leadT1ad

ভারত কেন চিকেনস নেকে নতুন সামরিক ঘাঁটি করেছে, বাংলাদেশের জন্য কী বার্তা

শিলিগুড়ি করিডরটি অনেক জায়গায় বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে মাত্র ৬০ কিলোমিটার দূরে। শত্রু শক্তি যদি এ করিডর কেটে দিতে পারে, তবে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল দেশটির মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে, যা ভারতকে লজিস্টিক ও প্রতিরক্ষা—দুই দিক থেকেই ভয়াবহ বিপর্যয়ে ফেলবে।

স্ট্রিম ডেস্ক
স্ট্রিম ডেস্ক
ঢাকা

সম্প্রতি চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতা বাড়ায় ভারত আরও উদ্বিগ্ন হয়ে উঠে। স্ট্রিম গ্রাফিক

‘চিকেনস নেক’ বা শিলিগুড়ি করিডর পশ্চিমবঙ্গের একটি সরু ভূখণ্ড। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৬০ কিলোমিটার এবং প্রস্থ ২০ থেকে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত, তবে এর সবচেয়ে সরু অংশের প্রস্থ মাত্র ২২ কিলোমিটার। এই ভূখণ্ডটি ভারতের মূল ভূখণ্ডকে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোর সাথে সংযুক্ত করে এবং এর আকৃতি মুরগির ঘাড়ের মতো।

এটি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আটটি রাজ্যের একমাত্র স্থলপথ সংযোগ। রাজ্যগুলোতে প্রায় সাড়ে চার কোটি মানুষ বাস করে এবং বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে। করিডরটি নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ ও চীনের সীমানা ঘেঁষে অবস্থিত। ভূরাজনৈতিক দিক থেকে এটি ভারতের জন্য একটি ‘জগ্যুলার ভেইন’ বা নাজুক শিরা হিসেবে বিবেচিত।

ভারত চলতি মাসের শুরুতে (নভেম্বর ২০২৫) করিডরের বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষে তিনটি নতুন সামরিক ঘাঁটি চালু করেছে। আসামের ধুবরির কাছে বামুনিতে, বিহারের কিষাণগঞ্জে এবং পশ্চিমবঙ্গের চোপড়ায়। এসব ঘাঁটির সঙ্গে মোতায়েন করা হয়েছে অত্যাধুনিক এস-৪০০ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র ও রাফাল যুদ্ধবিমান। এই সামরিক সম্প্রসারণকে ঘিরে ভারতের উদ্দেশ্য এবং বাংলাদেশের ওপর এর প্রভাব নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে।

বিশেষ করে ২০২৪ সালের আগস্টে শেখ হাসিনার পতন ও তাঁর দিল্লিতে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে দুই দেশের সম্পর্কে উত্তেজনা বাড়ছে। নতুন বাস্তবতায় যখন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা এবং আন্তর্জাতিক ভূরাজনৈতিক জোটে পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তখন এই সামরিক পদক্ষেপকে কৌশলগত বার্তা হিসেবেও দেখা হচ্ছে।

সীমান্তে কেন এই জোরদার সামরিক সমাবেশ

ভারতের এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য একটি দীর্ঘদিনের দুর্বলতা দূর করা—যা সাম্প্রতিক আঞ্চলিক পরিবর্তনে আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। শিলিগুড়ি করিডরটি অনেক জায়গায় বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে মাত্র ৬০ কিলোমিটার দূরে। শত্রু শক্তি যদি এ করিডর কেটে দিতে পারে, তবে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল দেশটির মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে, যা ভারতকে লজিস্টিক ও প্রতিরক্ষা—দুই দিক থেকেই ভয়াবহ বিপর্যয়ে ফেলবে।

ঐতিহাসিক ঘটনাগুলোও ভারতের এই সতর্কতার পেছনে কাজ করছে—যেমন চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত যুদ্ধ। সম্প্রতি চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতা বাড়ায় ভারত আরও উদ্বিগ্ন হয়ে উঠে। শেখ হাসিনার পতনের পর মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে নয়াদিল্লি মনে করছে পাকিস্তান ও চীনের ঘনিষ্ঠ। তাছাড়া সীমান্তের দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবহার করে ইসলামপন্থি জঙ্গি ও লস্কর-ই-তৈয়বা (এলইটি) জঙ্গিরা ভারতে হামলার চেষ্টা করছে বলে গোয়েন্দা তথ্য পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছে নয়াদিল্লি।

