কেঁদে বললেন তৌকিরের বোন
নানা আজিজুর রহমান বলেন, ‘তৌকির কখনও নিজের কথা ভাবেনি, শুধু অন্যদের নিয়েই ভাবত। নিজের জীবন দিয়ে প্রমাণ করে গেল—সে সত্যিকারের বীর।’
স্ট্রিম সংবাদদাতা
ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগর ছুটি পেলেই ফিরতে চাইতেন নিজ শহর রাজশাহীতে। মায়ের গলা জড়িয়ে ঘুমানো ছিল তাঁর পছন্দ। মা ছিল তাঁর প্রিয় আশ্রয়। মায়ের কাছেই ফিরলেন তিনি, তবে নিথর দেহে। শায়িত হলেন একা—রাজশাহী নগরের সপুরা গোরস্থানে।
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে সামরিক প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে সোমবার (২১ জুলাই) প্রাণ হারান এই তরুণ পাইলট। মঙ্গলবার বিকেলে একটি বিশেষ হেলিকপ্টারে তাঁর মরদেহ আনা হয় রাজশাহীর সেনানিবাসে। সেখানে থেকে কফিনে মোড়া মরদেহ নেওয়া হয় উপশহরের ভাড়া বাসার সামনে। আহাজারিতে ভেঙে পড়ে পুরো পাড়া।
তৌকিরের ৭৫ বছর বয়সী নানা আজিজুর রহমান দাঁড়িয়ে ছিলেন বাসার দরজায়। চোখ ঝাপসা হয়ে আসে তাঁর। নাতির কথা বলতে গিয়ে গলা ধরে আসে। তিনি বললেন, ‘তৌকির কখনও নিজের কথা ভাবেনি, শুধু অন্যদের নিয়েই ভাবত। নিজের জীবন দিয়ে প্রমাণ করে গেল— সে সত্যিকারের বীর।’
তহুরুল ইসলাম ও সালেহা খাতুন দম্পতির একমাত্র সন্তান তৌকির। মায়ের নাড়ি ছেড়া ধন। কখনোই চাইতেন ছেলেকে চোখের আড়াল করতে। ছেলে পাবনা ক্যাডেট কলেজে ভর্তি হওয়ার পরই এক রকম মানসিক বিপর্যয়ে পড়েন মা। বাড়ি ছেড়ে এত দূরে গিয়ে পড়ালেখা করবে ছেলে? রাগ করে তিন বছর তিনি ছেলের শিক্ষক হাবিবুর রহমানের সঙ্গে তিনি কথা বলেননি।
শিক্ষক হাবিবুর বলেন, ‘পরে যখন তৌকির বিমানবাহিনীতে অফিসার হয়, তখন আমি আপাকে জিজ্ঞেস করি— কেমন লাগছে এখন?’ সন্তান মানুষ করার ব্যাপারে তাঁর নিষ্ঠা ছিল প্রবল। তৌকিরের মা বলেন, ‘আমরা ভালোভাবে গড়ে তুলেছি বলেই আজ ছেলে এই জায়গায় এসেছে।’
পরিবার, আত্মীয়-স্বজনের কাছে তৌকির ছিলেন ভালাবাসার নোঙর। ছোট বোন সৃষ্টি, ভগ্নিপতি ডা. তুহিন, মামা শওকত ও মোহাম্মদ আলী, খালা মাহবুবা খাতুন, নানী জাকেরা— সবাইকে ফোন করতেন নিয়মিত। খোঁজ নিতেন। শ্রদ্ধা-স্নেহ ছিল তাঁর চরিত্রের সহজাত অংশ। ১৮ জুলাই রাতে নানার সঙ্গে শেষবারের মতো কথা হয় তৌকিরের। আজিজুর রহমান বলেন, ‘শেষবার বলেছিল—নানা, মা’র খেয়াল রাখবেন। এরপরই আর কোনো কথা হয়নি।’
তৌকিরের স্বপ্ন ছিল রাজশাহীতেই নিজের একটা বাড়ি হবে। শহরের সপুরা এলাকায় সেই বাড়ি প্রায় তৈরি করে ফেলেছেন বাবা তহুরুল ইসলাম। কিন্তু স্বপ্নের উঠোনে পা রাখা হলো না ছেলের। গত ঈদুল আযহায় ছুটিতে রাজশাহীতে এসেছিলেন তিনি। পরিবারের সঙ্গে কয়েকটা দিন কাটিয়ে ফিরে যান ঢাকায়। এবার অনন্তকালের জন্য ছুটি নিয়ে ফিরলেন নিজ শহরে।
মঙ্গলবার বিকালে সোয়া ২টার দিকে রাজশাহী সেনানিবাসে নামে বিশেষ হেলিকপ্টারটি। সেখান থেকে কিছু সময়ের জন্য নিজ বাসার সামনে নেওয়া হয় তৌকিরের মরদেহ। তারপর নেওয়া হয় জেলা মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে। সেখানে জানাজায় অংশ নেন প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সামরিক কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতাসহ স্থানীয় লোকজন।
ছেলের জানাজার আগে তহুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি সেই হতভাগ্য পিতা, যার কাঁধে সন্তানের লাশ উঠেছে। আমার ছেলেটা চলে গেছে, দোয়া করবেন তাঁর জন্য।’
চোখ ভেজা হাজারো মানুষের মাঝে কান্নায় ভেঙে পড়েন ছোট বোন সৃষ্টি। ভাইয়ের কফিনে চিৎকার করে বলেন, ‘ভাইয়া, কাল সকালেও তো কল দিতে পারতি। একটু কথা বললি না কেন?’
