leadT1ad

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি

৩ জুলাই ২০২৪: যা যা ঘটেছিল

বছর ঘুরে আবার এসেছে জুলাই। গত বছর এ মাসে কোটা সংস্কার আন্দোলন নতুন গতি পায়। ৩ জুলাই থেকে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে।

স্ট্রিম ডেস্ক
প্রকাশ : ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৩: ১৮
এই দিনে কোটা আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। স্ট্রিম গ্রাফিক

২০১৮ সালে সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ছিল—হাইকোর্টের এমন রায়ের প্রতিবাদে গত বছরের জুন থেকে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। জুলাইয়ে সে আন্দোলন বেগবান হয়। গত বছরের এই দিনে কোটা আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। এ ছাড়া আন্দোলন নিয়ে বক্তব্য দেন রাজনৈতিক নেতারাও।

শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা

৩ জুলাই রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। এ দিন বেলা আড়াইটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। আন্দোলনকারীরা ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দোয়েল চত্বর হয়ে শাহবাগে এসে জড়ো হন।

এ কর্মসূচি থেকে বিভিন্ন স্লোগান ভেসে আসে, যার মধ্যে ছিল ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটাপ্রথার কবর দে’, ‘দফা এক দাবি এক, কোটা নট কাম ব্যাক’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’ ইত্যাদি।

বিকেল পৌনে ৪টা থেকে সোয়া ৫টা পর্যন্ত শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় আশপাশে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। এ কর্মসূচি থেকে বিভিন্ন স্লোগান ভেসে আসে, যার মধ্যে ছিল ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটাপ্রথার কবর দে’, ‘দফা এক দাবি এক, কোটা নট কাম ব্যাক’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’ ইত্যাদি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও এ বিক্ষোভে অংশ নেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ওই সময়ের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম এ কর্মসূচি থেকে ঘোষণা দেন, আগামীকাল বেলা ১১টায় তাঁরা আবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হবেন। ওই দিন কোটা বিষয়ে আপিলের শুনানির রায় যেন শিক্ষার্থীদের পক্ষে আসে, এ আহ্বানও জানান তিনি।

এমপি সাইফুলের গাড়ি আটকে দেন জাবি শিক্ষার্থীরা

এ দিন ২০১৮ সালের পরিপত্রের পুনর্বহাল চেয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

এ দিন বেলা ৩টা নাগাদ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশপ্তক ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।

বেলা সোয়া ৩টা থেকে বিকেল ৪টা ৫০ পর্যন্ত এ অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। এ সময় ঢাকা-১৯ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলামের গাড়িবহর আটকে দেওয়া হয়। পরে তিনি বিকল্প পথ ব্যবহার করে চলে যান।

এ দিন বেলা ৩টা নাগাদ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশপ্তক ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবস্থান নেয়।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে যা ঘটেছিল

গত বছরের এই দিনে রেললাইন অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল জব্বার মোড়ে দুপুর সোয়া ১টা থেকে সোয়া ২টা পর্যন্ত প্রায় এক ঘণ্টা রেললাইন অবরোধ করেন তাঁরা। এ সময় আন্দোলনকারীরা ঢাকা থেকে মোহনগঞ্জগামী মহুয়া কমিউটার ট্রেন আটকে রাখেন।

এর আগে দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিল শেষে একটি প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেন শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে আরও যত ক্যাম্পাসে

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ দিন চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করেন।

এ ছাড়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ নানা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এ দিন আন্দোলনে শামিল হন।

বিএনপিকে দোষারোপ করেন ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সাভারের হেমায়েতপুরে এক জনসভার আয়োজন করা হয় এ দিন। সেই জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কোটা আন্দোলনের ওপর ভর করেছে বিএনপি। কিন্তু অন্যের কাঁধে ভর দিয়ে আন্দোলন করা যায় না।’

মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংবিধানসম্মত নয়: জিএম কাদের

এ দিন সংসদের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা জিএম কাদের বলেন, সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংবিধানসম্মত নয়৷ মুক্তিযোদ্ধাদের সবাই অনগ্রসর, এটি তিঁনি মানতে নারাজ বলেও জানান।

মুক্তিযোদ্ধাদের পরের প্রজন্মের জন্য বিশালসংখ্যক কোটা রাখা মুক্তিযুদ্ধের চেতনারই পরিপন্থী উল্লেখ করে জিএম কাদের বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত মত হলো, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পরের প্রজন্মের চাকরির জন্য বিশেষ বড় অংকের কোটা চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করা স্বাধীনতার চেতনার নামে স্বাধীনতার মূল উদ্দেশ্য, বৈষম্যমুক্ত ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ গঠন—এই মূল উদ্দেশ্যকে ধ্বংস করে।’

Ad 300x250

সম্পর্কিত