গোপালগঞ্জে মৃত্যু
স্ট্রিম প্রতিবেদক
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির সমাবেশকে কেন্দ্র করে ১৬ জুলাই স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও সশস্ত্র বাহিনীর সংঘর্ষে নিহত পাঁচ ব্যক্তির ওপর থেকে মানুষের মনোযোগ ধীরে ধীরে সরে গেছে।
ঘোষণা করা হয়েছে, নিহত ব্যক্তিরা আওয়ামী লীগের কর্মী বা সমর্থক। মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে আত্মরক্ষা করতে গিয়ে। প্রত্যেকেরই মৃত্যু হয়েছে গুলিবিদ্ধ হয়ে।
সংবাদ মাধ্যম থেকে জানা গেছে, নিহত ব্যক্তিদের মৃতদেহ হাসপাতাল থেকে জোর করে নিয়ে গেছে পরিবার। ময়নাতদন্ত করার সুযোগ দেয়নি তারা। স্ট্রিমের কাছে এই দাবি তীব্রভাবে অস্বীকার করেছে পরিবারগুলো।
মৃত্যুর পাঁচ দিন পর ২১ জুলাই আদালতের নির্দেশে তিনজনের মৃতদেহ কবর থেকে তোলা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ পাঠানো হয় গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে। বাকি দুজনের একজন ছিলেন সনাতন ধর্মের অনুসারী। তাঁর মৃতদেহ আগেই দাহ করা হয়েছে। অন্যজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান, সেখানেই তাঁর ময়নাতদন্ত করা হয়।
তাড়াহুড়া করে মৃতদের দাফন করা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সঙ্গে সঙ্গে ইচ্ছাকৃতভাবে ময়নাতদন্ত না করেই মৃতদেহ হস্তান্তরের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জীবিতেষ বিশ্বাস।
২০ জুলাই জীবিতেষ স্বাক্ষরিত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘প্রকৃত ঘটনা এই যে উল্লেখিত তারিখে ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পর জরুরি বিভাগে প্রথম মৃতদেহটি আসে, কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণার পর রোগীর স্বজনদের লাশ ময়না তদন্তের কার্যক্রম শেষ করে লাশ নেয়ার কথা বললে স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে ওঠে এবং একপর্যায়ে জোরপূর্বক লাশ নিয়ে যায়। পরে বাকি মৃতদেহগুলোর স্বজনেরা ময়নাতদন্ত করাতে রাজি হয় না এবং হাসপাতালে কর্মরত কর্মচারীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরন করে জোরপূর্বক মৃতদেহ নিয়ে যায়।’
নিহতের ঘটনায় পরিবার এবং পুলিশ কেউই মামলা করেনি। এরপর আদালত মৃতদেহ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্ত করার নির্দেশ দেন।
জীবিতেষ বিশ্বাস স্বাক্ষরিত ঢাকা স্ট্রিমের হাতে আসা একটি নথিতে বলা হয়েছে, হাসপাতালে মোট চারটি মৃতদেহ আনা হয়েছিল। ভুক্তভোগীদের আত্মীয়েরা জোর করে সেগুলো নিয়ে যায়। এই নথিটি ১৬ জুলাইয়ের।
নিহত পাঁচজনের মধ্যে ২ জনের বয়স ১৮ বছরের কম। অন্য ২ জনের বয়স ৩০-এর কোঠায়। একজনের বয়স ২৫ বছর। এর মধ্যে তিনজন নিম্ন আয়ের পরিবার থেকে এসেছেন।
নিহতদের দুজন শ্রমিক, একজন রিকশাচালক এবং অন্য দুজনের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তাঁরা সবাই ছিলেন গোপালগঞ্জ শহরের বাসিন্দা। পরিবারের দাবি, নিহত ব্যক্তিরা ঘটনার দিন পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় বা তাঁদের কর্মক্ষেত্রের কাছে গুলিবিদ্ধ হন।
