স্ট্রিম প্রতিবেদক
আলোচিত মডেল মেঘনা আলম আদালতকে বলেছেন, কেবল সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসুফ ঈসা আলদুহাইলানের সঙ্গেই তার ‘প্রেমের সম্পর্ক’, অন্য কারো সঙ্গে নয়। বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর হাকিম মাসুম মিয়ার আদালতে তোলা হলে অনুমতি নিয়ে এ কথা বলেন মেঘনা।
রূপবতীদের দিয়ে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের প্রেমের ফাঁদে ফেলার অভিযোগে ধানমণ্ডি থানায় দায়ের করা প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে শুনানির জন্য তাকে এ আদালতে হাজির করা হয়।
মেঘনাকে গত ৯ এপ্রিল রাতে রাজধানীর বসুন্ধরার বাসা থেকে আটক করে হেফাজতে নেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশ অনুযায়ী, পরদিন বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) আদালত মেঘনাকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিন আটক রাখার আদেশ দেন।
আটকের আগে তিনি ফেইসবুক লাইভে এসে বাসার ‘দরজা ভেঙে পুলিশ পরিচয়ধারীরা’ ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। তাকে আটক করার পরপরই লাইভটি বন্ধ হয়ে যায়। ১২ মিনিটের বেশি সময় ধরে চলা ওই লাইভ এরপর তার আইডি থেকে ডিলিট হয়ে যায়। তবে এর আগেই ফেইসবুকে তা ছড়িয়ে পড়ে।
কে এই মেঘনা আলম?
মেঘনা আলম মূলত একজন মডেল, তিনি মিস আর্থ বাংলাদেশ ২০২০ অর্জন করেছেন। যে প্রতিষ্ঠান মিস আর্থ বাংলাদেশের আয়োজন সেই প্রতিষ্ঠান তথা মিস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন-এর চেয়ারপারসনও তিনি।
পাশাপাশি মেঘনা একত্ব ফাউন্ডেশন নামে একটি সামাজিক উন্নয়নমূলক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী। তিনি নারী নেতৃত্ব বিষয়ক প্রশিক্ষক হিসেবেও কাজ করেছেন, যেখানে তিনি বিভিন্ন মেয়েদের অনুপ্রাণিত করেছেন এবং নেতৃত্ব দিতে শিখিয়েছেন।
মেঘনা মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ ২০১৯ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন। সেখানে তিনি ১৮তম স্থান অর্জন করেন।
পুলিশ কি বলছে?
পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, রিমান্ডে মেঘনা আলমের সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য বের করতে সমর্থ হয়েছে তারা। পুলিশ বলছে, ব্ল্যাকমেইল করে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করতেন মেঘনা আলম ও তার সহযোগীরা। টার্গেট ব্যক্তিকে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায়ের মূল দায়িত্ব ছিলেন মেঘনা আলমের সহযোগী মো. দেওয়ান সমীর (৫৮)।
পুলিশ বলছে, দেওয়ান সমীর কাওয়ালী নামের একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী এবং সানজানা নামের একটি ম্যানপাওয়ার প্রতিষ্ঠানের মালিক। এই ম্যানপাওয়ার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই দীর্ঘদিন ধরে মানব পাচার করে আসছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশের ভাষ্য, দেওয়ান সমীরের 'প্রতারক দলের' সদস্যরা বিভিন্ন সুন্দরী মেয়েদের দিয়ে হাইপ্রোফাইলের ব্যক্তিদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে ও অবৈধ সম্পর্ক তৈরি করে। পরে সুকৌশলে বিভিন্ন পন্থায় অর্থ আদায়ের চেষ্টা করে।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, দেওয়ান সমীরের চক্রের সর্বশেষ টার্গেট ছিলেন সৌদি আরবের সদ্য বিদায়ি রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ বিন ঈসা আল দুহাইলান। চক্রটি সৌদি রাষ্ট্রদূতের কাছে ৫ মিলিয়ন (৫০ লাখ) ডলার দাবি করেছিল। গত বছরের জানুয়ারিতে তারা এ টার্গেট নেয়।
গ্রেফতারের আগে কি লিখেছিলেন মেঘনা?
