গত বছরের ১ জুলাই সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আনুষ্ঠানিকভাবে আন্দোলন শুরু হয়। মাস পেরিয়ে আন্দোলনটি রূপ নিয়েছিল সরকার পতনের ইতিহাসে। একনজরে দেখে নেওয়া যাক আন্দোলনের শুরু থেকে শেষ।
স্ট্রিম প্রতিবেদক
‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ নামে পরিচিত ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি হলো আজ মঙ্গলবার (১ জুলাই)। গত বছরের এই দিনে শুরু হয়েছিল আন্দোলনটি।
আন্দোলনের সূত্রপাত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের কোটা সংস্কার দাবির মাধ্যমে। পরে সেটি সরকারের দমন-নিপীড়নের ফলে পরিণত হয় গণমানুষের আন্দোলনে। এক পর্যায়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপর গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার, যার নেতৃত্ব নেন নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস।
কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেছিল ২০১৮ সালে। তখন শিক্ষার্থীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে চাকরিতে কোটা ব্যবস্থাই তুলে দেয় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। পরে ২০২৪ সালের ৫ জুন হাইকোর্টের এক রায়ে কোটা পুনর্বহাল করা হয়। এরপর ১ জুলাই থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে নতুন করে কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। শুরুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও শাহবাগকে কেন্দ্র করে আন্দোলন শুরু হলেও ক্রমে তা ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে।
ওই আন্দোলনের মধ্যেই চীন থেকে ফিরে ১৪ জুলাই সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকারের নাতি-পুতি’ বলে কটাক্ষ করেন। এতে শিক্ষার্থীরা ভীষণ ক্ষুব্ধ হন এবং ওই রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ শুরু হয়। শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিতে থাকেন, ‘তুমি কে আমি কে? রাজাকার রাজাকার। কে বলেছে কে বলেছে স্বৈরাচার স্বৈরাচার।’
এরপর দ্রুত এই বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে।
১-৬ জুলাই: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে আন্দোলন শুরু করে। তারা সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে ২০১৮ সালের সরকারি বিজ্ঞপ্তি পুনর্বহালের দাবিতে টিএসসি এলাকায় বিক্ষোভের ডাক দেয়।
পরদিন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করে।
এরপর ৬ জুলাই শিক্ষার্থীরা ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির ডাক দেয়।
৭ জুলাই: সারা দেশে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালিত হয়। ব্যাপক বিক্ষোভে অচল হয়ে যায় রাজধানী। ধারাবাহিক ভাবে পরের দিনও ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা আসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে।
৯ জুলাই: সারা দেশে সড়ক ও রেলপথের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সকাল-সন্ধ্যা ব্লকেড অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে আন্দোলনকারীরা। কোটা বহাল রেখে দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিলে আইনজীবীর মাধ্যমে পক্ষভুক্ত হন দুই শিক্ষার্থী।
১০ জুলাই: কোটা পুনর্বহাল করে হাইকোর্টের আদেশের ওপর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা, ৭ই আগস্ট পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়।
১৪ জুলাই: কোটা পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়ে হাই কোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ। ওই দিনই সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনার বলা ‘রাজাকার’ শব্দটির জের ধরে রাতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ।
১৫ জুলাই: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগসহ সরকার সমর্থকেরা।
১৬ জুলাই: সারা দেশে দিনভর ব্যাপক বিক্ষোভ ও সংঘর্ষ হয়। আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ সরকার সমর্থকেরা। এতে নিহতের ঘটনাও ঘটে। রংপুরে আন্দোলনকারী বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ পুলিশের গুলিতে নিহত হন।
১৭ জুলাই: আগের রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে ছাত্রলীগ নেতাদের বের করে দিয়ে কক্ষ ভাঙচুর করা হয়। আগের দিন নিহত শিক্ষার্থীদের স্মরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গায়েবানা জানাজা করতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ হয়।
এ দিন বিক্ষোভে সর্বাত্মকভাবে নেমে আসে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন শেখ হাসিনা। তিনি শীর্ষ আদালতের রায় আসা পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান। কিন্তু রাতেই যাত্রাবাড়ী এলাকায় সংঘাতের সূত্রপাত হয়। যাত্রাবাড়ীতে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের টোলপ্লাজা আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। ওই রাত থেকে মোবাইল ইন্টারনেটও বন্ধ করা হয়।