স্ট্রিম অনুসন্ধান করে নিহতদের মধ্যে শুধু একজনের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুঁজে পেয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে আমাদের প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সেদিনের বিক্ষোভকারীদের অনেকেই ফেসবুকে ভুয়া অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেছেন। তাঁদের অ্যাকাউন্টে প্রোফাইল পিকচার বা চিহ্নিত করা যায় এমন কিছু ছিল না।
সোহেল রানার (৩৫) পৈতৃক বাড়ি ছিল গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব টুঙ্গিপাড়া গ্রামে। তিনি ছিলেন ইদ্রিস আলী মোল্লা এবং লাইলি বেগমের একমাত্র সন্তান। গ্রামে তাঁদের সম্পত্তি থাকলেও, কেউ সেখানে থাকতেন না। বাবার চাকরির সুবাদে ইদ্রিস গোপালগঞ্জ শহরের বেদগ্রামের পূর্ব মিয়াপাড়ায় একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। সোহেল ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্য। সোহেলের গোপালগঞ্জ শহরের চৌরঙ্গী এলাকার কেরামত আলী প্লাজায় একটি মোবাইল ফোনের দোকান ছিল। তাঁর এক ও পাঁচ বছর বয়সী দুটি ছেলে সন্তান আছে।
সোহেলের চাচা এবং কয়েকজন স্থানীয় ব্যক্তি দাবি করেছেন, কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না সোহেল।
সোহেলের বাবা ইদ্রিস মোল্লা দাবি করেন, ঘটনার দিন হট্টগোল শুনে কী ঘটছে তা দেখার জন্য সোহেল দোকান থেকে বেরিয়ে চৌরঙ্গীতে গিয়েছিলেন। সেখানে পৌঁছামাত্র তাঁর বুকে, পায়ে ও পেটে তিনটি গুলি লাগে। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
১৭ জুলাই সকালে ময়নাতদন্ত ছাড়াই সোহেলের মৃতদেহ হাসপাতাল থেকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়। সেদিন বিকেলে সোহেলের গ্রামের বাড়িতে প্লাস্টিকের শিটে ঢাকা একটি কবর দেখা যায়।
ইদ্রিস মোল্লা বলেন, ‘সে কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল না। এ কারণে আমরা বুঝতে পারছি না কীভাবে এবং কেন ওরা তাঁকে হত্যা করেছে। কোনোভাবে সোহেলের লাশ উদ্ধার করে আমরা এখানে দাফন করেছি।’
সেদিন কেন ময়নাতদন্ত করাতে রাজি হননি জানতে চাইলে ইদ্রিস বলেন, ‘ময়নাতদন্তে আমাদের কোনো আপত্তি ছিল না, এখন ছয় দিন পর কেন এটি করা হচ্ছে, এর কারণ কী?’
স্ট্রিম সোহেলের ফেসবুক প্রোফাইল ঘেঁটে দেখেছে, সেদিন সোহেল সশস্ত্র বাহিনী এবং আওয়ামী লীগ সমর্থকদের মধ্যে ঘটে যাওয়া সংঘর্ষের স্থান থেকে ফেসবুক লাইভ করেছিলেন।
সোহেলের অন্য পুরোনো পোস্ট, বিশেষ করে গত বছরের জুলাই এবং আগস্ট মাসের পোস্ট দেখলে তিনি যে আওয়ামী লীগ সমর্থক ছিলেন পুলিশের এ দাবি আরও জোরালো হয়।
রমজান কাজীর (১৮) বাড়ি ছিল কোটালীপাড়া উপজেলার বানধাবাড়ি ইউনিয়নের হরিণাঘাট গ্রামে।
২০ বছর আগে তাঁর বাবা কামরুল কাজী পরিবারের সঙ্গে জেলা শহরে চলে যান। তখন থেকে তাঁরা শহরের বিসিক এলাকার মৌলভীপাড়ায় একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন।