২০১৬ সালে তৌকির যোগ দেন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে। মাত্র এক বছর আগে গাজীপুরের মেয়ে নিঝুমকে বিয়ে করেন। তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। সুখেই কাটছিল তাঁদের দাম্পত্য।
সোমবার (২১ জুলাই) ছিল তৌকির সলো ফ্লাইট (একা উড্ডয়ন), প্রশিক্ষণের এক গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। আকাশে উড়েছিল যুদ্ধবিমান নিয়ে। সেখানে গণ্ডগোল দেখা দেয় বিমানে। শেষে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ওপর। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে কন্ট্রোল রুম থেকে তাঁকে প্যারাস্যুটে ঝাঁপ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু জনবহুল এলাকা এড়াতে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বিমানটি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেন তিনি। তবে শেষ রক্ষা হয়নি তাঁর।
ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগর ছুটি পেলেই ফিরতে চাইতেন নিজ শহর রাজশাহীতে। মায়ের গলা জড়িয়ে ঘুমানো ছিল তাঁর পছন্দ। মা ছিল তাঁর প্রিয় আশ্রয়। মায়ের কাছেই ফিরলেন তিনি, তবে নিথর দেহে। শায়িত হলেন একা—রাজশাহী নগরের সপুরা গোরস্থানে।
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে সামরিক প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে সোমবার (২১ জুলাই) প্রাণ হারান এই তরুণ পাইলট। মঙ্গলবার বিকেলে একটি বিশেষ হেলিকপ্টারে তাঁর মরদেহ আনা হয় রাজশাহীর সেনানিবাসে। সেখানে থেকে কফিনে মোড়া মরদেহ নেওয়া হয় উপশহরের ভাড়া বাসার সামনে। আহাজারিতে ভেঙে পড়ে পুরো পাড়া।
তৌকিরের ৭৫ বছর বয়সী নানা আজিজুর রহমান দাঁড়িয়ে ছিলেন বাসার দরজায়। চোখ ঝাপসা হয়ে আসে তাঁর। নাতির কথা বলতে গিয়ে গলা ধরে আসে। তিনি বললেন, ‘তৌকির কখনও নিজের কথা ভাবেনি, শুধু অন্যদের নিয়েই ভাবত। নিজের জীবন দিয়ে প্রমাণ করে গেল— সে সত্যিকারের বীর।’
তহুরুল ইসলাম ও সালেহা খাতুন দম্পতির একমাত্র সন্তান তৌকির। মায়ের নাড়ি ছেড়া ধন। কখনোই চাইতেন ছেলেকে চোখের আড়াল করতে। ছেলে পাবনা ক্যাডেট কলেজে ভর্তি হওয়ার পরই এক রকম মানসিক বিপর্যয়ে পড়েন মা। বাড়ি ছেড়ে এত দূরে গিয়ে পড়ালেখা করবে ছেলে? রাগ করে তিন বছর তিনি ছেলের শিক্ষক হাবিবুর রহমানের সঙ্গে তিনি কথা বলেননি।
শিক্ষক হাবিবুর বলেন, ‘পরে যখন তৌকির বিমানবাহিনীতে অফিসার হয়, তখন আমি আপাকে জিজ্ঞেস করি— কেমন লাগছে এখন?’ সন্তান মানুষ করার ব্যাপারে তাঁর নিষ্ঠা ছিল প্রবল। তৌকিরের মা বলেন, ‘আমরা ভালোভাবে গড়ে তুলেছি বলেই আজ ছেলে এই জায়গায় এসেছে।’
পরিবার, আত্মীয়-স্বজনের কাছে তৌকির ছিলেন ভালাবাসার নোঙর। ছোট বোন সৃষ্টি, ভগ্নিপতি ডা. তুহিন, মামা শওকত ও মোহাম্মদ আলী, খালা মাহবুবা খাতুন, নানী জাকেরা— সবাইকে ফোন করতেন নিয়মিত। খোঁজ নিতেন। শ্রদ্ধা-স্নেহ ছিল তাঁর চরিত্রের সহজাত অংশ। ১৮ জুলাই রাতে নানার সঙ্গে শেষবারের মতো কথা হয় তৌকিরের। আজিজুর রহমান বলেন, ‘শেষবার বলেছিল—নানা, মা’র খেয়াল রাখবেন। এরপরই আর কোনো কথা হয়নি।’
