leadT1ad

ইউক্রেনে পাঁচ বছর পর নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ

স্ট্রিম ডেস্ক
প্রকাশ : ১৮ জুলাই ২০২৫, ১৩: ০২
ইউক্রেনের নব নিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী ইউলিয়া সিভিরিদেঙ্কো। ছবি: এক্স থেকে নেওয়া

পাঁচ বছর পর ইউক্রেনের পার্লামেন্ট নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিয়েছে। গত মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) ডেনিস শ্যামিহাল প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করার নতুন প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করল ইউক্রেনের পার্লামেন্ট।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) ৩৯ বছর বয়সী ইউলিয়া সিভিরিদেঙ্কো নিয়োগ পেয়েছেন।

ইউলিয়া সিভিরিদেঙ্কোকে দেশের অভ্যন্তরীণ অস্ত্র উৎপাদন বাড়ানো ও ঋণনির্ভর অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করার দায়িত্ব দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। নতুন প্রধানমন্ত্রীসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কয়েকটি পদেও নতুন নিয়োগ দিয়েছে ইউক্রেনের পার্লামেন্ট।

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার তিন বছর পর এটি ইউক্রেন সরকারের মধ্যে সবচেয়ে বড় রদবদলের ঘটনা।

সিভিরিদেঙ্কো এর আগে প্রথম উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পরে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বাণিজ্যমন্ত্রী ছিলেন। এই দায়িত্বগুলোতে থাকাকালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন। চলতি বছরের শুরুর দিকে ওয়াশিংটন ও কিয়েভের একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদ চুক্তির কৃতিত্বও তাঁকে দেওয়া হয়। এই চুক্তি ট্রাম্প ও জেলেনস্কির প্রথম দিকের ঠান্ডা সম্পর্ক কিছুটা উষ্ণ করতে সাহায্য করেছিল।

প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হওয়ার পর ইউলিয়া সিভিরিদেঙ্কো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেন, ‘সামরিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক দিক থেকে নিজস্ব ভিত্তির উপর দৃঢ়ভাবে দাঁড়াতে পারে এমন এক ইউক্রেন গড়ার জন্য আমাদের সরকার কাজ করছে।’

৪৯ বছর বয়সী বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শ্যামিহাল এখন থেকে সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সামলাবেন।

অভ্যন্তরীণ নীতিতে পরিবর্তনের সম্ভাবনা কম

কিয়েভভিত্তিক রাজনৈতিক থিংক ট্যাঙ্ক পেন্টার প্রধান ও রাজনীতিবিদ ভলোদিমির ফেসেনকো মনে করেন, প্রধানমন্ত্রীর পদে পরিবর্তন এলেও ইউক্রেনের অভ্যন্তরীণ নীতিতে বড় কোনো পরিবর্তন আসবে না। ফেসেনকো বলেন, ‘মূল রাজনৈতিক সিদ্ধান্তগুলো প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকেই আসবে, আর সেগুলো বাস্তবায়ন করবেন সিভিরিদেঙ্কো ও সরকার।’

তবে এতসব রদবদলের পরও সমালোচকরা বলছেন, জেলেনস্কির মন্ত্রিসভা নতুন হলেও সবই চেনা মুখ। তাঁরা আরও অভিযোগ করেছেন, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি মূলত তাঁর ‘অনুগতদের’ গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে বসিয়ে ক্ষমতা আরও বেশি নিজের হাতে কেন্দ্রিভূত করছেন।

এর আগে সিভিরিদেঙ্কো প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের আন্দ্রি ইয়ারমাকের অধীনে উপপ্রধান হিসেবে কাজ করেছেন। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির ঘনিষ্ঠ হিসেবে বিবেচিত এই তরুণ ও উদ্যমী রাজনীতিক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আসতে পারেন বলেও ধারণা করছেন অনেকে।

সরকারের কাজকর্মে পরিবর্তন আসবে কি

কিয়েভের তারাস শেভচেঙ্কো ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির রাজনীতি বিশ্লেষক পেত্রো ওলেশচুক জার্মান সংবাদসংস্থা ডয়চে ভেলেকে বলেন, বেশ কয়েকটি উচ্চপর্যায়ের দুর্নীতির ঘটনার পরও প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি তাঁর দল নিয়ে আত্মবিশ্বাস দেখাচ্ছেন। আর সে কারণেই পুরো মন্ত্রিসভা বদল না করে শুধু কিছু রদবদল করেছেন।

ওলেশচুকের মতে, ‘শ্যামিহালের অন্য পদে রদবদল এই বার্তাই দেয় যে দলে কোনো অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব নেই।’

বিশ্লেষক সাকায়ান মনে করেন, মন্ত্রিসভায় বড় ধরনের রদবদল না হওয়া প্রমাণ করে দক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য প্রার্থীর সংকট কতটা তীব্র।

(আল-জাজিরা, ডয়চে ভেলেতে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে)

বিষয়:

ইউক্রেন
Ad 300x250

সম্পর্কিত