রমজানের জন্ম ও বেড়ে ওঠা গোপালগঞ্জ শহরেই। সেখানে তিনি ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। তাঁর বাবা শহরের শরীফ মেটালের বিভিন্ন ফার্নিচার ভ্যানে ডেলিভারি করে থাকেন। তাঁর মা গৃহকর্মীর কাজ করেন। পরিবারের প্রয়োজনে মাত্র ছয় মাস আগে টাইলস মিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করেন রমজান। তিনিই ছিলেন পরিবারের প্রধান উপার্জনকারী ব্যক্তি। ময়নাতদন্ত ছাড়াই বৃহস্পতিবার শহরে তাঁর আবাস এলাকায় তাঁকে এলাকায় দাফন করা হয়েছিল।
রমজানের এক চাচা দাবি করেছেন যে হাসপাতাল ময়নাতদন্ত ছাড়াই মৃতদেহ আত্মীয়দের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। পরে শহরের কবরস্থান মসজিদে জানাজা শেষে রাতেই সেখানে দাফন করা হয় তাঁকে।
এদিকে রমজান কাজীর মৃত্যুর পর গোপালগঞ্জ শহরে ২০ জুলাই দুপুরে গিয়ে তাদের ভাড়া বাড়িতে কাউকে পাওয়া যায়নি।
ইমন তালুকদারের (১৮) বাড়ি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ভেড়ার বাজার গ্রাম। আজাদ তালুকদার ও রোকসানা বেগমের পাঁচ সন্তানের তিনি একজন। ইমনের বাবা অপ্রকৃতস্থ ও মা অসুস্থ। তিন ভাইয়ের মধ্যে ইমন দ্বিতীয়। পরিবারিকভাবে অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো নয়।
ইমন শহরের মনোহরি পট্টির একটি ক্রোকারিজের দোকানের কর্মচারীর কাজ করতেন। ঘটনার দিন (১৬ জুলাই) বুধবার দুপুরের দিকে তিনি গোপলগঞ্জ বড় বাজার এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন। বৃহস্পতিবার সকালে পৌর কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়েছে ময়নাতদন্ত ছাড়াই।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইমনের এক আত্মীয় বলেন, ‘হসপিটালে যায়েই মৃত দেখছি ওরে। একটা মৃত মানুষও হসপিটালে গেলে যে ট্রিমমেন্ট করে, তাও তারে করে নাই। বাম হাতে (কাঁধে) যে ক্ষত আছে, সেখান থেকে রক্ত বারাতেই (বের হতে) আছে। ফ্লোর পুরো ভাইসে (ভেসে) যাইতেছে। হেও ডাক্তাররা কিছু করে নাই।’
ময়নাতদন্ত না করা নিয়ে ওই আত্মীয় বলেন, ‘হাসপাতাল থেকে লাশ নিয়ে এসে প্রথমে আমরা থানায় গেছি। থানায় যে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা ছিল, তারা বলছে হাসপিটালে নিয়ে যান। তারা কেউ সাথে যাই নাই, আমরা হসপিটালে গেছি।’
ওই আত্মীয় আরও বলেন, ‘আমরা তো পোস্টমার্টেম করার জন্যই হসপিটালে গেছি আবার। সেখানে ডাক্তাররা আমাকে ডাইরেক্টলি বলছে, লাশ নিয়ে যান, পরবর্তীতে সমস্যা হতি পারে। আমরা কইছি, স্যার আমরা তো পোস্টমর্টেম করার জন্যই আইছি, থানা থেকেই কইছে। তারা কয়, আপনারা লাশ নিয়ে চলে যান, পরবর্তীতে লাশের কিছু হইলে আমাদের কইতি পারবেন না।’
দীপ্ত সাহার মৃত্যুর পর গোপালগঞ্জে বর্তমান ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা তাঁকে সংগঠনের সদস্য বলে দাবি করেন। তবে তাঁর পরিবার তা অস্বীকার করেছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, দীপ্ত সাহা ছিলেন শহরের উদয়ন রোর্ডের বাসিন্দা। তাঁর বাবা সন্তোষ সাহা মারা গেছেন। বড় ভাই সঞ্জয় সাহার সঙ্গে তিনি শহরের চৌরঙ্গি এলাকায় চন্দ্রমুখী গার্মেন্টস নামে নিজেদের একটি দোকান চালাতেন।
১৬ জুলাই পরিবারের একজন ফোন পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে দেখেন, তাঁকে অপারেশন থিয়েটারে নিচ্ছে লোকজন।