১৮ জুলাই: দেশব্যাপী প্রতিরোধ, সহিংসতা, সংঘর্ষ ও গুলি করা হয়। রাজধানী ছাড়াও দেশের ৪৭টি জেলায় দিনভর বিক্ষোভ, অবরোধ, পালটাপালটি ধাওয়া, পুলিশের হামলা-গুলি ও সংঘাতের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় নিহত ও আহত হয়েছেন অনেকেই। ফলে সারা দেশে বিজিবি মোতায়েন করা হয়। এদিন রাতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়।
১৯ জুলাই: কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ বা সর্বাত্মক অবরোধের কর্মসূচি ঘিরে রাজধানী ঢাকায় ব্যাপক সংঘর্ষ, হামলা, ভাঙচুর, গুলি, অগ্নিসংযোগ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। আন্দোলনকারীরা জানান, ৯ দফা দাবি না মানা পর্যন্ত চলবে ‘শাটডাউন’।
২০ জুলাই: এ দিন দেশজুড়ে কারফিউ, সেনা মোতায়েন করা হয়। সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত কারফিউ চলবে। এছাড়াও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
২১ জুলাই: সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পুনর্বহাল-সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় সামগ্রিকভাবে বাতিল (রদ ও রহিত) করে দেশের সর্বোচ্চ আদালত রায় দেন। রায়ে বলা হয়, কোটাপ্রথা হিসাবে মেধাভিত্তিক ৯৩ শতাংশ। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ; ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ১ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। একই দিন চার দফা দাবি পূরণের জন্য বৈষম্যবারোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেন।
২২ জুলাই: সোমবার কোটাপ্রথা সংস্কার করে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী তৈরি করা প্রজ্ঞাপনে অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী। রাতে সীমিত আকারে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালু হয়।
২৪ জুলাই: ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সংঘর্ষ হয়। কোটা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ, আবু বাকের মজুমদার ও রিফাত রশীদের খোঁজ পাওয়া যায়। নিখোঁজ থাকার পাঁচ দিন পর আসিফ ও বাকেরকে চোখ বাঁধা অবস্থায় ফেলে যাওয়া হয়েছে বলে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে দুজনই জানান। রিফাত আত্মগোপনে আছেন বলে জানানো হয়।
২৫ জুলাই: এ দিন চিকিৎসাধীন আরও তিনজনের মৃত্যু হয়। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয় ছুটির দুদিন —শুক্র ও শনিবার কারফিউ শিথিল থাকবে ৯ ঘণ্টা।
২৬ জুলাই: এলাকা ভাগ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ‘ব্লক রেইড’ চালায়। চলে সারা দেশে অভিযান। সারা দেশে অন্তত ৫৫৫টি মামলা হয়। গ্রেপ্তারের সংখ্যা দাঁড়ায় ছয় হাজার ২৬৪টিতে। চট্টগ্রামে ৩০ শিক্ষার্থী গ্রেফতারের খবর পাওয়া যায়। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সংঘর্ষে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আরও তিনজনের মৃত্যু হয়। নাহিদ ইসলামসহ কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন সমন্বয়ককে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে নিজেদের হেফাজতে নেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। অপর দুই সমন্বয়ক হলেন আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদার।
২৭ জুলাই: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরও দুই সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহকে হেফাজতে নেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। শেখ হাসিনা জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) চিকিৎসাধীন আহত ব্যক্তিদের দেখতে যান। গুরুতর আহত চিকিৎসাধীন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন। হাসপাতালে আহতদের দেখার পর সেতু ভবন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ ও টোল প্লাজা দেখেন তিনি।
২৮ জুলাই: কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুমকে হেফাজতে নেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। পরে ডিবির হেফাজতে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয়জন সমন্বয়ক এক ভিডিও বার্তায় সব কর্মসূচি প্রত্যাহারের কথা বলেন। ডিবি কার্যালয়ে ধারণ করা একটি ভিডিও বার্তা রাত ৯টার দিকে গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
রাত ৯টার দিকে নাহিদ ইসলামসহ ছয় সমন্বয়কের ওই ভিডিও বার্তা আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পৃথক আরেকটি বার্তায় তিন সমন্বয়ক মাহিন সরকার, আব্দুল কাদের ও আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, ‘অস্ত্রের মুখে ডিবি অফিসে ছয় সমন্বয়কের ভিডিও বিবৃতি নেওয়া হয়েছে।’ এদিন মোবাইল ইন্টারনেট সেবা চালু হয়।