ভারত এই পদক্ষেপকে ‘নিয়মিত প্রতিরক্ষা শক্তিশালীকরণ’ বলে ব্যাখ্যা করছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এর পেছনে বহুস্তরীয় হুমকি বিবেচনা করা হয়েছে। বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে পুরোনো বিমানঘাঁটি পুনরায় সক্রিয় হওয়া, পাকিস্তান নৌবাহিনীর জাহাজ পিএনএস সাইফ-এর চট্টগ্রাম সফর এবং এলইটি-র অনুপ্রবেশ পরিকল্পনার খবর—সবকিছুই নয়াদিল্লিকে উদ্বিগ্ন করেছে।

নতুন ঘাঁটির কৌশলগত ভূমিকা

নতুন তিনটি ঘাঁটি ৭ নভেম্বর ২০২৫ থেকে পূর্ণ সক্ষমতায় কার্যক্রম শুরু করেছে। এগুলো একসঙ্গে মিলে গঠন করেছে একটি ‘ডিফেন্সিভ গ্রিড’, যার মূল লক্ষ্য নজরদারি, পাল্টা গোয়েন্দা তৎপরতা ও দ্রুত প্রতিক্রিয়া নিশ্চিত করা।

ধুবরির বামুনি ঘাঁটিটি আহোম বীর লাচিত বরফুকানের নামে নামকরণ করা হয়েছে। এটি সীমান্ত পর্যবেক্ষণ ছাড়াও সিগন্যালস ইন্টেলিজেন্স হাব হিসেবে কাজ করছে। এটি বাংলাদেশের লালমনিরহাটের নিকটতম অবস্থান।

কিষাণগঞ্জ ঘাঁটি যোগাযোগ ও সিগন্যাল মনিটরিংয়ের দায়িত্বে থাকবে, যাতে ঠাকুরগাঁও-থাকুরগঞ্জ দিক থেকে সম্ভাব্য অনুপ্রবেশ রোধ করা যায়।

চোপড়া ঘাঁটি দ্রুত সেনা মোতায়েনের ঘাঁটি হিসেবে কাজ করবে এবং এস-৪০০ সিস্টেমের সঙ্গে সমন্বয় করে বিমান প্রতিরক্ষা জোরদার করবে।

১৩ থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত ওই এলাকায় বিমানগুলোকে নিম্ন-উচ্চতায় চলাচলের জন্য নোটিশ জারি করা হয়েছে, যা চলমান সামরিক মহড়ার ইঙ্গিত দেয়।

ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি ও বিশ্লেষকদের মত

ভারত এই পদক্ষেপকে ‘নিয়মিত প্রতিরক্ষা শক্তিশালীকরণ’ বলে ব্যাখ্যা করছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এর পেছনে বহুস্তরীয় হুমকি বিবেচনা করা হয়েছে। বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে পুরোনো বিমানঘাঁটি পুনরায় সক্রিয় হওয়া, পাকিস্তান নৌবাহিনীর জাহাজ পিএনএস সাইফ-এর চট্টগ্রাম সফর এবং এলইটি-র অনুপ্রবেশ পরিকল্পনার খবর—সবকিছুই নয়াদিল্লিকে উদ্বিগ্ন করেছে।

সাবেক ইস্টার্ন আর্মি কমান্ডার অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল রানা প্রতাপ কালিতা বলেন, ‘বাংলাদেশে সক্রিয় চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলো ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সুযোগে এই গোষ্ঠীগুলো সীমান্ত পেরিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করতে পারে।’

কৌশলগত বিশ্লেষক অজয় শুক্লা যোগ করেন, ‘এই পদক্ষেপ শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, এটি চীনের ‘স্ট্রিং অব পার্লস’ ঘেরাও নীতির বিরুদ্ধেও এক প্রতিরোধ। চিকেনস নেকের মতো জায়গায় প্রতিক্রিয়ার সময়ের কোনো অনিশ্চয়তা থাকা চলবে না।’

