ফিরে দেখা ২১ জুলাই
২১ জুলাই ২০২৪। ছিল কারফিউয়ের দ্বিতীয় দিন। এ দিন বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষ হয়। সারা দেশে নিহত হন ১৯ জন। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের রুদ্ধশ্বাস দিনগুলোয় ব্যক্তিগত ও সামষ্টিকভাবে জন্ম নিয়েছে কত না সত্য গল্প। সেসব দিনে ফিরে দেখা।
স্ট্রিম প্রতিবেদক
কেরাণীগঞ্জের বাসিন্দা রুহুল আমিন। প্রিপেইড মিটারে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেন। মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিসের মাধ্যমে অনলাইনেই সব ঝামেলা মেটান। কিন্তু গত কয়েকদিন থেকে দেশজুড়ে নেই ইন্টারনেট। আর এ রকম এক সময়েই কি না রুহুল আমিনের বিদ্যুৎ মিটারের পয়সা ফুরাল! প্রিপেইড মিটারের লালবাতি জ্বলছে, ট্যাঁ-টুঁ শব্দ করছে। কিন্তু অনলাইনে বিল পরিশোধের উপায় নেই। অগত্যা বিদ্যুৎ অফিসে যেতে হয় তাঁকে। পাঁচ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে অবশেষে সে যাত্রায় রক্ষা পান তিনি। এমনই ছিল গত বছরের ২১ জুলাইয়ের চিত্র।
ইন্টারনেট বন্ধ, বহু টিভি চ্যানেল সত্য প্রচার করছে না। আগামীকালের পত্রিকার জন্য অধির হয়ে অপেক্ষা করছেন মানুষ। বাইরে চলছে কারফিউ—সে সময় মোটামুটি অন্ধকারেই ঘরবসতি গেড়েছিল সবাই।
২১ জুলাই ছিল কারফিউয়ের দ্বিতীয় দিন। এ দিন বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সারা দেশে নিহত হন ১৯ জন। এর মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০, নরসিংদীতে ৪, গাজীপুরে ২, নারায়ণগঞ্জে ১, সাভারে ১ ও চট্টগ্রামে ১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।
শুধু হত্যা নয়। এ সময় গ্রেপ্তারও চলছিল সমানতালে। শিক্ষার্থী, ভিন্নমতের রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, ব্যবসায়ী, সাধারণ মানুষ—বাদ ছিল না কেউ। ততদিনে গ্রেপ্তারের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়েছে। পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়, সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে এঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ দিন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ থেকে কোটা বিষয়ে রায় দেওয়া হয়। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের একটি বেঞ্চ সর্বসম্মতিতে এক রায়ে কোটা কমিয়ে ৭ শতাংশ করেন। রায়ে বলা হয়, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ; ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ১ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ নির্ধারণ করা হলো। বাকি ৯৩ শতাংশ নিয়োগ হবে মেধাভিত্তিক।
রায়ে এ-ও বলা হয়, কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে সাধারণ মেধাতালিকা থেকে শূন্যপদ পূরণ করতে হবে। এই রায় অনুযায়ী নির্বাহী বিভাগকে প্রজ্ঞাপন জারি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে বলা হয়, প্রয়োজনে সরকার চাইলে নির্ধারিত কোটা বাতিল, সংশোধন বা সংস্কার করতে পারবে।
১৬ জুলাই রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে রায়টি ঘোষণা করা হয়। সেদিন সকাল ১০টা থেকে এ বিষয়ে শুরু হয় শুনানি। এ রায়ে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পুনর্বহাল-সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় পুরোপুরি বাতিল করা হয়।
২১ তারিখ ভোরে নিজেকে পূর্বাচলে আবিষ্কার করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোনের তৎকালীন সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। মারের চোটে রক্ত জমে ঊরুতে লালচে দাগ হয়ে আছে। দুই হাত ও কাঁধে কালশিটে পড়ে গেছে। কোনোরকমে একটি অটোরিকশা জোগাড় করে নিজের বাসায় যান তিনি। পরে সেখান থেকে ভর্তি হন গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে।
হাসপাতালে নাহিদের সঙ্গে দেখা করেন আরও তিন সমন্বয়ক—হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম ও মাহিন সরকার। সেখানে চার দফা দাবি পূরণে সরকারকে ৪৮ ঘণ্টা সময়সীমা বেঁধে দেন তাঁরা। দাবিগুলো ছিল, ইন্টারনেট সংযোগ চালু করা, কারফিউ তুলে নেওয়া, সমন্বয়কদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর হল খুলে দেওয়া। এসব দাবি পূরণ না হলে নতুন কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।
নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন, নিরাপত্তা শঙ্কা ও ইন্টারনেটের অভাবে সমন্বয়কেরা একত্রিত হতে পারছেন না। ফলে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সমন্বয়হীনতা দেখা যাচ্ছে। অনেক সমন্বয়কের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলেও সে সময় তিনি অভিযোগ করেন।
সারজিস আলম বলেন, আন্দোলনে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। এখন এটি আর কোটা সংস্কারে সীমাবদ্ধ নেই।
এ দিন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আদালতের রায়ে ছাত্রদের দাবির প্রতিফলন ঘটেছে। ফলে দেশের জনগণ মনে করে, এ আন্দোলনের আর প্রয়োজন নেই। এ সময় কারফিউ অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি। তবে কারফিউ অব্যাহত থাকলেও পরদিন দুপুর দুইটা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা সারা দেশে কারফিউ শিথিল থাকবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।