গত ২৫ মার্চ ফেসবুকে একটি আবেগপূর্ণ পোস্ট দেন মেঘনা আলম। এই পোস্টের মধ্য দিয়ে তিনি তাঁর সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসুফ আল দুহাইলানের একটি রোমান্টিক সম্পর্কের ঈঙ্গিত দেন।
ঈসা ইউসুফকে উদ্দেশ করে ওই পোস্টে মেঘনা লিখেন, "যখন তুমি আমাকে আংটি দিয়েছিলে, তুমি বলেছিলে, "আমি তোমাকে সম্মান করব, তোমার যত্ন নেব এবং চিরকাল তোমার রক্ষক হয়ে থাকব।" আর সত্যিই, কাজই কথার চেয়ে বড় প্রমাণ।
ধন্যবাদ আমাকে বাঁচানোর জন্য যখন আমি অ্যালার্জির কারণে জীবন সংকটে পড়েছিলাম। ধন্যবাদ ভালোবাসা দিবসে আমাকে ফুল পাঠানো ভুলে না যাওয়ার জন্য। ধন্যবাদ সেই খেজুরের জন্য, যেগুলো সৌদি আরবের বাদশাহ আমাদের দাতব্য কাজ এবং মানবতার প্রতি আমাদের ভালোবাসার জন্য পাঠিয়েছেন। ধন্যবাদ আমার জন্য প্রার্থনা করার জন্য। ধন্যবাদ সব উপহারগুলোর জন্য যেগুলো আমি ফিরিয়ে দিয়েছি, কারণ আমি তোমার ভালোবাসা আর যত্নকে সবকিছুর চেয়ে বেশি মূল্য দিই।
আল্লাহ যেন আমাকে সেই ক্ষমতা ও মর্যাদা দেন, যাতে আমি তোমার অসুস্থতার সময় তোমার জন্য প্রার্থনা করতে পারি, তোমার পাশে থাকতে পারি। আল্লাহ আমাদের দুজনকে যেন সত্য ও সম্মানের সঙ্গে আমাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করার তৌফিক দেন। ফি আমানিল্লাহ।
কি বলছে নাগরিকেরা?
মেঘনা আলমকে গ্রেফতারের প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। তারা বলছেন, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে এসেও পুলিশ সেই পুরনো পদ্ধতিতেই মেঘনাকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে, যা মেনে নেওয়ার মত নয়। পাশাপাশি মেঘনাকে হেনস্থা করা হচ্ছে বলেও দাবি করা হচ্ছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, শুধু গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানোতেই যেন কেউ থেমে থাকেনি — মেঘনা আলমের বিরুদ্ধে বেশ্যাকরণ লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে পুরা প্রক্রিয়ার দুর্বলতা স্পষ্ট। পিতৃতান্ত্রিক মননের উপর ভরসা করেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
এর আগে তিনি লিখেছিলেন, রাত ১০টায় আদালতে আনা হয়েছে তাকে (মেঘনা)। এরপর ১৯৭৪ সালের আইনে ১ মাসের কারাবাস দেওয়া হয়েছে। রাতে কেন আদালতকে বসতে হল? বিচারহীন নির্যাতন শুক্র-শনি জারি রাখার প্ল্যান ছিল নিশ্চয়ই। এরপর সামাজিক মাধ্যমের চাপে এই ব্যবস্থা! অন্যান্যদের পোস্টে জানতে পারছি সৌদি এম্বেসেডরের সাথে বাগদানের আংটি ফিরিয়ে দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন, তা থেকে বোঝা যায় তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছিলেন। প্রতারিত হওয়ার খবর প্রকাশ অপরাধ! বাংলাদেশের নারীদের বিয়ে সংক্রান্ত প্রতারণার ইতিহাস ভুড়ি ভুড়ি, তাতে আর একটি যোগ হল, এমন কি?! এইজন্যে প্রতিকারের কোন জায়গা নাই! সকল নাগরিককে এইভাবে ভয় দেখানো বন্ধ করে মেঘনাকে এইমুহূর্তে মুক্তি দেন।
আনু মুহাম্মদ লিখেছেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ মেঘনা আলমের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে কুটনীতিক সম্পর্ক নষ্ট করার’ যে অভিযোগ দিয়েছে তা বিভ্রান্তিকর ও অগ্রহণযোগ্য। রাষ্ট্র যদি একজন কুটনীতিকের ব্যক্তিগত বিদ্বেষের জের ধরে রাষ্ট্রীয় বাহিনী ব্যবহার করে নাগরিকের অধিকার হরণ করে তাহলে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হয় এবং কুটনৈতিক প্রশ্নে নতজানু অবস্থান প্রকাশ পায়।
বিশেষ ক্ষমতা আইন নিয়ে বিতর্ক
১৯৭৪ সালের আওয়ামী লীগ অধ্যুষিত সংসদে বিশেষ ক্ষমতা আইন পাশ হওয়ার সময় থেকেই এই আইন নিয়ে তীব্র সমালোচনা ছিল। বিশেষত, পাকিস্তান আমলের ১৯৫২ সালের পাকিস্তান নিরাপত্তা আইন, যা ছিল অত্যন্ত নিষ্ঠুর এবং কালাকানুন, তার বিরুদ্ধে যখন আওয়ামী লীগ তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছিল, তখনই একই দল ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশে সেই একই ধরনের নিবর্তনমূলক আইন পাশ করে।
এ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছিল আওয়ামী লীগ কি ক্ষমতায় এসে পাকিস্তানি স্বৈরশাসকদের মতো শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবে, নাকি সেই সাম্যের জন্য যে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল, তার বাস্তবায়ন ঘটাবে?