৩০ জুলাই: হত্যার বিচার চেয়ে মুখে লাল কাপড় বেঁধে মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের প্রোফাইল লাল রঙের ফ্রেমে রাঙায় লাখ লাখ মানুষ। অন্যদিকে সরকার-সমর্থকদের অনেকে ফেসবুক প্রোফাইলে কালো রঙের ফ্রেম জুড়েছেন। এ দিন ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা আসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে।
৩১ জুলাই: মার্চ ফর জাস্টিস কর্মসূচির পর নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশ। এ দিনের কর্মসূচির নাম দেওয়া হয় ‘রিমেম্বারিং আওয়ার হিরোস’।
১ আগস্ট: গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ দিন জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার।
৩ আগস্ট: কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবি ঘোষণা করা হয়।
৪ আগস্ট: ঢাকায় লং-মার্চের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
৫ আগস্ট: এ দিন সকালেও রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে ছাত্র-জনতার সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষ হয়। গুলিতে অনেক শিক্ষার্থী নিহত হন। তবে দুপুর ১২টার দিকে সংবাদমাধ্যমে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জাতির উদ্দেশে ভাষণের ঘোষণা দেন। তখনই রাজধানীর বুকে ছাত্র-জনতার ঢল নামে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া লাখো মানুষের সমাবেশ বেলা আড়াইটার দিকে যাত্রা করে গণভবনের দিকে। এরপর জনগণের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং অন্তবর্তী সরকার গঠনের কথা বলেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
সেনাপ্রধানের ভাষণের পরই উচ্ছ্বসিত ছাত্র-জনতার মিছিলে মিছিলে স্লোগান ছিল, ‘কী হয়েছে কী হয়েছে, শেখ হাসিনা পালাইছে’।
৩৬ দিন আগে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার চেয়ে শুরু হওয়া আন্দোলন ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ নামে পরিচিত ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি হলো আজ মঙ্গলবার (১ জুলাই)। গত বছরের এই দিনে শুরু হয়েছিল আন্দোলনটি।
আন্দোলনের সূত্রপাত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের কোটা সংস্কার দাবির মাধ্যমে। পরে সেটি সরকারের দমন-নিপীড়নের ফলে পরিণত হয় গণমানুষের আন্দোলনে। এক পর্যায়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপর গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার, যার নেতৃত্ব নেন নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস।
কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেছিল ২০১৮ সালে। তখন শিক্ষার্থীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে চাকরিতে কোটা ব্যবস্থাই তুলে দেয় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। পরে ২০২৪ সালের ৫ জুন হাইকোর্টের এক রায়ে কোটা পুনর্বহাল করা হয়। এরপর ১ জুলাই থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে নতুন করে কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। শুরুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও শাহবাগকে কেন্দ্র করে আন্দোলন শুরু হলেও ক্রমে তা ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে।
ওই আন্দোলনের মধ্যেই চীন থেকে ফিরে ১৪ জুলাই সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকারের নাতি-পুতি’ বলে কটাক্ষ করেন। এতে শিক্ষার্থীরা ভীষণ ক্ষুব্ধ হন এবং ওই রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ শুরু হয়। শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিতে থাকেন, ‘তুমি কে আমি কে? রাজাকার রাজাকার। কে বলেছে কে বলেছে স্বৈরাচার স্বৈরাচার।’
এরপর দ্রুত এই বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে।
১-৬ জুলাই: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে আন্দোলন শুরু করে। তারা সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে ২০১৮ সালের সরকারি বিজ্ঞপ্তি পুনর্বহালের দাবিতে টিএসসি এলাকায় বিক্ষোভের ডাক দেয়।
পরদিন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করে।
এরপর ৬ জুলাই শিক্ষার্থীরা ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির ডাক দেয়।
৭ জুলাই: সারা দেশে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালিত হয়। ব্যাপক বিক্ষোভে অচল হয়ে যায় রাজধানী। ধারাবাহিক ভাবে পরের দিনও ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা আসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে।
৯ জুলাই: সারা দেশে সড়ক ও রেলপথের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সকাল-সন্ধ্যা ব্লকেড অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে আন্দোলনকারীরা। কোটা বহাল রেখে দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিলে আইনজীবীর মাধ্যমে পক্ষভুক্ত হন দুই শিক্ষার্থী।