বড় ভাই সঞ্জয় সাহা শুভ জানান, মারামারি, গোলাগুলি শুরু হলে দোকান বন্ধ করে বাসায় ফিরছিলেন দীপ্ত সাহা। চৌরঙ্গীর মিলন ফার্মেসির কাছে পৌঁছালে হঠাৎ ওর পেটের বাম পাশে গুলি লাগে। দীপ্তর মা বিভা রানী সাহা বলে, ‘আমার ছেলে তো কোনো সন্ত্রাসী না। কোনো রাজনীতিও করে না। কেন আমার বাবারে গুলি করল।’
সঞ্জয় সাহা বলেন, ‘কী করব, যারা আমাদের রক্ষক, তারাই যদি আমাদের মেরে ফেলে। এই বিচার কার কাছে দিব। বিচার চাওয়ার জায়গা আমাদের নাই। এর যেন সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার হয়।’
ময়নাতদন্ত ছাড়াই বুধবার রাতে গোপালগঞ্জ পৌর মহাশ্মশানে তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করে পরিবার।
দীপ্ত সাহার পরিবার এ নিয়ে একটি হত্যা মামলা করেছে।
গোপালগঞ্জে সংঘর্ষের ঘটনায় সর্বশেষ ১৭ জুলাই বৃহস্পতিবার রাত পৌনে দুটার দিকে রমজান মুন্সী (৩২) নামে একজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থা মারা যান। পরে সেখানেই তাঁর মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুদ আলম।
রমজান মুন্সীর স্ত্রী সন্তান নেই। তাঁর ভাবি জানান, শুক্রবার বিকেলে রমজান মুন্সীর মরদেহ নিয়ে গোপালগঞ্জ ফেরেন তাঁরা। প্রথম সদর থানায় তাঁর মৃত্যু ও ময়নাতদন্তের সার্টিফিকেট জামা দেন, পরে থানাপাড়া মসজিদে রমজানের জানাজা হয়। পরে দাফন করা হয় গেটপাড়া পৌর (মিয়াপাড়া) কবরস্থানে।
রমজান মুন্সী গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার থানাপাড়া এলাকার আকবর মুন্সীর ছেলে। পেশায় তিনি রিকশাচালক ছিলেন। তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না বলে জানান তাঁর ভাই হিরা মুন্সী। তিনি জানান, ঘটনার দিন রিকশায় যাত্রী নামিয়ে সদর এলাকার সিনেমা হলের কাছ দিয়ে ফিরছিলেন তিনি। এ সময় তাঁর ডান হাতের কবজি ওপর ও ডান বগলে গুলি লাগে। সেদিন তাঁকে গোপালগঞ্জ জেলা হাসপাতালে নেওয়া হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করেন চিকিৎসকেরা।
১৭ জুলাই সন্ধ্যায় গোপালগঞ্জে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) রেজাউল করিম মল্লিক সংঘর্ষে নিহতদের ময়নাতদন্ত না হওয়ার কারণ জানতে চান সাংবাদিকেরা। বিষয়টির তিনি সরাসরি উত্তর দেননি। ডিআইজি বলেন, বিষয়টি আইনি প্রক্রিয়ায় খতিয়ে দেখা হবে।
১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে সংঘটিত ভয়াবহ সহিংসতার একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে অধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র।
মাঠপর্যায়ে তদন্তের পর এক প্রতিবেদনে তারা বলেছে যে নিহতদের পরিবারকে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মৃতদেহ দাফন বা দাহ করার জন্য চাপ দেওয়া হয়েছিল।
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির সমাবেশকে কেন্দ্র করে ১৬ জুলাই স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও সশস্ত্র বাহিনীর সংঘর্ষে নিহত পাঁচ ব্যক্তির ওপর থেকে মানুষের মনোযোগ ধীরে ধীরে সরে গেছে।
ঘোষণা করা হয়েছে, নিহত ব্যক্তিরা আওয়ামী লীগের কর্মী বা সমর্থক। মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে আত্মরক্ষা করতে গিয়ে। প্রত্যেকেরই মৃত্যু হয়েছে গুলিবিদ্ধ হয়ে।