ইতিহাস বলছে, আওয়ামী লীগ— শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করার জন্য একাধিক কালাকানুন প্রবর্তন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্টের মত আইনও।
২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের জনগণ বিশেষভাবে প্রত্যাশা করেছিল যে সরকার সংস্কারের মাধ্যমে পুরনো সকল কালাকানুন বাতিল করবে এবং একটি নতুন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবে। কিন্তু যখন সরকার ১৯৭৪ সালের এই আইন প্রয়োগ করে মেঘনা আলমকে গ্রেফতার করে, তখন জনগণের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয় যে তাদের সংস্কারের আশা হয়তো একটি মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতে পরিণত হবে।
আলোচিত মডেল মেঘনা আলম আদালতকে বলেছেন, কেবল সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসুফ ঈসা আলদুহাইলানের সঙ্গেই তার ‘প্রেমের সম্পর্ক’, অন্য কারো সঙ্গে নয়। বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর হাকিম মাসুম মিয়ার আদালতে তোলা হলে অনুমতি নিয়ে এ কথা বলেন মেঘনা।
রূপবতীদের দিয়ে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের প্রেমের ফাঁদে ফেলার অভিযোগে ধানমণ্ডি থানায় দায়ের করা প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে শুনানির জন্য তাকে এ আদালতে হাজির করা হয়।
মেঘনাকে গত ৯ এপ্রিল রাতে রাজধানীর বসুন্ধরার বাসা থেকে আটক করে হেফাজতে নেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশ অনুযায়ী, পরদিন বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) আদালত মেঘনাকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিন আটক রাখার আদেশ দেন।
আটকের আগে তিনি ফেইসবুক লাইভে এসে বাসার ‘দরজা ভেঙে পুলিশ পরিচয়ধারীরা’ ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। তাকে আটক করার পরপরই লাইভটি বন্ধ হয়ে যায়। ১২ মিনিটের বেশি সময় ধরে চলা ওই লাইভ এরপর তার আইডি থেকে ডিলিট হয়ে যায়। তবে এর আগেই ফেইসবুকে তা ছড়িয়ে পড়ে।
কে এই মেঘনা আলম?
মেঘনা আলম মূলত একজন মডেল, তিনি মিস আর্থ বাংলাদেশ ২০২০ অর্জন করেছেন। যে প্রতিষ্ঠান মিস আর্থ বাংলাদেশের আয়োজন সেই প্রতিষ্ঠান তথা মিস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন-এর চেয়ারপারসনও তিনি।
পাশাপাশি মেঘনা একত্ব ফাউন্ডেশন নামে একটি সামাজিক উন্নয়নমূলক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী। তিনি নারী নেতৃত্ব বিষয়ক প্রশিক্ষক হিসেবেও কাজ করেছেন, যেখানে তিনি বিভিন্ন মেয়েদের অনুপ্রাণিত করেছেন এবং নেতৃত্ব দিতে শিখিয়েছেন।
মেঘনা মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ ২০১৯ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন। সেখানে তিনি ১৮তম স্থান অর্জন করেন।
পুলিশ কি বলছে?
পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, রিমান্ডে মেঘনা আলমের সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য বের করতে সমর্থ হয়েছে তারা। পুলিশ বলছে, ব্ল্যাকমেইল করে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করতেন মেঘনা আলম ও তার সহযোগীরা। টার্গেট ব্যক্তিকে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায়ের মূল দায়িত্ব ছিলেন মেঘনা আলমের সহযোগী মো. দেওয়ান সমীর (৫৮)।
পুলিশ বলছে, দেওয়ান সমীর কাওয়ালী নামের একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী এবং সানজানা নামের একটি ম্যানপাওয়ার প্রতিষ্ঠানের মালিক। এই ম্যানপাওয়ার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই দীর্ঘদিন ধরে মানব পাচার করে আসছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশের ভাষ্য, দেওয়ান সমীরের 'প্রতারক দলের' সদস্যরা বিভিন্ন সুন্দরী মেয়েদের দিয়ে হাইপ্রোফাইলের ব্যক্তিদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে ও অবৈধ সম্পর্ক তৈরি করে। পরে সুকৌশলে বিভিন্ন পন্থায় অর্থ আদায়ের চেষ্টা করে।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, দেওয়ান সমীরের চক্রের সর্বশেষ টার্গেট ছিলেন সৌদি আরবের সদ্য বিদায়ি রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ বিন ঈসা আল দুহাইলান। চক্রটি সৌদি রাষ্ট্রদূতের কাছে ৫ মিলিয়ন (৫০ লাখ) ডলার দাবি করেছিল। গত বছরের জানুয়ারিতে তারা এ টার্গেট নেয়।
গ্রেফতারের আগে কি লিখেছিলেন মেঘনা?
গত ২৫ মার্চ ফেসবুকে একটি আবেগপূর্ণ পোস্ট দেন মেঘনা আলম। এই পোস্টের মধ্য দিয়ে তিনি তাঁর সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসুফ আল দুহাইলানের একটি রোমান্টিক সম্পর্কের ঈঙ্গিত দেন।
ঈসা ইউসুফকে উদ্দেশ করে ওই পোস্টে মেঘনা লিখেন, "যখন তুমি আমাকে আংটি দিয়েছিলে, তুমি বলেছিলে, "আমি তোমাকে সম্মান করব, তোমার যত্ন নেব এবং চিরকাল তোমার রক্ষক হয়ে থাকব।" আর সত্যিই, কাজই কথার চেয়ে বড় প্রমাণ।
ধন্যবাদ আমাকে বাঁচানোর জন্য যখন আমি অ্যালার্জির কারণে জীবন সংকটে পড়েছিলাম। ধন্যবাদ ভালোবাসা দিবসে আমাকে ফুল পাঠানো ভুলে না যাওয়ার জন্য। ধন্যবাদ সেই খেজুরের জন্য, যেগুলো সৌদি আরবের বাদশাহ আমাদের দাতব্য কাজ এবং মানবতার প্রতি আমাদের ভালোবাসার জন্য পাঠিয়েছেন। ধন্যবাদ আমার জন্য প্রার্থনা করার জন্য। ধন্যবাদ সব উপহারগুলোর জন্য যেগুলো আমি ফিরিয়ে দিয়েছি, কারণ আমি তোমার ভালোবাসা আর যত্নকে সবকিছুর চেয়ে বেশি মূল্য দিই।
আল্লাহ যেন আমাকে সেই ক্ষমতা ও মর্যাদা দেন, যাতে আমি তোমার অসুস্থতার সময় তোমার জন্য প্রার্থনা করতে পারি, তোমার পাশে থাকতে পারি। আল্লাহ আমাদের দুজনকে যেন সত্য ও সম্মানের সঙ্গে আমাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করার তৌফিক দেন। ফি আমানিল্লাহ।
কি বলছে নাগরিকেরা?