তৌকিরের স্বপ্ন ছিল রাজশাহীতেই নিজের একটা বাড়ি হবে। শহরের সপুরা এলাকায় সেই বাড়ি প্রায় তৈরি করে ফেলেছেন বাবা তহুরুল ইসলাম। কিন্তু স্বপ্নের উঠোনে পা রাখা হলো না ছেলের। গত ঈদুল আযহায় ছুটিতে রাজশাহীতে এসেছিলেন তিনি। পরিবারের সঙ্গে কয়েকটা দিন কাটিয়ে ফিরে যান ঢাকায়। এবার অনন্তকালের জন্য ছুটি নিয়ে ফিরলেন নিজ শহরে।
মঙ্গলবার বিকালে সোয়া ২টার দিকে রাজশাহী সেনানিবাসে নামে বিশেষ হেলিকপ্টারটি। সেখান থেকে কিছু সময়ের জন্য নিজ বাসার সামনে নেওয়া হয় তৌকিরের মরদেহ। তারপর নেওয়া হয় জেলা মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে। সেখানে জানাজায় অংশ নেন প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সামরিক কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতাসহ স্থানীয় লোকজন।
ছেলের জানাজার আগে তহুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি সেই হতভাগ্য পিতা, যার কাঁধে সন্তানের লাশ উঠেছে। আমার ছেলেটা চলে গেছে, দোয়া করবেন তাঁর জন্য।’
চোখ ভেজা হাজারো মানুষের মাঝে কান্নায় ভেঙে পড়েন ছোট বোন সৃষ্টি। ভাইয়ের কফিনে চিৎকার করে বলেন, ‘ভাইয়া, কাল সকালেও তো কল দিতে পারতি। একটু কথা বললি না কেন?’
২০১৬ সালে তৌকির যোগ দেন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে। মাত্র এক বছর আগে গাজীপুরের মেয়ে নিঝুমকে বিয়ে করেন। তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। সুখেই কাটছিল তাঁদের দাম্পত্য।
সোমবার (২১ জুলাই) ছিল তৌকির সলো ফ্লাইট (একা উড্ডয়ন), প্রশিক্ষণের এক গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। আকাশে উড়েছিল যুদ্ধবিমান নিয়ে। সেখানে গণ্ডগোল দেখা দেয় বিমানে। শেষে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ওপর। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে কন্ট্রোল রুম থেকে তাঁকে প্যারাস্যুটে ঝাঁপ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু জনবহুল এলাকা এড়াতে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বিমানটি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেন তিনি। তবে শেষ রক্ষা হয়নি তাঁর।
উত্তরা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী রিশাদ সালেহীন। রাজধানীর জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের পঞ্চম তলায় মেঝেতে বসে আছে সে।
১১ ঘণ্টা আগেবিশ্বের উন্নয়ন ভাবনায় আমূল পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, ‘উন্নয়ন ভাবনা হতে হবে কম প্রতিকূল, কম সম্পদকেন্দ্রিক এবং আরও প্রকৃতিকেন্দ্রিক। সহনশীলতা বাড়াতে হবে বাস্তুতন্ত্র ও স্থানীয় জনগণের মধ্যে’।
১২ ঘণ্টা আগেএইচএসসি পরীক্ষার নতুন সময়সূচি প্রকাশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। নতুন সূচি অনুযায়ী ২২ জুলাইয়ের স্থগিত হওয়া পরীক্ষা ১৭ আগস্ট (রবিবার) এবং ২৪ জুলাইয়ের স্থগিত হওয়া পরীক্ষা ১৯ আগস্ট (মঙ্গলবার) অনুষ্ঠিত হবে।
১২ ঘণ্টা আগেরাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল এবং কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতদের সংখ্যা নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। সন্তানদের বিষয়ে তথ্য গোপনের কোনো ইচ্ছা সামরিক বাহিনীর নেই।
১৪ ঘণ্টা আগে