leadT1ad

মুরাদনগরে মাদক কারবারি সন্দেহে মা ও দুই সন্তানকে পিটিয়ে হত্যা

প্রকাশ : ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৭: ৩০
কুমিল্লার মুরাদনগরে মাদক কারবারে জড়িত থাকার সন্দেহে তিনজনকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার মুরাদনগরে মাদক কারবারে জড়িত থাকার সন্দেহে রোকসানা আক্তার রুবি ও তাঁর দুই ছেলে-মেয়েকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় উত্তেজিত লোকজনের মারধরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁর আরেক মেয়েকে ভর্তি করা হয়েছে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে।

আজ বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার আকবপুর ইউনিয়নের কড়ইবাড়ি গ্রামে এই নৃশংস ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বাঙ্গরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান এ সব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন বাঙ্গরা থানার কড়ইবাড়ি গ্রামের রোকসানা আক্তার রুবি (৫৫), তাঁর ছেলে রাসেল মিয়া (২৮) ও মেয়ে জোনাকি আক্তার (২২)। হাসপাতালে ভর্তি আছেন রুমা আক্তার (৩০) নামে আরেক মেয়ে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে ওসি মাহফুজুর রহমান জানান, মাদক কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল রোকসানা আক্তার রুবির পরিবারের বিরুদ্ধে। ওই অভিযোগ তুলে আজ সকালে রুবি ও তাঁর ছেলেমেয়েদের ‘গণপিটুনি’ দেয় এলাকার লোকজন। এতে ঘটনাস্থলেই রুবি, মেয়ে জোনাকী ও ছেলে রাসেল নিহত হন। এ সময় আহত হন আরেক মেয়ে রুমা।

আহত রুমা আক্তারকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তবে তাঁর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে স্থানান্তরের পরামর্শ দেওয়া হয় বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম মানিক। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাঁকে কুমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয় একাধিক বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রুবি তাঁর সন্তানদের নিয়ে কড়ইবাড়ি গ্রামে বাবার বাড়িতে থাকেন। রুবি ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মুরাদনগর, বাঙ্গরাসহ অন্যান্য থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

তবে মাদক কারবারের অভিযোগে রুবির বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে তাকেই মামলা দেওয়াসহ নানাভাবে হয়রানি করতেন তিনি। এতে এলাকার লোকজনও তাঁদের বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত ছিল। এর ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার বাগ্‌বিতণ্ডার জেরে ‘মাদকের বিরুদ্ধে অ্যাকশন’ নাম দিয়ে রুবির বাড়িতে হামলা চালায় উত্তেজিত জনতা। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে।

উপজেলার আকবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান শাহ আলম বলেন, ‘খোঁজ নিয়ে যতটুকু শুনেছি, নিহত পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে মাদক কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এ নিয়ে ক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী আজ সকালে ওই পরিবারের চারজনকে গণপিটুনি দেয়।’

খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ছাড়া কুমিল্লা পুলিশ সুপার (এসপি) নাজির আহমেদসহ একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা ও থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। উত্তেজনা এড়াতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানান ওসি মাহফুজুর রহমান।

Ad 300x250

সম্পর্কিত