ফিরে দেখা জুলাই গণ-অভ্যুত্থান
স্ট্রিম প্রতিবেদক
কুমিল্লার মুরাদনগর থেকে ঢাকায় এসেছেন বিল্লাল হোসেন। গত কয়েক দিন থেকে ছেলের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই তাঁর। কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না ছেলেকে। পত্রিকায় ছেলের গুমের খবর দেখে তাই ঢাকায় ছুটে এসেছেন তিনি। কিন্তু কোথায় খুঁজবেন? জানা নেই কিছুই। তাই খোঁজা শুরু করলেন হাসপাতালের মর্গে। কিন্তু সেখানেও যে ছেলে নেই।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তন। সেখানে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বাবা বিল্লাল হোসেন সেখানে এসে সরকারের কাছে অনুনয় করলেন, যেন তাঁর ছেলে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সন্ধান জানানো হয়। আসিফ মাহমুদ তখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক। বাবা যখন ছেলের সন্ধান চাইছেন, তখন পাশে বসা আরেক সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ কেঁদে ফেলেন।
এমনই ছিল গত বছরের ২৩ জুলাইয়ের চিত্র। সরাসরি সংঘর্ষ তখন কিছুটা স্তিমিত। কিন্তু ধ্বংসযজ্ঞের স্মৃতি তখনো অমলিন। আর ক্ষত তখনো টাটকা। বহু বাবা-মা তখন সন্তানকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন–থানা, আদালত ও মর্গে। জানেন না সন্তানের কী হয়েছে। কেউ কেউ পরে সন্তানদের খুঁজে পেয়েছেন। কিন্তু অনেকেই আর পাননি। জুলাই তাঁদের সন্তানকে চিরতরে কেড়ে নিয়েছে। ২৩ জুলাই পর্যন্ত এই আন্দোলনে মৃতের সংখ্যা ১৯০ ছাড়িয়ে যায়৷
সেদিনের সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দাবি করে শুধু আসিফ মাহমুদই নন, ১৮ জুলাই থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না আরও দুই সমন্বয়ক, আবু বাকের মজুমদার ও রিফাত রশীদকেও।
এ সংবাদ সম্মেলন থেকে বলা হয়, চার দফা দাবি না মানলে আট দফা নিয়ে আলোচনার সুযোগ নেই। শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি ছিল, ইন্টারনেট সংযোগ চালু করা, কারফিউ তুলে নেওয়া, সমন্বয়কদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর হল খুলে দেওয়া।
সম্মেলনে নাহিদ ইসলাম বলেন, এত লাশের ওপর দাঁড়িয়ে তাঁরা কোটা সংস্কার চাননি। এই হতাহতের বিচার করতে হবে। তা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
উল্লেখ্য, এদিন সরকারি চাকরিতে সাত শতাংশ কোটা রেখে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এ প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, তাঁরা চেয়েছিলেন সকল অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে কোটার একটি চূড়ান্ত সমাধান বের করতে। কিন্তু কোনো আলোচনা-সংলাপ ছাড়াই এ ধরনের প্রজ্ঞাপন সমীচীন নয়।
২৪ ও ২৫ জুলাই সাত ঘণ্টা কারফিউ শিথিল করার ঘোষণা দেওয়া হয় এদিন। ঢাকা মহানগর ও ঢাকা জেলা, গাজীপুর মহানগর ও গাজীপুর জেলা, নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জে এ ঘোষণা বলবৎ করা হয়। বাকি জেলাগুলোর ব্যাপারে নিজ জেলা প্রশাসক সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানানো হয়৷
এক প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানায়, সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিসের জন্য ২৪ ও ২৫ জুলাই বেলা ১১টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত অফিস সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ, ২৩ তারিখ পর্যন্ত যে সাধারণ ছুটি চলছিল, পরদিন থেকে তা রহিত করে অল্প সময়ের জন্য হলেও অফিস খোলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়৷
সেদিন সংঘর্ষ স্তিমিত থাকলেও গণগ্রেপ্তার চলতেই থাকে। ২২ জুলাই রাত থেকে ২৩ জুলাই সন্ধ্যা পর্যন্ত গ্রেপ্তারের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে যায়। গ্রেপ্তারকৃতদের একটি বড় অংশ ছিলেন বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মী। সেই সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থী ও শ্রমজীবী মানুষও ছিলেন।
শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে তৎকালীন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের কাউকে মামলায় জড়ানো হলে তাঁদের তথ্য যদি কোটা আন্দোলনকারীরা দেন, তাহলে তা অবশ্যই যাচাই-বাছাই করে দেখবে সরকার।
সংবাদ সম্মেলনে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আবাসিক হল খুলে দেওয়া যাবে না।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) তৎকালীন মহাপরিচালক মো. হারুন অর রশিদ বলেন, ছাত্র আন্দোলনের নামে যারা নাশকতা চালিয়ে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপরাধীদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
তৎকালীন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত সেদিন অভিযোগ করেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ভেতরে ঢুকে ‘জঙ্গি-জামায়াত-শিবির’, বিএনপি আক্রমণ শুরু করেছে। এতে সরকার ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো আক্রান্ত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘যখন আপনি আক্রান্ত হবেন, তখন আত্মরক্ষার্থে প্রতিরোধ করতে হয়। আক্রমণকারীদের প্রতিরোধ করার ফলে সংঘর্ষ তৈরি হয়েছে। সেই সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। ফলে হতাহতের ঘটনার জন্য আক্রমণকারীরা দায়ী।’
কুমিল্লার মুরাদনগর থেকে ঢাকায় এসেছেন বিল্লাল হোসেন। গত কয়েক দিন থেকে ছেলের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই তাঁর। কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না ছেলেকে। পত্রিকায় ছেলের গুমের খবর দেখে তাই ঢাকায় ছুটে এসেছেন তিনি। কিন্তু কোথায় খুঁজবেন? জানা নেই কিছুই। তাই খোঁজা শুরু করলেন হাসপাতালের মর্গে। কিন্তু সেখানেও যে ছেলে নেই।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তন। সেখানে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বাবা বিল্লাল হোসেন সেখানে এসে সরকারের কাছে অনুনয় করলেন, যেন তাঁর ছেলে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সন্ধান জানানো হয়। আসিফ মাহমুদ তখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক। বাবা যখন ছেলের সন্ধান চাইছেন, তখন পাশে বসা আরেক সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ কেঁদে ফেলেন।
এমনই ছিল গত বছরের ২৩ জুলাইয়ের চিত্র। সরাসরি সংঘর্ষ তখন কিছুটা স্তিমিত। কিন্তু ধ্বংসযজ্ঞের স্মৃতি তখনো অমলিন। আর ক্ষত তখনো টাটকা। বহু বাবা-মা তখন সন্তানকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন–থানা, আদালত ও মর্গে। জানেন না সন্তানের কী হয়েছে। কেউ কেউ পরে সন্তানদের খুঁজে পেয়েছেন। কিন্তু অনেকেই আর পাননি। জুলাই তাঁদের সন্তানকে চিরতরে কেড়ে নিয়েছে। ২৩ জুলাই পর্যন্ত এই আন্দোলনে মৃতের সংখ্যা ১৯০ ছাড়িয়ে যায়৷
সেদিনের সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দাবি করে শুধু আসিফ মাহমুদই নন, ১৮ জুলাই থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না আরও দুই সমন্বয়ক, আবু বাকের মজুমদার ও রিফাত রশীদকেও।
এ সংবাদ সম্মেলন থেকে বলা হয়, চার দফা দাবি না মানলে আট দফা নিয়ে আলোচনার সুযোগ নেই। শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি ছিল, ইন্টারনেট সংযোগ চালু করা, কারফিউ তুলে নেওয়া, সমন্বয়কদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর হল খুলে দেওয়া।
সম্মেলনে নাহিদ ইসলাম বলেন, এত লাশের ওপর দাঁড়িয়ে তাঁরা কোটা সংস্কার চাননি। এই হতাহতের বিচার করতে হবে। তা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
উল্লেখ্য, এদিন সরকারি চাকরিতে সাত শতাংশ কোটা রেখে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এ প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, তাঁরা চেয়েছিলেন সকল অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে কোটার একটি চূড়ান্ত সমাধান বের করতে। কিন্তু কোনো আলোচনা-সংলাপ ছাড়াই এ ধরনের প্রজ্ঞাপন সমীচীন নয়।
