leadT1ad

২০০৮ থেকে ২০২৫

বাংলাদেশে চীনা এফ-৭ বিমানের ৪টি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা

স্ট্রিম ডেস্ক
প্রকাশ : ২১ জুলাই ২০২৫, ১৯: ৪৫
আপডেট : ২১ জুলাই ২০২৫, ২১: ২১
এফ-৭ বিমান। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া ছবি

এটাই প্রথম নয়। চীনের তৈরি এফ-৭ সিরিজের বিমান বাংলাদেশে এবারসহ মোট চারবার দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। প্রতিবারই নিহত হয়েছেন পাইলট।

সর্বশেষ রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর এফ-৭ বিজিআই সিরিজের একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে।

এই এফ-৭ সিরিজের বিমান দুর্ঘটনার ইতিহাসও কম নয়। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে এফ-৭ সিরিজের ৪টি বিমান দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। এই সিরিজের বিমানে তুলনামূলকভাবে উচ্চ দুর্ঘটনার হার লক্ষ করা গেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই সিরিজের বিমানটির অন্তত ১৫টি মারাত্মক দুর্ঘটনার খবর পাওয়া গেছে।

এর পেছনে কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞদের মত হচ্ছে, পুরোনো নকশা, আধুনিক ফ্লাইট কন্ট্রোল সিস্টেমের অনুপস্থিতি।

বাংলাদেশে এফ-৭ সিরিজের বিমান বিধ্বস্ত হয় চারবার

৮ এপ্রিল ২০০৮ (ঘাটাইল, টাঙ্গাইল)

২০০৮ সালের ৮ এপ্রিল দুপুরে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার পাহাড়িপাড়ায় একটি কলাবাগানে বিধ্বস্ত হয় যুদ্ধবিমান। এফ ৭ সিরিজের এই বিমানটি চালাচ্ছিলেন স্কোয়াড্রন লিডার মোর্শেদ হাসান।

২০০৮ সালের ৮ এপ্রিল দুপুরে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার পাহাড়িপাড়ায় একটি কলাবাগানে বিধ্বস্ত হয় যুদ্ধবিমান। ছবি: সংগৃহীত
২০০৮ সালের ৮ এপ্রিল দুপুরে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার পাহাড়িপাড়ায় একটি কলাবাগানে বিধ্বস্ত হয় যুদ্ধবিমান। ছবি: সংগৃহীত

মোর্শেদ হাসান প্রশিক্ষণ শেষ করে কুর্মিটোলা বিমান ঘাঁটির পথে ছিলেন। দুর্ঘটনার সময় বিমানে আগুন ধরে যায় এবং পাইলট প্যারাসুট ব্যবহার করে বেরিয়ে এলেও তিনি টিনের চালে পড়ে মারাত্মকভাবে আহত হন। তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। আইএসপিআর জানিয়েছিল, দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ ছিল যান্ত্রিক ত্রুটি।

২৯ জুন ২০১৫ (বঙ্গোপসাগর)

২০১৫ সালের ২৯ জুন সকালে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে উড্ডয়ন করার পর বঙ্গোপসাগরে বিধ্বস্ত হয় একটি এফ-৭ এমবি যুদ্ধবিমান। বিমানটি চালাচ্ছিলেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তাহমিদ। বিমানটি সকাল ১০টা ২৭ মিনিটে জহুরুল হক বিমানঘাঁটি থেকে উড্ডয়ন করেছিল। এরপর ১১টা ১০ মিনিটে রাডার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ১১টা ৩০ মিনিটের দিকে এটি বঙ্গোপসাগরে বিধ্বস্ত হয়। স্থানীয় জেলেরা পানিতে বিমানের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পান।

২০১৫ সালের ২৯ জুন সকালে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে উড্ডয়ন করার পর বঙ্গোপসাগরে বিধ্বস্ত হয় একটি এফ-৭ এমবি যুদ্ধবিমান। ছবি: সংগৃহীত
২০১৫ সালের ২৯ জুন সকালে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে উড্ডয়ন করার পর বঙ্গোপসাগরে বিধ্বস্ত হয় একটি এফ-৭ এমবি যুদ্ধবিমান। ছবি: সংগৃহীত

২৩ নভেম্বর ২০১৮ (মধুপুর, টাঙ্গাইল)

২০১৮ সালের ২৩ নভেম্বর দুপুরে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলায় রসুলপুর এলাকায় একটি এফ-৭ বিজি বিমান বিধ্বস্ত হয়। উইং কমান্ডার আরিফ আহমেদ দীপু বিমানটি চালাচ্ছিলেন। প্রশিক্ষণ চলাকালে বিমানটির ফুয়েল ট্যাঙ্কে আগুন ধরে যায়। মাটির কাছাকছি আসার পর তিনি বিমানটি থেকে বের হয়ে এলেও প্রাণে বাঁচেননি। পরে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

২০১৮ সালের ২৩ নভেম্বর দুপুরে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলায় রসুলপুর এলাকায় একটি এফ-৭ বিজি বিমান বিধ্বস্ত হয়। ছবি: সংগৃহীত
২০১৮ সালের ২৩ নভেম্বর দুপুরে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলায় রসুলপুর এলাকায় একটি এফ-৭ বিজি বিমান বিধ্বস্ত হয়। ছবি: সংগৃহীত

চীনের তৈরি এই সিরিজের বিমানের মূল নাম ‘চেংদু জি-৭’। চীনের বাইরে বিক্রি করার সংস্করণকে ‘এফ-৭’ বলা হয়। উত্তরায় বিধ্বস্ত এফ-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমানটি আসলে চেংদু এফ-৭ সিরিজের একটি আধুনিক সংস্করণ। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর জন্য বিশেষভাবে তৈরি সংস্করণটির নামকরণ করা হয়েছে ‘বিজিআই’। বিজিআই মানে ‘বাংলাদেশ গ্লাস-ককপিট ইমপ্রুভড’। ২০১৩ সালে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীকে সরবরাহের পর চীন এই সিরিজের উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। ফ্লাইট গ্লোবালের তথ্য থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর মোট ৩৬টি এফ-৭ সিরিজের যুদ্ধবিমান রয়েছে।

Ad 300x250

সম্পর্কিত