ে চলে যায়।’
আসামের গুয়াহাটির এক মানবাধিকার আইনজীবী সংবাদ সংস্থা দ্য ওয়্যারকে জানান, মামলার শুনানি ২২ জুলাই নির্ধারিত হয়েছে। ওই আইনজীবী তার নাম গোপন রাখার অনুরোধ করেছেন।
অনেক মানবাধিকার কর্মী ও রাজনৈতিক নেতা চলমান উচ্ছেদ অভিযানকে বর্বর পদক্ষেপ হিসেবে এর নিন্দা করেছেন। তাঁদের দাবি, বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এ কাজ করছে।
গত ৮ জুলাই মঙ্গলবার সকালে রাইজোর দলের নেতা ও আসাম বিধানসভার সদস্য অখিল গগৈ উচ্ছেদ স্থান পরিদর্শন করেন। এ সময় তাঁকে চারুয়াবাখরায় উচ্ছেদ হওয়া মানুষের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। তবে পুলিশ তাঁকে আটক করে চাপার থানায় নিয়ে যায়। যদিও কয়েক ঘণ্টা পর পুলিশ গাড়িতে করে তাঁকে গোলপাড়া জেলায় নামিয়ে দেয়।
পরবর্তীকালে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি অভিযোগ করেন, ‘কেবল মুসলমান বলেই সাম্প্রদায়িক বিজেপি সরকার এই নির্যাতন চালাচ্ছে। এটা তাদের একটি রাজনৈতিক কৌশল।’
সিপিআই(এম)-এর নেতা সুপ্রকাশ তালুকদার সরকারকে করপোরেট স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নীতিমালা গ্রহণের পাশাপাশি মুসলমান সংখ্যালঘুদের লক্ষ্যবস্তু করার অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ‘এই উচ্ছেদ অভিযান আরও বড় এক পরিকল্পনার অংশ। এর উদ্দেশ্য হলো করপোরেট স্বার্থে জমি ও জনগণের সম্পদ কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়া।’ সুপ্রকাশ তালুকদার আরও বলেন, ‘দেশপ্রেমের নাম করে বিজেপি এ অভিযানের প্রচার করছে “মিয়াদের হাত থেকে আসামকে বাঁচাও”। এসব সাম্প্রদায়িক কথাবার্তা বলে সমাজকে বিভক্ত করে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছে তারা।’
সোহিফুর রহমান বলেন, ‘বলপ্রয়োগ করে উচ্ছেদ করা সম্পূর্ণ মানবাধিকার লঙ্ঘন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এখানে কয়েক পুরুষ ধরে বাস করছি। এখন হঠাৎ করে সরকার আমাদের বলছে চলে যেতে, ঠিকঠাক পুনর্বাসন ছাড়াই! আমরা যাব টা কোথায়?’
মাত্র কয়েক দিন আগে ব্রিকস দেশগুলো মার্কিন ‘একতরফা শুল্ক ও অশুল্কব্যবস্থার উত্থান’ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে। ট্রাম্প প্রশাসনের এমন পদক্ষেপকে তারা ‘অবৈধ ও ইচ্ছাধীন’ বলে অভিহিত করেছিল।
১১ ঘণ্টা আগেহেগ-ভিত্তিক এই আদালত জানিয়েছে, তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা এবং প্রধান বিচারপতি আবদুল হাকিম হাক্কানির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনার ‘যুক্তিসংগত ভিত্তি’ রয়েছে।
১৮ ঘণ্টা আগেমিজোরাম ও মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী বাণিজ্য এলাকা ‘খাওমাউই’র নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সিএনডিএফ ও সিডিএফ-এইচ এই তীব্র সংঘাতে জড়িয়েছে।
২ দিন আগেগতকাল রোববার (৬ জুলাই) থেকে ব্রাজিলের রাজধানী রিও ডি জেনিরোতে শুরু হয়েছে উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলোকে নিয়ে গঠিত ব্রিকস জোটের সম্মেলন।
৩ দিন আগে