leadT1ad

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি

৭ জুলাই ২০২৪: বাংলা ব্লকেড শুরু

প্রকাশ : ০৭ জুলাই ২০২৫, ১১: ৫৪
গত বছরের ৭ অক্টোবর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত

আজ ৭ জুলাই। গত বছর এদিন থেকে বাংলা ব্লকেড শুরু হয়। কোটা সংস্কার আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে।

দেশজুড়ে অবরোধ

এদিন বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী এদিন আন্দোলনকারীরা রাজধানীর আটটি জায়গা অবরোধ করেন। এর মধ্যে ছিল সায়েন্স ল্যাবরেটরি, নিউমার্কেট, নীলক্ষেত, চানখাঁরপুল ও আগারগাঁও। এদিন থেকেই শুরু হয় বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি।

এদিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তৎকালীন সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ঘোষণা দেন, ‘আগামীকাল বেলা সাড়ে ৩টা থেকে ব্লকেড শুরু হবে। এর আগেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের সামনে জমায়েত হবেন। কোনো আবাসিক হলে বাধা দেওয়া হলে আমাদের জানাবেন। আমরা সম্মিলিতভাবে সেই হল ঘেরাও করব।’

পরদিন থেকে এক দফার দাবিতে আন্দোলন চলবে জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, সব গ্রেডে অযৌক্তিক কোটা বাতিল করে ন্যূনতম কোটা রাখতে হবে।

এদিন সন্ধ্যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আন্দোলনের অন্যতম তিন সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহর সঙ্গে আলোচনায় বসেন। ওই আলোচনা শেষে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর একদল প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা করতে তাঁদের ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও এদিন দেশজুড়ে বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করেন।

সরকারের কিছু করার নেই: শেখ হাসিনা

এদিন যুব মহিলা লীগের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর বক্তব্যে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কোটার বিষয়টি বিচারাধীন। এখানে সরকারের কিছু করার নেই। তিনি বলেন, ‘হাইকোর্টের রায়, এটার বিরুদ্ধে এভাবে আন্দোলন করা, এটা তো সাবজুডিস। কারণ, আমরা সরকারে থেকে কিন্তু এ ব্যাপারে কোনো কথা বলতে পারি না। কারণ, হাইকোর্ট রায় দিলে সেটা হাইকোর্ট থেকেই আবার আসতে হবে।’

এ সময় কোটা সংস্কার আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন, ‘আজকে একটা কথা আমি না বলে পারছি না, আমরা দেখছি যে কোটা আন্দোলন। আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য যে কোটা, সেটা বাতিল করতে হবে। নারীদের কোটা বাতিল করতে হবে, এ ধরনের নানা কথা শোনা যাচ্ছে। সেটা একবার বাতিল করা হয়েছিল। কিন্তু ফলাফলটা কী?’

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘পাবলিক সার্ভিস কমিশন পরীক্ষার হিসাব যদি দেখা যায়, তাহলে দেখা যেত আগে কোটা থাকাতে মেয়েরা যে সংখ্যায় সুযোগ পেত, সে সুযোগ কিন্তু এই গত কয় বছরে পায়নি। এটা হলো বাস্তবতা। এমনকি অনেক অনেক জেলা, প্রত্যন্ত অঞ্চল, সেই অঞ্চলের মানুষগুলো কিন্তু বঞ্চিত থেকে গেছে। তাঁরাও চাকরি পাচ্ছে না। আর এ রকম বঞ্চিত হওয়ার কারণেই কেউ মামলা করে যাতে হাইকোর্ট একটা রায় দেন। হাইকোর্টের রায়টা আমরা সব সময়ই মেনে নিই। কিন্তু আমরা এখন দেখলাম যে কোটাবিরোধী আন্দোলন এখন আবার গড়ে তোলার চেষ্টা হচ্ছে। ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া বাদ দিয়ে কোটাবিরোধী আন্দোলন করছে। সেখানে মেয়েরাও করছে।’

সরব আওয়ামী লীগ নেতারাও

এদিন এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যে ইস্যুতে আন্দোলন করছে, সেটা তো সরকারি সিদ্ধান্ত। আদালত ভিন্ন রায় দিয়েছেন। আমরা তো সিদ্ধান্ত দিইনি, দিয়েছেন আদালত।’

আরেক অনুষ্ঠানে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল সবাইকে ষড়যন্ত্র থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমি এই বিষয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে বলতে চাই, অনেক সময় জনপ্রিয় অনেক বিষয়কে পুঁজি করে ষড়যন্ত্রকারীরা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়। সেই ফাঁদে যেন আমরা পা না দিই।’

মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল আরও বলেন, ‘একটি বিচারাধীন বিষয়ে হঠাৎ আমি রাস্তায় নেমে গেলাম, রাস্তাঘাট সব ব্লক করে দিলাম, স্বাভাবিকভাবেই আমাদের প্রশ্ন থাকতে পারে, এর পেছনে কোনও গভীর ষড়যন্ত্র আছে কি না? কারণ স্থিতিশীলতাকে বিনষ্ট করার জন্য অনেকেই অনেকভাবে অনেক জায়গায় উসকানি দেয়।’

Ad 300x250

সম্পর্কিত