২৪ ও ২৫ জুলাই সাত ঘণ্টা কারফিউ শিথিল করার ঘোষণা দেওয়া হয় এদিন। ঢাকা মহানগর ও ঢাকা জেলা, গাজীপুর মহানগর ও গাজীপুর জেলা, নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জে এ ঘোষণা বলবৎ করা হয়। বাকি জেলাগুলোর ব্যাপারে নিজ জেলা প্রশাসক সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানানো হয়৷
এক প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানায়, সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিসের জন্য ২৪ ও ২৫ জুলাই বেলা ১১টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত অফিস সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ, ২৩ তারিখ পর্যন্ত যে সাধারণ ছুটি চলছিল, পরদিন থেকে তা রহিত করে অল্প সময়ের জন্য হলেও অফিস খোলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়৷
সেদিন সংঘর্ষ স্তিমিত থাকলেও গণগ্রেপ্তার চলতেই থাকে। ২২ জুলাই রাত থেকে ২৩ জুলাই সন্ধ্যা পর্যন্ত গ্রেপ্তারের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে যায়। গ্রেপ্তারকৃতদের একটি বড় অংশ ছিলেন বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মী। সেই সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থী ও শ্রমজীবী মানুষও ছিলেন।
শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে তৎকালীন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের কাউকে মামলায় জড়ানো হলে তাঁদের তথ্য যদি কোটা আন্দোলনকারীরা দেন, তাহলে তা অবশ্যই যাচাই-বাছাই করে দেখবে সরকার।
সংবাদ সম্মেলনে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আবাসিক হল খুলে দেওয়া যাবে না।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) তৎকালীন মহাপরিচালক মো. হারুন অর রশিদ বলেন, ছাত্র আন্দোলনের নামে যারা নাশকতা চালিয়ে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপরাধীদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
তৎকালীন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত সেদিন অভিযোগ করেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ভেতরে ঢুকে ‘জঙ্গি-জামায়াত-শিবির’, বিএনপি আক্রমণ শুরু করেছে। এতে সরকার ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো আক্রান্ত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘যখন আপনি আক্রান্ত হবেন, তখন আত্মরক্ষার্থে প্রতিরোধ করতে হয়। আক্রমণকারীদের প্রতিরোধ করার ফলে সংঘর্ষ তৈরি হয়েছে। সেই সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। ফলে হতাহতের ঘটনার জন্য আক্রমণকারীরা দায়ী।’
উত্তরা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী রিশাদ সালেহীন। রাজধানীর জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের পঞ্চম তলায় মেঝেতে বসে আছে সে।
৩ ঘণ্টা আগেবিশ্বের উন্নয়ন ভাবনায় আমূল পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, ‘উন্নয়ন ভাবনা হতে হবে কম প্রতিকূল, কম সম্পদকেন্দ্রিক এবং আরও প্রকৃতিকেন্দ্রিক। সহনশীলতা বাড়াতে হবে বাস্তুতন্ত্র ও স্থানীয় জনগণের মধ্যে’।
৩ ঘণ্টা আগেএইচএসসি পরীক্ষার নতুন সময়সূচি প্রকাশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। নতুন সূচি অনুযায়ী ২২ জুলাইয়ের স্থগিত হওয়া পরীক্ষা ১৭ আগস্ট (রবিবার) এবং ২৪ জুলাইয়ের স্থগিত হওয়া পরীক্ষা ১৯ আগস্ট (মঙ্গলবার) অনুষ্ঠিত হবে।
৪ ঘণ্টা আগেরাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল এবং কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতদের সংখ্যা নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। সন্তানদের বিষয়ে তথ্য গোপনের কোনো ইচ্ছা সামরিক বাহিনীর নেই।
৫ ঘণ্টা আগে