leadT1ad

নুরাল পাগলের দরবারে হামলা ও লাশ পোড়ানোর দুই মাস পর পরিবারের মামলা

স্ট্রিম সংবাদদাতা
স্ট্রিম সংবাদদাতা
রাজবাড়ী

প্রকাশ : ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ১০: ২৫
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরাল পাগলের আস্তানায় হামলা করেছিল উত্তেজিত জনতা। ছবি: সংগৃহীত

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলের দরবারে হামলা, লুটপাট ও কবর থেকে তাঁর লাশ তুলে পোড়ানোর দুই মাস পর মামলা করেছে পরিবার। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) রাজবাড়ীর আদালতে মামলাটি করেন নুরাল পাগলের শ্যালিকা শিরিনা।

মামলায় ৯৬ জনের নামোল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে ৪ থেকে ৫ শতাধিক।

আদালতে দেওয়া অভিযোগে বলা হয়েছে, বার্ধক্যজনিত কারণে গত ২৩ আগস্ট মারা যান নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগল। ওই দিন রাতে ভক্তরা গোয়ালন্দে দরবার শরীফের মাটি থেকে কিছুটা উঁচু স্থানে তাঁর লাশ দাফন করে। তবে লাশ উঁচু স্থানে দাফন করা নিয়ে ‘তৌহিদি জনতা’ ব্যানারে একটি চক্র এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। স্থানীয় প্রশাসন একাধিকবার বৈঠক করে বিষয়টি সমঝোতার চেষ্টা করলেও পক্ষটি নানা অজুহাতে দরবারে হামলা ও লুটপাটের প্রস্তুতি নেয়।

এতে আরও বলা হয়, গত ৫ সেপ্টেম্বর জুমার নামাজের আগে জেলা পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন ও জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে দরবার শরীফ পরিদর্শন করা হয়। পরে নুরুল ইসলাম জানান, তৌহিদি জনতার দাবির মধ্যে কবর নিচু করার বিষয়টি মেনে নেওয়া হয়েছে। তাই ‘মার্চ ফর গোয়ালন্দ’সহ সব কর্মসূচি স্থগিত করা হলো। এরপরও জুমার নামাজের পর তৌহিদি জনতার ব্যানারে আনছার ক্লাব মাঠে পূর্বঘোষিত বিক্ষোভে জড়ো হয় হাজারো লোক। বেলা ৩টার দিকে তারা নুরাল পাগলের দরবার শরিফে হামলা চালায়।

হামলায় রাসেল মোল্লা (২৮) নামে নুরাল পাগলার এক ভক্ত নিহত হন। এ ছাড়া কয়েক’শ ভক্ত আহত হন, যাদের অনেকে এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে এতেই থেমে থাকেনি দুষ্কৃতিকারীরা। এক পর্যায়ে তারা নুরাল পাগলের লাশ কবর থেকে তুলে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে মহাসড়কে নিয়ে যায়। সেখানে মরদেহের বিভিন্ন অংশ বিচ্ছিন্ন করে আগুনে পোড়ানো হয়, যা নজিরবিহীন এক নৃশংস ঘটনা।

অভিযোগে আরও বলা হয়, হামলার সময় নারী ভক্তদের শ্লীলতাহানির চেষ্টাও করা হয়। দরবারে আগুন দেওয়ার পাশাপাশি ব্যাপক লুটপাট হয়। এ সময় হামলাকারীরা ভক্তদের কাছ থেকে শতাধিক ভরি স্বর্ণালংকার, ৩০ লাখ টাকা, ৮টি ফ্রিজ, ৮টি কম্পিউটার, ৪৩টি সিসিটিভি ক্যামেরা, ১২টি পানির মোটর, ১১টি মোটরসাইকেল, ১২৮টি মোবাইল ফোন, গবাদি পশু ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য লুট করে। সব মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৮ কোটি টাকা।

ওই সময় তৈরি হওয়া নিরাপত্তা ঝুঁকি কিছুটা কমায় এখন মামলা করা হয়েছে বলেও এতে উল্লেখ করেন বাদী।

এদিকে হামলার ওই ঘটনার পরপরই পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ৩ থেকে সাড়ে ৪ হাজার ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। আর নিহত ভক্ত রাসেল মোল্লার বাবা আজাদ মোল্লা আরেক মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার ব্যক্তির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। হামলার ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এখন পর্যন্ত পুলিশ এ দুই মামলায় ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

Ad 300x250

সম্পর্কিত