সংবাদ মাধ্যম থেকে জানা গেছে, নিহত ব্যক্তিদের মৃতদেহ হাসপাতাল থেকে জোর করে নিয়ে গেছে পরিবার। ময়নাতদন্ত করার সুযোগ দেয়নি তারা। স্ট্রিমের কাছে এই দাবি তীব্রভাবে অস্বীকার করেছে পরিবারগুলো।
মৃত্যুর পাঁচ দিন পর ২১ জুলাই আদালতের নির্দেশে তিনজনের মৃতদেহ কবর থেকে তোলা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ পাঠানো হয় গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে। বাকি দুজনের একজন ছিলেন সনাতন ধর্মের অনুসারী। তাঁর মৃতদেহ আগেই দাহ করা হয়েছে। অন্যজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান, সেখানেই তাঁর ময়নাতদন্ত করা হয়।
তাড়াহুড়া করে মৃতদের দাফন করা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সঙ্গে সঙ্গে ইচ্ছাকৃতভাবে ময়নাতদন্ত না করেই মৃতদেহ হস্তান্তরের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জীবিতেষ বিশ্বাস।
২০ জুলাই জীবিতেষ স্বাক্ষরিত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘প্রকৃত ঘটনা এই যে উল্লেখিত তারিখে ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পর জরুরি বিভাগে প্রথম মৃতদেহটি আসে, কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণার পর রোগীর স্বজনদের লাশ ময়না তদন্তের কার্যক্রম শেষ করে লাশ নেয়ার কথা বললে স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে ওঠে এবং একপর্যায়ে জোরপূর্বক লাশ নিয়ে যায়। পরে বাকি মৃতদেহগুলোর স্বজনেরা ময়নাতদন্ত করাতে রাজি হয় না এবং হাসপাতালে কর্মরত কর্মচারীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরন করে জোরপূর্বক মৃতদেহ নিয়ে যায়।’
নিহতের ঘটনায় পরিবার এবং পুলিশ কেউই মামলা করেনি। এরপর আদালত মৃতদেহ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্ত করার নির্দেশ দেন।
জীবিতেষ বিশ্বাস স্বাক্ষরিত ঢাকা স্ট্রিমের হাতে আসা একটি নথিতে বলা হয়েছে, হাসপাতালে মোট চারটি মৃতদেহ আনা হয়েছিল। ভুক্তভোগীদের আত্মীয়েরা জোর করে সেগুলো নিয়ে যায়। এই নথিটি ১৬ জুলাইয়ের।
নিহত পাঁচজনের মধ্যে ২ জনের বয়স ১৮ বছরের কম। অন্য ২ জনের বয়স ৩০-এর কোঠায়। একজনের বয়স ২৫ বছর। এর মধ্যে তিনজন নিম্ন আয়ের পরিবার থেকে এসেছেন।
নিহতদের দুজন শ্রমিক, একজন রিকশাচালক এবং অন্য দুজনের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তাঁরা সবাই ছিলেন গোপালগঞ্জ শহরের বাসিন্দা। পরিবারের দাবি, নিহত ব্যক্তিরা ঘটনার দিন পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় বা তাঁদের কর্মক্ষেত্রের কাছে গুলিবিদ্ধ হন।
স্ট্রিম অনুসন্ধান করে নিহতদের মধ্যে শুধু একজনের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুঁজে পেয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে আমাদের প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সেদিনের বিক্ষোভকারীদের অনেকেই ফেসবুকে ভুয়া অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেছেন। তাঁদের অ্যাকাউন্টে প্রোফাইল পিকচার বা চিহ্নিত করা যায় এমন কিছু ছিল না।