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সাম্প্রতিক ত্রিসেনা মহড়া ও যুদ্ধ প্রস্তুতি এসব উদ্বেগের প্রতিফলন। এগুলো বাংলাদেশে নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতার পরই শুরু হয়। ভারতীয় প্রতিরক্ষা সূত্রের মতে, এই স্থাপনাগুলো উত্তর-পূর্বাঞ্চলের দুর্গম ভূখণ্ডে বিদ্যমান নিরাপত্তা ঘাটতি পূরণ করবে।

ভারত টুডে-র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ উদ্যোগ এমন এক সময়ে এসেছে যখন অঞ্চলটি রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে। তাই নয়াদিল্লি এখন ‘চিকেনস নেক’-এর কৌশলগত শিরার রক্ষায় আর কোনো ঝুঁকি নিতে চায় না।

অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী হাসান সরোয়ার্দী তুলনামূলকভাবে বাস্তবসম্মত দৃষ্টিভঙ্গি দেন। তাঁর মতে, ‘ভারতের পদক্ষেপ প্রতিরক্ষামূলক। ঢাকার উচিত অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতাকে অগ্রাধিকার দেওয়া, অপ্রয়োজনীয় উত্তেজনা সৃষ্টি না করা—যাতে ভুল হিসাব না হয়।’

বাংলাদেশের প্রতি বার্তা: সংলাপের বদলে প্রতিরোধের সংকেত?

ঢাকার জন্য ভারতের সামরিক প্রস্তুতিকে একপ্রকার পরোক্ষ আল্টিমেটাম হিসেবেই দেখা হচ্ছে। বাংলাদেশ যদি ভারতের বিরোধী শক্তিগুলোকে নিয়ন্ত্রণে না আনে, তবে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে পারে। শেখ হাসিনার নির্বাসনের পর দুই দেশের সম্পর্কে গভীর টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থানকে ‘অবৈধ আশ্রয়’ হিসেবে দাবি করে প্রত্যর্পণ চেয়েছে। একই সঙ্গে তিস্তা নদীসহ ‘আধিপত্যমূলক’ পানি বণ্টন চুক্তির বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ জানিয়েছে।

এদিকে, অন্তর্বর্তী সরকারের ইসলামাবাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ও যৌথ নৌমহড়া নয়াদিল্লিকে উদ্বিগ্ন করেছে। এতে ভারতের আশঙ্কা, যেন চীন-পাকিস্তান-বাংলাদেশের একটি পুরনো অক্ষ আবার গঠিত হচ্ছে।

বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই)-এর আওতায় বাংলাদেশে বড় বিনিয়োগকারী হিসেবে চীন ইতিমধ্যে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে। এখন তারা পাকিস্তান ও বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতাকে কাজে লাগিয়ে ‘চীন-পাকিস্তান-বাংলাদেশ ত্রিভুজ’ গড়ে তুলতে চাইছে, যা ভারতের কৌশলগত পরিধি সংকুচিত করতে পারে।

এই প্রেক্ষাপটে অনেক বিশেষজ্ঞও আশঙ্কা করছেন, দক্ষিণ এশিয়ায় এক নতুন ‘চীন-পাকিস্তান-বাংলাদেশ অক্ষ’ গড়ে উঠতে পারে। সুইডেনের উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আশোক স্বেইন মন্তব্য করেছেন, ‘চীন নতুনভাবে ১৯৬০-এর দশকের পুরনো অক্ষ—বেইজিং, ইসলামাবাদ ও ঢাকা—পুনর্গঠনের সুযোগ দেখছে, যা ভারতের বিরুদ্ধে ভারসাম্য তৈরি করবে।’আর এটাই হয়তো ভারতের মাথা ব্যাথা বাড়িয়েছে।

একজন জ্যেষ্ঠ ভারতীয় প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা দ্য উইক পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা ঢাকাকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছি—চরমপন্থীদের আশ্রয় দেওয়া বা ভারতের স্বার্থের বিপক্ষে অবস্থান নিলে তাৎক্ষণিক পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এসব নতুন ঘাঁটি আমাদের প্রতিক্রিয়া জানানোর সময়কে দিন নয়, ঘণ্টায় নামিয়ে এনেছে।’

