leadT1ad

আমার মানিককে কি এখানে পাওয়া যাবে

স্ট্রিম প্রতিবেদকঢাকা
প্রকাশ : ২১ জুলাই ২০২৫, ২১: ০৩
মাইলস্টোন কলেজের বিমান দুর্ঘটনায় আহাজারিরত এক অভিভাবক। স্ট্রিম ছবি

রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) জরুরি বিভাগের সামনে অন্যদিনের তুলনায় বেশি ভিড়। কিছুক্ষণ পরপর সাইরেন বাজিয়ে আসছে অ্যাম্বুলেন্স। সেনাসদস্য ও হাসপাতালে কর্মরতদের সহায়তায় অ্যাম্বুলেন্স থেকে নামানো হচ্ছে আহতদের। বাইরে স্বজনদের উদ্বিগ্ন চাহনি। অ্যাম্বুলেন্সে কাকে আনা হলো, উঁকি দিয়ে সেটিও জানার চেষ্টা করছেন তাঁরা।

তাদের মধ্যে একজন নারী জরুরি বিভাগের পাশের ফাঁকা মাঠটিতে বসে পড়লেন। কাঁদতে কাঁদতে বললেন, ‘আমার মানিককে কি এখানে পাওয়া যাবে?’

ওই নারীর সঙ্গে তাঁর ভাই নাবিল আহম্মেদ এসেছেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, ওই নারীর ছোট ছেলে ফাহিমকে পাওয়া যাচ্ছে না। মাইলস্টোনের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ফাহিম।

উত্তরার মাইলস্টোন কলেজে একটি প্রশিক্ষণ বিমান আজ সোমবার দুপুর ১টা ১৮ মিনিটে বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন।

সন্ধ্যায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, মাইলস্টোন কলেজের মূল ক্যাম্পাসে বিধ্বস্ত বিমানটি ছিল বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধ বিমান।

এ ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের মধ্যে কয়েকজনকে তাৎক্ষণিকভাবে হেলিকপ্টার ও অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে ঢাকার সিএমএইচে নেওয়া হয়। এ হাসপাতালে বর্তমানে ৯ জন আহত চিকিৎসাধীন। বিমানটির পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলামসহ ১৪ জনকে মৃত অবস্থায় এ হাসপাতালে আনা হয়।

এর পাশাপাশি উদ্ধারকাজে অংশ নেওয়া আহত ১৪ সেনাসদস্য, একজন পুলিশ সদস্য এবং একজন ফায়ার সার্ভিস সদস্য সিএমএইচ ঢাকায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এদিকে, বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সিএমএইচ হাসপাতালে যান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। প্রথমে তিনি হাসপাতালের মর্চুয়ারি বিভাগে যান। সেখান থেকে জরুরি বিভাগ পরিদর্শনে যান তিনি।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে কথা হয় মাইলস্টোন কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাবিলের সঙ্গে। তার ভাষ্য, প্রি-টেস্ট পরীক্ষার কারণে তারা আজ কলেজে যায়নি। কিন্তু দুর্ঘটনার কথা শোনার পর ছুটে যায় কলেজে। একজন আহত শিক্ষার্থীর সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সে উঠে এসেছে সে।

প্রথমে বিকট শব্দ, এরপর আগুন

বিমানটি যে ভবনে আছড়ে পড়েছে, সেখানে মূলত মাইলস্টোন কলেজের স্কুল শাখার শিক্ষার্থীদের পাঠদান হতো। বেলা একটায় তাদের ছুটি হয়ে যায়। এরপর তারা ভবন থেকে বের হচ্ছিল। ওই সময় দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

কলেজের একাদশ শ্রেণির বাণিজ্য শাখার শিক্ষার্থী আবির মাহমুদ উদয় স্ট্রিমকে বলে, ‘আমাদের তখনো ক্লাস হচ্ছিল। হঠাৎ বিকট শব্দ শুনে বের হই। এরপর সেখানে আগুন লাগতে দেখি।’

ঘটনাস্থলের আশপাশের ব্যক্তিরাও ছুটে এসে উদ্ধারকাজ শুরু করে। এরপরই সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে উপস্থিত হন।

Ad 300x250

সম্পর্কিত