সোহেল রানার (৩৫) পৈতৃক বাড়ি ছিল গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব টুঙ্গিপাড়া গ্রামে। তিনি ছিলেন ইদ্রিস আলী মোল্লা এবং লাইলি বেগমের একমাত্র সন্তান। গ্রামে তাঁদের সম্পত্তি থাকলেও, কেউ সেখানে থাকতেন না। বাবার চাকরির সুবাদে ইদ্রিস গোপালগঞ্জ শহরের বেদগ্রামের পূর্ব মিয়াপাড়ায় একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। সোহেল ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্য। সোহেলের গোপালগঞ্জ শহরের চৌরঙ্গী এলাকার কেরামত আলী প্লাজায় একটি মোবাইল ফোনের দোকান ছিল। তাঁর এক ও পাঁচ বছর বয়সী দুটি ছেলে সন্তান আছে।
সোহেলের চাচা এবং কয়েকজন স্থানীয় ব্যক্তি দাবি করেছেন, কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না সোহেল।
সোহেলের বাবা ইদ্রিস মোল্লা দাবি করেন, ঘটনার দিন হট্টগোল শুনে কী ঘটছে তা দেখার জন্য সোহেল দোকান থেকে বেরিয়ে চৌরঙ্গীতে গিয়েছিলেন। সেখানে পৌঁছামাত্র তাঁর বুকে, পায়ে ও পেটে তিনটি গুলি লাগে। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
১৭ জুলাই সকালে ময়নাতদন্ত ছাড়াই সোহেলের মৃতদেহ হাসপাতাল থেকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়। সেদিন বিকেলে সোহেলের গ্রামের বাড়িতে প্লাস্টিকের শিটে ঢাকা একটি কবর দেখা যায়।
ইদ্রিস মোল্লা বলেন, ‘সে কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল না। এ কারণে আমরা বুঝতে পারছি না কীভাবে এবং কেন ওরা তাঁকে হত্যা করেছে। কোনোভাবে সোহেলের লাশ উদ্ধার করে আমরা এখানে দাফন করেছি।’
সেদিন কেন ময়নাতদন্ত করাতে রাজি হননি জানতে চাইলে ইদ্রিস বলেন, ‘ময়নাতদন্তে আমাদের কোনো আপত্তি ছিল না, এখন ছয় দিন পর কেন এটি করা হচ্ছে, এর কারণ কী?’
স্ট্রিম সোহেলের ফেসবুক প্রোফাইল ঘেঁটে দেখেছে, সেদিন সোহেল সশস্ত্র বাহিনী এবং আওয়ামী লীগ সমর্থকদের মধ্যে ঘটে যাওয়া সংঘর্ষের স্থান থেকে ফেসবুক লাইভ করেছিলেন।
সোহেলের অন্য পুরোনো পোস্ট, বিশেষ করে গত বছরের জুলাই এবং আগস্ট মাসের পোস্ট দেখলে তিনি যে আওয়ামী লীগ সমর্থক ছিলেন পুলিশের এ দাবি আরও জোরালো হয়।
রমজান কাজীর (১৮) বাড়ি ছিল কোটালীপাড়া উপজেলার বানধাবাড়ি ইউনিয়নের হরিণাঘাট গ্রামে।
২০ বছর আগে তাঁর বাবা কামরুল কাজী পরিবারের সঙ্গে জেলা শহরে চলে যান। তখন থেকে তাঁরা শহরের বিসিক এলাকার মৌলভীপাড়ায় একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন।
রমজানের জন্ম ও বেড়ে ওঠা গোপালগঞ্জ শহরেই। সেখানে তিনি ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। তাঁর বাবা শহরের শরীফ মেটালের বিভিন্ন ফার্নিচার ভ্যানে ডেলিভারি করে থাকেন। তাঁর মা গৃহকর্মীর কাজ করেন। পরিবারের প্রয়োজনে মাত্র ছয় মাস আগে টাইলস মিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করেন রমজান। তিনিই ছিলেন পরিবারের প্রধান উপার্জনকারী ব্যক্তি। ময়নাতদন্ত ছাড়াই বৃহস্পতিবার শহরে তাঁর আবাস এলাকায় তাঁকে এলাকায় দাফন করা হয়েছিল।
রমজানের এক চাচা দাবি করেছেন যে হাসপাতাল ময়নাতদন্ত ছাড়াই মৃতদেহ আত্মীয়দের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। পরে শহরের কবরস্থান মসজিদে জানাজা শেষে রাতেই সেখানে দাফন করা হয় তাঁকে।