রুশ সংবাদ মাধ্যম টিআরটি এই অবস্থানকে বর্ণনা করেছে ‘সম্পর্কের অবনতির কড়া ইঙ্গিত’ হিসেবে। সীমান্তের আকাশে ভারতীয় বিমান মহড়া ঢাকার ওপর মনস্তাত্ত্বিক চাপও বাড়াচ্ছে। অপরদিকে, এক্স-এ পাকিস্তান ও বাংলাদেশের কিছু অনলাইন ব্যবহারকারী এই পদক্ষেপকে ‘ভয় দেখানো’বলে সমালোচনা করেছেন।

বাংলাদেশের সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের বিশ্লেষক ইফতেখারুজ্জামান সতর্ক করে বলেন, ‘এই সামরিকীকরণ দীর্ঘদিনের আস্থা নষ্ট করতে পারে। এটি সীমান্তকে ছিদ্রযুক্ত সীমারেখা থেকে এক সুরক্ষিত যুদ্ধফ্রন্টে রূপান্তর করছে। ভারত যেমন বাংলাদেশকে হুমকির উৎস হিসেবে দেখে, তেমনি পারস্পরিক সন্দেহই অস্ত্র প্রতিযোগিতাকে উসকে দিচ্ছে।’

অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী হাসান সরোয়ার্দী তুলনামূলকভাবে বাস্তবসম্মত দৃষ্টিভঙ্গি দেন। তাঁর মতে, ‘ভারতের পদক্ষেপ প্রতিরক্ষামূলক। ঢাকার উচিত অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতাকে অগ্রাধিকার দেওয়া, অপ্রয়োজনীয় উত্তেজনা সৃষ্টি না করা—যাতে ভুল হিসাব না হয়।’

ভারতের অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা রানা প্রতাপ বলেন, ‘বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা ভারতের স্বার্থেও জরুরি। কিন্তু উসকানি ঘটলে বিশাল প্রতিবেশীর রোষ মোকাবিলা করতে হবে।’

বাংলাদেশের ঝুঁকি কতটা?

সরাসরি সামরিক সংঘাতের ঝুঁকি আপাতত কম। তবে সীমান্ত উত্তেজনা বা ছোটখাটো সংঘর্ষের ঝুঁকি ‘মাঝারি’ পর্যায়ে আছে।

বিডি মিলিটারি ডটকমের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ভারতের এই সামরিক উপস্থিতি ‘প্রতিরক্ষামূলক সতর্কতা ও আক্রমণাত্মক প্রস্তুতির মিশ্রণ’, যা সীমান্ত টহল বাহিনীর মধ্যে আকস্মিক সংঘর্ষের আশঙ্কা বাড়াতে পারে।

বৃহত্তর ঝুঁকিগুলো সামরিক নয়। এর মধ্যে রয়েছে কূটনৈতিক বিচ্ছিন্নতা এবং অর্থনৈতিক ক্ষতি। সীমান্ত বন্ধ হয়ে বছরে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত হতে পারে। আর অভ্যন্তরীণ চাপে বিপর্যস্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ঘাড়ে অতিরিক্ত দায়িত্ব পড়তে পারে।

দক্ষিণ এশিয়া বিশ্লেষক ও জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হ্যাপিমন জ্যাকব বলেন, ‘বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের সম্ভাবনা কম। ভারত বল প্রয়োগের চেয়ে চাপ প্রয়োগের কৌশল পছন্দ করে। কিন্তু এই বার্তাগুলো উপেক্ষা করলে সাইবার হামলা, বা বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোর প্রতি গোপন সহায়তার মতো ‘হাইব্রিড’ হুমকি আসতে পারে।’

সিআইএ-র ১৯৭০-এর দশকের এক গোপন নথিতেও একই ধরনের সতর্কতা ছিল—যদি সংঘাত হয়, ভারত কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বাংলাদেশের প্রধান শহরগুলো দখল করতে পারে। যদিও পরাশক্তিগুলোর হস্তক্ষেপ ও কূটনৈতিক নির্ভরতা সেই সম্ভাবনাকে অনেকটা শিথিল করেছে।

তবে ভারতের অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা রানা প্রতাপ বলেন, ‘বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা ভারতের স্বার্থেও জরুরি। কিন্তু উসকানি ঘটলে বিশাল প্রতিবেশীর রোষ মোকাবিলা করতে হবে।’

Ad 300x250

সম্পর্কিত