leadT1ad

৩০০ আসনে প্রার্থী দিতে যাচ্ছে গণঅধিকার পরিষদ

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক জোট গঠনের আলোচনার মধ্যেই উচ্চকক্ষে নিজেদের প্রতিনিধিত্ব রাখতে আগামী সংসদের ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে গণঅধিকার পরিষদ। গতকাল বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ বাস্তবায়ন বিষয়ে ভাষণের পরে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে দলটি।

আজ শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সকালে রাজধানীতে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় দলটির সভাপতি নুরুল হক নুর।

তিনি বলেন, জুলাই সনদ কীভাবে বাস্তবায়ন হবে, সেটি নিয়ে দলগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক বিভাজন এবং ভিন্ন মত তৈরি হয়েছিল। এটি অনিশ্চিত করে তুলেছিল জাতীয় নির্বাচনকে। প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে সেই সংশয়টি অনেকটা কেটেছে। সরকার নির্বাচনী ট্র্যাকে আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভাজনই জাতীয় নির্বাচন ভণ্ডুলের কারণ হতে পারে। এই সময়ে এসে একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট আয়োজনই বাস্তবসম্মত।’

নুর বলেন, ৮০% ভোট যদি কাস্টিং দেখি তবে ১০ কোটি ভোট হবে। তাহলে আমরা যদি একটি আসনও না পাই তবুও ১২-১৩ জন সংসদ সদস্য প্রার্থী উচ্চ কক্ষে প্রতিনিধিত্ব থাকতে পারবে।

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন প্রশ্নে সব দলকে এক থাকার আহ্বান জানান ডাকসুর সাবেক এই ভিপি। গণঅভ্যুত্থানের বৈধতার স্বার্থে, আগামীর নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে জুলাই সনদের পক্ষে ভোট চাওয়ার কথাও বলেন তিনি। তিনি বলেন, দলগুলোর শুধু নিজেদের মার্কা বা প্রতীকের বিষয়ে ভোট চাইলে হবে না বরং জুলাই সনদের ব্যাপারেও প্রচার করতে হবে। জনগণকে বুঝাতে হবে হ্যাঁ-তে ভোট দিলে কী সুবিধা আছে, দেশের কী কী উন্নয়ন হতে পারে। তিনি বলেন, ‘এই গণভোটে উচ্চকক্ষে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব)-এর কথা আছে। আর এ থেকেই আমরা (গণঅধিকার পরিষদ) সিদ্ধান্ত নিয়েছি ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবো।’

এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ৩০০ আসনে আমাদের প্রার্থীদের মধ্যে যদি ১০০ আসনে আমরা ৫০ হাজার করে ভোট পাই তাহলে ৫০ লাখ ভোট হয়। যদি আরো ১০০ আসনে ২০ হাজার করে ভোট পাই তাহলে ২০ লাখ ভোট হয়। আর যদি সেগুলোতে ১০ হাজার করে ভোট পাই ভোট হয় ১০ লাখ। তাহলে মোট দাঁড়ায় অন্তত ৮০ লাখ বা ১ কোটি পর্যন্ত ভোট পেতে পারি। ৮০% ভোট যদি কাস্টিং দেখি তবে ১০ কোটি ভোট হবে। তাহলে আমরা যদি একটি আসনও না পাই তবুও ১২-১৩ জন সংসদ সদস্য প্রার্থী উচ্চ কক্ষে প্রতিনিধিত্ব থাকতে পারবে।

তাই আমরা ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নির্বাচন কমিশনের হিসেবে, বর্তমানে বাংলাদেশ ১২ কোটি ৭৬ লাখ ভোটার আছে। তার মানে ১০০% ভোট কাস্টিং হয়, তবে ১০০ আসনের উচ্চ কক্ষের ১টি আসনের জন্য নিদেনপক্ষে ১২ দশমিক ৭৬ লাখ ভোট পেতে হবে।

নুর বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি যে ঐক্য হওয়ার কথা সেটাই হচ্ছে না। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের বলয় দিয়ে জোট তৈরির চেষ্টা করছে।

এক প্রশ্নের জবাবে নুরুল হক নুর বলেন, জোট গঠনের ব্যাপারে বেশ কিছু দলের সাথে তাদের আলোচনা হয়েছিলো। কারণ তারা মনে করেছিলো ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া অংশীজনদের সাথে সমঝোতা করে নির্বাচন করলে তা ভবিষ্যতে অধিক স্থিতিশীলতা আনবে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি যে ঐক্য হওয়ার কথা সেটাই হচ্ছে না। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের বলয় দিয়ে জোট তৈরির চেষ্টা করছে। আমরা সে আলোচনা চালিয়ে যাবো সবাইকে নিয়ে নির্বাচনটা করার।

তিনি আরও বলেন, যেহেতু পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষে আসন ঠিক করা হবে তাই এই মুহুর্তে জোট করলে উচ্চকক্ষে যাওয়া নিয়ে নানা রকমের জটিলতা সৃষ্টি হবে। আমরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি যেহেতু সারাদেশে আমাদের জনসমর্থন আছে। একটা ভোট ব্যাংক আছে। জনগণ যেহেতু পরিবর্তন চায়, তরুণদের চায়। তাই গণঅধিকার পরিষদ এককভাবে নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়া হবে।

সরকার নির্বাচনী ট্র্যাকে আছে উল্লেখ করে নুর বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভাজনই জাতীয় নির্বাচন ভণ্ডুলের কারণ হতে পারে। এই সময়ে এসে একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট আয়োজনই বাস্তবসম্মত।’

বিএনপি-জামায়াতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি তরুণদের সংগ্রামকে মুল্যায়ন করতে বলেন। এবং তরুণদের অবমূল্যায়ন করলে জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করবে। তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচন বানচালে শেখ হাসিনার দোসররা দেশজুড়ে নাশকতা চালাচ্ছে। তাই এ বিষয়ে সব দলকে সতর্ক থাকতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

Ad 300x250

সম্পর্কিত