১০ জুলাই: কোটা পুনর্বহাল করে হাইকোর্টের আদেশের ওপর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা, ৭ই আগস্ট পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়।
১৪ জুলাই: কোটা পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়ে হাই কোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ। ওই দিনই সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনার বলা ‘রাজাকার’ শব্দটির জের ধরে রাতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ।
১৫ জুলাই: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগসহ সরকার সমর্থকেরা।
১৬ জুলাই: সারা দেশে দিনভর ব্যাপক বিক্ষোভ ও সংঘর্ষ হয়। আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ সরকার সমর্থকেরা। এতে নিহতের ঘটনাও ঘটে। রংপুরে আন্দোলনকারী বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ পুলিশের গুলিতে নিহত হন।
১৭ জুলাই: আগের রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে ছাত্রলীগ নেতাদের বের করে দিয়ে কক্ষ ভাঙচুর করা হয়। আগের দিন নিহত শিক্ষার্থীদের স্মরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গায়েবানা জানাজা করতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ হয়।
এ দিন বিক্ষোভে সর্বাত্মকভাবে নেমে আসে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন শেখ হাসিনা। তিনি শীর্ষ আদালতের রায় আসা পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান। কিন্তু রাতেই যাত্রাবাড়ী এলাকায় সংঘাতের সূত্রপাত হয়। যাত্রাবাড়ীতে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের টোলপ্লাজা আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। ওই রাত থেকে মোবাইল ইন্টারনেটও বন্ধ করা হয়।
১৮ জুলাই: দেশব্যাপী প্রতিরোধ, সহিংসতা, সংঘর্ষ ও গুলি করা হয়। রাজধানী ছাড়াও দেশের ৪৭টি জেলায় দিনভর বিক্ষোভ, অবরোধ, পালটাপালটি ধাওয়া, পুলিশের হামলা-গুলি ও সংঘাতের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় নিহত ও আহত হয়েছেন অনেকেই। ফলে সারা দেশে বিজিবি মোতায়েন করা হয়। এদিন রাতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়।
১৯ জুলাই: কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ বা সর্বাত্মক অবরোধের কর্মসূচি ঘিরে রাজধানী ঢাকায় ব্যাপক সংঘর্ষ, হামলা, ভাঙচুর, গুলি, অগ্নিসংযোগ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। আন্দোলনকারীরা জানান, ৯ দফা দাবি না মানা পর্যন্ত চলবে ‘শাটডাউন’।
২০ জুলাই: এ দিন দেশজুড়ে কারফিউ, সেনা মোতায়েন করা হয়। সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত কারফিউ চলবে। এছাড়াও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
২১ জুলাই: সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পুনর্বহাল-সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় সামগ্রিকভাবে বাতিল (রদ ও রহিত) করে দেশের সর্বোচ্চ আদালত রায় দেন। রায়ে বলা হয়, কোটাপ্রথা হিসাবে মেধাভিত্তিক ৯৩ শতাংশ। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ; ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ১ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। একই দিন চার দফা দাবি পূরণের জন্য বৈষম্যবারোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেন।
২২ জুলাই: সোমবার কোটাপ্রথা সংস্কার করে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী তৈরি করা প্রজ্ঞাপনে অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী। রাতে সীমিত আকারে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালু হয়।
২৪ জুলাই: ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সংঘর্ষ হয়। কোটা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ, আবু বাকের মজুমদার ও রিফাত রশীদের খোঁজ পাওয়া যায়। নিখোঁজ থাকার পাঁচ দিন পর আসিফ ও বাকেরকে চোখ বাঁধা অবস্থায় ফেলে যাওয়া হয়েছে বলে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে দুজনই জানান। রিফাত আত্মগোপনে আছেন বলে জানানো হয়।
২৫ জুলাই: এ দিন চিকিৎসাধীন আরও তিনজনের মৃত্যু হয়। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয় ছুটির দুদিন —শুক্র ও শনিবার কারফিউ শিথিল থাকবে ৯ ঘণ্টা।
২৬ জুলাই: এলাকা ভাগ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ‘ব্লক রেইড’ চালায়। চলে সারা দেশে অভিযান। সারা দেশে অন্তত ৫৫৫টি মামলা হয়। গ্রেপ্তারের সংখ্যা দাঁড়ায় ছয় হাজার ২৬৪টিতে। চট্টগ্রামে ৩০ শিক্ষার্থী গ্রেফতারের খবর পাওয়া যায়। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সংঘর্ষে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আরও তিনজনের মৃত্যু হয়। নাহিদ ইসলামসহ কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন সমন্বয়ককে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে নিজেদের হেফাজতে নেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। অপর দুই সমন্বয়ক হলেন আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদার।