কেরাণীগঞ্জের বাসিন্দা রুহুল আমিন। প্রিপেইড মিটারে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেন। মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিসের মাধ্যমে অনলাইনেই সব ঝামেলা মেটান। কিন্তু গত কয়েকদিন থেকে দেশজুড়ে নেই ইন্টারনেট। আর এ রকম এক সময়েই কি না রুহুল আমিনের বিদ্যুৎ মিটারের পয়সা ফুরাল! প্রিপেইড মিটারের লালবাতি জ্বলছে, ট্যাঁ-টুঁ শব্দ করছে। কিন্তু অনলাইনে বিল পরিশোধের উপায় নেই। অগত্যা বিদ্যুৎ অফিসে যেতে হয় তাঁকে। পাঁচ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে অবশেষে সে যাত্রায় রক্ষা পান তিনি। এমনই ছিল গত বছরের ২১ জুলাইয়ের চিত্র।
ইন্টারনেট বন্ধ, বহু টিভি চ্যানেল সত্য প্রচার করছে না। আগামীকালের পত্রিকার জন্য অধির হয়ে অপেক্ষা করছেন মানুষ। বাইরে চলছে কারফিউ—সে সময় মোটামুটি অন্ধকারেই ঘরবসতি গেড়েছিল সবাই।
২১ জুলাই ছিল কারফিউয়ের দ্বিতীয় দিন। এ দিন বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সারা দেশে নিহত হন ১৯ জন। এর মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০, নরসিংদীতে ৪, গাজীপুরে ২, নারায়ণগঞ্জে ১, সাভারে ১ ও চট্টগ্রামে ১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।
শুধু হত্যা নয়। এ সময় গ্রেপ্তারও চলছিল সমানতালে। শিক্ষার্থী, ভিন্নমতের রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, ব্যবসায়ী, সাধারণ মানুষ—বাদ ছিল না কেউ। ততদিনে গ্রেপ্তারের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়েছে। পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়, সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে এঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ দিন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ থেকে কোটা বিষয়ে রায় দেওয়া হয়। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের একটি বেঞ্চ সর্বসম্মতিতে এক রায়ে কোটা কমিয়ে ৭ শতাংশ করেন। রায়ে বলা হয়, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ; ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ১ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ নির্ধারণ করা হলো। বাকি ৯৩ শতাংশ নিয়োগ হবে মেধাভিত্তিক।
রায়ে এ-ও বলা হয়, কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে সাধারণ মেধাতালিকা থেকে শূন্যপদ পূরণ করতে হবে। এই রায় অনুযায়ী নির্বাহী বিভাগকে প্রজ্ঞাপন জারি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে বলা হয়, প্রয়োজনে সরকার চাইলে নির্ধারিত কোটা বাতিল, সংশোধন বা সংস্কার করতে পারবে।
১৬ জুলাই রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে রায়টি ঘোষণা করা হয়। সেদিন সকাল ১০টা থেকে এ বিষয়ে শুরু হয় শুনানি। এ রায়ে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পুনর্বহাল-সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় পুরোপুরি বাতিল করা হয়।
২১ তারিখ ভোরে নিজেকে পূর্বাচলে আবিষ্কার করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোনের তৎকালীন সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। মারের চোটে রক্ত জমে ঊরুতে লালচে দাগ হয়ে আছে। দুই হাত ও কাঁধে কালশিটে পড়ে গেছে। কোনোরকমে একটি অটোরিকশা জোগাড় করে নিজের বাসায় যান তিনি। পরে সেখান থেকে ভর্তি হন গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে।
হাসপাতালে নাহিদের সঙ্গে দেখা করেন আরও তিন সমন্বয়ক—হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম ও মাহিন সরকার। সেখানে চার দফা দাবি পূরণে সরকারকে ৪৮ ঘণ্টা সময়সীমা বেঁধে দেন তাঁরা। দাবিগুলো ছিল, ইন্টারনেট সংযোগ চালু করা, কারফিউ তুলে নেওয়া, সমন্বয়কদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর হল খুলে দেওয়া। এসব দাবি পূরণ না হলে নতুন কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।
নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন, নিরাপত্তা শঙ্কা ও ইন্টারনেটের অভাবে সমন্বয়কেরা একত্রিত হতে পারছেন না। ফলে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সমন্বয়হীনতা দেখা যাচ্ছে। অনেক সমন্বয়কের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলেও সে সময় তিনি অভিযোগ করেন।
সারজিস আলম বলেন, আন্দোলনে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। এখন এটি আর কোটা সংস্কারে সীমাবদ্ধ নেই।
এ দিন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আদালতের রায়ে ছাত্রদের দাবির প্রতিফলন ঘটেছে। ফলে দেশের জনগণ মনে করে, এ আন্দোলনের আর প্রয়োজন নেই। এ সময় কারফিউ অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি। তবে কারফিউ অব্যাহত থাকলেও পরদিন দুপুর দুইটা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা সারা দেশে কারফিউ শিথিল থাকবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও দলটির নিষিদ্ধ ঘোষিত অঙ্গ-সংগঠনের ৯ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
৩৩ মিনিট আগেজাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল মনোনীত ‘সাদী-বৈশাখী-সাজ্জাদ-ইকরা’ পরিষদ ৮ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছে।
২ ঘণ্টা আগেচট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ আহমেদের শারীরিক অবস্থা উন্নতি হয়েছে। ফলে ছয়দিন পর খুলে দেওয়া হয়েছে লাইফ সাপোর্ট। এরপর তিনি কথা বলেছেন মা-বাবার সঙ্গেও।
২ ঘণ্টা আগেরাজবাড়ীতে লাশ পোড়ানোকে নিন্দনীয় ও অগ্রহণযোগ্য উল্লেখ করে ক্ষুব্ধ ধর্মপ্রাণ মুসলিম জনতার ধর্মীয় অনুভূতি রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসন চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব আল্লামা সাজেদুর রহমান।
২ ঘণ্টা আগে