এদিকে রমজান কাজীর মৃত্যুর পর গোপালগঞ্জ শহরে ২০ জুলাই দুপুরে গিয়ে তাদের ভাড়া বাড়িতে কাউকে পাওয়া যায়নি।
ইমন তালুকদারের (১৮) বাড়ি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ভেড়ার বাজার গ্রাম। আজাদ তালুকদার ও রোকসানা বেগমের পাঁচ সন্তানের তিনি একজন। ইমনের বাবা অপ্রকৃতস্থ ও মা অসুস্থ। তিন ভাইয়ের মধ্যে ইমন দ্বিতীয়। পরিবারিকভাবে অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো নয়।
ইমন শহরের মনোহরি পট্টির একটি ক্রোকারিজের দোকানের কর্মচারীর কাজ করতেন। ঘটনার দিন (১৬ জুলাই) বুধবার দুপুরের দিকে তিনি গোপলগঞ্জ বড় বাজার এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন। বৃহস্পতিবার সকালে পৌর কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়েছে ময়নাতদন্ত ছাড়াই।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইমনের এক আত্মীয় বলেন, ‘হসপিটালে যায়েই মৃত দেখছি ওরে। একটা মৃত মানুষও হসপিটালে গেলে যে ট্রিমমেন্ট করে, তাও তারে করে নাই। বাম হাতে (কাঁধে) যে ক্ষত আছে, সেখান থেকে রক্ত বারাতেই (বের হতে) আছে। ফ্লোর পুরো ভাইসে (ভেসে) যাইতেছে। হেও ডাক্তাররা কিছু করে নাই।’
ময়নাতদন্ত না করা নিয়ে ওই আত্মীয় বলেন, ‘হাসপাতাল থেকে লাশ নিয়ে এসে প্রথমে আমরা থানায় গেছি। থানায় যে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা ছিল, তারা বলছে হাসপিটালে নিয়ে যান। তারা কেউ সাথে যাই নাই, আমরা হসপিটালে গেছি।’
ওই আত্মীয় আরও বলেন, ‘আমরা তো পোস্টমার্টেম করার জন্যই হসপিটালে গেছি আবার। সেখানে ডাক্তাররা আমাকে ডাইরেক্টলি বলছে, লাশ নিয়ে যান, পরবর্তীতে সমস্যা হতি পারে। আমরা কইছি, স্যার আমরা তো পোস্টমর্টেম করার জন্যই আইছি, থানা থেকেই কইছে। তারা কয়, আপনারা লাশ নিয়ে চলে যান, পরবর্তীতে লাশের কিছু হইলে আমাদের কইতি পারবেন না।’
দীপ্ত সাহার মৃত্যুর পর গোপালগঞ্জে বর্তমান ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা তাঁকে সংগঠনের সদস্য বলে দাবি করেন। তবে তাঁর পরিবার তা অস্বীকার করেছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, দীপ্ত সাহা ছিলেন শহরের উদয়ন রোর্ডের বাসিন্দা। তাঁর বাবা সন্তোষ সাহা মারা গেছেন। বড় ভাই সঞ্জয় সাহার সঙ্গে তিনি শহরের চৌরঙ্গি এলাকায় চন্দ্রমুখী গার্মেন্টস নামে নিজেদের একটি দোকান চালাতেন।
১৬ জুলাই পরিবারের একজন ফোন পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে দেখেন, তাঁকে অপারেশন থিয়েটারে নিচ্ছে লোকজন।
বড় ভাই সঞ্জয় সাহা শুভ জানান, মারামারি, গোলাগুলি শুরু হলে দোকান বন্ধ করে বাসায় ফিরছিলেন দীপ্ত সাহা। চৌরঙ্গীর মিলন ফার্মেসির কাছে পৌঁছালে হঠাৎ ওর পেটের বাম পাশে গুলি লাগে। দীপ্তর মা বিভা রানী সাহা বলে, ‘আমার ছেলে তো কোনো সন্ত্রাসী না। কোনো রাজনীতিও করে না। কেন আমার বাবারে গুলি করল।’
সঞ্জয় সাহা বলেন, ‘কী করব, যারা আমাদের রক্ষক, তারাই যদি আমাদের মেরে ফেলে। এই বিচার কার কাছে দিব। বিচার চাওয়ার জায়গা আমাদের নাই। এর যেন সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার হয়।’
ময়নাতদন্ত ছাড়াই বুধবার রাতে গোপালগঞ্জ পৌর মহাশ্মশানে তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করে পরিবার।