মেঘনা আলমকে গ্রেফতারের প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। তারা বলছেন, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে এসেও পুলিশ সেই পুরনো পদ্ধতিতেই মেঘনাকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে, যা মেনে নেওয়ার মত নয়। পাশাপাশি মেঘনাকে হেনস্থা করা হচ্ছে বলেও দাবি করা হচ্ছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, শুধু গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানোতেই যেন কেউ থেমে থাকেনি — মেঘনা আলমের বিরুদ্ধে বেশ্যাকরণ লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে পুরা প্রক্রিয়ার দুর্বলতা স্পষ্ট। পিতৃতান্ত্রিক মননের উপর ভরসা করেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
এর আগে তিনি লিখেছিলেন, রাত ১০টায় আদালতে আনা হয়েছে তাকে (মেঘনা)। এরপর ১৯৭৪ সালের আইনে ১ মাসের কারাবাস দেওয়া হয়েছে। রাতে কেন আদালতকে বসতে হল? বিচারহীন নির্যাতন শুক্র-শনি জারি রাখার প্ল্যান ছিল নিশ্চয়ই। এরপর সামাজিক মাধ্যমের চাপে এই ব্যবস্থা! অন্যান্যদের পোস্টে জানতে পারছি সৌদি এম্বেসেডরের সাথে বাগদানের আংটি ফিরিয়ে দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন, তা থেকে বোঝা যায় তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছিলেন। প্রতারিত হওয়ার খবর প্রকাশ অপরাধ! বাংলাদেশের নারীদের বিয়ে সংক্রান্ত প্রতারণার ইতিহাস ভুড়ি ভুড়ি, তাতে আর একটি যোগ হল, এমন কি?! এইজন্যে প্রতিকারের কোন জায়গা নাই! সকল নাগরিককে এইভাবে ভয় দেখানো বন্ধ করে মেঘনাকে এইমুহূর্তে মুক্তি দেন।
আনু মুহাম্মদ লিখেছেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ মেঘনা আলমের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে কুটনীতিক সম্পর্ক নষ্ট করার’ যে অভিযোগ দিয়েছে তা বিভ্রান্তিকর ও অগ্রহণযোগ্য। রাষ্ট্র যদি একজন কুটনীতিকের ব্যক্তিগত বিদ্বেষের জের ধরে রাষ্ট্রীয় বাহিনী ব্যবহার করে নাগরিকের অধিকার হরণ করে তাহলে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হয় এবং কুটনৈতিক প্রশ্নে নতজানু অবস্থান প্রকাশ পায়।
বিশেষ ক্ষমতা আইন নিয়ে বিতর্ক
১৯৭৪ সালের আওয়ামী লীগ অধ্যুষিত সংসদে বিশেষ ক্ষমতা আইন পাশ হওয়ার সময় থেকেই এই আইন নিয়ে তীব্র সমালোচনা ছিল। বিশেষত, পাকিস্তান আমলের ১৯৫২ সালের পাকিস্তান নিরাপত্তা আইন, যা ছিল অত্যন্ত নিষ্ঠুর এবং কালাকানুন, তার বিরুদ্ধে যখন আওয়ামী লীগ তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছিল, তখনই একই দল ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশে সেই একই ধরনের নিবর্তনমূলক আইন পাশ করে।
এ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছিল আওয়ামী লীগ কি ক্ষমতায় এসে পাকিস্তানি স্বৈরশাসকদের মতো শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবে, নাকি সেই সাম্যের জন্য যে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল, তার বাস্তবায়ন ঘটাবে?
ইতিহাস বলছে, আওয়ামী লীগ— শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করার জন্য একাধিক কালাকানুন প্রবর্তন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্টের মত আইনও।
২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের জনগণ বিশেষভাবে প্রত্যাশা করেছিল যে সরকার সংস্কারের মাধ্যমে পুরনো সকল কালাকানুন বাতিল করবে এবং একটি নতুন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবে। কিন্তু যখন সরকার ১৯৭৪ সালের এই আইন প্রয়োগ করে মেঘনা আলমকে গ্রেফতার করে, তখন জনগণের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয় যে তাদের সংস্কারের আশা হয়তো একটি মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতে পরিণত হবে।
সাধারণত কোনো দেশের বাজেট প্রস্তাব হয়ে থাকে দেশটির সংসদেই। তবে এই মুহূর্তে বাংলাদেশে কোনো সংসদ ব্যবস্থা কার্যকর না থাকায় ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নতুন বাজেট উপস্থাপিত হচ্ছে ভিন্ন প্রক্রিয়ায়। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ সোমবার (২ জুন) বেলা ৩টায় উপস্থাপন করেছেন২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট। এই বাজেট
১৯ দিন আগেপ্রায় পাঁচ বছর আগে ঘটে যাওয়া সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যাকাণ্ডের মামলায় অবশেষে চূড়ান্ত রায় দিয়েছেন দেশের উচ্চ আদালত। বহুল আলোচিত এই মামলায় হাইকোর্টের রায়ে টেকনাফ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ এবং বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের তৎকালীন ইনচার্জ পরিদর্শক
১৯ দিন আগেসুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায় জামায়েতে ইসলামকে পূর্বের অবস্থানে ফিরিয়ে দিয়েছে। ফলে জামায়াতের নিবন্ধন ও দলীয় প্রতীক-দাঁড়িপাল্লা পুনর্বহাল হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা জানিয়েছেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ এইচ এম হামিদুর রহমান আজাদ।
১৯ দিন আগেজাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপ সোমবার (২ জুন) বিকেল ৪টায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে শুরু হচ্ছে। কমিশনের সভাপতি ও প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিতিতে আয়োজিত এই বৈঠকে , জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ ৩১টি দল ও জোটকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
১৯ দিন আগে