২৭ জুলাই: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরও দুই সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহকে হেফাজতে নেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। শেখ হাসিনা জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) চিকিৎসাধীন আহত ব্যক্তিদের দেখতে যান। গুরুতর আহত চিকিৎসাধীন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন। হাসপাতালে আহতদের দেখার পর সেতু ভবন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ ও টোল প্লাজা দেখেন তিনি।
২৮ জুলাই: কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুমকে হেফাজতে নেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। পরে ডিবির হেফাজতে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয়জন সমন্বয়ক এক ভিডিও বার্তায় সব কর্মসূচি প্রত্যাহারের কথা বলেন। ডিবি কার্যালয়ে ধারণ করা একটি ভিডিও বার্তা রাত ৯টার দিকে গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
রাত ৯টার দিকে নাহিদ ইসলামসহ ছয় সমন্বয়কের ওই ভিডিও বার্তা আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পৃথক আরেকটি বার্তায় তিন সমন্বয়ক মাহিন সরকার, আব্দুল কাদের ও আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, ‘অস্ত্রের মুখে ডিবি অফিসে ছয় সমন্বয়কের ভিডিও বিবৃতি নেওয়া হয়েছে।’ এদিন মোবাইল ইন্টারনেট সেবা চালু হয়।
৩০ জুলাই: হত্যার বিচার চেয়ে মুখে লাল কাপড় বেঁধে মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের প্রোফাইল লাল রঙের ফ্রেমে রাঙায় লাখ লাখ মানুষ। অন্যদিকে সরকার-সমর্থকদের অনেকে ফেসবুক প্রোফাইলে কালো রঙের ফ্রেম জুড়েছেন। এ দিন ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা আসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে।
৩১ জুলাই: মার্চ ফর জাস্টিস কর্মসূচির পর নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশ। এ দিনের কর্মসূচির নাম দেওয়া হয় ‘রিমেম্বারিং আওয়ার হিরোস’।
১ আগস্ট: গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ দিন জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার।
৩ আগস্ট: কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবি ঘোষণা করা হয়।
৪ আগস্ট: ঢাকায় লং-মার্চের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
৫ আগস্ট: এ দিন সকালেও রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে ছাত্র-জনতার সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষ হয়। গুলিতে অনেক শিক্ষার্থী নিহত হন। তবে দুপুর ১২টার দিকে সংবাদমাধ্যমে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জাতির উদ্দেশে ভাষণের ঘোষণা দেন। তখনই রাজধানীর বুকে ছাত্র-জনতার ঢল নামে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া লাখো মানুষের সমাবেশ বেলা আড়াইটার দিকে যাত্রা করে গণভবনের দিকে। এরপর জনগণের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং অন্তবর্তী সরকার গঠনের কথা বলেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
সেনাপ্রধানের ভাষণের পরই উচ্ছ্বসিত ছাত্র-জনতার মিছিলে মিছিলে স্লোগান ছিল, ‘কী হয়েছে কী হয়েছে, শেখ হাসিনা পালাইছে’।
৩৬ দিন আগে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার চেয়ে শুরু হওয়া আন্দোলন ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
‘গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার যারা হয়েছেন, তাদের তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিটি পরিবারের সম্মানজনক পুনর্বাসন ও নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে হবে।’
৩ ঘণ্টা আগেযশোর শহরে নির্মাণাধীন একটি বহুতল ভবনের ঝুল-বারান্দা ধসে দুজন প্রকৌশলীসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এতে ভবনের নির্মাণকাজের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ভবনটি নির্মাণ ঝুঁকির বিষয়ে জানালেও ঠিকাদার আমলে নেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
৪ ঘণ্টা আগেকুষ্টিয়ার মিরপুরে পূর্ববিরোধের জেরে ছাত্রদল নেতা হাতুরি দিয়ে পিটিয়ে জমির উদ্দিন (৪৮) নামে এক জাসদকর্মীকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর প্রতিক্রিয়ায় অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা অনিক খানের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করেছে নিহত ব্যক্তির পরিবারের লোকজন।
৫ ঘণ্টা আগেজুলাই-আগস্ট মাসজুড়ে গত বছরের প্রতিটি দিনকে পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্য সামনে রেখে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পুনরুত্থান কর্মসূচির উদ্বোধন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
৭ ঘণ্টা আগে