দীপ্ত সাহার পরিবার এ নিয়ে একটি হত্যা মামলা করেছে।
গোপালগঞ্জে সংঘর্ষের ঘটনায় সর্বশেষ ১৭ জুলাই বৃহস্পতিবার রাত পৌনে দুটার দিকে রমজান মুন্সী (৩২) নামে একজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থা মারা যান। পরে সেখানেই তাঁর মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুদ আলম।
রমজান মুন্সীর স্ত্রী সন্তান নেই। তাঁর ভাবি জানান, শুক্রবার বিকেলে রমজান মুন্সীর মরদেহ নিয়ে গোপালগঞ্জ ফেরেন তাঁরা। প্রথম সদর থানায় তাঁর মৃত্যু ও ময়নাতদন্তের সার্টিফিকেট জামা দেন, পরে থানাপাড়া মসজিদে রমজানের জানাজা হয়। পরে দাফন করা হয় গেটপাড়া পৌর (মিয়াপাড়া) কবরস্থানে।
রমজান মুন্সী গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার থানাপাড়া এলাকার আকবর মুন্সীর ছেলে। পেশায় তিনি রিকশাচালক ছিলেন। তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না বলে জানান তাঁর ভাই হিরা মুন্সী। তিনি জানান, ঘটনার দিন রিকশায় যাত্রী নামিয়ে সদর এলাকার সিনেমা হলের কাছ দিয়ে ফিরছিলেন তিনি। এ সময় তাঁর ডান হাতের কবজি ওপর ও ডান বগলে গুলি লাগে। সেদিন তাঁকে গোপালগঞ্জ জেলা হাসপাতালে নেওয়া হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করেন চিকিৎসকেরা।
১৭ জুলাই সন্ধ্যায় গোপালগঞ্জে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) রেজাউল করিম মল্লিক সংঘর্ষে নিহতদের ময়নাতদন্ত না হওয়ার কারণ জানতে চান সাংবাদিকেরা। বিষয়টির তিনি সরাসরি উত্তর দেননি। ডিআইজি বলেন, বিষয়টি আইনি প্রক্রিয়ায় খতিয়ে দেখা হবে।
১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে সংঘটিত ভয়াবহ সহিংসতার একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে অধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র।
মাঠপর্যায়ে তদন্তের পর এক প্রতিবেদনে তারা বলেছে যে নিহতদের পরিবারকে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মৃতদেহ দাফন বা দাহ করার জন্য চাপ দেওয়া হয়েছিল।
গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনসহ ১০ দফা দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন আরএকে সিরামিক কারখানার শ্রমিকেরা। এ সময় তাদের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বাধা দিতে গেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় শ্রমিকরা।
৩৩ মিনিট আগেমাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় আহত রোগীদের চিকিৎসার খোঁজ নিতে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে গিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
৪৪ মিনিট আগেআগামী চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করতে পারেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। আজ শনিবার (২৬ জুলাই) এমন তথ্যই জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার।
১৪ ঘণ্টা আগেদেশ গড়ার লক্ষ্যে তৈরি হওয়া ইসলামি শক্তির ঐক্যের বিরুদ্ধে একটি গোষ্ঠী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম।
১৪ ঘণ্টা আগে