leadT1ad

ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডে বিস্ময়, বাড়ছে ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর মধ্যে সন্দেহ

স্ট্রিম ডেস্ক
প্রকাশ : ২২ জুলাই ২০২৫, ১৭: ৩২
নেতানিয়াহু ও ট্রাম্প। ছবি: এক্স থেকে নেওয়া

গাজা ও সিরিয়ায় ইসরায়েলের গত সপ্তাহের কর্মকাণ্ডে বিস্মিত ট্রাম্প। হোয়াইট হাউজের সূত্রে সিএনএন জানিয়েছে, ঘটনা দুটির পর নেতানিয়াহুকে ফোন করে এই সমস্যা দ্রুত সমাধান করতে বলেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

সূত্রমতে, দুই নেতার মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা আরো বাড়ছে।

গত বৃহস্পতিবার গাজার একমাত্র ক্যাথলিক গির্জায়ে ইসরায়েলের হামলার পর ট্রাম্প তাৎক্ষণিকভাবে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিলেন। নেতানিয়াহুকে ফোন করে নিজের অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে হামলা করা যে ভুলে হয়েছে এই মর্মে ইসরায়েলি নেতা যেন বিবৃতি প্রকাশ করেন তাও নিশ্চিত করেছিলেন ট্রাম্প।

গত সপ্তাহে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে সরকারি ভবন লক্ষ্য করে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ট্রাম্প একইভাবে বিস্মিত হন। ট্রাম্প প্রশাসন যখন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিকে পুনর্গঠনের জন্য কাজ করেছে তখনই এই হামলা করে ইসরায়েল।

সোমবার হোয়াইট হাউসে প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং নেতানিয়াহুর মধ্যে বেশ ভালোই সম্পর্ক ছিল। তাঁর দুজনের মধ্যে যোগাযোগও নিয়মিত হতো। কিন্তু সিরিয়ায় বোমা হামলা এবং গাজার ক্যাথলিক গির্জায় বোমা হামলার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অবাক হয়ে যান।’

ঘটনা দুটির পরপরই নেতানিয়াহুকে ফোন করে পরিস্থিতি সামাল দিতে বলেন ট্রাম্প।

সিরিয়ায় উত্তেজনা নিরসনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর প্রচেষ্টার দিকেও ইঙ্গিত করেন লিভিট। উল্লেখ্য যে, ট্রাম্প সম্প্রতি সিরিয়ার উপর থাকা নিষেধাজ্ঞা শিথিল করেছেন। সিরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট ও সাবেক বিদ্রোহী নেতা আহমেদ আল-শারার প্রতি নিজের সমর্থনও ব্যক্ত করেছিলেন তিনি।

চলতি মাসের শুরুতে হোয়াইট হাউসে নেতানিয়াহুকে আতিথ্য দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। যদিও দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলি এই নেতার সঙ্গে সম্পর্কের জটিলতা চলছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের। ঘনিষ্ঠ মিত্র হওয়া সত্ত্বেও ব্যক্তিগতভাবে ট্রাম্প ও নেতানিয়াহু ঘনিষ্ঠ নন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই জুটির মাঝে রয়েছে পারস্পরিক অবিশ্বাস।

অবিশ্বাস থাকার পরেও ইরানে ইসরায়েলের বিমান হামলার সঙ্গে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর ট্রাম্প ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন বলে মনে করা হয়। এই মাসের শুরুতে হোয়াইট হাউসের ব্লু রুমে এক নৈশভোজে নেতানিয়াহু শান্তি পুরস্কারের জন্য ট্রাম্পকে মনোনীত করে নোবেল কমিটিকে লেখা একটি চিঠি নাটকীয়ভাবে প্রদর্শন করেন।

ট্রাম্প আশা করেছিলেন, নেতানিয়াহুর চার দিনের ওয়াশিংটন সফর গাজায় যুদ্ধবিরতিতে অগ্রগতি আনবে। হামাসের হাতে আটক জিম্মিরা মুক্তি পাবে। অবরুদ্ধ গাজায় অনুমোদিত মানবিক সহায়তার পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে উল্লেখযোগ্যভাবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট সফরের আগে বারবার বলেছিলেন যে, তিনি সেই সপ্তাহে যুদ্ধবিরতি আশা করছেন।

কিন্তু নেতানিয়াহু কোনও যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত কোনো চুক্তি ঘোষণা না করেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করেছিলেন।

হামাসের কাছে মধ্যস্থতাকারীরা যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তির প্রস্তাব জমা দেওয়ার প্রায় এক সপ্তাহ হয়ে গেছে। এখনও সবাই গাজার হামাস নেতাদের প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন।

সোমবার হামাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে, গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তির বিষয়ে একটি চুক্তিতে সম্মত হতে তারা সর্বাত্মক চেষ্টা করছে।

গাজায় গির্জায় বোমা হামলায় তিনজন নিহত হওয়ার ঘটনায় ট্রাম্পের উদ্বেগ আরো বেড়েছে। প্রেস সেক্রেটারি লেভিট বলেন, ‘প্রেসিডেন্টের বার্তা হলো, মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘ সময় ধরে চলা এই সংঘাত আরো বেশি নৃশংস হয়ে ওঠেছে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে, আরও বেশি মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা করছেন তিনি। আমার মনে হয়, এমনটা হোক প্রেসিডেন্ট তা কখনই চাইবেন না। তিনি চান হত্যাকাণ্ড বন্ধ হোক।’

প্রেস সেক্রেটারি গাজায় ত্রাণ প্রবেশে মার্কিন প্রশাসনের অনুমতি প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন। গাজা উপত্যকায় ‘ফোঁটা ফোঁটা’সাহায্য পাঠানোয় ইসরায়েলের নিন্দা জানিয়েছেন ২৫টি পশ্চিমা দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মে মাসের শেষের দিকে শুধু ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে ১ হাজার জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।

প্রেস সেক্রেটারি লেভিট যুক্তি দিয়ে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কারণেই গাজায় ত্রাণ বিতরণ করা যাচ্ছে। তিনি এটি শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে চান। সেখানে যেন আরও প্রাণহানি না হয়।’লিভিট আরো বলেন, গত মার্কিন প্রশাসনের দুর্বলতার কারণে ট্রাম্প অত্যন্ত কঠিন এবং জটিল পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন।

লেভিটের মতে, ‘আমি মনে করি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে প্রশংসা করা উচিত। প্রেসিডেন্ট শান্তি দেখতে চান। তিনি এই বিষয়ে কোনো অস্পষ্টতা রাখেননি।’

Ad 300x250

ফ্যাসিবাদের প্রশ্নে সবাই ঐক্যবদ্ধ: প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে চার দলের বৈঠক শেষে আসিফ নজরুল

চার দলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক শেষ: সাম্প্রতিক বিষয় ও আগামীর পথচলা নিয়ে আলোচনা

চার রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন প্রধান উপদেষ্টা

৯ ঘণ্টা পর মাইলস্টোন থেকে বের হতে পারলেন দুই উপদেষ্টা

১৯৭২ থেকে ২০২৫: ঢাকায় ৬ বিমান দুর্ঘটনা

সম্পর্কিত